আউটসোর্সিং- দ্রুত এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ- সাক্ষাৎকার নিয়েছেন পল্লব মোহাইমেন ও নুরুন্নবী চৌধুরী
ঢাকায় এখন চলছে ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড। আজ সেখানে হবে ফ্রিল্যান্সিং আউটসোর্সিং নিয়ে সম্মেলন। গতকাল (৬ ডিসেম্বর) হয়ে গেল বেসিসের আউটসোর্সিং সম্মেলন। এসব আয়োজনে অংশ নিতে ঢাকায় এখন অবস্থান করছেন আউটসোর্সিং কাজ দেওয়া-নেওয়ার জনপ্রিয় চারটি ওয়েবসাইটের (অনলাইন মার্কেটপ্লেস) উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।
প্রজন্ম ডট কমের পক্ষ থেকে তাঁদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে। ফ্রিল্যান্সিং আউটসোর্সিংয়ে বাংলাদেশ যে দ্রুত এগিয়ে চলেছে, সে কথা বলেছেন চারজনই। ওডেস্কের ম্যাট কুপার, ইল্যান্স ইউরোপের চেটিল জে ওলসেন, ৯৯ডিজাইনসের জেসন সু হোয় ও ফ্রিল্যান্সার ডট কমের ডেভিড হ্যারিসনের সাক্ষাৎকার নিয়ে এই বিশেষ আয়োজন।
ম্যাট কুপার
ভাইস প্রেসিডেন্ট অব অপারেশনস ওডেস্ক ডট কম
এর আগেও দুবার বাংলাদেশে এসেছেন ম্যাট কুপার। ইউনিভার্সিটি অব ভ্যান রুবেনস থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক এবং ফিন্যান্সে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী ম্যাট ওডেস্কে কাজ করছেন তিন বছর ধরে। তিন কন্যার জনক ম্যাট কুপার পছন্দ করেন সাগরে সার্ফিং করতে আর মাছ ধরতে।
বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সাররা তরুণ ও মেধাবী
গত বছর ঢাকায় এসেছিলেন, এ বছরের শুরুতেও ঘুরে গেলেন। এবারের সফরের উদ্দেশ্য কী?
ম্যাট কুপার: এ বছরই দুবার আসা হলো ঢাকায়। আগেরবার আউটসোর্সিং কন্ট্রাকটরদের (যাঁরা আউটসোর্সিংয়ের কাজ করেন) অ্যাপ্রিসিয়েশন ডে-তে এসেছিলাম। ওই ধরনের আয়োজন ঢাকায়ই প্রথমবারের মতো করে ওডেস্ক (www.odesk.com)। আর এবার এসেছি বেসিসের আউটসোর্সিং সম্মেলন ও ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডে অংশ নিতে।
ওডেস্কে এখন বাংলাদেশের অবস্থান কেমন?
ম্যাট কুপার: বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সাররা দারুণ কাজ করছে। ধীরে ধীরে যেমন দক্ষ ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যা বাড়ছে, তেমনি বাড়ছে আয়ের পরিমাণও। চলতি বছরে গতকাল (৫ ডিসেম্বর) পর্যন্ত বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সারদের আয়ের পরিমাণ প্রায় এক কোটি ৩০ লাখ ডলার। ওডেস্কে বাংলাদেশ বর্তমানে তৃতীয় স্থানে রয়েছে। এক নম্বরে আছে ফিলিপাইন এবং দুই নম্বরে ভারত।
বাংলাদেশিদের জন্য ওডেস্ক আলাদা কিছু করছে?
ম্যাট কুপার: হ্যাঁ, করছে। আমরা এর আগে কন্ট্রাকটরদের জন্য বিশেষ আয়োজন করেছি ঢাকায়, যেখানে সেরা ৪০০ জন বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সারকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। এ ছাড়া ওডেস্কের নিজস্ব অর্থ লেনদেন ব্যবস্থা বাংলাদেশে সম্প্রতি চালু করা হয়েছে। ফলে বাংলাদেশিরা সরাসরি নিজেদের ব্যাংক হিসাবে টাকা পেয়ে যাচ্ছেন।
বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সারদের সাফল্য কেমন?
ম্যাট কুপার: ২০০৯ সালে বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সারদের সংখ্যা অনেক কমই ছিল। তিন বছরে শীর্ষ তিনে চলে এসেছে। এটা দারুণ ব্যাপার। আর এ সফলতার কারণ বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সাররা তরুণ ও মেধাবী। পাশাপাশি এখানে অনেক কম খরচে কাজ করানো যায়, যা কাজদাতাদের আগ্রহী করে তোলে।
বাংলাদেশ থেকে কী ধরনের কাজ বেশি হচ্ছে?
