রোহিঙ্গা মুসলিমদের অবস্থা দেখে আতঙ্কিত ভ্যালেরি
জাতিসংঘের মানবতা বিষয়ক শীর্ষ কর্মকর্তা ভ্যালেরি এমোস বলেছেন, পশ্চিম বার্মার রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গা মুসলমানদের অবস্থা স্বচক্ষে দেখে তিনি আতংকিত হয়েছেন।
রাখাইন প্রদেশে দেড় লক্ষেরও বেশি মানুষ এখন শরণার্থী শিবিরে দিন কাটাচ্ছেন। এদের মধ্যে একটা বড় অংশ রোহিঙ্গা।ওই অঞ্চলে সম্প্রতি যে জাতিগত সহিংসতা হয়েছে এর ফলে এইসব মানুষ গৃহহীন হয়েছেন।
মায়াবন উপদ্বীপে আশ্রয়চ্যুতদের জন্য দুটি শিবির স্থাপন করা হয়েছে। একটিতে রক্ষণাবেক্ষণ খুবই ভাল, তাঁবুগুলো সুন্দর, পয়োনিষ্কাশনের ব্যবস্থা মানসম্মত - আর খাবারদাবার ও ওষুধ-সহ রসদের সরবরাহও নিয়মিত। এই শিবিরটা শুধুমাত্র রাখাইন বৌদ্ধদের জন্য।
কিন্তু ওই রাস্তা ধরে আরও কিছুটা ড্রাইভ করে এগোলেই, রোহিঙ্গা মুসলিমদের পোড়া ঘরবাড়ি পাশে রেখে চললে আপনি পৌঁছে যাবেন রোহিঙ্গাদের শিবিরে। ত্রাণকর্মীদের মতে, এশিয়াতে তো বটেই, গোটা দুনিয়াতেই সম্ভবত সবচয়ে শোচনীয় আশ্রয়শিবির সেটা।
কাদামাটির স্তূপের ভেতরই চার হাজারেরও বেশি নারী-পুরুষ-শিশু গাদাগাদি করে রয়েছে সেই শিবিরে। পাশ দিয়েই যাচ্ছে নোংরা বর্জ্যের নালা। শিবিরের চারপাশে বর্মী রক্ষীরা পাহারা দিচ্ছে - যাতে রোহিঙ্গারা কেউ শিবির ছেড়ে পালাতে না-পারে।
এখানে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছনোও প্রায় অসম্ভব - কারণ শিবিরের চারপাশে সব জমি আর এলাকাই রাখাইন বৌদ্ধদের নিয়ন্ত্রণে, শিবিরে কোনও রসদ এলে তারাই সেটা ঢুকতে বাধা দেন।
দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদের এই একই চিত্র এখন গোটা রাখাইন প্রদেশ জুড়েই - আর সেটা দেখেই জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ের প্রধান ভ্যালেরি অ্যামস দৃশ্যতই বিষণ্ণ হয়ে পড়েন।
গত ছমাসের সহিংসতা ও বিদ্বেষের পর তিনি আবেদন জানিয়েছেন ঐক্য ও সংহতি ফেরানোর, বার্মার সরকারকে আহ্বান জানিয়েছেন রাখাইনে সঠিক নেতৃত্বের পরিচয় দেওয়ার।
মিস অ্যামস আরও বলেছেন, ত্রাণের কাজে অর্থ জোটানোও এখন মুশকিল হয়ে পড়ছে, কারণ কোনও এক পক্ষর হাতে ত্রাণ পৌঁছলে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে যে বিরোধ তা কোনওভাবে উসকানি পাক, দাতারাও সেটা চাইছেন না।
No comments