বলিউডআলিয়া, বরুণ, সিদ্ধার্থ- ত্রয়ীর জয়
‘তিনি যেখানেই হাত দেন, সেখানেই সোনা ফলে’—এ কথাটি প্রমাণ করার জন্যই বুঝি পরিচালক করন জোহর প্রথমবারের মতো তিনজন নতুন মুখ নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ করলেন। কুচ কুচ হোতা হ্যায়, কাভি খুশি কাভি গাম, কাল হো না হো কিংবা কাভি আলবিদা না কেহ নার মতো তাঁর এবারের ছবির নাম ‘কে’ আদ্যক্ষর দিয়ে শুরু হয়নি।
ছবির নাম স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার। অবশ্য করন তাঁর আগের ছবিতেই ‘কে’র মায়া ত্যাগ করেছিলেন। তবে এবারই প্রথম আলিয়া ভাট, বরুণ ধাওয়ান ও সিদ্ধার্থ মালহোত্রা—তিন নতুনকে নিয়ে ৩০ কোটি রুপির বাজি ধরেছিলেন করন। বক্স অফিসের রায় অনুযায়ী করন বাজিতে শুধু জেতেননি, ছক্কাও পিটিয়েছেন। ১৬ দিনে এ ছবির সম্মিলিত আয় ৭৯ কোটি রুপি! এর আগে ববি, কেয়ামত সে কেয়ামত তাক, আশিকি, কহো না পেয়ার হ্যায়—কোনো ছবির ভাগ্যেই এত বড় সাফল্য জোটেনি। স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার-এর সাফল্যের কারণে রাতারাতি তারকা বনে গেছেন আলিয়া, বরুণ, সিদ্ধার্থ। বালাজি টেলিফিল্মসের একতা কাপুর তিন ছবির চুক্তি করেছেন সিদ্ধার্থের সঙ্গে। আলিয়া চেতন ভগতের বেস্ট সেলার টু স্টেটস অবলম্বনে করন জোহর প্রডাকশনের ছবিতে অভিনয় করছেন অর্জুন কাপুরের বিপরীতে। বরুণ ধাওয়ান সঞ্জয় লীলা বানসালির নতুন ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব পেয়েছেন।
আলিয়ার সাফল্যে সমালোচকেরা চিন্তায় পড়েছেন। এ বছর নতুন মুখের পুরস্কার কে পাবেন? আলিয়া নাকি ইলিয়েনা (বরফি), ডায়না (ককটেল), ইয়ামি গৌতম (ভিকি ডোনার), সানি লিওন (জিসম টু), ইশা গুপ্ত (জান্নাত ২, রাজ ৩)? নায়কদের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইটা আরও বেশি। অর্জুন কাপুর (ইশাকজাদে) এগিয়ে আছেন বেশ খানিকটা। শুধু তা-ই নয়, স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার-এ কে শ্রেষ্ঠ, বরুণ না সিদ্ধার্থ—তা নিয়েই দ্বিধান্বিত সবাই। পরিচালক ডেভিড ধাওয়ানের ছোট ছেলে হওয়ায় বরুণের দিকে বলিউডবাসীর মায়া যেন একটু বেশি। আবার সাবেক মডেল সিদ্ধার্থ মালহোত্রা ফিল্মি পরিবারের সন্তান না হয়েও প্রথম ইনিংসে ছক্কা পিটিয়েছেন—এই মূল্যায়ন করতেও ভুলে যাচ্ছেন না কেউই। মজার ব্যাপার হলো, মহেশ ভাটের ছোট মেয়ে ১৯ বছরের আলিয়া এবং ডেভিড ধাওয়ানের ছেলে বরুণ কেউই নিজের বাবার ছবিতে এখনই অভিনয় করতে রাজি নন। আলিয়া ও বরুণ বোধ হওয়ার পর থেকেই তারকা হতে চেয়েছিলেন বটে, তবে তারকার সন্তান হওয়ার পরও কাঠখড় পুড়িয়েই করনের ছবিতে সুযোগ পেয়েছিলেন। সোনম কাপুর, সোনাক্ষী সিনহার মতো তিন বছর আগে আলিয়ার ওজন ছিল ৯০ কিলোগ্রাম। ‘করন একদিন আমার অডিশন নিয়ে বললেন, ‘সব ঠিক আছে, তবে ওজন কমাতে হবে। পাঁচ মাসে জেরিন ওয়াটসনের তত্ত্বাবধানে থেকে ৪৫ কিলো ওজন কমালাম! ভাবা যায়?’ আলিয়া বলেন, ‘ছোটবেলায় কারিশমা-গোবিন্দকে রাস্তায় নাচতে দেখে আমারও নাচতে ইচ্ছা হতো। শিশুমনে প্রশ্ন জাগত, ওরা কারা এভাবে রাস্তায় নাচে? কীভাবে ওরা রাস্তায় নাচার অনুমতি পায়? এত দ্রুত রাস্তায় পোশাক পাল্টে ফেলে? অভিনেত্রী হওয়ার পুরো প্রক্রিয়াটিই আমাকে ধীরে ধীরে আন্দোলিত করতে শুরু করল।
সোনম-রণবীর যেমন সাওয়ারিয়াতে অভিনয়ের আগে ব্ল্যাক ছবিতে বানসালির সহকারীর কাজ করেছিলেন, ঠিক তেমনি বরুণ-সিদ্ধার্থও মাই নেইম ইজ খান ছবিতে করনের সহকারীর কাজ করেছিলেন। দুজনই স্বীকার করেন, সহকারী পরিচালনা ছিল স্রেফ ‘বাহানা’! মাথার মধ্যে ছিল, কী করে নায়ক হওয়া যায়! বরুণ বলেন, ‘ওই ছবির সেটে আমাদের সঙ্গে করনের সম্পর্ক ছিল “ইয়েস স্যার” টাইপের। শাহরুখ-কাজলকে দৃশ্য বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য সব সময় সিদ্ধার্থকে সাজতে হতো শাহরুখ, আমি করতাম কাজলের চরিত্রটি। শাহরুখ-কাজলের একটি ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে খুব মজা করে আমরা অভিনয় করেছিলাম। মনিটরে ওই দৃশ্য দেখে করনের ভালো লেগে যায়। পরবর্তী সময়ে ব্যারি জোন্সের তত্ত্বাবধানে দীর্ঘদিন অভিনয় শিখি।’ সিদ্ধার্থ বলেন, ‘দিল্লি থেকে মুম্বাই এসে যখন অন্তর্বাসের বিজ্ঞাপন ছাড়া আর কোনো কাজ পাচ্ছিলাম না, হতাশ হয়ে পড়েছিলাম। সে সময় রিকশায় চড়ে আমার এক বন্ধুর সঙ্গে যাচ্ছিলাম। বন্ধুই আমাকে সহকারী পরিচালক হওয়ার পরামর্শ দেয়। এরপর দীর্ঘদিন চেষ্টার পর করনের সহকারী হওয়ার সুযোগ পাই। সেখান থেকে স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার।’
আলিয়া-বরুণ-সিদ্ধার্থ কেউই ভাবতে পারেননি এ ছবিটি করন পরিচালনা করবেন। বরুণ-সিদ্ধার্থ তো ভেবেই নিয়েছিলেন, তরুণ মনসুখানি (দোস্তানা) কিংবা পুনিত মালহোত্রা (আই হেইট লাভ স্টোরি) স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার পরিচালনা করবেন। কিন্তু একদিন যখন করন নিজে বরুণ ও আলিয়ার বাড়িতে এসে জানালেন, তিনি নিজে এবার নতুনদের নির্দেশনা দেবেন, আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়ে তিন নতুনের পরিবার। বরুণের মা, ডেভিড ধাওয়ানের স্ত্রী রীতিমতো খুশিতে আত্মহারায় অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। মহেশ ভাট ঠিক করেন, ছবির এ-টু-জেড কোনো কিছু না জেনে সরাসরি মেয়ের অভিনয় প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে দেখবেন। অবশ্য ‘ডিস্কো দিওয়ানে’ গান টিভিতে প্রচারের পর থেকে মহেশ ভাটের আর তর সয়নি। করনের অফিসে গিয়ে দেখে আসেন সশরীরে। এ ছবি দেখে করনের কট্টর সমালোচক রাম গোপাল ভার্মাও টুইটস দিয়েছেন, ‘এই প্রথম করন মানসম্পন্ন কোনো ছবি নির্মাণ করলেন। শাহরুখ খান ছবির প্রোমো দেখে বরুণকে টেক্সট মেসেজ দিয়ে জানান, ‘প্রমো চমৎকার। শুধু একটি অনুরোধ, অন্যকে সম্মান কোরো। তা-হলে নিজেও সম্মানিত হবে।’ সালমান খান দুই নায়ককে বাড়িতে ডেকে এক কার্টন ‘বিং হিউম্যান’ টি-শার্ট, এক্সেসরিজ উপহার দেন। টুইটস দেন, ‘বরুণ, আলিয়া, সিদ্ধার্থ—গিফট অব দ্য ইয়ার!’ সত্যিই তাই। চায়ের কাপ থেকে ফেসবুক, টুইটার ত্রয়ীদের জয় নিয়ে এখন মুখর সবাই।
রুম্মান রশীদ খান
ইন্ডিসিনে, বলিউড লাইফ, বলিউড হাঙ্গামা, ফিল্মফেয়ার, স্টারডাস্ট, রেডিফ ডট কম অবলম্বনে
আলিয়ার সাফল্যে সমালোচকেরা চিন্তায় পড়েছেন। এ বছর নতুন মুখের পুরস্কার কে পাবেন? আলিয়া নাকি ইলিয়েনা (বরফি), ডায়না (ককটেল), ইয়ামি গৌতম (ভিকি ডোনার), সানি লিওন (জিসম টু), ইশা গুপ্ত (জান্নাত ২, রাজ ৩)? নায়কদের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইটা আরও বেশি। অর্জুন কাপুর (ইশাকজাদে) এগিয়ে আছেন বেশ খানিকটা। শুধু তা-ই নয়, স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার-এ কে শ্রেষ্ঠ, বরুণ না সিদ্ধার্থ—তা নিয়েই দ্বিধান্বিত সবাই। পরিচালক ডেভিড ধাওয়ানের ছোট ছেলে হওয়ায় বরুণের দিকে বলিউডবাসীর মায়া যেন একটু বেশি। আবার সাবেক মডেল সিদ্ধার্থ মালহোত্রা ফিল্মি পরিবারের সন্তান না হয়েও প্রথম ইনিংসে ছক্কা পিটিয়েছেন—এই মূল্যায়ন করতেও ভুলে যাচ্ছেন না কেউই। মজার ব্যাপার হলো, মহেশ ভাটের ছোট মেয়ে ১৯ বছরের আলিয়া এবং ডেভিড ধাওয়ানের ছেলে বরুণ কেউই নিজের বাবার ছবিতে এখনই অভিনয় করতে রাজি নন। আলিয়া ও বরুণ বোধ হওয়ার পর থেকেই তারকা হতে চেয়েছিলেন বটে, তবে তারকার সন্তান হওয়ার পরও কাঠখড় পুড়িয়েই করনের ছবিতে সুযোগ পেয়েছিলেন। সোনম কাপুর, সোনাক্ষী সিনহার মতো তিন বছর আগে আলিয়ার ওজন ছিল ৯০ কিলোগ্রাম। ‘করন একদিন আমার অডিশন নিয়ে বললেন, ‘সব ঠিক আছে, তবে ওজন কমাতে হবে। পাঁচ মাসে জেরিন ওয়াটসনের তত্ত্বাবধানে থেকে ৪৫ কিলো ওজন কমালাম! ভাবা যায়?’ আলিয়া বলেন, ‘ছোটবেলায় কারিশমা-গোবিন্দকে রাস্তায় নাচতে দেখে আমারও নাচতে ইচ্ছা হতো। শিশুমনে প্রশ্ন জাগত, ওরা কারা এভাবে রাস্তায় নাচে? কীভাবে ওরা রাস্তায় নাচার অনুমতি পায়? এত দ্রুত রাস্তায় পোশাক পাল্টে ফেলে? অভিনেত্রী হওয়ার পুরো প্রক্রিয়াটিই আমাকে ধীরে ধীরে আন্দোলিত করতে শুরু করল।