ম্যাট কুপার: সবচেয়ে বেশি হচ্ছে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (এসইও) এবং ওয়েব ডেভেলপমেন্টের কাজ। এরপর আছে গ্রাহকসেবা ও ব্যবস্থাপনা, ই-কমার্স, ওয়েবভিত্তিক বিপণন ইত্যাদি। তবে প্রচলিত সব ধরনের কাজই বাংলাদেশ থেকে হচ্ছে।
ওডেস্ক বাংলাদেশে কিছু চালু করার কথা ভাবছে?
ম্যাট কুপার: না, ওডেস্কের এমন কোনো ভাবনা নেই। যেহেতু ইংরেজি একটা সর্বজনীন জায়গা, তাই আমরা মনে করি আলাদাভাবে ওয়েবসাইটে স্থানীয় ভাষা বা কোনো দেশে স্থানীয়ভাবে কোনো অফিস স্থাপনের প্রয়োজন নেই।
ফ্রিল্যান্সিং আউটসোর্সিং এখন যেমন একটি ভালো খাত, ভবিষ্যতেও কি তেমন থাকবে?
ম্যাট কুপার: ধীরে ধীরে অনলাইনের মাধ্যমে ব্যবসা জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। সনাতনী ব্যবসা-বাণিজ্য ইন্টারনেটভিত্তিক হয়ে উঠছে। এই প্রক্রিয়া সবে শুরু হয়েছে। তাই বলা যায় ফ্রিল্যান্সিংয়ের ভবিষ্যৎ ভালো। ঘরে বসেই নানা ধরনের কাজ করার সুবিধা থাকায় এ ক্ষেত্র বেশ জনপ্রিয়ও বটে।
চেটিল জে ওলসেন
ভাইস প্রেসিডেন্ট (ইউরোপ), ইল্যান্স ডট কম
দেড় বছর ধরে ইল্যান্স ডট কমে কাজ করছেন চেটিল জে ওলসেন। নরওয়েজিয়ান বিজনেস স্কুল থেকে ব্যবসায় ও অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী তিনি। এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক চেটিল এর আগে একাধিক প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। সাইক্লিং করতে ভালোবাসেন আর পছন্দ করেন স্কিইং করতে।
ক্ষেত্রটা এখন অনেক বড়
ইল্যান্সের শুরুটা কীভাবে?
চেটিল জে ওলসেন: ১৯৯৯ সালে এন্টারপ্রাইজ সফটওয়্যার-নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে যাত্রা শুরু করলেও ২০০৬ সাল থেকে ওয়েবভিত্তিক সেবা শুরু করে ইল্যান্স। বর্তমানে ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেসের মধ্যে বিশেষ স্থানে রয়েছে ইল্যান্স (www.elance.com)। তবে শুধু অনলাইনে ফ্রিল্যান্সার ও কাজদাতাদের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন নয়, আমরা ফ্রিল্যান্সারদের সঙ্গে যৌথভাবেও কাজ করছি।
বর্তমানে ইল্যান্সে নিবন্ধিত ফ্রিল্যান্সার কতজন? কাজের অবস্থা কেমন?
চেটিল জে ওলসেন: ইল্যান্সে এখন নিবন্ধিত ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যা ২০ লাখ। এ ছাড়া সক্রিয় ক্লায়েন্ট (কাজদাতা) রয়েছে আড়াই লাখ। চলতি বছর কাজের সংখ্যা প্রায় ১০ লাখ।
ইল্যান্সে বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সারদের অবস্থা কেমন? তাঁরা কী ধরনের কাজ বেশি করছেন?
চেটিল জে ওলসেন: ইল্যান্সে বাংলাদেশি প্রায় ৩০ হাজার নিবন্ধিত ফ্রিল্যান্সার রয়েছেন। তাঁদের অবস্থা অনেক ভালো। এক বছর আগেও বাংলাদেশির সংখ্যা ছিল ১৫ হাজার।বাংলাদেশিরা ওয়েবসাইট, গ্রাফিক ডিজাইন, সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (এসইও), মোবাইল অ্যাপসের কাজ বেশিকরে থাকেন।এর বাইরে বাজার-গবেষণা, প্রশাসনিক কাজও করছেন বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সাররা।
বর্তমানে কী ধরনের কাজ বেশি হচ্ছে? ইল্যান্সে সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের অবস্থান কেমন?
