রাজনীতি-ইসলামী দলগুলোর সঙ্গে দূরত্ব বাড়ল কেন? by নুরুল ইসলাম বিএসসি
ব্যক্তিগতভাবে সংবিধানে বিসমিল্লাহ ও রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম রাখার বিপক্ষে অনেক লেখালেখিও করেছি। কিন্তু যখনই দল নীতিগতভাবে এগুলো রাখার সিদ্ধান্ত নেয়, বিপক্ষে ভোট দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ভালো কি মন্দ হয়েছে, এর বিচার ভবিষ্যতের গর্বে নিহিত থাক, তবে ইসলামী দলগুলোর সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড ও অপপ্রচারে বিশ্বাস জন্মেছে যে, তারা ইসলাম বা বিসমিল্লাহর জন্য কথা বলছে না,
তাদের দাবি অন্য খানে, খেলাফত রাষ্ট্র কায়েমের২০০৮ সালের নির্বাচনে মহাজোটের ভোট প্রাপ্তির হিসাব কষলে, ইসলামপন্থি দলগুলোর অনেকে নৌকায় ভোট দিয়েছে বলে ধরে নেওয়া যায়। এর আগেও শেখ হাসিনা প্রজ্ঞার সঙ্গে খেলাফতে রব্বানীর সঙ্গে একটা সমঝোতা স্বাক্ষরিত হয়েছিল। এই সমঝোতা নিয়ে অনেকে বিশেষ করে বামদলের সঙ্গে সংযুক্ত আওয়ামী লীগের কিছু লোক ব্যাপক সমালোচনা করলেও আওয়ামী লীগ গত নির্বাচনে ভালো ফল পেয়েছে।
হিসাব করলে দেখা যায়, নির্বাচনের ছয় মাস পরও ইসলামপন্থি দলের বেশিরভাগের সঙ্গে খুব একটা দূরত্ব সৃষ্টি হয়নি। কিন্তু গত এক বছর ধরে যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে, এর পেছনে কারা দায়ী, কাদের ষড়যন্ত্রের ফলে এতটা বড় ফারাকের সৃষ্টি হলো, এক্ষুনি পর্যালোচনা করা প্রয়োজন। আমি সর্বপ্রথম সংবিধান সংশোধন নিয়ে দু'একটি কথা বলতে চাই।
আমরা আওয়ামী লীগ করি। ব্যক্তিগতভাবে সংবিধানে বিসমিল্লাহ ও রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম রাখার বিপক্ষে অনেক লেখালেখিও করেছি। কিন্তু যখনই দল নীতিগতভাবে এগুলো রাখার সিদ্ধান্ত নেয়, বিপক্ষে ভোট দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ভালো কি মন্দ হয়েছে, এর বিচার ভবিষ্যতের গর্বে নিহিত থাক, তবে ইসলামী দলগুলোর সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড ও অপপ্রচারে বিশ্বাস জন্মেছে যে, তারা ইসলাম বা বিসমিল্লাহর জন্য কথা বলছে না, তাদের দাবি অন্য খানে, খেলাফত রাষ্ট্র কায়েমের। তাদের কাছে গণতন্ত্র মূল কথা নয়, তাদের উদ্দেশ্য ধর্মের নামে মহিলাদের গৃহবন্দি ও আধুনিকতা পরিহার করে বিজ্ঞান বর্জন করে, আঁচে, অনুমানে, পাওয়া হাওয়াই স্থানিক, লৌকিক, অলীক, অলৌকিক, কাল্পনিক জগতে নিয়ে যাওয়া। যাই হোক ওদিকে যেতে চাই না, আওয়ামী লীগের সঙ্গে তাদের দূরত্ব সৃষ্টির রহস্য আলোচনাই মূল বিষয়। জামায়াত কিন্তু একসময় ইসলামের সোল এজেন্ট থাকলেও অন্য ইসলামিক দলগুলোর কারণে পেছনে পড়েছে।
