আলোর মুখ দেখছে জনসংখ্যা নীতি
প্রায় সাড়ে তিন বছর ঝুলে থাকার পর শিগগির আলোর মুখ দেখছে জাতীয় জনসংখ্যা নীতি। চলতি মাসের মধ্যেই ওই নীতির খসড়া চূড়ান্ত করার জন্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে। এর পরই তা তোলা হবে জাতীয় সংসদে।
গতকাল মঙ্গলবার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্যবিষয়ক
গতকাল মঙ্গলবার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্যবিষয়ক
উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী জানান, জনসংখ্যা নীতির খসড়ায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী এরই মধ্যে সই করেছেন। দুই সপ্তাহের মধ্যে তা কেবিনেটে যাবে।
জনসংখ্যা নীতির খসড়া প্রণয়নকারী সংস্থা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের পরিচালক গনেশ চন্দ্র সরকার সাংবাদিকদের বলেন, 'প্রস্তাবিত জনসংখ্যা নীতিটি এবারের জাতীয় স্বাস্থ্যনীতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এ ছাড়া আগের স্বাস্থ্যনীতিতে যেসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল না, সেগুলো যুক্ত হয়েছে।'
জনসংখ্যা নীতিতে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে 'একটি সন্তান'-এর ব্যাপারে কোনো দিকনির্দেশনা থাকছে কি না জানতে চাইলে কোনো আনুষ্ঠানিক জবাব পাওয়া যায়নি। তবে পরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, স্বাস্থ্যনীতিতে এমন কোনো দিকনির্দেশনা নেই। 'দুটি সন্তানের বেশি নয়, একটি হলে ভাল হয়'- প্রচলিত এ স্লোগানটির প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
এদিকে প্রস্তাবিত জনসংখ্যা নীতির খসড়া মন্ত্রণালয় আগে থেকেই বিভিন্ন মাধ্যমে সবার জন্য উন্মুক্ত রাখলেও গতকাল স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, 'খসড়াটি কেবিনেটে যাওয়ার আগে এতে কী আছে না আছে তা বলা হবে না; এখন এটা গোপনীয়।' সাংবাদিকরা খসড়ার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করলে উপদেষ্টা বারবার একই অজুহাত দেন। ওই সময় উপদেষ্টার পাশে বসা স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীও কোনো কথা বলেননি।
জাতীয় জনসংখ্যা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব খুরশিদ আলম চৌধুরী, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. খন্দকার শিফায়েত উল্লাহ, বিএমএর মহাসচিব অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহম্মেদ প্রমুখ।
প্রস্তাবিত জনসংখ্যা নীতিতে বলা হয়েছে, সব নাগরিকের আর্থসামাজিক উন্নয়ন বাংলাদেশের সংবিধানের অন্যতম অঙ্গীকার। ১৯৭২ সালে প্রণীত বাংলাদেশের সংবিধানের ১৫, ১৬, ১৭ ও ১৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সব নাগরিকের জন্য স্বাস্থ্য, শিক্ষা, খাদ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। দেশের মানুষের এসব সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করার প্রয়াসে সরকার বিভিন্ন নীতিমালা গ্রহণ করে আসছে। বাংলাদেশের প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা (১৯৭৩-১৯৭৮) কার্যক্রমে জনসংখ্যা সমস্যাকে এক নম্বর জাতীয় সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৬ সালে জনসংখ্যা নীতির একটি রূপরেখা প্রণয়ন করা হয়। পরে ২০০৪ সালে আরেকটি জনসংখ্যা নীতি প্রণীত হয়।
এবারের জনসংখ্যা নীতি যুগোপযোগী করার যৌক্তিকতা : জনসংখ্যা নীতির খসড়ায় উল্লেখ করা হয়, বর্তমানে দেশে প্রতিবছরে জনসংখ্যা প্রায় ১৮-২০ লাখ করে বাড়ছে। এ হারে বাড়তে থাকলে ২০৫০ সালে জনসংখ্যা দাঁড়াবে ২২ কোটিতে। ফলে খাদ্য, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা, আবাসন, পানি, পয়ঃনিষ্কাশন, বিদ্যুৎ সরবরাহসহ সব ধরনের সেবা ও অবকাঠামোয় প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি হবে। তা ছাড়া দেশের বিভিন্ন এলাকায় জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে ব্যাপক তারতম্য রয়েছে এবং এখনো দেশের কিছু কিছু এলাকা ও জনগোষ্ঠী প্রয়োজনীয় সামাজিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাই দেশের জনসংখ্যাকে সহনীয় পর্যায়ে রাখার লক্ষ্যে জনসংখ্যা নীতি ও কৌশলগুলো যুগোপযোগী করা অপরিহার্য।
জাতীয় জনসংখ্যা নীতির উদ্দেশ্য : খসড়ায় জাতীয় জনসংখ্যা নীতির ১৩টি উদ্দেশ্য তুলে ধরা হয়। এগুলোর মধ্যে আছে- ২০১৫ সালের মধ্যে নিট প্রজনন হার ১ অর্জন করা, যাতে ২০৭০ সালে স্থিতিশীল জনসংখ্যা অর্জিত হয়; মহিলাপ্রতি প্রজনন হার হ্রাস করা; পরিবার পরিকল্পনা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করার মাধ্যমে সক্ষম দম্পতিদের মধ্যে পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতির ব্যবহার বৃদ্ধি করা; পরিবার পরিকল্পনা, মা ও শিশুস্বাস্থ্য পরিচর্যাসহ প্রজনন স্বাস্থ্যের উন্নয়ন এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক লক্ষ্য ও কৌশলের আলোকে জনসংখ্যা এবং উন্নয়নের মধ্যে প্রত্যাশিত পর্যায়ে সমতা বিধানের মাধ্যমে জনগণের সার্বিক জীবনমান উন্নত করা ইত্যাদি।