চেটিল জে ওলসেন: তিন থেকে চার বছর আগেও শুধু তথ্যপ্রযুক্তির কাজ ছিল অনলাইন মার্কেটপ্লেসে। এখন অনেক পরিবর্তন হয়েছে। দেখা যাচ্ছে, এখন যন্ত্রপ্রকৌশলীও কাজ করতে পারছেন। ক্ষেত্রটা এখন অনেক বড়। ইল্যান্সে এখন বাংলাদেশের অবস্থান সাত নম্বরে। আমার বিশ্বাস, এ অবস্থান খুব শিগগিরই চার থেকে পাঁচ নম্বরে চলে যাবে।
বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সারদের সবচেয়ে বড় গুণ হচ্ছে ভালো আচার-আচরণ। দক্ষতা, সময়জ্ঞানের বিষয়ের দিক দিয়েও এগিয়ে আছেন বাংলাদেশিরা। এসব গুণই কাজ পেতে যেমন সাহায্য করে, তেমনি সফল হতেও সাহায্য করে। এ জন্য দেখা যায় অনেক ক্লায়েন্ট শুধু বাংলাদেশিদের দিয়ে কাজ করাতে বেশি আগ্রহী।
কাজের অর্থ লেনদেনের (পেমেন্ট) বিষয়ে আপনার অভিমত কী?
চেটিল জে ওলসেন: ইল্যান্স ফ্রিল্যান্সার ও ক্লায়েন্টদের সুবিধার্থে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সমর্থনযোগ্য বিভিন্ন পেমেন্ট-পদ্ধতি চালু রেখেছে, যা সবার কাজে লাগে। তবে পেমেন্ট-পদ্ধতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশে পেপ্যাল চালু হলে ভালো হবে।
ডেভিড হ্যারিসন
ভাইস প্রেসিডেন্ট অব ইঞ্জিনিয়ারিং, ফ্রিল্যান্সার ডট কম
ফ্রিল্যান্সার ডট কমে প্রায় চার বছর ধরে ভাইস প্রেসিডেন্ট অব ইঞ্জিনিয়ারিং হিসেবে কর্মরত আছেন ডেভিড হ্যারিসন। অস্ট্রেলিয়ার সিডনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগে স্নাতক সম্পন্ন করা ডেভিডের ধ্যান-জ্ঞান সব প্রযুক্তি, বিশেষ করে কম্পিউটার প্রোগ্রামিং ঘিরে। পছন্দ করেন মুক্ত সফটওয়্যার নিয়ে কাজ করতে। আর অবসরে সাগরে ছুটে যান সার্ফিং করতে।
ফেসবুকের কাজে এগিয়ে বাংলাদেশিরা
আজ (৫ ডিসেম্বর) আপনারা চালু করলেন ফ্রিল্যান্সার ডট কম ডট বিডি, যা বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সারদের জন্য নতুন এক বিষয়...
ডেভিড হ্যারিসন: হ্যাঁ, এটা বাংলাদেশ থেকে যাঁরা কাজ করেন তাঁদের জন্য একটা নতুন বিষয়।মূলত স্থানীয় ফ্রিল্যান্সারদের সহযোগিতা করতেই ফ্রিল্যান্সারের এমন উদ্যোগ। ১৫টি দেশে এমন ওয়েবসাইট আছে।বাংলাদেশে চালু হলো ফ্রিল্যান্সার ডট কম ডট বিডি (www.freelancer.com.bd)। তবে এখানেও ফ্রিল্যান্সার ওয়েবসাইটের সব কাজই করা যাবে। এ ব্যবস্থা চালুর অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে ভাষাগত সুবিধা দেওয়া, স্থানীয় মুক্ত পেশাজীবী বা ফ্রিল্যান্সারদের কাজে লাগে এমন কিছু সুবিধা যুক্ত করা।
ফ্রিল্যান্সারের শুরুটা কবে?
ডেভিড হ্যারিসন: ২০০৪ সালে চালু হয় ফ্রিল্যান্সার ডট কম।দ্রুত অগ্রসরমাণ ইন্টারনেট প্রতিষ্ঠান এগিয়ে চলেছে ফ্রিল্যান্সার ডট কম।
ফ্রিল্যান্সারে বর্তমানে প্রায় ৬৭ লাখ নিবন্ধিত ব্যবহারকারী রয়েছেন। প্রকল্পের সংখ্যা প্রায় ৪০ লাখ। কাজের ক্ষেত্রে আমরা ফ্রিল্যান্সারদের নানা ধরনের সেবা দিয়ে থাকি, যেগুলো তাঁদের জন্য সহায়ক হয়ে ওঠে।
ফ্রিল্যান্সারে বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সারদের অবস্থা কেমন? তাঁরা কী ধরনের কাজ বেশি করছেন?