১২টি ইসলামী দলের কথা বলা হচ্ছে। নিষিদ্ধ ঘোষিত দলগুলো বাদ দিলে ১২টি ইসলামী দলের নাম কেউ শোনেননি। ধরে নিলাম ১২টি ইসলামিক দল আছে। তাদের সবারই তো খুশি হওয়ার কথা সংবিধান সংশোধনীতে। রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম আছে, বিসমিল্লাহও আছে, সমস্যা কোথায়? তারা কেন গজারি কাঠের লাঠি ও রড নিয়ে রাস্তায় নামে? তাদের ইমানের ওপর তো কেউ আঘাত করেনি। আল্লাহর জায়গায় স্রষ্টা এই সামান্য অজুহাত খাড়া করেছে। আল্লাহর যেন প্রতিশব্দ নেই, স্রষ্টারও প্রতি শব্দ নেই। একটা আরবি, অন্যটা বাংলা। আল্লাহ সর্বজ্ঞ। আরবি যেমন বোঝেন, বাংলাও বোঝেন। যারা লাঠিসোটা নিয়ে রাস্তায় নেমেছে তারাও জানেন। তবু আন্দোলন করতে হবে। তাই আমার মনে হয়, আওয়ামী লীগের সঙ্গে কোথায় যেন দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে। আমি জানি না এই দূরত্ব সৃষ্টির পেছনে কারা দায়ী? তবে তাদের সঙ্গে মাঝে মধ্যে বসে আলোচনা করা যেত। ইসলামী দল যারা আওয়ামী লীগকে পছন্দ করে, সংশোধনীর আগে সংলাপ করলে, আলাপ-আলোচনা করলে এরা খুশি হতো।
ইসলাম, বিসমিল্লাহ তো এমনিতেই রাখা হয়েছে। তাদের সঙ্গে আলাপ করলে অসুবিধা কোথায় হতো?
চড়ষরঃরপং রং ধহ ধৎঃ ড়ভ ধফলঁংঃসবহঃ. রাজনীতিতে কৌশলী হতে হয়। আমরা জানি, শেখ হাসিনা যথেষ্ট কৌশলী। শেখ হাসিনা আছেন বলেই আমরা এ দেশে বসবাস করার সাহস পাই। আজকে অনেকে যারা নামধাম কুড়িয়েছেন এটা বঙ্গবন্ধুর অবদান। বঙ্গবন্ধু না হলে এটি পাকিস্তান থাকত আর আমরা বাঙালিরা দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক হয়ে পাঞ্জাবিদের বুটের লাথি খেতাম। কথাটা খারাপ শোনালেও দুঃখিত যে, কথাটা বলতে হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী কত দিক সামলাবেন। যাদের সংলাপ করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তারা যদি, তাদের সঙ্গে সংলাপ করতেন (সংলাপ না করেও যা রাখা হয়েছে) আজকে তাদের রাস্তায় নামানোও যেত না। এখন তাদের কানে কানে বলা হচ্ছে, তোমাদের সঙ্গে তো আলাপই করেনি।
রাজনীতিতে পালঙ্কে শোয়ার অভ্যাস করতে হয়, মাটিতেও বিছানা পাততে কৌশলী হতে হয়।
আমার মনে হয়, কোথাও একটা গ্যাপের সৃষ্টি হয়েছে। ওই গ্যাপে জামায়াতিরা বিভিন্ন নামে ঢুকে পড়ছে। এ গ্যাপটাকে ছোট করে আনা একান্ত জরুরি। তেলে, পানিতে মিশতে সুযোগ দেওয়া বদ্ধিমানের কাজ হবে না। জামায়াতিরা কোনোদিন আওয়ামী লীগকে সহ্য করেনি এবং করবেও না। জামায়াত ছাড়া অন্য ইসলামী দলগুলো যারা আওয়ামী লীগকে পছন্দ করে তাদের কাছে টানা এ মুহূর্তে বুদ্ধিমানের কাজ হবে। তাদের জামায়াতিরা টাকা-পয়সা দিয়ে বিভ্রান্ত করছে।
দিনের আলো, অপরিচিত মুখ আমাদের জন্য নির্ভয়। কিন্তু পরিচিত মুখ বগলে অস্ত্র রেখে বন্ধুত্ব করলেও বিপদই থেকে যায়। জামায়াত আমাদের অতি পরিচিত মুখ। মুক্তিযুদ্ধ ও তার পূর্ববর্তী সময় থেকে আমরা তাদের চিনি ও জানি। ইদানীং হরকত, হিযবুতদের পর্দার অন্তরালে থেকে পৃষ্ঠপোষকতা করছে। উদ্দেশ্য একটাই, শেখ হাসিনাকে সরিয়ে দেওয়া ও যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা করা।
