মৌসুমি উদ্যোক্তা by মারুফ ইসলাম
ক্লাস, পরীক্ষা, অ্যাসাইনমেন্ট, ফেসবুক, এফএম, ঘোরাঘুরি, আড্ডা...। রুটিনটা মন্দ নয়। বর্ণে-গন্ধে-ছন্দে-গীতিতে জীবনটা চলছিল বেশ। কিন্তু এই ছন্দময় রুটিনমাফিক জীবনটাই কিনা ‘অসহ্য’ হয়ে উঠল মেহেদী হাসান তালুকদার ও সেতু সাখাওয়াত হোসেনের কাছে।
দুই বন্ধুর প্রথমজন পড়ছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে, সমাজবিজ্ঞান বিভাগে আর দ্বিতীয়জন পড়ছেন আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে। তবু কী করে যেন দুই বন্ধু একই সময়ে টের পেলেন তাঁদের বুকের মধ্যে জেগে উঠছে বহু দিন ধরে ঘুমিয়ে থাকা সেই পুরোনো স্বপ্নটা—‘উদ্যোক্তা হব।’
এখন উপায়? মেহেদী বললেন, ‘মাস ছয়েক আগে পারিবারিক এক বিয়ের অনুষ্ঠানে শিশ মোহাম্মদ নামে চাঁপাইনবাবগঞ্জের এক বড়ভাইয়ের সঙ্গে পরিচয় হয়, যাঁর বেশ কটি আমের বাগান আছে। তখনই ভাবনাটা মাথায় আসে, চাঁপাই থেকে আম এনে ঢাকায় বিক্রি করলে কেমন হয়?’
‘মন্দ হয় না’ আইডিয়া শুনে সেতুর সংক্ষিপ্ত জবাব, ‘চল, বিষয়টা নিয়ে তাঁর সঙ্গে আলাপ করি।’
দুই বন্ধু সেদিন শিশ মোহাম্মদ ভাইকে বিষয়টা বোঝালেন। সব শুনে তিনিও সম্মতি দিলেন।
অতঃপর জুন মাসের পয়লা দিন। মেহেদী-সেতুর ক্যাম্পাস বন্ধ হয়ে গেল গ্রীষ্মকালীন ছুটি উপলক্ষে। দুই বন্ধু ভাবলেন, ছুটিটাকে কাজে লাগাতে হবে। আর এখনই তো আমের ভরপুর মৌসুম। শিশ ভাইকে ফোনে বললেন, আমের কিছু নমুনা পাঠাতে। কথানুযায়ী তিনি কিছু আম পাঠালেন ঢাকায়।
এবার শুরু হলো দুই উদ্যোক্তা বন্ধুর শ্রমে-ঘামে একাকার হওয়া দিনযাপন। একটা পাটের ঝোলার ব্যাগে কিছু আম নিয়ে দুই বন্ধু কাকরাইল, মালিবাগ, মৌচাক, মিরপুর ও ধানমন্ডির আমের দোকানগুলোয় নমুনা দেখিয়ে বললেন, এই আমগুলো তাঁরা বিক্রি করতে চান। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বিফল হলেন। তবু দিন শেষে দেখলেন, কীভাবে কীভাবে যেন আট মণ আমের ‘অর্ডার’ জোগাড় করে ফেলেছেন তাঁরা!
উচ্ছ্বসিত দুই বন্ধু রাতেই ফোন করলেন শিশ ভাইকে, ‘কালই আট মণ আম পাঠিয়ে দেন...।’
এভাবেই শুরু। অর্ডার অনুযায়ী শিশ ভাই চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আম পাঠিয়ে দেন ঢাকায় আর মেহেদী-সেতু তা পৌঁছে দেন সে সব দোকানে। ‘প্রথম কয়েক দিন আম বিক্রিতে একটু সমস্যা হয়েছে আমাদের। কিন্তু ক্রেতারা যখন বুঝতে পেরেছে যে আমরা ফরমালিনমুক্ত সবচেয়ে ভালো আম দিচ্ছি এবং অপেক্ষাকৃত কম মূল্যে দিচ্ছি, তখন দ্রুততার সঙ্গে আমের অর্ডার বাড়তে থাকে।’ ব্যবসা শুরুর অভিজ্ঞতার কথা বলছিলেন মেহেদী।
কিন্তু এত ব্যবসা থাকতে আমের ব্যবসা কেন? ‘এ ব্যবসাই যে করব এমন কোনো পূর্বপরিকল্পনা ছিল না আমাদের। আমরা চেয়েছি পরীক্ষামূলকভাবে একটা কিছু দিয়ে শুরু করতে। কারণ, আমাদের পড়ালেখা যেহেতু শেষ হয়নি, এখনো পুরোটা সময় ব্যবসার পেছনে ব্যয় করা সম্ভব নয়। তাই এই ছুটির সময়টা কাজে লাগিয়ে একটা ব্যবসায়িক অভিজ্ঞতা অর্জন করতে চেয়েছি মাত্র।’ বলছিলেন সেতু। সেতুর সঙ্গে এবার মেহেদী যোগ করলেন, ‘আমরা স্বপ্ন দেখি ভবিষ্যতে উদ্যোক্তা হওয়ার। তাই এখন থেকেই ছোট ছোট উদ্যোগের মাধ্যমে অভিজ্ঞতার ঝুলিটা বাড়াতে চাইছি।’
কিন্তু পড়ালেখা? ‘সেটা তো চলছেই। পড়াশোনার ফাঁকে কত সময় আড্ডার পেছনে ব্যয় করি, এখন সে সময়টায় আমের ব্যবসা করছি।’ যখন আমের মৌসুম শেষ হবে তখন? ‘তখন অন্য কোনো উদ্যোগ নেওয়ার চেষ্টা করব।’
বোঝাই যাচ্ছে, এই দুই তরুণ দমার পাত্র নন। তাঁরা যেকোনো প্রতিকূলতা ডিঙিয়ে সামনে এগিয়ে যাবেনই। কারণ, তাঁরা পরিশ্রমকে ভয় পান না, ভয় পান ব্যর্থতাকে।
এখন উপায়? মেহেদী বললেন, ‘মাস ছয়েক আগে পারিবারিক এক বিয়ের অনুষ্ঠানে শিশ মোহাম্মদ নামে চাঁপাইনবাবগঞ্জের এক বড়ভাইয়ের সঙ্গে পরিচয় হয়, যাঁর বেশ কটি আমের বাগান আছে। তখনই ভাবনাটা মাথায় আসে, চাঁপাই থেকে আম এনে ঢাকায় বিক্রি করলে কেমন হয়?’
