আজও অপেক্ষায় থাকবে বাংলাদেশ by নোমান মোহাম্মদ
স্বপ্নের ক্যারাভান থমকে গেছে হঠাৎ। প্রথম দুই ওয়ানডের জয়রথ তৃতীয় ম্যাচে এসে লাইনচুত। তাতে কী? সেটিকে কক্ষপথে ফেরানোর জন্য দু-দুটো সুযোগ থাকছে বাংলাদেশের সামনে। আজ। অথবা কাল। তাহলেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের সিরিজ জয়ের কীর্তিতে অমরত্ব নিশ্চিত হবে মুশফিক-তামিম-মাশরাফিদের।
সিরিজ শুরুর আগে অতটা কে ভাবতে পেরেছিল, বলুন!
ভাবা যায়নি। কারণ ওয়েস্ট ইন্ডিজের এ দলটি বাংলাদেশে এসেছিল সোনালি অতীতকে জাজ্বল্য বর্তমানে ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়ে। টেস্ট সিরিজে জিতে তারা সেই পথে প্রথম পদক্ষেপ এঁকে দিয়েছিল ভালোভাবেই। আর বাংলাদেশ? টোয়েন্টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ বিপর্যয়ের পর কোচহারা এক দল। তবে দিশাহারা হয়নি। টেস্ট সিরিজে না পারলেও ওয়ানডেতে ঠিকই ঘুরে দাঁড়িয়েছে। তো খুলনার প্রথম দুই ওয়ানডে জয়ের পর ঢাকায় পরশুর যে হোঁচট, সেখান থেকে আরেকবার স্মরণীয় প্রত্যাবর্তনের প্রত্যাশায় দোষ কোথায়!
অথচ এ ম্যাচটি পরিণত হতে পারত নিতান্তই আনুষ্ঠানিকতায়। কিংবা বাংলাদেশের হোয়াইটওয়াশের সম্ভাবনা টিকিয়ে রাখার আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেই আশঙ্কা দূর করার। তৃতীয় ওয়ানডেতে কিছু 'যদি-কিন্তু' স্বাগতিকদের পক্ষে এলেই হতো। সেটি হয়নি। তাই তো আবার রোমাঞ্চের আবাহন। সেটি বাংলাদেশের সিরিজ জয়ের যেমন, ক্যারিবিয়ানদের দোর্দণ্ড প্রতাপে ফিরে আসারও তেমনি। আর যদি চাপের কথা বলেন, তাহলে স্বাগতিকদের চেয়ে অতিথিদের কাঁধেই বোঝাটা বড়। কারণ আজ হারলেও কাল শেষ ওয়ানডেতে আরেক সুযোগ থাকবে মুশফিকুর রহিমের দলের। ড্যারেন সামির জন্য আর তা থাকবে না। গতকালের ম্যাচ যেমন তাদের জন্য ছিল ফাইনালতুল্য, আজ ও কালকের দ্বৈরথও তাই।
সে জন্যই কিনা কাল সাতসকালে অনুশীলনে হাজির ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সদলবলে। মধ্যাহ্নের সূর্য মাথায় নিয়ে শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে এলো বাংলাদেশ। মাত্র দুজন। তাও এমন দুজন, যাঁদের খেলার সম্ভাবনা প্রায় শূন্যের কোটায়। জিয়াউর রহমান ও জহুরুল ইসলামের ওই অনুশীলন ভবিষ্যতের জন্য নিজেদের তাতিয়ে রাখার। স্কোয়াডের বাকিরা ছিলেন বিশ্রামে। টানা খেলার ধকল সামলে ওঠার জন্য। বিশ্রামের সঙ্গী হিসেবে চোখে-মুখে স্বপ্নের আঁকিবুঁকিও যে ছিল তাঁদের!
