সমুদ্রপথে মালয়েশিয়া যাত্রা- আবারও সাগরে ট্রলারডুবি, এবার ৮২ জন নিখোঁজ
কক্সবাজারের টেকনাফ উপকূলে বঙ্গোপসাগরে গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ট্রলারডুবিতে ৮২ জন নিখোঁজ হয়েছেন। এ ঘটনায় প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন ২৮ জন। ট্রলারের যাত্রীরা সমুদ্রপথে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে টেকনাফের মহেশখালিয়াপাড়া সমুদ্র উপকূল থেকে ১১০ জন যাত্রী বোঝাই করে একটি কাঠের ট্রলার মালয়েশিয়ার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে।
৪০ জনের ধারণক্ষমতার ট্রলারটিতে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করার কারণে সেটি সাগরে উল্টে যাওয়ার উপক্রম হয়। এ সময় যাত্রীরা হইচই শুরু করেন। কিন্তু তার পরও ট্রলারটি যেতে থাকে। পরে রাত তিনটার দিকে ট্রলারটি মহেশখালিয়াপাড়া সৈকত থেকে প্রায় এক কিলোমিটার গভীর সাগরের সাতবাইন নামক স্থানে গিয়ে উল্টে যায়।
সকালে তেলের কনটেইনার নিয়ে ভাসতে ভাসতে টেকনাফ উপকূলে ফিরে আসেন আবদুল শুক্কুর (২০)। তাঁর বাড়ি টেকনাফ সদর ইউনিয়নের কচুবুনিয়া গ্রামে। মালয়েশিয়ায় যাওয়ার জন্য তিনি দালালকে ৪০ হাজার টাকা দিয়েছেন। তাঁর সঙ্গে তীরে আসতে সক্ষম হন একই গ্রামের তোফায়েল আহমদ, মো. জাহাঙ্গীর আলম, কবির আহমদ ও মো. আবদুল্লাহ। তাঁরাও মাথাপিছু ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা করে দালালদের দিয়েছেন।
ঘটনার বর্ণনায় আবদুল শুক্কুর ও কবির আহমদ বলেন, মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে দালাল চক্রের সদস্য শাহপরীর দ্বীপের ধলু হোসেন, আবদুস সালাম, শরীফ হোসেন, রশিদ উল্লাহ, নুরুল আলম ও নজির আহমদ ৭০ জন যাত্রী এবং স্থানীয় কচুবুনিয়া ও কাঁটাবুনিয়া গ্রামের দালাল আবুল কাশেম, ইসলাম মিয়া, মো. ফয়েজ, নুরুল ইসলাম, মো. জাহাঙ্গীর, নীর আহমদ ও আবদুর রহিম ৪০ জন যাত্রীকে (মোট ১১০ জন) ট্রলারে তুলে দেন। যাত্রীদের মধ্যে প্রায় ৩০ জন রোহিঙ্গাও ছিলেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র ও এলাকাবাসী জানান, ট্রলারডুবির খবর ছড়িয়ে পড়লে সকাল সাতটায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরা টেকনাফ সমুদ্রসৈকতে উদ্ধার তৎপরতা চালান। সকাল আটটায় নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের সদস্যরা সাগরে নেমে তল্লাশি শুরু করেন। বেলা একটার দিকে নৌবাহিনীর সদস্যরা কয়েকটি নৌকায় আশ্রয় নেওয়া ২২ জন যাত্রীকে উদ্ধার করেন। আর বিজিবির সদস্যরা উদ্ধার করেন একজনকে। বাকি ৮২ জন যাত্রীর খোঁজ গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
উদ্ধার হওয়া ২৩ ব্যক্তি হলেন: টেকনাফের আছারবুনিয়া গ্রামের আবদুর রশিদ (৩০) ও গিয়াস উদ্দিন (১৮); রোহিঙ্গা আবদুল মজিদ (১৯) ও মো. জুবাইর (২৪); শাহপরীর দ্বীপের বাজারপাড়ার আবু বক্কর (২৫); কোনারপাড়ার আজম (১৭), রহিম উল্লাহ (২২) ও জমির হোসেন (৩০); হাবিরছড়ার মো. রায়হান (২৫) ও আবুল কালাম (২৬); বান্দরবানের লামার মো. নূর (৩৫); বাহারছড়ার মনজুর আলম (৩২); কক্সবাজারের চৌফলদণ্ডির বশির আহমদ (২৯); চকরিয়ার ডুলাহাজারার সোনা মিয়া (৩২); রামুর ঈদগড়ের নূর ছিদ্দিক (৩৫), মো. ইসকান্দার (২৩), রশিদ মিয়া (২৮), আমির হোসেন (৩১), আবদুল হামিদ (২৭) ও আবুল কালাম (৩৩); চট্টগ্রামের আজিজনগরের আবুল কালাম (২৬) এবং গাজীপুরের মো. হোসেন শেখ (৩৩) ও মো. নাজমুল (৩৫)।
পাঁচজন তেলের কনটেইনার নিয়ে ভাসতে ভাসতে তীরে আসতে সক্ষম হন।
নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কমান্ডার তানভীর আহমদ বলেন, উদ্ধার করা যাত্রীদের বিজিবি ও কোস্টগার্ডের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। নিখোঁজ যাত্রীদের উদ্ধারে অনুসন্ধান চলছে।
