আওয়ামী লীগ নেতার কাণ্ড- ঠিকাদার ভেবে কিল-ঘুষি, পরে মাথায় হাত বুলিয়ে সান্ত্বনা!

হাতে ফাইলপত্র দেখে ঠিকাদার ভেবে এক ব্যক্তিকে কিল-ঘুষিসহ হেনস্তা। এরপর তিনি ঠিকাদর নন জানতে পের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে সান্ত্বনা ও দুঃখ প্রকাশ। গতকাল বুধবার দুপুরে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি ঘটিয়েছেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য শাহজাহান সিকদার।


আর ঘটনার শিকার ব্যক্তি হলেন মো. ফয়সল। তিনি রাঙ্গুনিয়ার বেতাগী ইউনিয়নের মির্জাখিল গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মৃত ফরিদ আহমদের ছেলে। পেশায় ডিপ্লোমা প্রকৌশলী ফয়সল চট্টগ্রামের একটি একটি নির্মাণপ্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন।
ফয়সল জানান, নিজ গ্রামের পাশে কিছু সরকারি খাসজমির বন্দোবস্ত পাওয়ার জন্য তিনি আবেদন করেছেন। এ ব্যাপারে কথা বলতে গতকাল তিনি রাঙ্গুনিয়ার ইউএনও কার্যালয়ে যান। এ সময় তাঁর হাতে ছিল ফাইলপত্র। তাঁকে দেখেই আওয়ামী লীগের নেতা শাহজাহান ইউএনওর কার্যালয় থেকে বের হয়ে অতর্কিতে তাঁর ওপর হামলা চালান। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই শাহজাহান তাঁর জামার কলার চেপে ধরে কিল-ঘুষি মারতে থাকেন।
ফয়সল প্রথম আলোকে বলেন, ‘মারধরের কারণ কী জানতে চাইলেও তিনি আমাকে কথা বলার সুযোগই দেননি। সেখান থেকে একপর্যায়ে উপজেলা পরিষদের মূল ফটকে বের করে দেওয়ার পর দরপত্র কেনার কোনো ধরনের চেষ্টা না করার জন্য আমাকে সতর্ক করে দেন। এ সময় আমি খাসজমি বন্দোবস্তের বিষয়ে ইউএনওর সঙ্গে কথা বলতে এসেছি বলে জানাই। তখন তিনি আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন।’
উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, রাঙ্গুনিয়া উপজেলা পরিষদের পুরাতন ভবন ভাঙার জন্য সম্প্রতি দরপত্র আহ্বান করা হয়। গত মঙ্গলবার থেকে দরপত্র বিক্রি শুরু হয়। গতকাল ছিল দরপত্র বিক্রির শেষ দিন। স্থানীয় ঠিকাদারদের অভিযোগ, ওই কাজ হাতিয়ে নেওয়ার জন্য শাহজাহান ফরম বিক্রিতে বাধা দিয়ে আসছেন। কেউ যেন ফরম নিতে পারে, সে জন্য তিনি সার্বক্ষণিকভাবে ইউএনওর কার্যালয় পাহারা দিচ্ছেন। এর একপর্যায়ে গতকাল এই ঘটনা ঘটল।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে শাহজাহান সিকদারের সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তিনি ফোন ধরেননি।
রাঙ্গুনিয়ার ইউএনও তানভীর আজম সিদ্দিকী বলেন, ‘আমি জেএসসি পরীক্ষা নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। পরে এসে এ খবর শুনেছি। তবে আমার কাছে কেউ অভিযোগ করতে আসেনি।’ দরপত্র বিক্রিতে বাধা দেওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের কথা শোনার পর আমি নিজে দাঁড়িয়ে থেকেই তিনজনের কাছে দরপত্র বিক্রি করেছি। তখন কেউ বাধা দিতে আসেনি।’

No comments

Powered by Blogger.