নির্বাচনী অঙ্গীকার ভুলে যাবেন না- দুর্নীতি-পরিস্থিতির অবনতি
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের (টিআই) দুর্নীতির ধারণাসূচকে বাংলাদেশের পিছিয়ে পড়া উদ্বেগজনক ঘটনা বলেই আমরা মনে করি। ৫ ডিসেম্বর প্রকাশিত ২০১২ সালের প্রতিবেদনে বিশ্বের মোট ১৭৬টি দেশের মধ্যে নিম্নক্রম অনুসারে বাংলাদেশ গত বছরের মতো ১৩তম স্থানেই আছে।
কিন্তু উচ্চক্রম অনুসারে ২৪ ধাপ কমেছে। গত বছর উচ্চক্রম অনুসারে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১২০, চলতি বছর তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪৪তম। আরও বিপদের কথা হলো, দক্ষিণ এশীয় সাতটি দেশের মধ্যে উচ্চক্রম অনুসারে বাংলাদেশের অবস্থান ষষ্ঠ। যেখানে ভুটান ৬৩, শ্রীলঙ্কা ৪০, ভারত ৩৬তম স্কোর লাভ করেছে, সেখানে বাংলাদেশের স্কোর ২৬ হওয়াটা লজ্জাজনকই বটে।
দুর্নীতির ধারণাসূচকে বাংলাদেশের এই অবনতির কারণ শনাক্ত করা কঠিন নয় মোটেই। গত এক বছরে পদ্মা সেতু প্রকল্প নিয়ে জটিলতা, রেলওয়ে, হল-মার্ক ও ডেসটিনি কেলেঙ্কারি, সরকারি ক্রয়ে অনিয়ম-দুর্নীতি, দখলবাজির পাশাপাশি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) স্বাধীনতা খর্ব করা, ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহার ও দুর্নীতির মামলা প্রত্যাহারের চাপ যে দুর্নীতিবিরোধী অভিযানকে অত্যন্ত দুর্বল করেছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
দুর্নীতি কমাতে হলে সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা জরুরি। সাংবিধানিক সংস্থাগুলো যাতে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে, সেই নিশ্চয়তাও দিতে হবে। দুদক যে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে না, পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির তদন্তই তার প্রমাণ। তা ছাড়া দুর্নীতি দমন আইন সংশোধনের লক্ষ্যে যে খসড়া তৈরি করা হয়েছে, তা-ও ঝুলে আছে। জাতীয় সংসদই হলো সরকারের জবাবদিহি করার প্রধান মাধ্যম। কিন্তু বিরোধী দলের অনুপস্থিতি প্রতিষ্ঠানটিকে প্রায় অকার্যকর করে তুলেছে। সংসদীয় কমিটিগুলো নিয়মিত বসলেও কার্যকর ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হয়েছে।
দ্বিতীয়ত, দুর্নীতি দমনের পূর্বশর্ত হলো পক্ষপাতহীনভাবে আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগ। কিন্তু সরকারের কর্মকাণ্ডে তার প্রতিফলন খুবই কম দেখা যাচ্ছে। হল-মার্ক, ডেসটিনি কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের আটক করা হয়েছে। এটি ভালো দৃষ্টান্ত। এখন প্রশ্ন হলো, এর সঙ্গে জড়িত সবাই শাস্তি পাবেন কি না? পদপরিচয়-নির্বিশেষে সব অপরাধীর শাস্তিই পারে দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরতে।
নির্বাচনের আগে ক্ষমতাসীনেরা দুর্নীতি দমনকে অন্যতম প্রধান নির্বাচনী অঙ্গীকার বলে ঘোষণা করেছিলেন। নির্বাচনের পরও যদি সেই অঙ্গীকারের প্রতি তাঁরা দায়বদ্ধ থাকতেন, তাহলে দুর্নীতির সূচকে বাংলাদেশের ক্রমাবনতি হতো না। বর্তমান সরকারের আমলে নির্বাহী আদেশে হাজার হাজার ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহারের পাশাপাশি দুর্নীতির মামলা প্রত্যাহারেরও চেষ্টা চলছে। দুর্নীতির অভিযোগে পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংকের ঋণ আটকে যাওয়ার ঘটনা থেকেও সরকার শিক্ষা নিতে পারে। পূর্ববর্তী সরকারের দুর্নীতি ধরা গুরুত্বপূর্ণ, তার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ বর্তমানের দুর্নীতি বন্ধ করা। ভবিষ্যতে পদ্মা সেতু ও হল-মার্কের মতো ঘটনা বন্ধ করতেই সরকারকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সর্বাত্মক অভিযান চালাতে হবে। অন্যথায় দুর্নীতিতে আবার বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