বিকেলের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশের ওই স্বপ্নযাত্রায় আরেক সহচরের নাম ঘোষিত হয়েছে। বাঁহাতি স্পিনার ইলিয়াস সানি। সতীর্থ কারো ইনজুরির কারণে দলে ঢোকেননি তিনি। বরং তৃতীয় ওয়ানডেতে মিরপুরের উইকেটের আচরণ দেখে বাড়তি একজন স্পিনার চেয়েছিল টিম ম্যানেজমেন্ট। সে কারণেই সানি স্কোয়াডে। একাদশেও থাকছেন প্রায় নিশ্চিতভাবে। আগের ম্যাচে ৫ ওভারে ৪২ রান দেওয়া রুবেল হোসেনকে তাই হয়তো বনে যেতে হচ্ছে দর্শক। স্পিনারদের দিকে বন্ধুতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া আয়তক্ষেত্রে স্বাগতিকরা ভরসা রাখছে আরেক বাঁহাতি স্পিনারের ওপর।
রাখবে না? পরশুর ম্যাচের প্রায় পুরোটা সময়ই তো চলেছে স্পিনারদের তাণ্ডব। সিরিজে নখদন্তহীন হয়ে থাকা সুনীল নারিন হয়ে উঠেছিলেন ভয়ংকর। বিরাস্বামী পেরমল, ক্রিস গেইলরাও। আর শিশিরের কারণে দ্বিতীয় ইনিংসে খানিকটা সমস্যা হলেও আবদুর রাজ্জাক, সোহাগ গাজীদের ঘূর্ণি বলেই টিকে ছিল স্বাগতিকদের সম্ভাবনা। এমনকি মমিনুল হকের বাঁহাতি স্পিনের যথেষ্ট অস্বস্তিতে ছিলেন ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যানরা। ইলিয়াস সানি তাই আজ হয়ে যেতে পারেন মুশফিকের তুরুপের তাস।
মাঠের খেলায় কিছু করার আগে অবশ্য টসটা জিততে হবে বাংলাদেশ অধিনায়ককে। টানা তিন ওয়ানডেতে মুদ্রাভাগ্যে হারের পর এবার ভাগ্যের কিছুটা সহায়তা তাঁর প্রাপ্য। দিবারাত্রির ম্যাচে শিশিরের কারণে টস যে অনেক সময় হয়ে পড়ে মহাগুরুত্বপূর্ণ। ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের সহকারী কোচ সেটি মেনে নিলেন নির্দ্বিধায়। বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত কোচ শেন জার্গেনসেন অবশ্য ব্যাট-বলের সামর্থ্যকেই দিতে চাইলেন গুরুত্ব, 'টস নিয়ে অনেক আলোচনা আছে। তবে আমি মনে করি, আগে ব্যাট বা বল যা-ই করি না কেন, আমাদের ভালো করতে হবে। প্রথম দুই ম্যাচে সেটি করেছি বলেই জিতেছি। তৃতীয় ম্যাচে কিছু জায়গা ঠিকঠাক করতে পারিনি বলেই হেরেছি।' আজকের ম্যাচের আগে তাই খুলনার ম্যাচ দুটি থেকেই ইতিবাচকতার সন্ধানে কোচ, 'কঠিন এক টেস্ট সিরিজের পর ওয়ানডে সিরিজের শুরুতে আমরা যেমন প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছি, সেটি দুর্দান্ত। পরের ম্যাচের জন্য তাই ওই দুই ম্যাচ থেকে ইতিবাচক আবহ নিতে হবে আমাদের।'
সিরিজ শুরুর আগে ক্রিস গেইল ও সুনীল নারিনকে ভোঁতা করে দেওয়াই ছিল বাংলাদেশের মূল রণপরিকল্পনা। দুই টেস্ট ও দুই ওয়ানডে পর্যন্ত সেই পরিকল্পনা সফল। তৃতীয় ওয়ানডেতে এসে প্রথম পাল্টা আঘাত হানলেন নারিন। আজ কি তাহলে গেইলের পালা? ক্যারিবিয়ান ক্যাম্পে সেই আত্মবিশ্বাসের বারুদ। সহকারী কোচ এসে জানিয়ে গেলেন, গেইলের ব্যাট থেকে বারুদের বিস্ফোরণের প্রত্যাশার কথা। সেই প্রত্যাশার বারুদ ভিজিয়ে দিতে পারলে আজও জয়ের পথে অনেকটা এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। ইতিহাস গড়ার পথেও।
মুশফিকের দল যদি আজ তা পারে, তাহলে বিজয়ের আগুনপাখি ডানা মেলে উড়বে স্বপ্নের নীলাকাশে। হেমন্তের রাতে বেজে উঠবে বসন্ত-বাঁশি। সেই অপেক্ষায়ই আজ পুরো দেশ। পারবেন না মুশফিকরা?