ডেভিড হ্যারিসন: ফ্রিল্যান্সারে বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সারদের অবস্থা বেশ ভালো। গত বছর ফ্রিল্যান্সারের মাধ্যমে বাংলাদেশি পেশাজীবীদের আয়ের পরিমাণ প্রায় ৩৬ লাখ ডলার। এ ছাড়া শুরু থেকে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সারদের আয়ের পরিমাণ এক কোটি ২০ লাখ ডলারের মতো। বাংলাদেশিরা নানা ধরনের কাজ করছেন। এর মধ্যে ডেটা এন্ট্রি (এক্সেলভিত্তিক), গ্রাফিক ডিজাইন, সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (এসইও), লোগো ডিজাইন, সামাজিক যোগাযোগের কাজ করে। ফেসবুকভিত্তিক কাজে বাংলাদেশিরা অনেকটাই এগিয়ে আছেন।
ফ্রিল্যান্সিং আউটসোর্সিং কাজের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে কিছু বলুন।
ডেভিড হ্যারিসন: ধীরে ধীরে প্রতিটি ব্যবসাই ইন্টারনেটভিত্তিক হয়ে উঠছে। তাই ফ্রিল্যান্সিংয়ের দারুণ সুযোগ রয়েছে। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলো বর্তমানে বেশ শক্তিশালী। আর বাংলাদেশিরা এসব মাধ্যম ব্যবহার করেও বেশ ভালো করছেন এবং এসব মাধ্যমে নিজেদের দক্ষ করে তুলছেন। এটা দারুণ!
জেসন সু হোয়
মহাব্যবস্থাপক, ৯৯ডিজাইনস ডট কম
নিউজিল্যান্ডের ওটাগো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার বিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করা জেসন সু হোয় এবারই প্রথম ঢাকায় এলেন। মালয়েশীয়-চীনা বংশোদ্ভূত জেসনের জন্ম ও বেড়ে ওঠা নিউজিল্যান্ডে। চার ভাই ও এক বোন নিয়ে তাঁর পরিবার। পছন্দ করেন রান্না করতে।
ফ্রিল্যান্সাররা বেশি করছেন লোগো ডিজাইন
আউটসোর্সিংয়ের অন্য অনলাইন মার্কেটপ্লেসের সঙ্গে ৯৯ডিজাইনসের পার্থক্য কী?
জেসন সু হোয়: ৯৯ডিজাইনসে শুধু গ্রাফিক ডিজাইনের কাজ পাওয়া যায়। এটি গ্রাফিক ডিজাইনের কাজের ক্ষেত্র হিসেবে এখন বিশ্বে এক নম্বর স্থানে আছে। ‘ডিজাইন ডান ডিফারেন্টলি’ স্লোগানে ২০০৪ সালে চালু হয় অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক ৯৯ডিজাইনস (www.99designs.com)। ইংরেজি ছাড়া জার্মান ও ফরাসি ভাষাতেও এই সাইট রয়েছে।
৯৯ডিজাইনসের কী অবস্থা এখন? এখানে বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সাররা কেমন কাজ করছেন?
জেসন সু হোয়: বর্তমানে ৯৯ডিজাইনসে কাজ করছেন প্রায় দুই লাখ ডিজাইনার। গত চার বছরে কাজ হয়েছে প্রায় চার কোটি চার লাখ ডলারের মতো। ধীরে ধীরে যা বেড়েই চলছে। বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সাররা ভালো করছেন। বর্তমানে ৯৯ডিজাইনসে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩তম।
বাংলাদেশিরা কী ধরনের কাজ বেশি করেন?
জেসন সু হোয়: বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সাররা বেশি করছেন লোগো ডিজাইন।
এ ছাড়া তাঁরা করছেন ওয়েবসাইট, বিজনেস কার্ড, টি-শার্ট, ব্রোশিওর ডিজাইন। কিছু কিছু ফ্ল্যাশ অ্যানিমেশনের কাজও চলছে।
ডিজাইনবিষয়ক অন্যান্য সাইটের সঙ্গে ৯৯ডিজাইনসের পার্থক্য কী?
জেসন সু হোয়: এখানে কোনো কাজের জন্য ডিজাইনাররা নিজেদের ডিজাইন জমা দেন, সেখান থেকে কাজদাতা সেরাটা বেছে নেন। ডিজাইনের জন্য কত ডলার দেওয়া হবে তাও কাজদাতা বলে দেন। এ ক্ষেত্রে ভালো কাজগুলোকে আমরা বিশেষ ধরনের সহযোগিতা করি।
নতুনদের জন্য আপনার পরামর্শ কী?