দুর্নীতির ধারণাসূচকে বাংলাদেশের এই অবনতির কারণ শনাক্ত করা কঠিন নয় মোটেই। গত এক বছরে পদ্মা সেতু প্রকল্প নিয়ে জটিলতা, রেলওয়ে, হল-মার্ক ও ডেসটিনি কেলেঙ্কারি, সরকারি ক্রয়ে অনিয়ম-দুর্নীতি, দখলবাজির পাশাপাশি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) স্বাধীনতা খর্ব করা, ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহার ও দুর্নীতির মামলা প্রত্যাহারের চাপ যে দুর্নীতিবিরোধী অভিযানকে অত্যন্ত দুর্বল করেছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
দুর্নীতি কমাতে হলে সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা জরুরি। সাংবিধানিক সংস্থাগুলো যাতে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে, সেই নিশ্চয়তাও দিতে হবে। দুদক যে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে না, পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির তদন্তই তার প্রমাণ। তা ছাড়া দুর্নীতি দমন আইন সংশোধনের লক্ষ্যে যে খসড়া তৈরি করা হয়েছে, তা-ও ঝুলে আছে। জাতীয় সংসদই হলো সরকারের জবাবদিহি করার প্রধান মাধ্যম। কিন্তু বিরোধী দলের অনুপস্থিতি প্রতিষ্ঠানটিকে প্রায় অকার্যকর করে তুলেছে। সংসদীয় কমিটিগুলো নিয়মিত বসলেও কার্যকর ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হয়েছে।
দ্বিতীয়ত, দুর্নীতি দমনের পূর্বশর্ত হলো পক্ষপাতহীনভাবে আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগ। কিন্তু সরকারের কর্মকাণ্ডে তার প্রতিফলন খুবই কম দেখা যাচ্ছে। হল-মার্ক, ডেসটিনি কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের আটক করা হয়েছে। এটি ভালো দৃষ্টান্ত। এখন প্রশ্ন হলো, এর সঙ্গে জড়িত সবাই শাস্তি পাবেন কি না? পদপরিচয়-নির্বিশেষে সব অপরাধীর শাস্তিই পারে দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরতে।
নির্বাচনের আগে ক্ষমতাসীনেরা দুর্নীতি দমনকে অন্যতম প্রধান নির্বাচনী অঙ্গীকার বলে ঘোষণা করেছিলেন। নির্বাচনের পরও যদি সেই অঙ্গীকারের প্রতি তাঁরা দায়বদ্ধ থাকতেন, তাহলে দুর্নীতির সূচকে বাংলাদেশের ক্রমাবনতি হতো না। বর্তমান সরকারের আমলে নির্বাহী আদেশে হাজার হাজার ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহারের পাশাপাশি দুর্নীতির মামলা প্রত্যাহারেরও চেষ্টা চলছে। দুর্নীতির অভিযোগে পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংকের ঋণ আটকে যাওয়ার ঘটনা থেকেও সরকার শিক্ষা নিতে পারে। পূর্ববর্তী সরকারের দুর্নীতি ধরা গুরুত্বপূর্ণ, তার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ বর্তমানের দুর্নীতি বন্ধ করা। ভবিষ্যতে পদ্মা সেতু ও হল-মার্কের মতো ঘটনা বন্ধ করতেই সরকারকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সর্বাত্মক অভিযান চালাতে হবে। অন্যথায় দুর্নীতিতে আবার বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
No comments