ভাবা যায়নি। কারণ ওয়েস্ট ইন্ডিজের এ দলটি বাংলাদেশে এসেছিল সোনালি অতীতকে জাজ্বল্য বর্তমানে ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়ে। টেস্ট সিরিজে জিতে তারা সেই পথে প্রথম পদক্ষেপ এঁকে দিয়েছিল ভালোভাবেই। আর বাংলাদেশ? টোয়েন্টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ বিপর্যয়ের পর কোচহারা এক দল। তবে দিশাহারা হয়নি। টেস্ট সিরিজে না পারলেও ওয়ানডেতে ঠিকই ঘুরে দাঁড়িয়েছে। তো খুলনার প্রথম দুই ওয়ানডে জয়ের পর ঢাকায় পরশুর যে হোঁচট, সেখান থেকে আরেকবার স্মরণীয় প্রত্যাবর্তনের প্রত্যাশায় দোষ কোথায়!
অথচ এ ম্যাচটি পরিণত হতে পারত নিতান্তই আনুষ্ঠানিকতায়। কিংবা বাংলাদেশের হোয়াইটওয়াশের সম্ভাবনা টিকিয়ে রাখার আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেই আশঙ্কা দূর করার। তৃতীয় ওয়ানডেতে কিছু 'যদি-কিন্তু' স্বাগতিকদের পক্ষে এলেই হতো। সেটি হয়নি। তাই তো আবার রোমাঞ্চের আবাহন। সেটি বাংলাদেশের সিরিজ জয়ের যেমন, ক্যারিবিয়ানদের দোর্দণ্ড প্রতাপে ফিরে আসারও তেমনি। আর যদি চাপের কথা বলেন, তাহলে স্বাগতিকদের চেয়ে অতিথিদের কাঁধেই বোঝাটা বড়। কারণ আজ হারলেও কাল শেষ ওয়ানডেতে আরেক সুযোগ থাকবে মুশফিকুর রহিমের দলের। ড্যারেন সামির জন্য আর তা থাকবে না। গতকালের ম্যাচ যেমন তাদের জন্য ছিল ফাইনালতুল্য, আজ ও কালকের দ্বৈরথও তাই।
সে জন্যই কিনা কাল সাতসকালে অনুশীলনে হাজির ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সদলবলে। মধ্যাহ্নের সূর্য মাথায় নিয়ে শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে এলো বাংলাদেশ। মাত্র দুজন। তাও এমন দুজন, যাঁদের খেলার সম্ভাবনা প্রায় শূন্যের কোটায়। জিয়াউর রহমান ও জহুরুল ইসলামের ওই অনুশীলন ভবিষ্যতের জন্য নিজেদের তাতিয়ে রাখার। স্কোয়াডের বাকিরা ছিলেন বিশ্রামে। টানা খেলার ধকল সামলে ওঠার জন্য। বিশ্রামের সঙ্গী হিসেবে চোখে-মুখে স্বপ্নের আঁকিবুঁকিও যে ছিল তাঁদের!
