সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ by রিয়াজ মিলটন
নির্বাচনী বৈতরণী ভালোয় ভালোয় পার হলেও দ্বিতীয় দফা রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে এবার ওবামাকে ঘরে-বাইরে আরো কঠিনসব বিষয় সামাল দিতে হবে। রাজনীতিই যেখানে মূল খেলা, সেখানে সমস্যারও সমাধান দিতে হবে রাজনৈতিকভাবেই। বিশ্লেষকদের মতে, প্রেসিডেন্টের প্রথম দফায় ২০০৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক দুর্দশা কাটিয়ে উঠতে যে অঙ্গীকার তিনি করেছিলেন এর সুরাহা তো হয়নিই বরং চার বছরে বাজেট ঘাটতি রেকর্ড বৃদ্ধির কারণে দুর্দশা আরো বেড়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, ওবামার সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকারের ঋণের বোঝা কমিয়ে অর্থনীতিকে সঠিক পথে নিয়ে আসা, ব্যয়ের লাগাম টেনে ধরা, লাখ লাখ বেকার জনগোষ্ঠীর জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি, স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত, জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি, জনগণের নিরাপত্তা, মৌলিক সুযোগ-সুবিধা প্রদান, ব্যবসা ও বিনিয়োগবান্ধব মুদ্রানীতি ও একটি মানানসই করনীতি প্রণয়নসহ অভ্যন্তরীণ নানা বিষয়ের সুরাহা করা। এ ছাড়া ইরাক, আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর সেখানকার উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলা, পরিবর্তিত আরব বিশ্বে নিজেদের অবস্থান সংহত রাখাসহ একগাদা সমস্যা মোকাবিলা করতে হবে তাঁকে। তবে রাজনীতিই যেখানে মূল খেলা সেখানে বিভাজিত কংগ্রেসে বিরোধীদের কাছ থেকে কেমন সহায়তা পাবেন তার কোনো ইঙ্গিত আগেভাগে পাওয়ার উপায় নেই বলে রাজনৈতিকভাবেই মোকাবিলা করতে হবে সমস্যাগুলো।
অর্থনৈতিক ধস রোধ : নির্বাচনী প্রচারে ওবামা যখন দেশ চষে বেড়াচ্ছিলেন, তখন যে প্রশ্নের সম্মুখীন তাঁকে হতে হয়েছে সেটা হচ্ছে- অর্থনৈতিক মন্দা কাটিয়ে উঠতে তাঁর সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের জনগণকে কতটা স্বস্তিতে রাখতে পারবে। বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা অব্যাহত থাকলে সরকারের কর বৃদ্ধি ও ব্যয় হ্রাস করতে হবে। ফলে বাজেট ঘাটতি আরো বাড়বে। সুতরাং জানুয়ারিতে শপথ নেওয়ার পর তাঁকে যে বিষয়টি নিয়ে সবচেয়ে বেশি মাথা ঘামাতে হবে তা হচ্ছে আর্থিক ধস এড়ানো। আর এর জন্য তাঁকে বেশ কিছু জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে বলে মনে করছেন অনেকেই। এ অবস্থায় তিনি কতটা সফল হতে পারবেন তা নিয়ে ব্যাপক বিতর্কও রয়েছে।
পার্লামেন্টে রিপাবলিকানদের বাধা মোকাবিলা : এবারের নির্বাচনের ফলে পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতার হিসাব আগের মতোই থাকছে। নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে রিপাবলিকানরা আর উচ্চকক্ষ সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে ডেমোক্র্যাটরা।
বিশ্লেষকদের মতে, এ অবস্থায় কোনো একটা সিদ্ধান্ত নিতে হলে আগের মতোই বেগ পেতে হবে ওবামাকে। তাঁদের মতে, ওবামা কংগ্রেসে রিপাবলিকানদের এখন কিভাবে মোকাবিলা করবেন সেটাই দেখার বিষয়। রিপাবলিকান দলের সদস্যরা যদি বরাবরের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে ওবামার বিরুদ্ধাচরণ করেন, তবে বেশ বেকায়দায় পড়তে হবে। এখন তিনি তাঁর কার্যসিদ্ধিতে কতটা বিচক্ষণতার পরিচয় দেবেন, তার ওপরই নির্ভর করছে তাঁর সাফল্য।