জেসন সু হোয়: মূলত শুরুতে ডিজাইন দক্ষতাটা লাগবে। পাশাপাশি নিজের সৃজনশীলতাকে কাজে লাগানোর আগ্রহ থাকতে হবে। কাজকে পছন্দ করতে হবে এবং ভালো কিছু করার চেষ্টা থাকাটা জরুরি। আর অবশ্যই গ্রাহক কী চায় সে বিষয়টি বুঝতে হবে।
সাক্ষাৎকার গ্রহণে সহযোগিতা: বেসিস
ম্যাট কুপার
ভাইস প্রেসিডেন্ট অব অপারেশনস ওডেস্ক ডট কম
এর আগেও দুবার বাংলাদেশে এসেছেন ম্যাট কুপার। ইউনিভার্সিটি অব ভ্যান রুবেনস থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক এবং ফিন্যান্সে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী ম্যাট ওডেস্কে কাজ করছেন তিন বছর ধরে। তিন কন্যার জনক ম্যাট কুপার পছন্দ করেন সাগরে সার্ফিং করতে আর মাছ ধরতে।
বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সাররা তরুণ ও মেধাবী
গত বছর ঢাকায় এসেছিলেন, এ বছরের শুরুতেও ঘুরে গেলেন। এবারের সফরের উদ্দেশ্য কী?
ম্যাট কুপার: এ বছরই দুবার আসা হলো ঢাকায়। আগেরবার আউটসোর্সিং কন্ট্রাকটরদের (যাঁরা আউটসোর্সিংয়ের কাজ করেন) অ্যাপ্রিসিয়েশন ডে-তে এসেছিলাম। ওই ধরনের আয়োজন ঢাকায়ই প্রথমবারের মতো করে ওডেস্ক (www.odesk.com)। আর এবার এসেছি বেসিসের আউটসোর্সিং সম্মেলন ও ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডে অংশ নিতে।
ওডেস্কে এখন বাংলাদেশের অবস্থান কেমন?
ম্যাট কুপার: বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সাররা দারুণ কাজ করছে। ধীরে ধীরে যেমন দক্ষ ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যা বাড়ছে, তেমনি বাড়ছে আয়ের পরিমাণও। চলতি বছরে গতকাল (৫ ডিসেম্বর) পর্যন্ত বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সারদের আয়ের পরিমাণ প্রায় এক কোটি ৩০ লাখ ডলার। ওডেস্কে বাংলাদেশ বর্তমানে তৃতীয় স্থানে রয়েছে। এক নম্বরে আছে ফিলিপাইন এবং দুই নম্বরে ভারত।
বাংলাদেশিদের জন্য ওডেস্ক আলাদা কিছু করছে?
ম্যাট কুপার: হ্যাঁ, করছে। আমরা এর আগে কন্ট্রাকটরদের জন্য বিশেষ আয়োজন করেছি ঢাকায়, যেখানে সেরা ৪০০ জন বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সারকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। এ ছাড়া ওডেস্কের নিজস্ব অর্থ লেনদেন ব্যবস্থা বাংলাদেশে সম্প্রতি চালু করা হয়েছে। ফলে বাংলাদেশিরা সরাসরি নিজেদের ব্যাংক হিসাবে টাকা পেয়ে যাচ্ছেন।
বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সারদের সাফল্য কেমন?
ম্যাট কুপার: ২০০৯ সালে বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সারদের সংখ্যা অনেক কমই ছিল। তিন বছরে শীর্ষ তিনে চলে এসেছে। এটা দারুণ ব্যাপার। আর এ সফলতার কারণ বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সাররা তরুণ ও মেধাবী। পাশাপাশি এখানে অনেক কম খরচে কাজ করানো যায়, যা কাজদাতাদের আগ্রহী করে তোলে।
বাংলাদেশ থেকে কী ধরনের কাজ বেশি হচ্ছে?
ম্যাট কুপার: সবচেয়ে বেশি হচ্ছে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (এসইও) এবং ওয়েব ডেভেলপমেন্টের কাজ। এরপর আছে গ্রাহকসেবা ও ব্যবস্থাপনা, ই-কমার্স, ওয়েবভিত্তিক বিপণন ইত্যাদি। তবে প্রচলিত সব ধরনের কাজই বাংলাদেশ থেকে হচ্ছে।
ওডেস্ক বাংলাদেশে কিছু চালু করার কথা ভাবছে?
