পারকি সৈকতে বিদ্যুৎকেন্দ্র হলে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার কী হবে? by এস এম রানা
আজ থেকে ২০ বছর আগে চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার ফুলতলী মৌজার আয়তন ছিল প্রায় এক হাজার ৬৫০ একর। বঙ্গোপসাগরের টেউয়ের তোড়ে ভাঙতে ভাঙতে এর আয়তন এসে ঠেকেছে ৬০০ একরে। অব্যাহত ভাঙন ঠেকাতে উপকূলীয় বন বিভাগ ঝাউবাগান সৃজন করে। তার পরও ভাঙতে থাকে পারকি সৈকত।
এখন মাটি সরে যাওয়ার কারণে ভেঙে পড়ছে ঝাউগাছগুলোও। তা সত্ত্বেও এ সৈকতে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ বেড়াতে আসে। এ সৈকত বন্দরনগরবাসীর বড় একটি পর্যটনকেন্দ্র। এ কারণে অপার সৌন্দর্যঘেরা পারকি সৈকতকে একটি আধুনিক পর্যটন এলাকা হিসেবে গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১০ সালের ৮ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামে তৃতীয় শাহ আমানত সেতু উদ্বোধন করতে এসে বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি এ ঘোষণা দেন। কিন্তু এখন এই সৈকতের জমিতে কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ে তোলার সিদ্ধান্তের কারণে প্রধানমন্ত্রীর এ ঘোষণা শেষমেশ প্রহসনে পরিণত হতে চলেছে। যদিও সরকারের এ সিদ্ধান্তে চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দর ও চট্টগ্রাম নৌবন্দর কর্তৃপক্ষ আপত্তি জানিয়েছে, এর পরও সেখানে ভূমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে।
উপজেলার ফুলতলী মৌজার জমি অধিগ্রহণ করে বিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ে তোলা হলে সৈকত সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হবে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুযায়ী আধুনিক পর্যটন নগরী গড়ে তোলা সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছেন আনোয়ারা উপজেলার বারশত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হাসান চৌধুরী। তিনি বলেন, 'আমি যখন ছোট ছিলাম তখন সমুদ্র অনেক দূরে ছিল। ফুলতলী মৌজার আয়তন ছিল প্রায় এক হাজার ৬০০ একর। কিন্তু টেউয়ের তোড়ে উপকূল ভাঙতে ভাঙতে ফুলতলী মৌজা ক্রমান্বয়ে ছোট হয়ে এখন ৬০০ একরে এসে ঠেকেছে। ফুলতলী মৌজার জমি অধিগ্রহণ করা হলে পারকিতে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত আধুনিক পর্যটন নগরী গড়ে তোলা সম্ভব হবে না।' তিনি বলেন, 'প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা ও আমাদের এমপি আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুও ঘোষণা দিয়েছেন- পারকিকে আধুনিক সৈকত হিসেবে তৈরি করা হবে।' বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য সৈকতের জমি অধিগ্রহণের চেষ্টা চালানো হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত বছর বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ বিষয়ে সরেজমিন পরিদর্শনে আসার পর চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এলএ) আনিসুজ্জামান মিয়ার কাছে এলাকাবাসী আপত্তি জানিয়েছেন। তখন এলাকাবাসী বলেছিলেন, ফুলতলী মৌজায় বিদ্যুৎকেন্দ্র করা হলে সৈকত ধ্বংস হবে। তিনি আরো বলেন, এলাকাবাসী আপত্তি জানানোর পর প্রশাসনের কর্মকর্তারা ওই সময় বলেছিলেন, বেড়িবাঁধের সাগরের দিকের অংশে ঝাউবাগান এলাকায় সৈকত থাকবে, আর বাঁধের পূর্বে অর্থাৎ গ্রামের দিকের জমি অধিগ্রহণ করা হবে। এতেও আধুনিক সৈকত এবং মনোমুঙ্কর স্থাপনা নির্মাণ সম্ভব হবে না বলে কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।
চেয়ারম্যান আরো বলেন, 'গত বছরের বন্যায় পারকি সৈকত থেকে মাত্র এক কিলোমিটার দূরে পড়ুয়াপাড়া এলাকায় ব্যাপক ভাঙন হয়েছিল। ওই সময় বেঁড়িবাধ ভেঙে যাওয়ার পর এখনো তা পুরোপুরি মেরামত করা সম্ভব হয়নি।'
এ প্রসঙ্গে আনোয়ারা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আবদুল হান্নান চৌধুরী মঞ্জুর বলেন, 'আনোয়ারার জমি অধিগ্রহণ হচ্ছেই। সিইউএফএল প্রায় এক হাজার ৫০০ একর, কাফকো এক হাজার একর, কেইপিজেড তিন হাজার একর, রাডার স্টেশন ৭০০ একর জমি অধিগ্রহণ করে নিয়েছে। ইতিমধ্যে কাফকো এবং সিইউএফএলের বর্জ্যের ক্ষতিকর প্রভাবের কারণে এলাকার কৃষি ও মৎস্যসম্পদ বিলীন হয়েছে। এখন বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়ে তোলা হলে অবস্থা কী হবে, আল্লাহই জানেন।' এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'পরিবেশের এমন বিপর্যয়কর পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে আনোয়ারা উপজেলার অন্য স্থানে সরকারি খাস জমিতে বিদ্যুৎকেন্দ্র করা হলেও জনগণ দুর্ভোগে পড়ত না।' তিনিও বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত আধুনিক পারকি সৈকত গড়ে তোলা সম্ভব হবে না- যদি বিদ্যুৎকেন্দ্রের স্থান পরিবর্তন করা না হয়।'