কর আইন সংস্কারে মতৈক্যে পৌঁছানো : নির্বাচনী প্রচারণায় দুই প্রার্থীই জনগণের সামনে যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে কর কমানো। করপোরেট কর শতকরা ২৫ ভাগ পর্যন্ত কমানোর প্রতিশ্রুতি দেন তাঁরা। কিন্তু ব্যক্তিগত করের ক্ষেত্রে তাঁদের মধ্যে মতদ্বৈততা ছিল। সুতরাং কর আইন সংস্কারের ক্ষেত্রেও রিপাবলিকানদের কাছ থেকে পরিপূর্ণ সাড়া পাবেন না বলেই মনে করছেন অনেকে।
জলবায়ু পরিবর্তন সমস্যা : নির্বাচনী প্রচারে এই সমস্যার কথাটি উঠে না এলেও আগের দফায় ওবামা জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে একটি আইন পাসের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। রিপাবলিকানদের বাধায় ২০১০ সালে নেওয়া ওই উদ্যোগের আতুড়েই মৃত্যু ঘটে। সাম্প্রতিক মন্দার সময় জ্বালানির দাম বেড়ে যায়, যার প্রভাব পড়ে সরাসরি জনগণের ওপর। নির্বাচনের ঠিক আগে আগে যুক্তরাষ্ট্রে আঘাত হানে স্মরণকালের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়, প্রভাব কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করে যাচ্ছে শত শত লোক। এমন অবস্থায় সবুজ পৃথিবী গড়ায় যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গীকার পূরণের বিষয়টি আবারও সামনে চলে এসেছে। তাই স্বভাবতই দাবি উঠবে কার্বন কর বাড়ানোর। এ বিষয়টি মোকাবিলায়ও ওবামাকে কঠোর সমস্যায় পড়তে হতে পারে।
আরব বিশ্বে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা : দেশের অর্থনীতিকে অবশ্যই প্রথমে গুরুত্ব দিতে হবে এটা ঠিক। কিন্তু আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে তাঁর অবস্থান ধরে রাখার বিষয়টিও কম গুরুত্ব দিয়ে দেখলে হবে না বলে মনে করছেন অনেকেই। ইরাক ও আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর সেখানকার উদ্ভূত পরিস্থিতি কোনদিকে মোড় নেয়, সেটার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। টানা কয়েক বছরের সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ করার পর সেখানে যদি যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্য সফল না হয়, তবে পুরো দায়টা বর্তাবে প্রেসিডেন্টের ওপরই। তার ওপর আছে আরব বিশ্বের সাম্প্রতিক গণজাগরণ। বিশ্লেষকদের মধ্যে আরব বিশ্বে মার্কিনিদের প্রতি সমর্থন ধরে রাখতে হবে ওবামাকেই। ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ও সিরিয়ায় চলমান গৃহযুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান নির্ধারণসহ বিভিন্ন বিষয় তাঁকে বিচক্ষণতার সঙ্গে সামাল দিতে হবে। এর ওপরই নির্ভর করছে তাঁর সাফল্য। সূত্র : ওয়াশিংটন পোস্ট, এএফপি, সিএনএন।
অর্থনৈতিক ধস রোধ : নির্বাচনী প্রচারে ওবামা যখন দেশ চষে বেড়াচ্ছিলেন, তখন যে প্রশ্নের সম্মুখীন তাঁকে হতে হয়েছে সেটা হচ্ছে- অর্থনৈতিক মন্দা কাটিয়ে উঠতে তাঁর সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের জনগণকে কতটা স্বস্তিতে রাখতে পারবে। বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা অব্যাহত থাকলে সরকারের কর বৃদ্ধি ও ব্যয় হ্রাস করতে হবে। ফলে বাজেট ঘাটতি আরো বাড়বে। সুতরাং জানুয়ারিতে শপথ নেওয়ার পর তাঁকে যে বিষয়টি নিয়ে সবচেয়ে বেশি মাথা ঘামাতে হবে তা হচ্ছে আর্থিক ধস এড়ানো। আর এর জন্য তাঁকে বেশ কিছু জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে বলে মনে করছেন অনেকেই। এ অবস্থায় তিনি কতটা সফল হতে পারবেন তা নিয়ে ব্যাপক বিতর্কও রয়েছে।