ম্যাট কুপার: না, ওডেস্কের এমন কোনো ভাবনা নেই। যেহেতু ইংরেজি একটা সর্বজনীন জায়গা, তাই আমরা মনে করি আলাদাভাবে ওয়েবসাইটে স্থানীয় ভাষা বা কোনো দেশে স্থানীয়ভাবে কোনো অফিস স্থাপনের প্রয়োজন নেই।
ফ্রিল্যান্সিং আউটসোর্সিং এখন যেমন একটি ভালো খাত, ভবিষ্যতেও কি তেমন থাকবে?
ম্যাট কুপার: ধীরে ধীরে অনলাইনের মাধ্যমে ব্যবসা জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। সনাতনী ব্যবসা-বাণিজ্য ইন্টারনেটভিত্তিক হয়ে উঠছে। এই প্রক্রিয়া সবে শুরু হয়েছে। তাই বলা যায় ফ্রিল্যান্সিংয়ের ভবিষ্যৎ ভালো। ঘরে বসেই নানা ধরনের কাজ করার সুবিধা থাকায় এ ক্ষেত্র বেশ জনপ্রিয়ও বটে।
চেটিল জে ওলসেন
ভাইস প্রেসিডেন্ট (ইউরোপ), ইল্যান্স ডট কম
দেড় বছর ধরে ইল্যান্স ডট কমে কাজ করছেন চেটিল জে ওলসেন। নরওয়েজিয়ান বিজনেস স্কুল থেকে ব্যবসায় ও অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী তিনি। এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক চেটিল এর আগে একাধিক প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। সাইক্লিং করতে ভালোবাসেন আর পছন্দ করেন স্কিইং করতে।
ক্ষেত্রটা এখন অনেক বড়
ইল্যান্সের শুরুটা কীভাবে?
চেটিল জে ওলসেন: ১৯৯৯ সালে এন্টারপ্রাইজ সফটওয়্যার-নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে যাত্রা শুরু করলেও ২০০৬ সাল থেকে ওয়েবভিত্তিক সেবা শুরু করে ইল্যান্স। বর্তমানে ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেসের মধ্যে বিশেষ স্থানে রয়েছে ইল্যান্স (www.elance.com)। তবে শুধু অনলাইনে ফ্রিল্যান্সার ও কাজদাতাদের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন নয়, আমরা ফ্রিল্যান্সারদের সঙ্গে যৌথভাবেও কাজ করছি।
বর্তমানে ইল্যান্সে নিবন্ধিত ফ্রিল্যান্সার কতজন? কাজের অবস্থা কেমন?
চেটিল জে ওলসেন: ইল্যান্সে এখন নিবন্ধিত ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যা ২০ লাখ। এ ছাড়া সক্রিয় ক্লায়েন্ট (কাজদাতা) রয়েছে আড়াই লাখ। চলতি বছর কাজের সংখ্যা প্রায় ১০ লাখ।
ইল্যান্সে বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সারদের অবস্থা কেমন? তাঁরা কী ধরনের কাজ বেশি করছেন?
চেটিল জে ওলসেন: ইল্যান্সে বাংলাদেশি প্রায় ৩০ হাজার নিবন্ধিত ফ্রিল্যান্সার রয়েছেন। তাঁদের অবস্থা অনেক ভালো। এক বছর আগেও বাংলাদেশির সংখ্যা ছিল ১৫ হাজার।বাংলাদেশিরা ওয়েবসাইট, গ্রাফিক ডিজাইন, সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (এসইও), মোবাইল অ্যাপসের কাজ বেশিকরে থাকেন।এর বাইরে বাজার-গবেষণা, প্রশাসনিক কাজও করছেন বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সাররা।
বর্তমানে কী ধরনের কাজ বেশি হচ্ছে? ইল্যান্সে সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের অবস্থান কেমন?
চেটিল জে ওলসেন: তিন থেকে চার বছর আগেও শুধু তথ্যপ্রযুক্তির কাজ ছিল অনলাইন মার্কেটপ্লেসে। এখন অনেক পরিবর্তন হয়েছে। দেখা যাচ্ছে, এখন যন্ত্রপ্রকৌশলীও কাজ করতে পারছেন। ক্ষেত্রটা এখন অনেক বড়। ইল্যান্সে এখন বাংলাদেশের অবস্থান সাত নম্বরে। আমার বিশ্বাস, এ অবস্থান খুব শিগগিরই চার থেকে পাঁচ নম্বরে চলে যাবে।
বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সারদের সবচেয়ে বড় গুণ হচ্ছে ভালো আচার-আচরণ। দক্ষতা, সময়জ্ঞানের বিষয়ের দিক দিয়েও এগিয়ে আছেন বাংলাদেশিরা। এসব গুণই কাজ পেতে যেমন সাহায্য করে, তেমনি সফল হতেও সাহায্য করে। এ জন্য দেখা যায় অনেক ক্লায়েন্ট শুধু বাংলাদেশিদের দিয়ে কাজ করাতে বেশি আগ্রহী।
কাজের অর্থ লেনদেনের (পেমেন্ট) বিষয়ে আপনার অভিমত কী?
