বিপর্যস্ত দেশ ॥ কুয়াশা ও শীত- ০ শৈত্যপ্রবাহ চলবে আরও পাঁচদিন ০ মৌসুমে এ পর্যন্ত মৃত ৭২ ০ মাওয়া-কাওড়াকান্দি রুটে ১০ ঘণ্টা ফেরি বন্ধ, বিশাল যানজট
ঘন কুয়াশা ও কনকনে শীতে সারাদেশ বিপর্যস্ত। মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। শীতজনিত কারণে মৃত্যু ও নানা ব্যাধিতে আক্রান্তের সংখ্যাও বেড়েই চলেছে। শুক্রবারও নতুন করে ৫ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
এ নিয়ে চলতি মৌসুমে শীতজনিত কারণে মৃতের সংখ্যা ৭২ জনে দাঁড়িয়েছে বলে জানা গেছে। শৈত্যপ্রবাহ আরও ৫ দিন থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। ঘন কুয়াশায় জল ও সড়ক পথে যান চলাচল চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। সূর্যের মুখ দেখছে না দেশবাসী। এতে সাময়িকভাবে বন্ধ থাকছে ধানের চাতালগুলো। বেড়ে যেতে পারে চালের দাম। ঘন কুয়াশার কারণে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টা থেকে শুক্রবার সকাল সোয়া ১০টা পর্যন্ত মাওয়া-কাওড়াকান্দি নৌরুটে পৌনে ১০ ঘণ্টা ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। ওই ঘাটে দেখা দেয় বিশাল যানজট। চরম দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। বোরো চাষের জন্য তৈরি বীজতলার চারা কোল্ড ইনজুরিতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, উপ-মহাদেশীয় উচ্চচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ এবং তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাংশ পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে মৌসুমী লঘুচাপ অবস্থান করছে। শুক্রবার দেশের অধিকাংশ স্টেশনের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হ্রাস পায়। এ দিন সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ঢাকায় যথাক্রমে ২০.৫ ও ১০.৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস, ময়মনসিংহে ১৯.১ ও ৯.৫ ডিগ্রী, মাদারীপুরে ১৮.৪ ও ৮.৮ ডিগ্রী, শ্রীমঙ্গলে ১৮.২ ও ৯.০ ডিগ্রী, রংপুরে ১৬.৮ ও ৯.৩ ডিগ্রী, দিনাজপুরে ১৬.৩ ও ৮.৫ ডিগ্রী, সৈয়দপুরে ১৬.২ ও ৮.৫ ডিগ্রী, খুলনায় ১৮.৫ ও ৯.৫ ডিগ্রী, মংলায় ১৮.২ ও ৯.৮ ডিগ্রী, সাতক্ষীরায় ১৪.৪ ও ৮.৭ ডিগ্রী, যশোরে ২০.২ ও ৭.৮ ডিগ্রী, চুয়াডাঙ্গায় ১৯.৬ ও ৯.০ ডিগ্রী, বরিশালে ২০.০ ও ৮.৮ ডিগ্রী, পটুয়াখালীতে ১৭.০ ও ৯.৫ ডিগ্রী, খেপুপাড়ায় ১৯.৫ ও ৯.০ ডিগ্রী এবং ভোলায় ২০.০ ও ৯.৯ ডিগ্রী সেলসিয়াস রেকর্ড হয়।
শুক্রবারও রাজধানীর আকাশ ঢাকা ছিল কুয়াশায়। দেখা যায়নি সূর্যের মুখ। দিনভর বইতে থাকে ঠা-া বাতাস। নগরবাসীর পা থেকে মাথা পর্যন্ত ঢাকা ছিল গরম কাপড়ে। তীব্র শীতে অনেকেই কাঁপতে থাকে। ফ্যাশন করে হাল্কা কাপড় পরার সুযোগ পায়নি কেউ। গরম সোয়েটার বা জ্যাকেট পরার পরও অনেক মহিলা চাদর ব্যবহার করতে বাধ্য হয়েছেন। শাহবাগ মোড়ে জাতীয় জাদুঘরের বিপরীত পাশে হাতে-পায়ে মোজা লাগিয়ে চা বিক্রি করছেন মোঃ মকবুল। হাতে মোজা দেয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, হাত খোলা রাখাটা কঠিন হয়ে পড়েছে। চায়ের কাপগুলো ধোয়ার প্রয়োজন হলে হাতের মোজা খুলে নিই। তাছাড়া শীতের কারণে ক্রেতার সংখ্যাও কমেছে। খুব তাড়াতাড়ি দোকান বন্ধ করে চলে যাব বলে তিনি জানান। একটি গেঞ্জি, একটি ফুলহাতা শার্ট ও একটি সোয়েটারের পাশাপাশি একটি চাদর গায়ে দিয়েছেন শাহবাগ মোড় ফুটপাথের গরম কাপড় বিক্রেতা বেলাল হোসেন। তিনি বলেন, সারাদিন এক জায়গায় দাঁড়িয়ে বা বসে আছি। আর সারাদিন ধরেই তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। পাশাপাশি বয়ে যায় ঠা-া বাতাস। প্রথমে গেঞ্জি, শার্ট ও চাদর পরেছিলাম। শীতের তীব্রতা সহ্য করতে না পেরে দোকানের একটি গরম কাপড় পরে নিলাম বলে জানান বেলাল হোসেন। শুধু বেলাল হোসেন নন, বৃহস্পতিবারের শীতের তীব্রতা অনেক নগরবাসীকেই দুইয়ের অধিক গরম কাপড় ব্যবহার করতে বাধ্য করে। শুক্রবারও গরম কাপড় বিক্রেতাদের আনন্দের সীমা ছিল না। সাধারণ মানুষের দুর্ভোগে মাথা ব্যথা নেই তাদের। শীতার্ত মানুষ শীতের তীব্রতা কমে যেতে দোয়া চাইলেও, গরম কাপড় বিক্রেতারাও এখানে নির্দয়ের পরিচয় দিচ্ছেন। তারা শীতের আরও বেশি তীব্রতা কামনা করছেন। ঢাকা কলেজের বিপরীত পাশের মার্কেট ও ফুটপাথে গরম কাপড় বিক্রি জমে ওঠে। সব ধরনের গরম কাপড় চড়া দামে বিক্রি হয়। হিড়িক পড়ে গরম কাপড় কেনার। ফুটপাথে শিশুদের ৩০ টাকার হাত মোজা বিক্রি হয় ৪৫ টাকায়। প্রতিটি সাধারণ গরম টুপি বিক্রি হয় ৫০ টাকায়। কয়েকদিন আগেও ওই টুপির দাম ছিল ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। প্রতিটি কম্বল দেড় শ’ থেকে ২শ’ টাকা বেশি দামে বিক্রি হয়। ফুটপাথের গরম কাপড় বিক্রেতা হেলাল মিয়া জানান, এভাবে ক’দিন চলতে থাকলে ৮০ ভাগ গরম কাপড় বিক্রি হয়ে যাবে। এতে সন্তোষজনক লাভ থাকবে বলে তিনি মনে করছেন। ফার্মগেট, গুলিস্তান, কৃষি মার্কেটসহ নগরীর অধিকাংশ এলাকাতেই এই চিত্র দেখা গেছে। সরকারী ও বেসরকারী উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু হলেও তা পর্যাপ্ত নয় বলে জানা গেছে। শুক্রবার তাপমাত্রা হ্রাস পাওয়ায় রাজধানীতেও দিনভর তীব্র শীত অনুভূত হয়। অতি প্রয়োজন ছাড়া লোকজন ঘর থেকে বের হচ্ছে না। আর সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গেই মফস্বল এলাকার দোকানপাট বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
রাজধানীতে বেড়েছে শীতজনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা। সর্দি-কাশি-জ্বর, নিউমোনিয়া, ব্রংকাইটিস রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। শিশু ও বয়স্করাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের ডিন অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ জনকণ্ঠকে জানান, শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর আগমন তিনগুণ বেড়েছে। রোগীরা হাঁপানি, ব্রঙ্কাইটিস ও নিউমোনিয়া, সাধারণ সর্দি জ্বর, সাইনোসাইটিস (প্রচ- মাথাব্যথা), রাইনাইটিসে (নাক দিয়ে অনরবত পানিপড়া) আক্রান্ত হচ্ছে। আর ঠা-ায় শরীরের তাপমাত্রা মারাত্মক কমে গিয়ে আক্রান্ত হচ্ছে হাইপোথারমিয়ায়। বয়স্কদের বাতজনিত সমস্যা বেড়ে গেছে। পর্যাপ্ত গরম কাপড় ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, শরীর গরম রাখার পাশাপাশি বাসাবাড়িগুলোও গরম রাখতে হবে। সহনীয় মাত্রার গরম পানি পান করা উচিত। গোসল করার সময়ও গরম পানি ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছেন অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ।
রাজধানীর মতো দেশের অন্য সব স্থানও তীব্র শীতের কবলে পড়েছে। ঘন কুয়াশায় জল ও সড়ক পথে যান চলাচল চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনানুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ থাকছে।
