অর্থনীতি-বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় আইনের সংশোধন জরুরি by মামুন রশীদ
কয়েক বছর আগে আমি এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে জানিয়েছিলাম যে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে বিদেশি ব্যাংকের কাছ থেকে পাওয়া গ্যারান্টির বিপরীতে অর্থায়ন করতে হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমতি নিতে হয়। এমনকি ওই ব্যাংক যদি ‘ট্রিপল এ’ ক্রেডিট রেটিংধারীও হয়, তাতেও এই নিয়মের ব্যত্যয় নেই।
আমার কথা শুনে শ্রোতারা বেশ অবাক হন। আশ্চর্যের বিষয়, স্থানীয় কোনো ব্যাংকের গ্যারান্টির বিপরীতে অর্থায়ন করতে গেলে অবশ্য সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে অনুমোদন লাভের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে যেতে হয় না। এমনকি ব্যাংকটি অতিশয় দুর্বল হলেও। আরেক অনুষ্ঠানে এক বিদেশি সহকর্মীও জানতে চান বাংলাদেশি রপ্তানিকারকদের বিদেশি ক্রেতাদের ডিসকাউন্ট দিতে, এমনকি মাত্র এক ডলার ছাড় দেওয়ার ক্ষেত্রেও কেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন নিতে হয়।
এগুলো হচ্ছে আমাদের ব্যাংকিং খাতের হিমশৈলের সংকেত তথা প্রতিবন্ধকতার নমুনা। আমার ২৫ বছরের ব্যাংকিং কর্মজীবনে দেশের ব্যাংক খাতে এ ধরনের অনেক বড় বড় ব্যবসাবিনাশী নিয়মকানুন দেখেছি। এর বেশির ভাগ কারণ সেকেলে বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় আইন। সে জন্য দেশের বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় আইনের প্রয়োজনীয় সংশোধন বা পরিমার্জন দেখার আশা রাখি। প্রস্তাবিত আইনে বিবেচনার জন্য অনেক কিছুর সঙ্গে নিচের বিষয়গুলো ভেবে দেখা যেতে পারে:
সংশোধিত বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় আইনে মূলধনি হিসাবের লেনদেন, চলতি হিসাবের লেনদেন, আমদানি-রপ্তানিবিষয়ক সেবা, সিকিউরিটিজ-সংক্রান্ত নিয়ম এবং অফশোর ব্যাংকিং ইউনিট ইত্যাদি সম্পর্কে সুস্পষ্ট সংজ্ঞা থাকা উচিত। এতে স্থানীয় রপ্তানিকারকদের তাঁদের স্বল্পমেয়াদি প্রাপ্তব্য বিদেশি ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করার অনুমোদন দেওয়া জরুরি, যা আমদানিকারক কর্তৃক ব্যাক-টু-ব্যাক এলসির মাধ্যমে অর্থ পরিশোধের বিষয়টি ত্বরান্বিত করবে। এটি যুগপৎ দেশীয় রপ্তানিকারক ও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর জন্য সহায়ক হবে এবং বদৌলতে ঋণপ্রবাহ বাড়বে।
বিভিন্ন দেশে সার্বভৌম ঋণমানের অবনমনের কারণে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা এখন বাংলাদেশে আসতে আগ্রহী হয়ে উঠছে। এই আগ্রহকে কাজে লাগাতে হলে আমাদের স্বল্পমেয়াদি লেনদেনকে প্রণোদিত করার জন্য আইনি কাঠামোয় পরিবর্তন আনতে হবে। এটি আরও জরুরি, যেহেতু বিনিয়োগ বোর্ড স্বল্পমেয়াদি লেনদেন নিয়ে কাজ করে না।
আমাদের নেতৃস্থানীয় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো অনেক দিন ধরেই খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, তথ্যপ্রযুক্তি, চামড়ার জুতা ও ওষুধ প্রভৃতি শিল্পের বিকাশের জন্য বিদেশে অধিগ্রহণের কথা বলে আসছে। এভাবে যদি দেশকে একটি পণ্য উৎপাদনের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা যায়, তাহলে শীর্ষস্থানীয় শিল্প ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের নামে পণ্যের ব্র্যান্ড সৃষ্টির মাধ্যমে বিদেশে বাজার সম্প্রসারণ ও মার্কেটিং নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে পারবে। তখন বিদেশিরাও বাংলাদেশকে প্রতিযোগিতামূলক দামে মানসম্পন্ন পণ্য কেনার একটি অন্যতম উৎস হিসেবে গণ্য করবে।