চেটিল জে ওলসেন: ইল্যান্স ফ্রিল্যান্সার ও ক্লায়েন্টদের সুবিধার্থে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সমর্থনযোগ্য বিভিন্ন পেমেন্ট-পদ্ধতি চালু রেখেছে, যা সবার কাজে লাগে। তবে পেমেন্ট-পদ্ধতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশে পেপ্যাল চালু হলে ভালো হবে।
ডেভিড হ্যারিসন
ভাইস প্রেসিডেন্ট অব ইঞ্জিনিয়ারিং, ফ্রিল্যান্সার ডট কম
ফ্রিল্যান্সার ডট কমে প্রায় চার বছর ধরে ভাইস প্রেসিডেন্ট অব ইঞ্জিনিয়ারিং হিসেবে কর্মরত আছেন ডেভিড হ্যারিসন। অস্ট্রেলিয়ার সিডনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগে স্নাতক সম্পন্ন করা ডেভিডের ধ্যান-জ্ঞান সব প্রযুক্তি, বিশেষ করে কম্পিউটার প্রোগ্রামিং ঘিরে। পছন্দ করেন মুক্ত সফটওয়্যার নিয়ে কাজ করতে। আর অবসরে সাগরে ছুটে যান সার্ফিং করতে।
ফেসবুকের কাজে এগিয়ে বাংলাদেশিরা
আজ (৫ ডিসেম্বর) আপনারা চালু করলেন ফ্রিল্যান্সার ডট কম ডট বিডি, যা বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সারদের জন্য নতুন এক বিষয়...
ডেভিড হ্যারিসন: হ্যাঁ, এটা বাংলাদেশ থেকে যাঁরা কাজ করেন তাঁদের জন্য একটা নতুন বিষয়।মূলত স্থানীয় ফ্রিল্যান্সারদের সহযোগিতা করতেই ফ্রিল্যান্সারের এমন উদ্যোগ। ১৫টি দেশে এমন ওয়েবসাইট আছে।বাংলাদেশে চালু হলো ফ্রিল্যান্সার ডট কম ডট বিডি (www.freelancer.com.bd)। তবে এখানেও ফ্রিল্যান্সার ওয়েবসাইটের সব কাজই করা যাবে। এ ব্যবস্থা চালুর অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে ভাষাগত সুবিধা দেওয়া, স্থানীয় মুক্ত পেশাজীবী বা ফ্রিল্যান্সারদের কাজে লাগে এমন কিছু সুবিধা যুক্ত করা।
ফ্রিল্যান্সারের শুরুটা কবে?
ডেভিড হ্যারিসন: ২০০৪ সালে চালু হয় ফ্রিল্যান্সার ডট কম।দ্রুত অগ্রসরমাণ ইন্টারনেট প্রতিষ্ঠান এগিয়ে চলেছে ফ্রিল্যান্সার ডট কম।
ফ্রিল্যান্সারে বর্তমানে প্রায় ৬৭ লাখ নিবন্ধিত ব্যবহারকারী রয়েছেন। প্রকল্পের সংখ্যা প্রায় ৪০ লাখ। কাজের ক্ষেত্রে আমরা ফ্রিল্যান্সারদের নানা ধরনের সেবা দিয়ে থাকি, যেগুলো তাঁদের জন্য সহায়ক হয়ে ওঠে।
ফ্রিল্যান্সারে বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সারদের অবস্থা কেমন? তাঁরা কী ধরনের কাজ বেশি করছেন?
