ফেসবুক তারুণ্য প্রত্যন্ত অঞ্চলে শীতার্তদের পাশে- আমরা খাঁটি গরীব-এর মানবিক উদ্যোগ, ব্যাপক সাড়া by মোরসালিন মিজান
ভাল কিছু করতে চাই। কিন্তু করা আর হয় না। দিন মাস বছর চলে যায়। বয়স বাড়ে। জীবন শুকিয়ে কাঠ হয়। এর পর মরতে চাই না কিন্তু মৃত্যু অনিবার্য। অধিকাংশ মানুষের এই একটি গল্প।
অথচ সচেতনভাবে চাইলে গল্পটি বদলে ফেলা সম্ভব। উদাহরণ? ভূরি ভূরি আছে। তবে এই শীতে বলতে হবে ‘আমরা খাঁটি গরীব-এর কথা। না, এই গরীব সেই গরীব না। গরীবের জন্য কাজ করার একটি চমৎকার প্ল্যাটফর্ম। গড়েছেন একদল তরুণ। সামাজিক যোগাযোগের জনপ্রিয় মাধ্যম ফেসবুকে একত্রিত হয়েছেন তাঁরা। সদস্য সংখ্যাÑ ৯, ৪২৭। এই সংখ্যাই বলে দেয়, দারুণ ছড়িয়ে পড়েছে আমরা খাঁটি গরীব। কিন্তু নামটি এমন কেন? ব্যাখ্যা কী এর? এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে জানা যায়, হাসিরাশি থেকেই এমন নামকরণ। চমক দেয়ার ব্যাপারটিও ছিল। তবে উদ্দেশ্য নিয়ে শুরুতে কেউ মাথা ঘামাননি। মানুষগুলো মানবিক! তাই তাদের মানবিক চিন্তার প্রতিফলন হয়েছে গ্রুপে। এরই এক পর্যায়ে ভাল কিছু করার উদ্যোগ। শীতার্তদের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত। জানা যায়, শুরুটা ২০১০ সালে। এর পর থেকে চলছে। দেশের একেবারে প্রত্যন্ত অঞ্চলে শীতবস্ত্র বিতরণের কাজ করছে তরুণদের এই গ্রুপ।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রথমবার তাঁরা যান শীতপ্রধান এলাকা কুড়িগ্রামে। ৩শ’র মতো কম্বল নিয়ে যান সঙ্গে। ছিল আরও কিছু গরম কাপড়। পরের বছর গ্রুপের সদস্যরা যান লালমনিরহাটে। সেখানকার তিনটি গ্রামে শীতবস্ত্র বিতরণ করেন তাঁরা। কম্বল সংখ্যা বেড়ে তখন ৫০০ হয়। বহুগুণে বাড়ে অন্যান্য শীতবস্ত্র। তৃতীয়বার গ্রুপের সদস্যরা শীতবস্ত্র বিতরণের জন্য নির্বাচন করেন পঞ্চগড়কে। সীমান্তবর্তী এলাকায় বিগত বছরগুলোর তুলনায় কয়েকগুণ বেশি শীতবস্ত্র বিতরণ করেন তাঁরা। বর্তমানে চলছে চতুর্থবারের প্রস্তুতি। অনেক আগেই গ্রুপের মাধ্যমে সকলের কাছে শীতবস্ত্র চাওয়া হয়েছিল। এর পর থেকে চলছে সংগ্রহ। এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার সকলে জড়ো হয়েছিলেন ধানমন্ডির রবীন্দ্রসরোবরে। আগ্রহীদের সকলকে সেখানে এসে শীতবস্ত্র প্রদানের আহ্বান জানানো হয়েছিল। দুপুরের পর জায়গাটিতে গিয়ে দেখা গেল, কাজ এগিয়ে চলেছে। গ্রুপের প্রধান ব্যক্তিরা যেমন আছেন, তেমনি এসেছেন সাধারণ সদস্যরা। সকলেরই চোখে আনন্দের ঝিলিক। ভাল কিছুর সঙ্গে থাকার সুখবোধ। অনেকের মধ্য থেকে খুঁজে নিতে হলো গ্রুপের এ্যাডমিন রাকিবকে। বয়সে একেবারেই তরুণ। চোখে চশমা। ‘গুডবয়’ চেহারা। তাঁর কাছে প্রশ্ন ছিল- কী বুঝে এই কাজে নামলেন? উত্তরে তিনি বললেন, খুব কিছু চিন্তা করে নামিনি। গল্পচ্ছলে বন্ধুরা মিলে শুরু করে দিয়েছিলাম। তবে এখন বুঝি, মানুষের জন্য কিছু করতে পারার আনন্দ আছে। সে জন্য চেষ্টাটা অব্যাহত রেখেছি। কী বলে লোকজন? থাকে আপনাদের পাশে? এমন প্রশ্নে জোর দিয়েই বললেন, আমরা মানুষে বিশ্বাস করি। আমাদের মূল শক্তিই