কোস্টগার্ডের টেকনাফ স্টেশনের লেফটেন্যান্ট কমান্ডার ফয়েজুর কবির বলেন, উদ্ধার করা যাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে দালালদের শনাক্ত করা হচ্ছে।
টেকনাফ ৪২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. জাহিদ হাসান বলেন, দালালদের আটকের চেষ্টা চলছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৭ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে সেন্ট মার্টিন দ্বীপের অদূরে বঙ্গোপসাগরে ১২৮ জন যাত্রী নিয়ে একটি ট্রলার ডুবে যায়। এ ঘটনায় মাত্র ছয়জনকে উদ্ধার করা হলেও এখন পর্যন্ত ১২২ জন নিখোঁজ রয়েছেন। ওই ঘটনায় টেকনাফ থানায় অর্ধশতাধিক দালালের বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি মামলা হলেও এখন পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার হননি।
১৫ রোহিঙ্গা আটক: সমুদ্রপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার প্রস্তুতিকালে কক্সবাজারের চকরিয়া থেকে গত মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে ১৫ জন রোহিঙ্গাকে আটক করেছে পুলিশ।
আটক ব্যক্তিরা হলেন: মিয়ানমারের মংডু শহরের বাসিন্দা আবু সালেহ (৩২), মোহাম্মদ হাসেম (২০), কামাল আহাম্মদ (৪০), আইয়ুব খান (১৯), মোহাম্মদ করিম (১৯), মো. ইয়াকুব (১৮), রশিদ উল্লাহ (৩৫), মোহাম্মদ মিয়া (৪০), আবুল বাশার (৩৮), ছাদেক হোসেন (২০), জামাল হোসেন (২৮), মো. হাছান (২৮), ওসমান গনি (২০), মো. আইয়ুব (৩৮) ও মোহাম্মদ শফি (২৭)।
আটক রোহিঙ্গারা জানান, ১৯ দিন আগে তাঁরা টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেন এবং মালয়েশিয়ায় যাওয়ার জন্য দালালের মাধ্যমে চকরিয়ায় আসেন।
সূত্র জানায়, চকরিয়ার মহুরীজোড়াপাড়ার দালাল মোহাম্মদ আলী ও বেলাল উদ্দিন এই রোহিঙ্গাদের ট্রলারে তুলে দেওয়ার জন্য মগনামা গ্রামের বাহাদুর নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে রাখেন। সেখান থেকে পুলিশ তাঁদের আটক করে।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রণজিত কুমার বড়ুয়া বলেন, মালয়েশিয়ায় পাচারের জন্য দালালেরা ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা করে নিয়ে ৪০ জন রোহিঙ্গাকে একটি বাড়িতে জড়ো করেছিল। তাঁদের মধ্যে ১৫ জন রোহিঙ্গা ধরা পড়লেও অন্যদের দালালেরা সরিয়ে রেখেছে। এখন দালালদের ধরার চেষ্টা চলছে।
সকালে তেলের কনটেইনার নিয়ে ভাসতে ভাসতে টেকনাফ উপকূলে ফিরে আসেন আবদুল শুক্কুর (২০)। তাঁর বাড়ি টেকনাফ সদর ইউনিয়নের কচুবুনিয়া গ্রামে। মালয়েশিয়ায় যাওয়ার জন্য তিনি দালালকে ৪০ হাজার টাকা দিয়েছেন। তাঁর সঙ্গে তীরে আসতে সক্ষম হন একই গ্রামের তোফায়েল আহমদ, মো. জাহাঙ্গীর আলম, কবির আহমদ ও মো. আবদুল্লাহ। তাঁরাও মাথাপিছু ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা করে দালালদের দিয়েছেন।
ঘটনার বর্ণনায় আবদুল শুক্কুর ও কবির আহমদ বলেন, মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে দালাল চক্রের সদস্য শাহপরীর দ্বীপের ধলু হোসেন, আবদুস সালাম, শরীফ হোসেন, রশিদ উল্লাহ, নুরুল আলম ও নজির আহমদ ৭০ জন যাত্রী এবং স্থানীয় কচুবুনিয়া ও কাঁটাবুনিয়া গ্রামের দালাল আবুল কাশেম, ইসলাম মিয়া, মো. ফয়েজ, নুরুল ইসলাম, মো. জাহাঙ্গীর, নীর আহমদ ও আবদুর রহিম ৪০ জন যাত্রীকে (মোট ১১০ জন) ট্রলারে তুলে দেন। যাত্রীদের মধ্যে প্রায় ৩০ জন রোহিঙ্গাও ছিলেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র ও এলাকাবাসী জানান, ট্রলারডুবির খবর ছড়িয়ে পড়লে সকাল সাতটায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরা টেকনাফ সমুদ্রসৈকতে উদ্ধার তৎপরতা চালান। সকাল আটটায় নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের সদস্যরা সাগরে নেমে তল্লাশি শুরু করেন। বেলা একটার দিকে নৌবাহিনীর সদস্যরা কয়েকটি নৌকায় আশ্রয় নেওয়া ২২ জন যাত্রীকে উদ্ধার করেন। আর বিজিবির সদস্যরা উদ্ধার করেন একজনকে। বাকি ৮২ জন যাত্রীর খোঁজ গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