এ কাজটি কোনো অবস্থায় তাদের করতে দেওয়া যেতে পারে না। ইসলামী দলগুলো যারা আওয়ামী লীগকে অপছন্দ করে না, তাদের কাছে টেনে, জামায়াতের ষড়যন্ত্রের সঠিক জওয়াব দিতে হবে।
নুরুল ইসলাম বিএসসি : সংসদ সদস্য
হিসাব করলে দেখা যায়, নির্বাচনের ছয় মাস পরও ইসলামপন্থি দলের বেশিরভাগের সঙ্গে খুব একটা দূরত্ব সৃষ্টি হয়নি। কিন্তু গত এক বছর ধরে যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে, এর পেছনে কারা দায়ী, কাদের ষড়যন্ত্রের ফলে এতটা বড় ফারাকের সৃষ্টি হলো, এক্ষুনি পর্যালোচনা করা প্রয়োজন। আমি সর্বপ্রথম সংবিধান সংশোধন নিয়ে দু'একটি কথা বলতে চাই।
আমরা আওয়ামী লীগ করি। ব্যক্তিগতভাবে সংবিধানে বিসমিল্লাহ ও রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম রাখার বিপক্ষে অনেক লেখালেখিও করেছি। কিন্তু যখনই দল নীতিগতভাবে এগুলো রাখার সিদ্ধান্ত নেয়, বিপক্ষে ভোট দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ভালো কি মন্দ হয়েছে, এর বিচার ভবিষ্যতের গর্বে নিহিত থাক, তবে ইসলামী দলগুলোর সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড ও অপপ্রচারে বিশ্বাস জন্মেছে যে, তারা ইসলাম বা বিসমিল্লাহর জন্য কথা বলছে না, তাদের দাবি অন্য খানে, খেলাফত রাষ্ট্র কায়েমের। তাদের কাছে গণতন্ত্র মূল কথা নয়, তাদের উদ্দেশ্য ধর্মের নামে মহিলাদের গৃহবন্দি ও আধুনিকতা পরিহার করে বিজ্ঞান বর্জন করে, আঁচে, অনুমানে, পাওয়া হাওয়াই স্থানিক, লৌকিক, অলীক, অলৌকিক, কাল্পনিক জগতে নিয়ে যাওয়া। যাই হোক ওদিকে যেতে চাই না, আওয়ামী লীগের সঙ্গে তাদের দূরত্ব সৃষ্টির রহস্য আলোচনাই মূল বিষয়। জামায়াত কিন্তু একসময় ইসলামের সোল এজেন্ট থাকলেও অন্য ইসলামিক দলগুলোর কারণে পেছনে পড়েছে।
১২টি ইসলামী দলের কথা বলা হচ্ছে। নিষিদ্ধ ঘোষিত দলগুলো বাদ দিলে ১২টি ইসলামী দলের নাম কেউ শোনেননি। ধরে নিলাম ১২টি ইসলামিক দল আছে। তাদের সবারই তো খুশি হওয়ার কথা সংবিধান সংশোধনীতে। রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম আছে, বিসমিল্লাহও আছে, সমস্যা কোথায়? তারা কেন গজারি কাঠের লাঠি ও রড নিয়ে রাস্তায় নামে? তাদের ইমানের ওপর তো কেউ আঘাত করেনি। আল্লাহর জায়গায় স্রষ্টা এই সামান্য অজুহাত খাড়া করেছে। আল্লাহর যেন প্রতিশব্দ নেই, স্রষ্টারও প্রতি শব্দ নেই। একটা আরবি, অন্যটা বাংলা। আল্লাহ সর্বজ্ঞ। আরবি যেমন বোঝেন, বাংলাও বোঝেন। যারা লাঠিসোটা নিয়ে রাস্তায় নেমেছে তারাও জানেন। তবু আন্দোলন করতে হবে। তাই আমার মনে হয়, আওয়ামী লীগের সঙ্গে কোথায় যেন দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে। আমি জানি না এই দূরত্ব সৃষ্টির পেছনে কারা দায়ী? তবে তাদের সঙ্গে মাঝে মধ্যে বসে আলোচনা করা যেত। ইসলামী দল যারা আওয়ামী লীগকে পছন্দ করে, সংশোধনীর আগে সংলাপ করলে, আলাপ-আলোচনা করলে এরা খুশি হতো।
ইসলাম, বিসমিল্লাহ তো এমনিতেই রাখা হয়েছে। তাদের সঙ্গে আলাপ করলে অসুবিধা কোথায় হতো?