বিকেলের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশের ওই স্বপ্নযাত্রায় আরেক সহচরের নাম ঘোষিত হয়েছে। বাঁহাতি স্পিনার ইলিয়াস সানি। সতীর্থ কারো ইনজুরির কারণে দলে ঢোকেননি তিনি। বরং তৃতীয় ওয়ানডেতে মিরপুরের উইকেটের আচরণ দেখে বাড়তি একজন স্পিনার চেয়েছিল টিম ম্যানেজমেন্ট। সে কারণেই সানি স্কোয়াডে। একাদশেও থাকছেন প্রায় নিশ্চিতভাবে। আগের ম্যাচে ৫ ওভারে ৪২ রান দেওয়া রুবেল হোসেনকে তাই হয়তো বনে যেতে হচ্ছে দর্শক। স্পিনারদের দিকে বন্ধুতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া আয়তক্ষেত্রে স্বাগতিকরা ভরসা রাখছে আরেক বাঁহাতি স্পিনারের ওপর।
রাখবে না? পরশুর ম্যাচের প্রায় পুরোটা সময়ই তো চলেছে স্পিনারদের তাণ্ডব। সিরিজে নখদন্তহীন হয়ে থাকা সুনীল নারিন হয়ে উঠেছিলেন ভয়ংকর। বিরাস্বামী পেরমল, ক্রিস গেইলরাও। আর শিশিরের কারণে দ্বিতীয় ইনিংসে খানিকটা সমস্যা হলেও আবদুর রাজ্জাক, সোহাগ গাজীদের ঘূর্ণি বলেই টিকে ছিল স্বাগতিকদের সম্ভাবনা। এমনকি মমিনুল হকের বাঁহাতি স্পিনের যথেষ্ট অস্বস্তিতে ছিলেন ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যানরা। ইলিয়াস সানি তাই আজ হয়ে যেতে পারেন মুশফিকের তুরুপের তাস।
মাঠের খেলায় কিছু করার আগে অবশ্য টসটা জিততে হবে বাংলাদেশ অধিনায়ককে। টানা তিন ওয়ানডেতে মুদ্রাভাগ্যে হারের পর এবার ভাগ্যের কিছুটা সহায়তা তাঁর প্রাপ্য। দিবারাত্রির ম্যাচে শিশিরের কারণে টস যে অনেক সময় হয়ে পড়ে মহাগুরুত্বপূর্ণ। ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের সহকারী কোচ সেটি মেনে নিলেন নির্দ্বিধায়। বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত কোচ শেন জার্গেনসেন অবশ্য ব্যাট-বলের সামর্থ্যকেই দিতে চাইলেন গুরুত্ব, 'টস নিয়ে অনেক আলোচনা আছে। তবে আমি মনে করি, আগে ব্যাট বা বল যা-ই করি না কেন, আমাদের ভালো করতে হবে। প্রথম দুই ম্যাচে সেটি করেছি বলেই জিতেছি। তৃতীয় ম্যাচে কিছু জায়গা ঠিকঠাক করতে পারিনি বলেই হেরেছি।' আজকের ম্যাচের আগে তাই খুলনার ম্যাচ দুটি থেকেই ইতিবাচকতার সন্ধানে কোচ, 'কঠিন এক টেস্ট সিরিজের পর ওয়ানডে সিরিজের শুরুতে আমরা যেমন প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছি, সেটি দুর্দান্ত। পরের ম্যাচের জন্য তাই ওই দুই ম্যাচ থেকে ইতিবাচক আবহ নিতে হবে আমাদের।'
সিরিজ শুরুর আগে ক্রিস গেইল ও সুনীল নারিনকে ভোঁতা করে দেওয়াই ছিল বাংলাদেশের মূল রণপরিকল্পনা। দুই টেস্ট ও দুই ওয়ানডে পর্যন্ত সেই পরিকল্পনা সফল। তৃতীয় ওয়ানডেতে এসে প্রথম পাল্টা আঘাত হানলেন নারিন। আজ কি তাহলে গেইলের পালা? ক্যারিবিয়ান ক্যাম্পে সেই আত্মবিশ্বাসের বারুদ। সহকারী কোচ এসে জানিয়ে গেলেন, গেইলের ব্যাট থেকে বারুদের বিস্ফোরণের প্রত্যাশার কথা। সেই প্রত্যাশার বারুদ ভিজিয়ে দিতে পারলে আজও জয়ের পথে অনেকটা এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। ইতিহাস গড়ার পথেও।
মুশফিকের দল যদি আজ তা পারে, তাহলে বিজয়ের আগুনপাখি ডানা মেলে উড়বে স্বপ্নের নীলাকাশে। হেমন্তের রাতে বেজে উঠবে বসন্ত-বাঁশি। সেই অপেক্ষায়ই আজ পুরো দেশ। পারবেন না মুশফিকরা?
No comments