উদ্ধার হওয়া ২৩ ব্যক্তি হলেন: টেকনাফের আছারবুনিয়া গ্রামের আবদুর রশিদ (৩০) ও গিয়াস উদ্দিন (১৮); রোহিঙ্গা আবদুল মজিদ (১৯) ও মো. জুবাইর (২৪); শাহপরীর দ্বীপের বাজারপাড়ার আবু বক্কর (২৫); কোনারপাড়ার আজম (১৭), রহিম উল্লাহ (২২) ও জমির হোসেন (৩০); হাবিরছড়ার মো. রায়হান (২৫) ও আবুল কালাম (২৬); বান্দরবানের লামার মো. নূর (৩৫); বাহারছড়ার মনজুর আলম (৩২); কক্সবাজারের চৌফলদণ্ডির বশির আহমদ (২৯); চকরিয়ার ডুলাহাজারার সোনা মিয়া (৩২); রামুর ঈদগড়ের নূর ছিদ্দিক (৩৫), মো. ইসকান্দার (২৩), রশিদ মিয়া (২৮), আমির হোসেন (৩১), আবদুল হামিদ (২৭) ও আবুল কালাম (৩৩); চট্টগ্রামের আজিজনগরের আবুল কালাম (২৬) এবং গাজীপুরের মো. হোসেন শেখ (৩৩) ও মো. নাজমুল (৩৫)।
পাঁচজন তেলের কনটেইনার নিয়ে ভাসতে ভাসতে তীরে আসতে সক্ষম হন।
নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কমান্ডার তানভীর আহমদ বলেন, উদ্ধার করা যাত্রীদের বিজিবি ও কোস্টগার্ডের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। নিখোঁজ যাত্রীদের উদ্ধারে অনুসন্ধান চলছে।
কোস্টগার্ডের টেকনাফ স্টেশনের লেফটেন্যান্ট কমান্ডার ফয়েজুর কবির বলেন, উদ্ধার করা যাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে দালালদের শনাক্ত করা হচ্ছে।
টেকনাফ ৪২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. জাহিদ হাসান বলেন, দালালদের আটকের চেষ্টা চলছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৭ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে সেন্ট মার্টিন দ্বীপের অদূরে বঙ্গোপসাগরে ১২৮ জন যাত্রী নিয়ে একটি ট্রলার ডুবে যায়। এ ঘটনায় মাত্র ছয়জনকে উদ্ধার করা হলেও এখন পর্যন্ত ১২২ জন নিখোঁজ রয়েছেন। ওই ঘটনায় টেকনাফ থানায় অর্ধশতাধিক দালালের বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি মামলা হলেও এখন পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার হননি।
১৫ রোহিঙ্গা আটক: সমুদ্রপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার প্রস্তুতিকালে কক্সবাজারের চকরিয়া থেকে গত মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে ১৫ জন রোহিঙ্গাকে আটক করেছে পুলিশ।
আটক ব্যক্তিরা হলেন: মিয়ানমারের মংডু শহরের বাসিন্দা আবু সালেহ (৩২), মোহাম্মদ হাসেম (২০), কামাল আহাম্মদ (৪০), আইয়ুব খান (১৯), মোহাম্মদ করিম (১৯), মো. ইয়াকুব (১৮), রশিদ উল্লাহ (৩৫), মোহাম্মদ মিয়া (৪০), আবুল বাশার (৩৮), ছাদেক হোসেন (২০), জামাল হোসেন (২৮), মো. হাছান (২৮), ওসমান গনি (২০), মো. আইয়ুব (৩৮) ও মোহাম্মদ শফি (২৭)।
আটক রোহিঙ্গারা জানান, ১৯ দিন আগে তাঁরা টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেন এবং মালয়েশিয়ায় যাওয়ার জন্য দালালের মাধ্যমে চকরিয়ায় আসেন।
সূত্র জানায়, চকরিয়ার মহুরীজোড়াপাড়ার দালাল মোহাম্মদ আলী ও বেলাল উদ্দিন এই রোহিঙ্গাদের ট্রলারে তুলে দেওয়ার জন্য মগনামা গ্রামের বাহাদুর নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে রাখেন। সেখান থেকে পুলিশ তাঁদের আটক করে।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রণজিত কুমার বড়ুয়া বলেন, মালয়েশিয়ায় পাচারের জন্য দালালেরা ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা করে নিয়ে ৪০ জন রোহিঙ্গাকে একটি বাড়িতে জড়ো করেছিল। তাঁদের মধ্যে ১৫ জন রোহিঙ্গা ধরা পড়লেও অন্যদের দালালেরা সরিয়ে রেখেছে। এখন দালালদের ধরার চেষ্টা চলছে।
No comments