অফশোর অ্যাকুইজিশন বা অধিগ্রহণ-প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিদেশি অর্থায়ন বা বিনিয়োগ আকর্ষণের উপায় বা কৌশলও আমাদের জানা আছে। যেমনটি ভারতের কিছু বহুজাতিক কোম্পানি করেছে। যদি এমনটি হয়, তাহলে দেশ থেকে বিদেশি মুদ্রার প্রত্যাবাসনের পরিমাণও কমবে। এ নিয়ে দেশের বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় আইনে যে উদ্বেগ রয়েছে, সেটি লাঘব হবে। তার পাশাপাশি আমাদের ব্যবসায়ীরাও এযাবৎকালে তাঁদের অর্জিত জ্ঞান ও দক্ষতার প্রমাণ রাখতে পারবেন। দেশে ও বিদেশে বাংলাদেশের শ্রমিকদের কর্মসংস্থান বাড়বে। কৃষি ও তৈরি পোশাকশিল্পে এটি অনেকটাই প্রমাণিত।
আমাদের বর্তমান বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় আইনের উদ্যোক্তাদের জন্য কিছুটা বিব্রতকরও বটে। এতে বিনিয়োগ বোর্ডের কাছ থেকে অনুমোদন পাওয়ার পরও বিদেশি উদ্যোক্তাকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে আবার অনুমতি নেওয়ার বিধান রয়েছে। একই সঙ্গে বিদেশি কোম্পানিকে এ দেশে কাজ করতে হলে যুগপৎ বিনিয়োগ বোর্ড ও বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হয়। এটা নিছক অপ্রয়োজনীয়।
বিদ্যমান আইনের আরেকটি বড় দুর্বলতা হলো, কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান অথবা পক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে তাকে বা তাদের নির্দোষ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত দোষী বলে চিহ্নিত করা হয়। অথচ আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতের বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবস্থাপনা আইনে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান দোষী প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত নির্দোষ বলে ধরে নেওয়া হয়। বাংলাদেশের আইনের আওতায় কোনো অভিযোগ আনা হলে সেটাকে শাস্তিযোগ্য ফৌজদারি অপরাধ বলে গণ্য করা হয় এবং এর জন্য কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। ভারতের আইনের আওতায় অভিযোগ উত্থাপিত হলে সেটাকে দেওয়ানি অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয় এবং অপরাধ প্রমাণিত হলে আর্থিক জরিমানার বিধান আছে, কেউ তা দিতে ব্যর্থ হলেই কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় আইনে অবশ্যই ঋণপত্রবিহীন বা ওপেন অ্যাকাউন্ট ট্র্যানজেকশনের ক্রমবর্ধমান দাবি বা চাহিদার বিষয়ে নজর দিতে হবে। বাংলাদেশে বিধানটি বর্তমানে শুধু রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকাগুলোয় স্থাপিত সম্পূর্ণ বিদেশি মালিকানাধীন কোম্পানিগুলোর জন্যই প্রযোজ্য। এই বিধান ক্রমান্বয়ে শিথিল করে এর আওতায় তৈরি পোশাকশিল্পকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। কারণ, এ ধরনের রপ্তানির ক্ষেত্রে বিদেশি ক্রেতাদের কাছ থেকেও অনুরূপ চাহিদা রয়েছে।
আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় আইনে প্রয়োজনীয় পরিবর্তনসাধন খুবই সম্ভব। ভারতও তা করেছে।
আমাদের দেশ থেকে বর্তমানে প্রায় এক হাজার ৬০০ কোটি মার্কিন ডলারেরও বেশি মূল্যের পণ্য রপ্তানি হয়। বিপরীতে আমরা প্রায় দুই হাজার ৪০০ কোটি ডলারের পণ্য বিদেশ থেকে আমদানি করি। এ অবস্থায় স্থানীয় শিল্প-বাণিজ্যকে সুরক্ষা দিয়ে আমাদের রপ্তানিভিত্তি ও গন্তব্য বা বাজার আরও বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে। সেই সঙ্গে অধিক পরিমাণে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ ও প্রবাস-আয়ের প্রবাহ জোরদার করার পদক্ষেপ নিতে হবে। আর তার জন্য ১৯৪৭ সালের ফরেন এক্সচেঞ্জ অ্যাক্ট একটি বিরাট বাধা হিসেবে কাজ করছে। এটি ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ কিংবা ‘মধ্যম আয়ের বাংলাদেশের’ স্বপ্নের সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। তাই আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় আইন সংশোধন, আধুনিকায়ন বা যুগোপযোগী করার জন্য এখনই সর্বমুখী উদ্যোগ নিতে হবে।