সোনম-রণবীর যেমন সাওয়ারিয়াতে অভিনয়ের আগে ব্ল্যাক ছবিতে বানসালির সহকারীর কাজ করেছিলেন, ঠিক তেমনি বরুণ-সিদ্ধার্থও মাই নেইম ইজ খান ছবিতে করনের সহকারীর কাজ করেছিলেন। দুজনই স্বীকার করেন, সহকারী পরিচালনা ছিল স্রেফ ‘বাহানা’! মাথার মধ্যে ছিল, কী করে নায়ক হওয়া যায়! বরুণ বলেন, ‘ওই ছবির সেটে আমাদের সঙ্গে করনের সম্পর্ক ছিল “ইয়েস স্যার” টাইপের। শাহরুখ-কাজলকে দৃশ্য বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য সব সময় সিদ্ধার্থকে সাজতে হতো শাহরুখ, আমি করতাম কাজলের চরিত্রটি। শাহরুখ-কাজলের একটি ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে খুব মজা করে আমরা অভিনয় করেছিলাম। মনিটরে ওই দৃশ্য দেখে করনের ভালো লেগে যায়। পরবর্তী সময়ে ব্যারি জোন্সের তত্ত্বাবধানে দীর্ঘদিন অভিনয় শিখি।’ সিদ্ধার্থ বলেন, ‘দিল্লি থেকে মুম্বাই এসে যখন অন্তর্বাসের বিজ্ঞাপন ছাড়া আর কোনো কাজ পাচ্ছিলাম না, হতাশ হয়ে পড়েছিলাম। সে সময় রিকশায় চড়ে আমার এক বন্ধুর সঙ্গে যাচ্ছিলাম। বন্ধুই আমাকে সহকারী পরিচালক হওয়ার পরামর্শ দেয়। এরপর দীর্ঘদিন চেষ্টার পর করনের সহকারী হওয়ার সুযোগ পাই। সেখান থেকে স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার।’
আলিয়া-বরুণ-সিদ্ধার্থ কেউই ভাবতে পারেননি এ ছবিটি করন পরিচালনা করবেন। বরুণ-সিদ্ধার্থ তো ভেবেই নিয়েছিলেন, তরুণ মনসুখানি (দোস্তানা) কিংবা পুনিত মালহোত্রা (আই হেইট লাভ স্টোরি) স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার পরিচালনা করবেন। কিন্তু একদিন যখন করন নিজে বরুণ ও আলিয়ার বাড়িতে এসে জানালেন, তিনি নিজে এবার নতুনদের নির্দেশনা দেবেন, আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়ে তিন নতুনের পরিবার। বরুণের মা, ডেভিড ধাওয়ানের স্ত্রী রীতিমতো খুশিতে আত্মহারায় অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। মহেশ ভাট ঠিক করেন, ছবির এ-টু-জেড কোনো কিছু না জেনে সরাসরি মেয়ের অভিনয় প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে দেখবেন। অবশ্য ‘ডিস্কো দিওয়ানে’ গান টিভিতে প্রচারের পর থেকে মহেশ ভাটের আর তর সয়নি। করনের অফিসে গিয়ে দেখে আসেন সশরীরে। এ ছবি দেখে করনের কট্টর সমালোচক রাম গোপাল ভার্মাও টুইটস দিয়েছেন, ‘এই প্রথম করন মানসম্পন্ন কোনো ছবি নির্মাণ করলেন। শাহরুখ খান ছবির প্রোমো দেখে বরুণকে টেক্সট মেসেজ দিয়ে জানান, ‘প্রমো চমৎকার। শুধু একটি অনুরোধ, অন্যকে সম্মান কোরো। তা-হলে নিজেও সম্মানিত হবে।’ সালমান খান দুই নায়ককে বাড়িতে ডেকে এক কার্টন ‘বিং হিউম্যান’ টি-শার্ট, এক্সেসরিজ উপহার দেন। টুইটস দেন, ‘বরুণ, আলিয়া, সিদ্ধার্থ—গিফট অব দ্য ইয়ার!’ সত্যিই তাই। চায়ের কাপ থেকে ফেসবুক, টুইটার ত্রয়ীদের জয় নিয়ে এখন মুখর সবাই।
রুম্মান রশীদ খান
ইন্ডিসিনে, বলিউড লাইফ, বলিউড হাঙ্গামা, ফিল্মফেয়ার, স্টারডাস্ট, রেডিফ ডট কম অবলম্বনে
No comments