হলিউড- হলিউডে নির্বাচনী উত্তাপ

বারাক ওবামার ব্যারাকে ভিড়েছিলেন কারা? মিট রমনিই বা বাগিয়ে নিয়েছিলেন হলিউডের কোন কোন রমণীকে? দলে টেনেছিলেন কোন কোন রমণীমোহন তারকাকে? মঙ্গলবার হয়ে যাওয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের উত্তাপ কিন্তু ঠিকই এসে পড়েছিল হলিউডে। এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যখন থেকে পাওয়া যাচ্ছিল হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পূর্বাভাস, হলিউডের তারকারাও তখনই ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন শেষ মুহূর্তের প্রচারণায়।


হলিউডের তারকাদের নিজ নিজ দলে টানার ব্যাপারেও ওবামা আর রমনির মধ্যে সেয়ানে সেয়ানে লড়াই হয়েছে। এখানেও দুজনের মধ্যে ব্যবধান ছিল সামান্যই। আর সেই ভগ্নাংশের ব্যবধানে এগিয়ে থাকা মানুষটি কিন্তু ছিলেন ওবামা।
টম হ্যাঙ্কসের মতো হলিউডের প্রভাবশালী তারকাকে পাশে পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট। কেটি পেরি, পার্ল জ্যাম, জে-জি, বিয়ন্স, ক্যাথি গ্রিফিন, চের, ক্রিস রক, নিল ডায়মন্ড, জুলিয়ানে মুর, এভা লঙ্গোরিয়া, উইল ফেরেল, জেনিফার লোপেজ ও স্কারলেট জোহানসনের মতো তারকারা প্রকাশ্যেই ওবামার পক্ষে প্রচারণা চালিয়েছেন। তাঁরা সবাই নীল দলের শিবিরের মানুষ।
ভোটের মাত্র কিছুদিন আগে এক প্রচারণায় কেটি পেরির পরনে দেখা গেছে নীল পোশাক, যেখানে ছিল ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী ওবামার লোগো। এর আগে পেরি এমন একটা সাদা শার্ট পরেছিলেন, যেটা দেখতে অনেকটা ব্যালট পেপারের মতো।
সংগীতশিল্পী নিল ডায়মন্ড ওবামার নির্বাচনী প্রচারণায় ফোনের ব্যাপারটা সামলেছেন। নিজের টুইটারে ছবিসহ একটা বার্তাও তিনি দিয়েছিলেন: ‘যদি আমি আপনাকে ফোন করি, ফোনটা ধরতে ভুলবেন না যেন।’
হলিউডের আরেক প্রভাবশালী তারকা জর্জ ক্লুনি। তিনি নাকি আব্রাহাম লিঙ্কনের আত্মীয়। তবে লিঙ্কনের রিপাবলিকান নয়, ক্লুনির পছন্দ ডেমোক্রেটিক পার্টিই। গতবারের মতো এবারও ওবামার নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যস্ত ছিলেন ক্লুনি। তহবিল জোগাড়ে খেটেছেন। ছিলেন বেশ কিছু অনুষ্ঠানের উপস্থাপনাতেও। ওবামা সমর্থক হিসেবে পেয়েছেন অপরাহ উইনফ্রে, ব্র্যাড পিটদেরও। গত বছরের মতো এ বছরও ওবামাকে ভোট দেবেন বলে মন্তব্য করেছেন টম হ্যাঙ্কস।
লাল দলের শিবিরেও কিন্তু তারকার পাল্লা কম ভারী ছিল না। মিট রমনি আর তাঁর রানিংমেট পল রায়ানের পাশে ছিলেন ক্লিন্ট ইস্টউড, হানি বু বু, কিড রক, কেলসি গ্রামার, ডোনাল্ড ট্রাম্প, জ্যাক নিকলাস, কান্ট্রি মিউজিকের ওক রিজ বয়েজ, লি গ্রিনউড। মিট লোফ তাঁর মিতা মিট রমনির পাশে তো দাঁড়াবেনই। তবে এত এত সমর্থন না থাকলেও চলত রিপাবলিকান রমনির। এক চাক নরিসকে পেয়েছেন, আর কাকে চাই তাঁর!
মিতার জন্য আবেগের সীমা ছিল না লোফের। এক অনুষ্ঠানে মঞ্চে উঠে রীতিমতো আবেগপ্রবণ কণ্ঠে ভাষণ দিয়েছেন। ঘোষণার সুরে বলেছেন, রমনির জন্য যা যা দরকার, সবই করবেন। ‘সবই’ করতে প্রস্তুত লোফ অবশ্য আসল কাজটাই করেননি। নিজ রাজ্যে ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হননি। ফলে ভোটই দিতে পারেননি এই শিল্পী!
নির্বাচনে তারকারা অবশ্য ভোটারদের ওপর খুব একটা প্রভাব বিস্তার করতে পারেন না বলেই বিশ্লেষকেরা মনে করেন। নিউ অরলিন্সের এক কনসার্টে যেমন ওবামার পক্ষে ভোট চাইতে গিয়ে বিদ্রূপেরই শিকার হয়েছেন ম্যাডোনা। অনেকে কনসার্ট ছেড়ে বেরিয়েও গেছে। কিন্তু তার পরও তাঁদের গুরুত্ব কোনো অংশেই কম নয়। ভোটারদের চেয়ে তাঁদের বেশি প্রয়োজন নির্বাচনী কাজে অংশ নেওয়া কর্মীদের। এই কর্মীদের চাঙা রাখতে তারকাদের মতো মহৌষধ আর কোথায় বা মেলে!
 রাজীব হাসান
এলএ টাইমস ও হলিউড রিপোর্টার অবলম্বনে

No comments

Powered by Blogger.