অল্পস্বল্প -‘কোচের সম্মান রাখার চেষ্টা করেছি’
প্রিমিয়ার ফুটবল লিগের অন্য ম্যাচগুলোয় খেলেছেন উইঙ্গার হিসেবে। তবে কাল স্ট্রাইকার হিসেবে নেমেই জ্বলে উঠলেন, চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহামেডান হারল তাঁর জোড়া গোলেই।
স্ট্রাইকার হিসেবে খেলেই সাফল্যের এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চান আবাহনীর শাখাওয়াত হোসেন (রনি)
প্রথম গোলটি করেই হাড় কাঁপানো শীতের মধ্যে জার্সি খুলে ফেললেন!
শাখাওয়াত হোসেন (রনি): আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচ নিয়ে আমি এত উত্তেজিত ছিলাম যে কী করব বুঝে উঠতে পারছিলাম না। তা ছাড়া এটা আমার ক্যারিয়ারে মোহামেডানের বিপক্ষে প্রথম গোল। এর অনুভূতিই অন্য রকম। নিজেকে ওই সময় ধরে রাখতে পারিনি।
এটা তো এই লিগেও আপনার প্রথম গোল!
শাখাওয়াত: হ্যাঁ। লিগে এই ম্যাচের আগ পর্যন্ত কোনো গোল পাচ্ছিলাম না। এ জন্য একটু চিন্তায় ছিলাম। সর্বশেষ গোল করি ফেডারেশন কাপে। লিগে গোল পাচ্ছি না বলে প্র্যাকটিসেও বাড়তি পরিশ্রম করি। আমি যেহেতু স্ট্রাইকার, আমাকে তো গোল করতেই হবে। এ চিন্তাটা আমার মাথায় সব সময় কাজ করত।
আবাহনীর গত পাঁচ ম্যাচে আপনাকে স্ট্রাইকার হিসেবে খেলতে দেখা যায়নি কেন?
শাখাওয়াত: এটা কোচের সিদ্ধান্ত। আমি এত দিন কোমলের জায়গায় (মূলত কখনো লেফট উইং, কখনো রাইট উইংয়ে) খেলেছি। ওটা আমার সঠিক পজিশন না। এ জন্য বারবার কোচকে অনুরোধ করেছি, আমাকে আমার জায়গায় খেলান। আমাকে অন্তত একটা সুযোগ দেন। কোচ আজ আমাকে সেই সুযোগ দিয়েছেন। আমি কোচের সম্মান রাখার চেষ্টা করেছি।
ম্যাচের আগে কি ভেবেছিলেন আপনিই হবেন জয়ের নায়ক?
শাখাওয়াত: এতটা ভাবতে পারিনি। তবে মাঠে নামার আগে ওয়ার্মআপ করার পর যখন ড্রেসিংরুমে ঢুকলাম, তখন কোচ বলছিলেন, আজ তোমাকে একমাত্র স্ট্রাইকার হিসেবে খেলাব। তোমার ওপর আমার আস্থা আছে। আমি তোমাকে সুযোগ দিচ্ছি। সেটা কাজে লাগাও।
কিন্তু একাদশে তো আপনি নিয়মিত নন। বেশির ভাগ সময় দেখা যায় বেঞ্চে বসে থাকতে।
শাখাওয়াত: এটা ঠিক, আমাকে বেশির ভাগ সময় বদলি নামতে হয়েছে। তবে এবার আমি সুযোগ পেয়েছি। এখন এ সুযোগটা ধরে রাখার চেষ্টা করব।
আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচ মানেই বাড়তি চাপ। ম্যাচ শুরুর আগে কেমন চাপে ছিলেন?
শাখাওয়াত: কাল (পরশু) প্র্যাকটিসেও বড় ভাইয়েরা বলছিলেন আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচ হলেও প্রেশার নেওয়ার কিছু নেই। যদিও মাথায় ছিল এটা। সবাই বলেছে, প্র্যাকটিসে যেমন খেলো তেমন স্বাভাবিক খেলবে। তার পরও স্নায়ুচাপে ভুগছিলাম।
আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচ নিয়ে আলাদা কোনো স্মৃতি আছে?
শাখাওয়াত: ছোটবেলার কথা মনে পড়ে। তখন দেখেছি আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচ হলে আমাদের পাড়ায় মোনেম মুন্না, আলফাজ ভাইদের ছবি নিয়ে মিছিল হতো। আর যখন তিন বছর আগে আবাহনীতে নাম লেখালাম, তখন থেকে এই ম্যাচের অপেক্ষায় থাকতাম। আজকের এই ম্যাচ আমার জীবনের স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
শুনলাম, আপনি নাকি ক্রিকেট খেলতেন?
শাখাওয়াত: আমার খেলাধুলাই শুরু হয়েছিল ক্রিকেট দিয়ে। ক্রিকেটারই হতে চেয়েছিলাম। কিন্তু একটা ঘটনা আমার ক্যারিয়ারটা বদলে দেয়। সেটা ২০০৩-০৪ সালের কথা। আমাদের পাড়ায় একটা ফুটবল টুর্নামেন্ট হলো। সেখানে আমি ফুটবল খেললাম। ওই টুর্নামেন্টে এমন ভালো পারফরম্যান্স করেছিলাম, সেটা দেখে আমার এক বড় ভাই বলল, তুই ফুটবল খেল, ভালো করবি। এরপর আমাকে চট্টগ্রাম লিগে খেলার সুযোগ করে দিলেন। সেই থেকে ফুটবলে আছি।
No comments