‘মন্দ হয় না’ আইডিয়া শুনে সেতুর সংক্ষিপ্ত জবাব, ‘চল, বিষয়টা নিয়ে তাঁর সঙ্গে আলাপ করি।’
দুই বন্ধু সেদিন শিশ মোহাম্মদ ভাইকে বিষয়টা বোঝালেন। সব শুনে তিনিও সম্মতি দিলেন।
অতঃপর জুন মাসের পয়লা দিন। মেহেদী-সেতুর ক্যাম্পাস বন্ধ হয়ে গেল গ্রীষ্মকালীন ছুটি উপলক্ষে। দুই বন্ধু ভাবলেন, ছুটিটাকে কাজে লাগাতে হবে। আর এখনই তো আমের ভরপুর মৌসুম। শিশ ভাইকে ফোনে বললেন, আমের কিছু নমুনা পাঠাতে। কথানুযায়ী তিনি কিছু আম পাঠালেন ঢাকায়।
এবার শুরু হলো দুই উদ্যোক্তা বন্ধুর শ্রমে-ঘামে একাকার হওয়া দিনযাপন। একটা পাটের ঝোলার ব্যাগে কিছু আম নিয়ে দুই বন্ধু কাকরাইল, মালিবাগ, মৌচাক, মিরপুর ও ধানমন্ডির আমের দোকানগুলোয় নমুনা দেখিয়ে বললেন, এই আমগুলো তাঁরা বিক্রি করতে চান। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বিফল হলেন। তবু দিন শেষে দেখলেন, কীভাবে কীভাবে যেন আট মণ আমের ‘অর্ডার’ জোগাড় করে ফেলেছেন তাঁরা!
উচ্ছ্বসিত দুই বন্ধু রাতেই ফোন করলেন শিশ ভাইকে, ‘কালই আট মণ আম পাঠিয়ে দেন...।’
এভাবেই শুরু। অর্ডার অনুযায়ী শিশ ভাই চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আম পাঠিয়ে দেন ঢাকায় আর মেহেদী-সেতু তা পৌঁছে দেন সে সব দোকানে। ‘প্রথম কয়েক দিন আম বিক্রিতে একটু সমস্যা হয়েছে আমাদের। কিন্তু ক্রেতারা যখন বুঝতে পেরেছে যে আমরা ফরমালিনমুক্ত সবচেয়ে ভালো আম দিচ্ছি এবং অপেক্ষাকৃত কম মূল্যে দিচ্ছি, তখন দ্রুততার সঙ্গে আমের অর্ডার বাড়তে থাকে।’ ব্যবসা শুরুর অভিজ্ঞতার কথা বলছিলেন মেহেদী।
কিন্তু এত ব্যবসা থাকতে আমের ব্যবসা কেন? ‘এ ব্যবসাই যে করব এমন কোনো পূর্বপরিকল্পনা ছিল না আমাদের। আমরা চেয়েছি পরীক্ষামূলকভাবে একটা কিছু দিয়ে শুরু করতে। কারণ, আমাদের পড়ালেখা যেহেতু শেষ হয়নি, এখনো পুরোটা সময় ব্যবসার পেছনে ব্যয় করা সম্ভব নয়। তাই এই ছুটির সময়টা কাজে লাগিয়ে একটা ব্যবসায়িক অভিজ্ঞতা অর্জন করতে চেয়েছি মাত্র।’ বলছিলেন সেতু। সেতুর সঙ্গে এবার মেহেদী যোগ করলেন, ‘আমরা স্বপ্ন দেখি ভবিষ্যতে উদ্যোক্তা হওয়ার। তাই এখন থেকেই ছোট ছোট উদ্যোগের মাধ্যমে অভিজ্ঞতার ঝুলিটা বাড়াতে চাইছি।’
কিন্তু পড়ালেখা? ‘সেটা তো চলছেই। পড়াশোনার ফাঁকে কত সময় আড্ডার পেছনে ব্যয় করি, এখন সে সময়টায় আমের ব্যবসা করছি।’ যখন আমের মৌসুম শেষ হবে তখন? ‘তখন অন্য কোনো উদ্যোগ নেওয়ার চেষ্টা করব।’
বোঝাই যাচ্ছে, এই দুই তরুণ দমার পাত্র নন। তাঁরা যেকোনো প্রতিকূলতা ডিঙিয়ে সামনে এগিয়ে যাবেনই। কারণ, তাঁরা পরিশ্রমকে ভয় পান না, ভয় পান ব্যর্থতাকে।
No comments