তারা। বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বহু মানুষ প্রতিনিয়ত আমাদের সঙ্গে যোগ দিচ্ছেন। সাহায্য করছেন। নিজের পকেট থেকে টাকা যায় না? জানতে চাইলে হেসে ফেলেন রাকিব। বলেন, কখনও কখনও মাসের পুরো বেতনও দিয়ে দিতে হয়। কথা শুনে কী যে ভাললাগে! আহা, এই না হলে আমাদের তারুণ্য! রাকিবের মতোই ছোটাছুটি করছিলেন আরেক তরুণ কিছলু। জনকণ্ঠের কাছে প্রত্যন্ত অঞ্চলে শীতবস্ত্র বিতরণের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করলেন তিনি। বললেন, প্রথমবার যখন কুড়িগ্রাম গেলাম তখন শীতার্ত মানুষদের সামান্যই সাহায্য করতে পেরেছিলাম আমরা। এর পরও শীতবস্ত্র পেয়ে তারা যে হাসিটি হেসেছিল তার কোন তুলনা হয় না। সেই হাসি আমাকে আরও কাজ করার অনুপ্রেরণা যোগায়। তিনি জানান, এবার তাঁরা যাচ্ছেন রংপুরের ৮টি গ্রামে। তার মানে প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন? জানতে চাইলে কিছলু বলেন, হ্যাঁ, প্রতিবছর আমরা নতুন নতুন এলাকা খুঁজে বের করি। যে মানুষগুলোর পাশে দাঁড়ানোর সুযোগ কম, তাদের পাশে দাঁড়াই। এবারও তাই হচ্ছে।
এবার অবশ্য প্রচারটাও বেশি হয়েছে। তাই আমরা খাঁটি গরীবের আহ্বানে শুক্রবার বহু মানুষ এসেছিলেন শীতবস্ত্র নিয়ে। তাঁদের একজন ইশতিয়াক। ফটোগ্রাফি করেন। স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন তিনি। কিভাবে খবর পেলেন তাঁরা? জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি অনলাইনেই জেনেছিলাম। সে অনুযায়ী এসেছি। উদ্যোক্তাদের প্রশংসা করে তিনি বলেন, এক সময় তরুণরা অনেক কিছুই করত। এখন তেমনটি দেখা যায় না বললেই চলে। এ অবস্থায় সত্যি আশা জাগাচ্ছে আমরা খাটি গরীব। শীতবস্ত্র ছাড়া নগদ টাকাও নিয়ে আসেন অনেকে। শিল্পীরা বসে ক্যারিকেচার করছিলেন। এর বিনিময়ে পাওয়া অর্থ তাঁরা তুলে দিচ্ছিলেন গ্রুপের সদস্যদের হাতে। জনপ্রিয় ছড়াকার অনিক খান তো নিজের ছড়া নিয়ে এসেছিলেন। শক্ত কাগজে ছাপার হরফে লেখা ছড়াগুলো এসএমএস কাব্য নামে দারুন পরিচিতি পেয়েছে। প্রতিটির দাম ন্যূনতম ৩০০ টাকা। ছড়াকার বিক্রির অর্থ তুলে দিয়েছেন আয়োজকদের হাতে। বিষয়টি জেনে আবারও আশাবাদী হতে হয়। তরুণদের নিয়ে এ আশাবাদ সত্য হোকÑ আমাদের তাই প্রত্যাশা।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রথমবার তাঁরা যান শীতপ্রধান এলাকা কুড়িগ্রামে। ৩শ’র মতো কম্বল নিয়ে যান সঙ্গে। ছিল আরও কিছু গরম কাপড়। পরের বছর গ্রুপের সদস্যরা যান লালমনিরহাটে। সেখানকার তিনটি গ্রামে শীতবস্ত্র বিতরণ করেন তাঁরা। কম্বল সংখ্যা বেড়ে তখন ৫০০ হয়। বহুগুণে বাড়ে অন্যান্য শীতবস্ত্র। তৃতীয়বার গ্রুপের সদস্যরা শীতবস্ত্র বিতরণের জন্য নির্বাচন করেন পঞ্চগড়কে। সীমান্তবর্তী এলাকায় বিগত বছরগুলোর তুলনায় কয়েকগুণ বেশি শীতবস্ত্র বিতরণ করেন তাঁরা। বর্তমানে চলছে চতুর্থবারের প্রস্তুতি। অনেক আগেই গ্রুপের মাধ্যমে সকলের কাছে শীতবস্ত্র চাওয়া হয়েছিল। এর পর থেকে চলছে সংগ্রহ। এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার সকলে জড়ো হয়েছিলেন ধানমন্ডির রবীন্দ্রসরোবরে। আগ্রহীদের