চড়ষরঃরপং রং ধহ ধৎঃ ড়ভ ধফলঁংঃসবহঃ. রাজনীতিতে কৌশলী হতে হয়। আমরা জানি, শেখ হাসিনা যথেষ্ট কৌশলী। শেখ হাসিনা আছেন বলেই আমরা এ দেশে বসবাস করার সাহস পাই। আজকে অনেকে যারা নামধাম কুড়িয়েছেন এটা বঙ্গবন্ধুর অবদান। বঙ্গবন্ধু না হলে এটি পাকিস্তান থাকত আর আমরা বাঙালিরা দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক হয়ে পাঞ্জাবিদের বুটের লাথি খেতাম। কথাটা খারাপ শোনালেও দুঃখিত যে, কথাটা বলতে হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী কত দিক সামলাবেন। যাদের সংলাপ করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তারা যদি, তাদের সঙ্গে সংলাপ করতেন (সংলাপ না করেও যা রাখা হয়েছে) আজকে তাদের রাস্তায় নামানোও যেত না। এখন তাদের কানে কানে বলা হচ্ছে, তোমাদের সঙ্গে তো আলাপই করেনি।
রাজনীতিতে পালঙ্কে শোয়ার অভ্যাস করতে হয়, মাটিতেও বিছানা পাততে কৌশলী হতে হয়।
আমার মনে হয়, কোথাও একটা গ্যাপের সৃষ্টি হয়েছে। ওই গ্যাপে জামায়াতিরা বিভিন্ন নামে ঢুকে পড়ছে। এ গ্যাপটাকে ছোট করে আনা একান্ত জরুরি। তেলে, পানিতে মিশতে সুযোগ দেওয়া বদ্ধিমানের কাজ হবে না। জামায়াতিরা কোনোদিন আওয়ামী লীগকে সহ্য করেনি এবং করবেও না। জামায়াত ছাড়া অন্য ইসলামী দলগুলো যারা আওয়ামী লীগকে পছন্দ করে তাদের কাছে টানা এ মুহূর্তে বুদ্ধিমানের কাজ হবে। তাদের জামায়াতিরা টাকা-পয়সা দিয়ে বিভ্রান্ত করছে।
দিনের আলো, অপরিচিত মুখ আমাদের জন্য নির্ভয়। কিন্তু পরিচিত মুখ বগলে অস্ত্র রেখে বন্ধুত্ব করলেও বিপদই থেকে যায়। জামায়াত আমাদের অতি পরিচিত মুখ। মুক্তিযুদ্ধ ও তার পূর্ববর্তী সময় থেকে আমরা তাদের চিনি ও জানি। ইদানীং হরকত, হিযবুতদের পর্দার অন্তরালে থেকে পৃষ্ঠপোষকতা করছে। উদ্দেশ্য একটাই, শেখ হাসিনাকে সরিয়ে দেওয়া ও যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা করা।
এ কাজটি কোনো অবস্থায় তাদের করতে দেওয়া যেতে পারে না। ইসলামী দলগুলো যারা আওয়ামী লীগকে অপছন্দ করে না, তাদের কাছে টেনে, জামায়াতের ষড়যন্ত্রের সঠিক জওয়াব দিতে হবে।
নুরুল ইসলাম বিএসসি : সংসদ সদস্য
No comments