কী শিক্ষা দিয়ে গেল আমাদের?- মুঠোফোনের গান ও ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যু

কোনো দুর্ঘটনা ঘটলেই আমরা নানা ‘কর্তৃপক্ষকে’ দায়ী করি। তাদের ব্যর্থতা ও দায়িত্বহীনতা নিয়ে অনেক প্রশ্ন তুলি। আর দুর্ঘটনা মানেই যেহেতু জীবন ও সম্পদের হানি ও ক্ষতি, তাই এ ধরনের ঘটনাগুলো আমাদের স্পর্শ করে, আলোড়িত করে। গত সোমবার সিলেটে ট্রেনে কাটা পড়ে একজনের যে মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটল, তা একইভাবে আমাদের মর্মাহত করল, কিন্তু এতে ‘কর্তৃপক্ষীয়’ ব্যর্থতা খোঁজার সুযোগ নেই, নিজেদের সচেতনতা ও সতর্কতাই এখানে সবচেয়ে বড়।


সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার চতুল গ্রামের লোকমান আহমেদের গান যে খুব প্রিয় ছিল তাতে কোনো সন্দেহ নেই। আর গান পছন্দ করার মধ্যে দোষেরও কিছু নেই। কিন্তু তিনি যে ভুলটি করেছেন সেটা এমনই এক ভুল, যার ক্ষতি কোনোভাবেই আর পূরণ করা সম্ভব নয়। জীবন দিয়েই তিনি সেই ভুলের মাশুল দিয়ে গেছেন। মুঠোফোনে ইয়ারফোন লাগিয়ে তিনি গান শুনছিলেন রেললাইনে বসে। গান শুনতে মশগুল হতভাগ্য লোকমান আর টেরই পাননি কখন ট্রেন চলে এসেছে। শেষ পর্যন্ত যা হওয়ার তা-ই হয়েছে; ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যু। নিহত লোকমানের পরিবার-পরিজন ও বন্ধু-বান্ধবদের প্রতি আমরা শোক ও সমবেদনা জানাই। একই সঙ্গে এই দুঃখজনক ঘটনাটি আমাদের যে শিক্ষা দিয়ে গেল তার প্রতি সবার দৃষ্টি ও মনোযোগ আকর্ষণ করতে চাই।
আমরা নিয়মিতই পথে-ঘাটে ও নানা কাজকর্মে অসচেতনতার পরিচয় দিই। মুঠোফোনে কথা বলতে বলতে গাড়ি চালানোর দৃশ্য যে কারোরই চোখে পড়বে। এ অবস্থায় রাস্তা পার হন অনেকে, অনেকে একইভাবে কানে ইয়ারফোন লাগিয়ে পথ চলেন। এটা আমাদের অনেকেরই বিবেচনায় থাকে না যে দুর্ঘটনা একবারই ঘটে এবং এর ক্ষতি কোনোভাবেই পূরণ করা যায় না। আসুন, আমরা সতর্ক হই। গাড়ি চালানের সময় মুঠোফোনের ব্যবহার বন্ধ করি, পথ চলতে চলতে ফোনে কথা না বলি, কানে ইয়ারফোন লাগিয়ে চলাফেরা না করি। লোকমানের মৃত্যু তো এই শিক্ষাই আমাদের দিয়ে গেল।

No comments

Powered by Blogger.