ডেভিড হ্যারিসন: ফ্রিল্যান্সারে বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সারদের অবস্থা বেশ ভালো। গত বছর ফ্রিল্যান্সারের মাধ্যমে বাংলাদেশি পেশাজীবীদের আয়ের পরিমাণ প্রায় ৩৬ লাখ ডলার। এ ছাড়া শুরু থেকে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সারদের আয়ের পরিমাণ এক কোটি ২০ লাখ ডলারের মতো। বাংলাদেশিরা নানা ধরনের কাজ করছেন। এর মধ্যে ডেটা এন্ট্রি (এক্সেলভিত্তিক), গ্রাফিক ডিজাইন, সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (এসইও), লোগো ডিজাইন, সামাজিক যোগাযোগের কাজ করে। ফেসবুকভিত্তিক কাজে বাংলাদেশিরা অনেকটাই এগিয়ে আছেন।
ফ্রিল্যান্সিং আউটসোর্সিং কাজের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে কিছু বলুন।
ডেভিড হ্যারিসন: ধীরে ধীরে প্রতিটি ব্যবসাই ইন্টারনেটভিত্তিক হয়ে উঠছে। তাই ফ্রিল্যান্সিংয়ের দারুণ সুযোগ রয়েছে। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলো বর্তমানে বেশ শক্তিশালী। আর বাংলাদেশিরা এসব মাধ্যম ব্যবহার করেও বেশ ভালো করছেন এবং এসব মাধ্যমে নিজেদের দক্ষ করে তুলছেন। এটা দারুণ!
জেসন সু হোয়
মহাব্যবস্থাপক, ৯৯ডিজাইনস ডট কম
নিউজিল্যান্ডের ওটাগো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার বিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করা জেসন সু হোয় এবারই প্রথম ঢাকায় এলেন। মালয়েশীয়-চীনা বংশোদ্ভূত জেসনের জন্ম ও বেড়ে ওঠা নিউজিল্যান্ডে। চার ভাই ও এক বোন নিয়ে তাঁর পরিবার। পছন্দ করেন রান্না করতে।
ফ্রিল্যান্সাররা বেশি করছেন লোগো ডিজাইন
আউটসোর্সিংয়ের অন্য অনলাইন মার্কেটপ্লেসের সঙ্গে ৯৯ডিজাইনসের পার্থক্য কী?
জেসন সু হোয়: ৯৯ডিজাইনসে শুধু গ্রাফিক ডিজাইনের কাজ পাওয়া যায়। এটি গ্রাফিক ডিজাইনের কাজের ক্ষেত্র হিসেবে এখন বিশ্বে এক নম্বর স্থানে আছে। ‘ডিজাইন ডান ডিফারেন্টলি’ স্লোগানে ২০০৪ সালে চালু হয় অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক ৯৯ডিজাইনস (www.99designs.com)। ইংরেজি ছাড়া জার্মান ও ফরাসি ভাষাতেও এই সাইট রয়েছে।
৯৯ডিজাইনসের কী অবস্থা এখন? এখানে বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সাররা কেমন কাজ করছেন?
জেসন সু হোয়: বর্তমানে ৯৯ডিজাইনসে কাজ করছেন প্রায় দুই লাখ ডিজাইনার। গত চার বছরে কাজ হয়েছে প্রায় চার কোটি চার লাখ ডলারের মতো। ধীরে ধীরে যা বেড়েই চলছে। বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সাররা ভালো করছেন। বর্তমানে ৯৯ডিজাইনসে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩তম।
বাংলাদেশিরা কী ধরনের কাজ বেশি করেন?
জেসন সু হোয়: বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সাররা বেশি করছেন লোগো ডিজাইন।
এ ছাড়া তাঁরা করছেন ওয়েবসাইট, বিজনেস কার্ড, টি-শার্ট, ব্রোশিওর ডিজাইন। কিছু কিছু ফ্ল্যাশ অ্যানিমেশনের কাজও চলছে।
ডিজাইনবিষয়ক অন্যান্য সাইটের সঙ্গে ৯৯ডিজাইনসের পার্থক্য কী?
জেসন সু হোয়: এখানে কোনো কাজের জন্য ডিজাইনাররা নিজেদের ডিজাইন জমা দেন, সেখান থেকে কাজদাতা সেরাটা বেছে নেন। ডিজাইনের জন্য কত ডলার দেওয়া হবে তাও কাজদাতা বলে দেন। এ ক্ষেত্রে ভালো কাজগুলোকে আমরা বিশেষ ধরনের সহযোগিতা করি।
নতুনদের জন্য আপনার পরামর্শ কী?
জেসন সু হোয়: মূলত শুরুতে ডিজাইন দক্ষতাটা লাগবে। পাশাপাশি নিজের সৃজনশীলতাকে কাজে লাগানোর আগ্রহ থাকতে হবে। কাজকে পছন্দ করতে হবে এবং ভালো কিছু করার চেষ্টা থাকাটা জরুরি। আর অবশ্যই গ্রাহক কী চায় সে বিষয়টি বুঝতে হবে।
সাক্ষাৎকার গ্রহণে সহযোগিতা: বেসিস
No comments