মামুন রশীদ: ব্যাংকার ও আইসিসি বাংলাদেশের ব্যাংকিং কমিশনের চেয়ারম্যান।
এগুলো হচ্ছে আমাদের ব্যাংকিং খাতের হিমশৈলের সংকেত তথা প্রতিবন্ধকতার নমুনা। আমার ২৫ বছরের ব্যাংকিং কর্মজীবনে দেশের ব্যাংক খাতে এ ধরনের অনেক বড় বড় ব্যবসাবিনাশী নিয়মকানুন দেখেছি। এর বেশির ভাগ কারণ সেকেলে বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় আইন। সে জন্য দেশের বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় আইনের প্রয়োজনীয় সংশোধন বা পরিমার্জন দেখার আশা রাখি। প্রস্তাবিত আইনে বিবেচনার জন্য অনেক কিছুর সঙ্গে নিচের বিষয়গুলো ভেবে দেখা যেতে পারে:
সংশোধিত বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় আইনে মূলধনি হিসাবের লেনদেন, চলতি হিসাবের লেনদেন, আমদানি-রপ্তানিবিষয়ক সেবা, সিকিউরিটিজ-সংক্রান্ত নিয়ম এবং অফশোর ব্যাংকিং ইউনিট ইত্যাদি সম্পর্কে সুস্পষ্ট সংজ্ঞা থাকা উচিত। এতে স্থানীয় রপ্তানিকারকদের তাঁদের স্বল্পমেয়াদি প্রাপ্তব্য বিদেশি ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করার অনুমোদন দেওয়া জরুরি, যা আমদানিকারক কর্তৃক ব্যাক-টু-ব্যাক এলসির মাধ্যমে অর্থ পরিশোধের বিষয়টি ত্বরান্বিত করবে। এটি যুগপৎ দেশীয় রপ্তানিকারক ও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর জন্য সহায়ক হবে এবং বদৌলতে ঋণপ্রবাহ বাড়বে।
বিভিন্ন দেশে সার্বভৌম ঋণমানের অবনমনের কারণে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা এখন বাংলাদেশে আসতে আগ্রহী হয়ে উঠছে। এই আগ্রহকে কাজে লাগাতে হলে আমাদের স্বল্পমেয়াদি লেনদেনকে প্রণোদিত করার জন্য আইনি কাঠামোয় পরিবর্তন আনতে হবে। এটি আরও জরুরি, যেহেতু বিনিয়োগ বোর্ড স্বল্পমেয়াদি লেনদেন নিয়ে কাজ করে না।
আমাদের নেতৃস্থানীয় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো অনেক দিন ধরেই খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, তথ্যপ্রযুক্তি, চামড়ার জুতা ও ওষুধ প্রভৃতি শিল্পের বিকাশের জন্য বিদেশে অধিগ্রহণের কথা বলে আসছে। এভাবে যদি দেশকে একটি পণ্য উৎপাদনের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা যায়, তাহলে শীর্ষস্থানীয় শিল্প ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের নামে পণ্যের ব্র্যান্ড সৃষ্টির মাধ্যমে বিদেশে বাজার সম্প্রসারণ ও মার্কেটিং নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে পারবে। তখন বিদেশিরাও বাংলাদেশকে প্রতিযোগিতামূলক দামে মানসম্পন্ন পণ্য কেনার একটি অন্যতম উৎস হিসেবে গণ্য করবে।
অফশোর অ্যাকুইজিশন বা অধিগ্রহণ-প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিদেশি অর্থায়ন বা বিনিয়োগ আকর্ষণের উপায় বা কৌশলও আমাদের জানা আছে। যেমনটি ভারতের কিছু বহুজাতিক কোম্পানি করেছে। যদি এমনটি হয়, তাহলে দেশ থেকে বিদেশি মুদ্রার প্রত্যাবাসনের পরিমাণও কমবে। এ নিয়ে দেশের বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় আইনে যে উদ্বেগ রয়েছে, সেটি লাঘব হবে। তার পাশাপাশি আমাদের ব্যবসায়ীরাও এযাবৎকালে তাঁদের অর্জিত জ্ঞান ও দক্ষতার প্রমাণ রাখতে পারবেন। দেশে ও বিদেশে বাংলাদেশের শ্রমিকদের কর্মসংস্থান বাড়বে। কৃষি ও তৈরি পোশাকশিল্পে এটি অনেকটাই প্রমাণিত।
