জাবিতে প্রজাপতি মেলা
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ক্যাম্পাসে নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠিত হলো প্রজাপতি মেলা ২০১২। শুক্রবার সকাল দশটায় আনুষ্ঠানিকভাবে প্রজাপতি মেলা উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, “প্রকৃতি ও জীবনের বর্ণিল অনুষঙ্গের নাম প্রজাপতি। প্রজাপতি শুধু নিজেই সুন্দর নয়, সে মানুষের মনকে উদ্বেলিত করে, আনন্দ যোগায়।”বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনের সামনে স্থাপন করা মশারির নেট দিয়ে তৈরি প্রজাপতির মেলায় নানা রঙের প্রজাপতি দেখে ভীষণ মুগ্ধ হন উপাচার্য।
সকাল থেকেই মেলা উপলক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে হাজারো প্রজাপতিপ্রেমী, শিক্ষার্থী ও সৌন্দর্যপিপাসু মানুষ ছুটে আসেন ক্যাম্পাসে।
উপাচার্য বলেন, “জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ প্রকৃতির অপরূপ দান। প্রকৃতির এ সৌন্দর্য রক্ষায় সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। অতিথি পাখিরা আবার ফিরে এসেছে ক্যাম্পাসে।“
তিনি বলেন, “যারা পরিবেশ ও প্রকৃতি ধ্বংস করছে, তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। সাভারের বংশী নদী রক্ষায় নেতৃত্ব দিতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকদের।”
ঢাকার উত্তরা থেকে ভোরেই মা-বাবাকে নিয়ে প্রজাপতি দেখতে ছুটে এসেছে তানজিল। মেলায় এসে নানা রঙের প্রজাপতি দেখে খুবই উচ্ছ্বসিত সে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. শরিফ উদ্দিনের ছোট্ট ছেলে অর্ণব জানায়, মেলায় অনেক প্রজাপতি দেখে তার ভালো লাগছে। সে কয়েকটি প্রজাপতি বাসায় নিয়ে যেতে চায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজির পরিচালক ফজলুল করিম পাটোয়ারির মেয়ে জোয়ানা জানায়, প্রজাপতি ছুঁতে গেলেই উড়ে যায়। সে একটিও প্রজাপতি ধরতে পারেনি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রো-উপাচার্য অধ্যাপক মো. ফরহাদ হোসেন বলেন, “জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস জীববৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে অপ্রতিদ্বন্দ্বী। প্রকৃতি ও পরিবেশ মানুষের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। প্রজাপতির সৌন্দর্যে আমরা মুগ্ধ। প্রজাপতির ডানার বর্ণিল রং আমাদের আন্দোলিত করে।”
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রকৃতি বিশারদ দ্বিজেন শর্মা বলেন, “প্রকৃতির কাছ থেকে আমরা অনেক পেয়েছি। মানুষের দ্বারাই প্রকৃতি আজ বিধ্বস্ত। প্রকৃতিকে বাঁচতে দিতে হবে।”
দিনব্যাপী আয়োজিত এ মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন কবি খালেদ হোসাইন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক সাজেদা বেগম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ূন কবির প্রমুখ।
সভাপতিত্ব করেন মেলার আহ্বায়ক অধ্যাপক মনোয়ার হোসেন।
অনুষ্ঠানে প্রাণিবিদ্যা বিষয়ক গবেষণায় সার্বিক অবদানের জন্য অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ূন কবিরকে আজীবন সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়। মেলায় শিশুদের জন্য চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, ঘুড়ি ওড়ানো, কুইজ, বক্তৃতা, প্রজাপতি বিষয়ক বির্তক প্রতিযোগিতা এবং প্রজাপতির উপর ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।
উপাচার্য মেলার উদ্বোধন শেষে প্রজাপতি অবমুক্ত করেন এবং পরিদর্শন করেন প্রজাতির বিভিন্ন স্টল।
No comments