দুই গ্রামে সংঘর্ষ-তুচ্ছ কারণেই এমন সহিংসতা!
১০ টাকার স্থলে ৯ টাকা ফ্ল্যাক্সিলোড করা নিয়ে প্রথমে বচসা, পরে দুই গ্রামের মধ্যে সংঘর্ষ বাধার ঘটনাটি যে কোনো সমাজসচেতন মানুষেরই চোখ কপালে ওঠার মতো।
মাত্র এক টাকা হেরফেরের মতো তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরের সুজাতপুর ও নিকলী গ্রাম দুটির মানুষ যেভাবে একে অপরের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে, তা সত্যিই হতবিহ্বলকর। সংঘর্ষ থামানোর জন্য শেষ পর্যন্ত পুলিশকে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে। ততক্ষণে দুই গ্রামের আহতের সংখ্যা ৩০ জনে উন্নীত হয়েছে। এ ঘটনাটি সমাজবিজ্ঞানীরা কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন? গ্রামে বিদ্যালয়, খেলার মাঠ, ছেলেমেয়ের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক বা জায়গা-সম্পত্তি নিয়ে কখনও কখনও বিরোধ রুদ্র রূপ নিয়ে আবির্ভূত হতে দেখা যায়। আবার এ ধরনের ঘটনা সব এলাকায় সমানভাবে দৃষ্ট হয় না। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিভিন্ন এলাকার মানুষের মধ্যে সংঘাতের একটা স্থায়ী রূপ দেখতে পাওয়া যায়। এ নিয়ে খুন-খারাবি পর্যন্ত ঘটে যায়। কিন্তু বাজিতপুরের দুই গ্রামবাসীর মধ্যে এ ধরনের স্থায়ী বিরোধের খবর জানা যায় না। তাছাড়া মাত্র এক টাকা ফ্ল্যাক্সিলোড কম করার মতো তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ ও তার পরিণতিতে অনেকে আহত হওয়ার ঘটনা আর যা-ই হোক, সামাজিক সুস্থতার লক্ষণ নয়। আমাদের রাজনীতির সঙ্গে সঙ্গে সমাজেও যে বিরাট নেতিবাচক পরিবর্তন ঘটে চলেছে, তা হয়তো আমরা অনেকেই লক্ষ্য করি না। সত্য, সুন্দর এখন নিষ্প্রভ। অন্যদিকে অন্যায়কারীদের এ সদম্ভ আস্ফালন। চোরের মায়ের এখানে বড় গলা। ঘুরপথে অর্থ উপার্জন রাতারাতি নিজের আখের গোছানোর মোক্ষম উপায় হয়ে উঠেছে এবং এ ধরনের প্রবণতা পারিবারিক ও সামাজিক প্রশ্রয়ও লাভ করছে। ফলে সমাজ দ্রুত রোগাক্রান্ত হয়ে পড়ছে। সর্বত্র একটা অসহিষ্ণু ভাব ও অস্থিরতা লক্ষণীয়। এটা যে কোনো দেশের ভবিষ্যতের জন্যই বিপজ্জনক। সামাজিক এই ভারসাম্যহীনতার ব্যাধি সর্বগ্রাসী রূপ নিয়ে আমাদের সব অর্জনকে গ্রাস করে নেওয়ার আগেই এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধের দেয়াল তুলতে হবে। এজন্য সমাজসচেতন সব মানুষকেই জোর কদমে এগিয়ে আসতে হবে।
No comments