জনসংখ্যা নীতির খসড়া প্রণয়নকারী সংস্থা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের পরিচালক গনেশ চন্দ্র সরকার সাংবাদিকদের বলেন, 'প্রস্তাবিত জনসংখ্যা নীতিটি এবারের জাতীয় স্বাস্থ্যনীতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এ ছাড়া আগের স্বাস্থ্যনীতিতে যেসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল না, সেগুলো যুক্ত হয়েছে।'
জনসংখ্যা নীতিতে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে 'একটি সন্তান'-এর ব্যাপারে কোনো দিকনির্দেশনা থাকছে কি না জানতে চাইলে কোনো আনুষ্ঠানিক জবাব পাওয়া যায়নি। তবে পরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, স্বাস্থ্যনীতিতে এমন কোনো দিকনির্দেশনা নেই। 'দুটি সন্তানের বেশি নয়, একটি হলে ভাল হয়'- প্রচলিত এ স্লোগানটির প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
এদিকে প্রস্তাবিত জনসংখ্যা নীতির খসড়া মন্ত্রণালয় আগে থেকেই বিভিন্ন মাধ্যমে সবার জন্য উন্মুক্ত রাখলেও গতকাল স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, 'খসড়াটি কেবিনেটে যাওয়ার আগে এতে কী আছে না আছে তা বলা হবে না; এখন এটা গোপনীয়।' সাংবাদিকরা খসড়ার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করলে উপদেষ্টা বারবার একই অজুহাত দেন। ওই সময় উপদেষ্টার পাশে বসা স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীও কোনো কথা বলেননি।
জাতীয় জনসংখ্যা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব খুরশিদ আলম চৌধুরী, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. খন্দকার শিফায়েত উল্লাহ, বিএমএর মহাসচিব অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহম্মেদ প্রমুখ।
প্রস্তাবিত জনসংখ্যা নীতিতে বলা হয়েছে, সব নাগরিকের আর্থসামাজিক উন্নয়ন বাংলাদেশের সংবিধানের অন্যতম অঙ্গীকার। ১৯৭২ সালে প্রণীত বাংলাদেশের সংবিধানের ১৫, ১৬, ১৭ ও ১৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সব নাগরিকের জন্য স্বাস্থ্য, শিক্ষা, খাদ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। দেশের মানুষের এসব সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করার প্রয়াসে সরকার বিভিন্ন নীতিমালা গ্রহণ করে আসছে। বাংলাদেশের প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা (১৯৭৩-১৯৭৮) কার্যক্রমে জনসংখ্যা সমস্যাকে এক নম্বর জাতীয় সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৬ সালে জনসংখ্যা নীতির একটি রূপরেখা প্রণয়ন করা হয়। পরে ২০০৪ সালে আরেকটি জনসংখ্যা নীতি প্রণীত হয়।
এবারের জনসংখ্যা নীতি যুগোপযোগী করার যৌক্তিকতা : জনসংখ্যা নীতির খসড়ায় উল্লেখ করা হয়, বর্তমানে দেশে প্রতিবছরে জনসংখ্যা প্রায় ১৮-২০ লাখ করে বাড়ছে। এ হারে বাড়তে থাকলে ২০৫০ সালে জনসংখ্যা দাঁড়াবে ২২ কোটিতে। ফলে খাদ্য, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা, আবাসন, পানি, পয়ঃনিষ্কাশন, বিদ্যুৎ সরবরাহসহ সব ধরনের সেবা ও অবকাঠামোয় প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি হবে। তা ছাড়া দেশের বিভিন্ন এলাকায় জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে ব্যাপক তারতম্য রয়েছে এবং এখনো দেশের কিছু কিছু এলাকা ও জনগোষ্ঠী প্রয়োজনীয় সামাজিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাই দেশের জনসংখ্যাকে সহনীয় পর্যায়ে রাখার লক্ষ্যে জনসংখ্যা নীতি ও কৌশলগুলো যুগোপযোগী করা অপরিহার্য।
জাতীয় জনসংখ্যা নীতির উদ্দেশ্য : খসড়ায় জাতীয় জনসংখ্যা নীতির ১৩টি উদ্দেশ্য তুলে ধরা হয়। এগুলোর মধ্যে আছে- ২০১৫ সালের মধ্যে নিট প্রজনন হার ১ অর্জন করা, যাতে ২০৭০ সালে স্থিতিশীল জনসংখ্যা অর্জিত হয়; মহিলাপ্রতি প্রজনন হার হ্রাস করা; পরিবার পরিকল্পনা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করার মাধ্যমে সক্ষম দম্পতিদের মধ্যে পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতির ব্যবহার বৃদ্ধি করা; পরিবার পরিকল্পনা, মা ও শিশুস্বাস্থ্য পরিচর্যাসহ প্রজনন স্বাস্থ্যের উন্নয়ন এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক লক্ষ্য ও কৌশলের আলোকে জনসংখ্যা এবং উন্নয়নের মধ্যে প্রত্যাশিত পর্যায়ে সমতা বিধানের মাধ্যমে জনগণের সার্বিক জীবনমান উন্নত করা ইত্যাদি।
No comments