স্টাফ রিপোর্টার কুড়িগ্রাম থেকে জানান, কুড়িগ্রামে শীতজনিত রোগে আরও দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার ভোরে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে একদিন বয়সী এক শিশু, জয় (৯ মাস) নামে দু’ শিশুর মৃত্যু হয়। এছাড়া সকালে সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের সন্ন্যাসী গ্রামের কেতকেতু (৫২) নামে এক বৃদ্ধ মারা গেছে। এ নিয়ে জেলায় চলতি শীত মৌসুমে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ২৮ জনে। এর মধ্যে শিশুর সংখ্যা ১৯। কনকনে শীত আর হিমেল হাওয়ায় স্থবির হয়ে আছে জনজীবন। শুক্রবার সকাল ১১টা পর্যন্ত শহরের অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ ছিল। কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. নজরুল ইসলাম জানান, শুক্রবার ভোরে এই হাসপাতালে এক নবজাতক ও জয় (৯মাস) নামে শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শীতজনিত বিভিন্ন রোগে প্রায় অর্ধশত শিশু এই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। প্রচ- শীতে হিমালয় পাদদেশীয় এ অঞ্চলের জনজীবনে চরম দুর্ভোগ নেমে এসেছে। কুড়িগ্রামের ধরলা, ব্রহ্মপুত্র তিস্তা, দুধকুমোরসহ ১৬টি নদ-নদীর ৪শ’ ৫টি চর-দ্বীপচরের ও বাঁধের পাড়ের প্রায় ১০ লাখ দুস্থ গরিব শ্রেণীর বস্ত্রহীন মানুষ দুঃসহ পরিস্থিতি মোকাবেলা করছে। টানা ১০দিন ধরে শৈত্যপ্রবাহে মানুষের দুর্গতি আরও চরমে উঠেছে। সরকার কুড়িগ্রাম জেলার শীতার্ত মানুষের সহায়তায় তিন দফায় ১৭ হাজার ৬৮৮টি কম্বল বরাদ্দ দিয়েছে। এসব কম্বল ইতোমধ্যে ৭২টি ইউনিয়ন ও ৩টি পৌর এলাকায় বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া জেলা প্রশাসক জরুরী ভিত্তিতে আরও ২০ হাজার কম্বল চেয়ে ঢাকায় ফ্যাক্স বার্তা পাঠিয়েছেন বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান। কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক প্রদীপ কুমার ম-ল জানান, তীব্র শীতে আগাম জাতের আলু ও ধানের চারায় কোল্ড ইনজুরি রোগ দেখা দিয়েছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের বীজতলায় সম্পূরক সেচ ও ওষুধ স্প্রে করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
স্টাফ রিপোর্টর মুন্সীগঞ্জ থেকে জানান, ঘন কুয়াশার কারণে মাওয়া-কাওড়াকান্দি নৌরুটে পৌনে ১০ ঘণ্টা ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। বৃহস্পতিাবরা রাত সাড়ে ১২টা থেকে শুক্রবার সকাল সোয়া ১০টা পর্যন্ত এ নৌরুটে ফেরি চলাচল না করায় মাওয়া ও কাওড়াকান্দি ঘাটে দেখা দেয় বিশাল যানজট। এ সময় মাঝপদ্মায় ৭টি ফেরিতে প্রায় দুই হাজার যাত্রী কনকনে শীতে চরম বিড়ম্বনায় পড়ে। বিআইডব্লিটিসির সহকারী ব্যবস্থাপক চন্দ্র শেখর জানান, বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে পদ্মা অববাহিকায় ঘনকুয়াশা নেমে এলে নৌরুট দৃষ্টিহীন হয়ে পড়ে। কুয়াশার চাঁদর এতটাই ঘন ছিল যে, বয়া বাতি এমনকি নৌপথের স্বল্প দূরত্বের কোন কিছুই চোখে পড়ছিল না। তাই দুর্ঘটনা এড়াতে বাধ্য হয়েই রাত সাড়ে ১২টা থেকে নৌ চলাচল বন্ধ রাখা হয়। এ সময় মাঝপদ্মায় যাত্রী ও পরিবহন নিয়ে নোঙর ফেলে ৭টি ফেরি। রো রো ফেরি বীর শ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন, ফেরি কাকলী, কেতকী, রানীগঞ্জ, রায়পুরা ও থোবাল নামের ৭টি ফেরি এদিকে ঘনকুয়াশার করণে পদ্মা, মেঘনা ও ধলেশ্বরী নদীতে চলাচলকারী অন্য নৌযানগুলোও নোঙ্গর করে। কনকনে শীতে ঘন কুয়াশার কারণে এই অঞ্চলে উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারজাত ব্যাহত ছাড়াও ব্যবসা-বাণিজ্য ও এখানকার অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। গত ৯ ডিসেম্বর থেকে এ পর্যন্ত ১২৫ ঘণ্টা এই রুটে ফেরি সার্ভিস বন্ধ থাকে।