প্রসঙ্গত, আনোয়ারার সমুদ্র সৈকতের প্রায় তিন হাজার একর জায়গায় কলয়াভিত্তিক এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরির জন্য সরকার ইতিমধ্যে জমি অধিগ্রহণ শুরু করেছে। এ উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর, আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, কাফকো ও সিইউএফএলের মতো দুটি বড় সার কারখানা, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর ঘাঁটিসহ অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এবং লোকালয়ে মারাত্মক পরিবেশগত বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে।
উপজেলার ফুলতলী মৌজার জমি অধিগ্রহণ করে বিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ে তোলা হলে সৈকত সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হবে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুযায়ী আধুনিক পর্যটন নগরী গড়ে তোলা সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছেন আনোয়ারা উপজেলার বারশত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হাসান চৌধুরী। তিনি বলেন, 'আমি যখন ছোট ছিলাম তখন সমুদ্র অনেক দূরে ছিল। ফুলতলী মৌজার আয়তন ছিল প্রায় এক হাজার ৬০০ একর। কিন্তু টেউয়ের তোড়ে উপকূল ভাঙতে ভাঙতে ফুলতলী মৌজা ক্রমান্বয়ে ছোট হয়ে এখন ৬০০ একরে এসে ঠেকেছে। ফুলতলী মৌজার জমি অধিগ্রহণ করা হলে পারকিতে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত আধুনিক পর্যটন নগরী গড়ে তোলা সম্ভব হবে না।' তিনি বলেন, 'প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা ও আমাদের এমপি আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুও ঘোষণা দিয়েছেন- পারকিকে আধুনিক সৈকত হিসেবে তৈরি করা হবে।' বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য সৈকতের জমি অধিগ্রহণের চেষ্টা চালানো হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত বছর বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ বিষয়ে সরেজমিন পরিদর্শনে আসার পর চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এলএ) আনিসুজ্জামান মিয়ার কাছে এলাকাবাসী আপত্তি জানিয়েছেন। তখন এলাকাবাসী বলেছিলেন, ফুলতলী মৌজায় বিদ্যুৎকেন্দ্র করা হলে সৈকত ধ্বংস হবে। তিনি আরো বলেন, এলাকাবাসী আপত্তি জানানোর পর প্রশাসনের কর্মকর্তারা ওই সময় বলেছিলেন, বেড়িবাঁধের সাগরের দিকের অংশে ঝাউবাগান এলাকায় সৈকত থাকবে, আর বাঁধের পূর্বে অর্থাৎ গ্রামের দিকের জমি অধিগ্রহণ করা হবে। এতেও আধুনিক সৈকত এবং মনোমুঙ্কর স্থাপনা নির্মাণ সম্ভব হবে না বলে কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।
চেয়ারম্যান আরো বলেন, 'গত বছরের বন্যায় পারকি সৈকত থেকে মাত্র এক কিলোমিটার দূরে পড়ুয়াপাড়া এলাকায় ব্যাপক ভাঙন হয়েছিল। ওই সময় বেঁড়িবাধ ভেঙে যাওয়ার পর এখনো তা পুরোপুরি মেরামত করা সম্ভব হয়নি।'
এ প্রসঙ্গে আনোয়ারা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আবদুল হান্নান চৌধুরী মঞ্জুর বলেন, 'আনোয়ারার জমি অধিগ্রহণ হচ্ছেই। সিইউএফএল প্রায় এক হাজার ৫০০ একর, কাফকো এক হাজার একর, কেইপিজেড তিন হাজার একর, রাডার স্টেশন ৭০০ একর জমি অধিগ্রহণ করে নিয়েছে। ইতিমধ্যে কাফকো এবং সিইউএফএলের বর্জ্যের ক্ষতিকর প্রভাবের কারণে এলাকার কৃষি ও মৎস্যসম্পদ বিলীন হয়েছে। এখন বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়ে তোলা হলে অবস্থা কী হবে, আল্লাহই জানেন।' এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'পরিবেশের এমন বিপর্যয়কর পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে আনোয়ারা উপজেলার অন্য স্থানে সরকারি খাস জমিতে বিদ্যুৎকেন্দ্র করা হলেও জনগণ দুর্ভোগে পড়ত না।' তিনিও বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত আধুনিক পারকি সৈকত গড়ে তোলা সম্ভব হবে না- যদি বিদ্যুৎকেন্দ্রের স্থান পরিবর্তন করা না হয়।'
প্রসঙ্গত, আনোয়ারার সমুদ্র সৈকতের প্রায় তিন হাজার একর জায়গায় কলয়াভিত্তিক এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরির জন্য সরকার ইতিমধ্যে জমি অধিগ্রহণ শুরু করেছে। এ উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর, আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, কাফকো ও সিইউএফএলের মতো দুটি বড় সার কারখানা, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর ঘাঁটিসহ অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এবং লোকালয়ে মারাত্মক পরিবেশগত বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে।
No comments