আমাদের বর্তমান বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় আইনের উদ্যোক্তাদের জন্য কিছুটা বিব্রতকরও বটে। এতে বিনিয়োগ বোর্ডের কাছ থেকে অনুমোদন পাওয়ার পরও বিদেশি উদ্যোক্তাকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে আবার অনুমতি নেওয়ার বিধান রয়েছে। একই সঙ্গে বিদেশি কোম্পানিকে এ দেশে কাজ করতে হলে যুগপৎ বিনিয়োগ বোর্ড ও বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হয়। এটা নিছক অপ্রয়োজনীয়।
বিদ্যমান আইনের আরেকটি বড় দুর্বলতা হলো, কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান অথবা পক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে তাকে বা তাদের নির্দোষ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত দোষী বলে চিহ্নিত করা হয়। অথচ আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতের বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবস্থাপনা আইনে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান দোষী প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত নির্দোষ বলে ধরে নেওয়া হয়। বাংলাদেশের আইনের আওতায় কোনো অভিযোগ আনা হলে সেটাকে শাস্তিযোগ্য ফৌজদারি অপরাধ বলে গণ্য করা হয় এবং এর জন্য কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। ভারতের আইনের আওতায় অভিযোগ উত্থাপিত হলে সেটাকে দেওয়ানি অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয় এবং অপরাধ প্রমাণিত হলে আর্থিক জরিমানার বিধান আছে, কেউ তা দিতে ব্যর্থ হলেই কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় আইনে অবশ্যই ঋণপত্রবিহীন বা ওপেন অ্যাকাউন্ট ট্র্যানজেকশনের ক্রমবর্ধমান দাবি বা চাহিদার বিষয়ে নজর দিতে হবে। বাংলাদেশে বিধানটি বর্তমানে শুধু রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকাগুলোয় স্থাপিত সম্পূর্ণ বিদেশি মালিকানাধীন কোম্পানিগুলোর জন্যই প্রযোজ্য। এই বিধান ক্রমান্বয়ে শিথিল করে এর আওতায় তৈরি পোশাকশিল্পকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। কারণ, এ ধরনের রপ্তানির ক্ষেত্রে বিদেশি ক্রেতাদের কাছ থেকেও অনুরূপ চাহিদা রয়েছে।
আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় আইনে প্রয়োজনীয় পরিবর্তনসাধন খুবই সম্ভব। ভারতও তা করেছে।
আমাদের দেশ থেকে বর্তমানে প্রায় এক হাজার ৬০০ কোটি মার্কিন ডলারেরও বেশি মূল্যের পণ্য রপ্তানি হয়। বিপরীতে আমরা প্রায় দুই হাজার ৪০০ কোটি ডলারের পণ্য বিদেশ থেকে আমদানি করি। এ অবস্থায় স্থানীয় শিল্প-বাণিজ্যকে সুরক্ষা দিয়ে আমাদের রপ্তানিভিত্তি ও গন্তব্য বা বাজার আরও বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে। সেই সঙ্গে অধিক পরিমাণে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ ও প্রবাস-আয়ের প্রবাহ জোরদার করার পদক্ষেপ নিতে হবে। আর তার জন্য ১৯৪৭ সালের ফরেন এক্সচেঞ্জ অ্যাক্ট একটি বিরাট বাধা হিসেবে কাজ করছে। এটি ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ কিংবা ‘মধ্যম আয়ের বাংলাদেশের’ স্বপ্নের সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। তাই আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় আইন সংশোধন, আধুনিকায়ন বা যুগোপযোগী করার জন্য এখনই সর্বমুখী উদ্যোগ নিতে হবে।
মামুন রশীদ: ব্যাংকার ও আইসিসি বাংলাদেশের ব্যাংকিং কমিশনের চেয়ারম্যান।
No comments