নিজস্ব সংবাদদাতা গফরগাঁও থেকে জানান, প্রচ- হাড়কাঁপানো শীতে ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে এ পর্যন্ত ২ জনের মৃত্যু খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া বহু শিশু শীতের ঠা-াজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে গফরগাঁও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছে। জানা যায়,উপজেলার নামা শিলাসী গ্রামের উসমান আলী শেখ (৮০), অজ্ঞাত এক মহিলা (৫০) শীতে মারা গেছে। অজ্ঞাত এই মহিলার লাশ গত বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বারান্দায় পড়ে আছে। এদিকে প্রচ- ঠা-ায় ও ঘন কুয়াশার কারণে বোরো বীজতলাসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষতি হচ্ছে বলে কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে।
স্টাফ রিপোর্টার যশোর অফিস থেকে জানান, হাড়কাঁপানো শীত পড়ছে যশোর অঞ্চলে। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে শৈত্যপ্রবাহ। এ অবস্থায় কনকনে শীত ও ঠা-া বাতাসে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
গত কয়েক দিন ধরে যশোর অঞ্চলে চলছে শৈত্যপ্রবাহ। প্রতিদিনই কমছে তাপমাত্রা। এ তাপমাত্রার সঙ্গে বাতাসের আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি থাকায় শীত অনুভূত হচ্ছে খুব বেশি। ঘন কুয়াশার কারণে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সূর্যের দেখা মেলেনি। প্রচ- ঠা-ায় জরুরী প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছে না মানুষ। এ অবস্থায় বেশি সমস্যায় পড়েছে শিশুরা। ঠা-াজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে তারা।
নিজস্ব সংবাদদাতা গৌরনদী থেকে জানান, বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার আস্কর গ্রামে বৃহস্পতিবার রাতে শৈত্যপ্রবাহে সুখ রঞ্জন বাড়ৈ (৬৫) মারা গেছে। এর আগে শৈত্যপ্রবাহের কারণে বৃহস্পতিবার সকালে পয়সারহাট বন্দরের কাঁচামাল ব্যবসায়ী ও উপজেলার পূর্ব সুজনকাঠী গ্রামের জেন্নাত আলী মোল্লার মৃত্যু হয়েছে। ওই উপজেলায় এ পর্যন্ত শৈত্যপ্রবাহে ২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। ঠা-ার কারণে শিশুরা নিউমোনিয়াসহ শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। গড়ে প্রতিদিন আগৈলঝাড়া উপজেলা হাসপাতালে ২০ রোগী ঠা-াজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাসেবা নিচ্ছে বলে জরুরী বিভাগে কর্মরত ডা. মোকলেছুর রহমান জানিয়েছেন।
স্টাফ রিপোর্টার খুলনা অফিস থেকে জানান, কনকনে শীত ও ঠা-ায় খুলনার জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। ঠা-াজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। বোরো ধানের বীজতলা কোল্ড ইনজুরিতে পড়েছে। সারা দেশের ন্যায় খুলনা অঞ্চলে গত কয়েকদিন ধরে শীত ও ঠা-া বাড়তে শুরু করেছে। শুক্রবার সবচেয়ে বেশি ঠা-া অনুভূত হয়। এ দিন বিকেল ৩টা নাগাদ রোদের দেখা মিললেও তাতে তেমন উষ্ণতা ছিল না। এদিকে কনকনে শীত ও ঠা-ায় মানুষের স্বাভাবিক কাজকর্ম ও চলাফেরা ব্যাহত হয়। তীব্র শীতের কারণে শুক্রবার ছুটির দিনেও ফুটপাথসহ শহরের বিভিন্ন দোকানে শীতবস্ত্র বিক্রির হিড়িক পড়ে। সারাদিনে চলে শীতবস্ত্র বিকিকিনি। আবার অনেকে আগুন জ্বালিয়ে উষ্ণতা গ্রহণের চেষ্টা করে। এদিকে শীত ও ঠা-া ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে থাকায় খুলনা অঞ্চলে বোরো চাষের জন্য তৈরি বীজতলার চারা কোল্ড ইনজুরিতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
No comments