সকলকে সেখানে এসে শীতবস্ত্র প্রদানের আহ্বান জানানো হয়েছিল। দুপুরের পর জায়গাটিতে গিয়ে দেখা গেল, কাজ এগিয়ে চলেছে। গ্রুপের প্রধান ব্যক্তিরা যেমন আছেন, তেমনি এসেছেন সাধারণ সদস্যরা। সকলেরই চোখে আনন্দের ঝিলিক। ভাল কিছুর সঙ্গে থাকার সুখবোধ। অনেকের মধ্য থেকে খুঁজে নিতে হলো গ্রুপের এ্যাডমিন রাকিবকে। বয়সে একেবারেই তরুণ। চোখে চশমা। ‘গুডবয়’ চেহারা। তাঁর কাছে প্রশ্ন ছিল- কী বুঝে এই কাজে নামলেন? উত্তরে তিনি বললেন, খুব কিছু চিন্তা করে নামিনি। গল্পচ্ছলে বন্ধুরা মিলে শুরু করে দিয়েছিলাম। তবে এখন বুঝি, মানুষের জন্য কিছু করতে পারার আনন্দ আছে। সে জন্য চেষ্টাটা অব্যাহত রেখেছি। কী বলে লোকজন? থাকে আপনাদের পাশে? এমন প্রশ্নে জোর দিয়েই বললেন, আমরা মানুষে বিশ্বাস করি। আমাদের মূল শক্তিই তারা। বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বহু মানুষ প্রতিনিয়ত আমাদের সঙ্গে যোগ দিচ্ছেন। সাহায্য করছেন। নিজের পকেট থেকে টাকা যায় না? জানতে চাইলে হেসে ফেলেন রাকিব। বলেন, কখনও কখনও মাসের পুরো বেতনও দিয়ে দিতে হয়। কথা শুনে কী যে ভাললাগে! আহা, এই না হলে আমাদের তারুণ্য! রাকিবের মতোই ছোটাছুটি করছিলেন আরেক তরুণ কিছলু। জনকণ্ঠের কাছে প্রত্যন্ত অঞ্চলে শীতবস্ত্র বিতরণের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করলেন তিনি। বললেন, প্রথমবার যখন কুড়িগ্রাম গেলাম তখন শীতার্ত মানুষদের সামান্যই সাহায্য করতে পেরেছিলাম আমরা। এর পরও শীতবস্ত্র পেয়ে তারা যে হাসিটি হেসেছিল তার কোন তুলনা হয় না। সেই হাসি আমাকে আরও কাজ করার অনুপ্রেরণা যোগায়। তিনি জানান, এবার তাঁরা যাচ্ছেন রংপুরের ৮টি গ্রামে। তার মানে প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন? জানতে চাইলে কিছলু বলেন, হ্যাঁ, প্রতিবছর আমরা নতুন নতুন এলাকা খুঁজে বের করি। যে মানুষগুলোর পাশে দাঁড়ানোর সুযোগ কম, তাদের পাশে দাঁড়াই। এবারও তাই হচ্ছে।
এবার অবশ্য প্রচারটাও বেশি হয়েছে। তাই আমরা খাঁটি গরীবের আহ্বানে শুক্রবার বহু মানুষ এসেছিলেন শীতবস্ত্র নিয়ে। তাঁদের একজন ইশতিয়াক। ফটোগ্রাফি করেন। স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন তিনি। কিভাবে খবর পেলেন তাঁরা? জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি অনলাইনেই জেনেছিলাম। সে অনুযায়ী এসেছি। উদ্যোক্তাদের প্রশংসা করে তিনি বলেন, এক সময় তরুণরা অনেক কিছুই করত। এখন তেমনটি দেখা যায় না বললেই চলে। এ অবস্থায় সত্যি আশা জাগাচ্ছে আমরা খাটি গরীব। শীতবস্ত্র ছাড়া নগদ টাকাও নিয়ে আসেন অনেকে। শিল্পীরা বসে ক্যারিকেচার করছিলেন। এর বিনিময়ে পাওয়া অর্থ তাঁরা তুলে দিচ্ছিলেন গ্রুপের সদস্যদের হাতে। জনপ্রিয় ছড়াকার অনিক খান তো নিজের ছড়া নিয়ে এসেছিলেন। শক্ত কাগজে ছাপার হরফে লেখা ছড়াগুলো এসএমএস কাব্য নামে দারুন পরিচিতি পেয়েছে। প্রতিটির দাম ন্যূনতম ৩০০ টাকা। ছড়াকার বিক্রির অর্থ তুলে দিয়েছেন আয়োজকদের হাতে। বিষয়টি জেনে আবারও আশাবাদী হতে হয়। তরুণদের নিয়ে এ আশাবাদ সত্য হোকÑ আমাদের তাই প্রত্যাশা।
No comments