পার্লামেন্টে রিপাবলিকানদের বাধা মোকাবিলা : এবারের নির্বাচনের ফলে পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতার হিসাব আগের মতোই থাকছে। নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে রিপাবলিকানরা আর উচ্চকক্ষ সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে ডেমোক্র্যাটরা।
বিশ্লেষকদের মতে, এ অবস্থায় কোনো একটা সিদ্ধান্ত নিতে হলে আগের মতোই বেগ পেতে হবে ওবামাকে। তাঁদের মতে, ওবামা কংগ্রেসে রিপাবলিকানদের এখন কিভাবে মোকাবিলা করবেন সেটাই দেখার বিষয়। রিপাবলিকান দলের সদস্যরা যদি বরাবরের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে ওবামার বিরুদ্ধাচরণ করেন, তবে বেশ বেকায়দায় পড়তে হবে। এখন তিনি তাঁর কার্যসিদ্ধিতে কতটা বিচক্ষণতার পরিচয় দেবেন, তার ওপরই নির্ভর করছে তাঁর সাফল্য।
কর আইন সংস্কারে মতৈক্যে পৌঁছানো : নির্বাচনী প্রচারণায় দুই প্রার্থীই জনগণের সামনে যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে কর কমানো। করপোরেট কর শতকরা ২৫ ভাগ পর্যন্ত কমানোর প্রতিশ্রুতি দেন তাঁরা। কিন্তু ব্যক্তিগত করের ক্ষেত্রে তাঁদের মধ্যে মতদ্বৈততা ছিল। সুতরাং কর আইন সংস্কারের ক্ষেত্রেও রিপাবলিকানদের কাছ থেকে পরিপূর্ণ সাড়া পাবেন না বলেই মনে করছেন অনেকে।
জলবায়ু পরিবর্তন সমস্যা : নির্বাচনী প্রচারে এই সমস্যার কথাটি উঠে না এলেও আগের দফায় ওবামা জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে একটি আইন পাসের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। রিপাবলিকানদের বাধায় ২০১০ সালে নেওয়া ওই উদ্যোগের আতুড়েই মৃত্যু ঘটে। সাম্প্রতিক মন্দার সময় জ্বালানির দাম বেড়ে যায়, যার প্রভাব পড়ে সরাসরি জনগণের ওপর। নির্বাচনের ঠিক আগে আগে যুক্তরাষ্ট্রে আঘাত হানে স্মরণকালের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়, প্রভাব কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করে যাচ্ছে শত শত লোক। এমন অবস্থায় সবুজ পৃথিবী গড়ায় যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গীকার পূরণের বিষয়টি আবারও সামনে চলে এসেছে। তাই স্বভাবতই দাবি উঠবে কার্বন কর বাড়ানোর। এ বিষয়টি মোকাবিলায়ও ওবামাকে কঠোর সমস্যায় পড়তে হতে পারে।
আরব বিশ্বে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা : দেশের অর্থনীতিকে অবশ্যই প্রথমে গুরুত্ব দিতে হবে এটা ঠিক। কিন্তু আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে তাঁর অবস্থান ধরে রাখার বিষয়টিও কম গুরুত্ব দিয়ে দেখলে হবে না বলে মনে করছেন অনেকেই। ইরাক ও আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর সেখানকার উদ্ভূত পরিস্থিতি কোনদিকে মোড় নেয়, সেটার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। টানা কয়েক বছরের সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ করার পর সেখানে যদি যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্য সফল না হয়, তবে পুরো দায়টা বর্তাবে প্রেসিডেন্টের ওপরই। তার ওপর আছে আরব বিশ্বের সাম্প্রতিক গণজাগরণ। বিশ্লেষকদের মধ্যে আরব বিশ্বে মার্কিনিদের প্রতি সমর্থন ধরে রাখতে হবে ওবামাকেই। ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ও সিরিয়ায় চলমান গৃহযুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান নির্ধারণসহ বিভিন্ন বিষয় তাঁকে বিচক্ষণতার সঙ্গে সামাল দিতে হবে। এর ওপরই নির্ভর করছে তাঁর সাফল্য। সূত্র : ওয়াশিংটন পোস্ট, এএফপি, সিএনএন।
No comments