শেকলে বাঁধা জীবন by সমীর চক্রবর্তী
কিশোর ছেলেটির গলায় লোহার শেকল। গাছের সঙ্গে পশুর মতো বেঁধে রাখা হয় ওকে। একই বৃত্তে ঘুরতে থাকে বার বার। উদোম শরীরে সারাদিন সে মাটিতে গড়াগড়ি করে। মুখে রা নেই। ধারে-কাছে কাউকে পেলে ইশারা-ইঙ্গিতে শেকলের বাঁধন খুলে দেওয়ার আর্তি জানায়। এভাবেই জীবনের ১২টি বছর কেটে গেছে ওর।
আপাত নির্মম দৃশ্যটি যে কাউকেই ব্যথিত করবে। অমানবিক কাণ্ড ভেবে কেউ বা প্রতিবাদও করে উঠবেন। কিন্তু কামরুলের হতদরিদ্র পরিবারের পক্ষে এ ছাড়া আর কিছু করার নেই।
টাকার অভাবে মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলেটির চিকিৎসা করাতে পারেননি দিনমজুর কামাল হোসেন। সন্তানটি যাতে হারিয়ে না যায়, সেই কারণে শেকল দিয়ে তাকে বেঁধে রাখার চেষ্টা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বাঞ্ছারামপুর উপজেলার মধ্যপাড়া এলাকার দিনমজুর কামাল হোসেনের দুই ছেলে এক মেয়ের মধ্যে সবার বড় ১৫ বছরের কিশোর কামরুল। জন্মের পর তিন বছরের মাথায় টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার পর মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে ছেলেটি।
দরিদ্র বাবার পক্ষে চিকিৎসা করানো সম্ভব হয়নি। এক সময় তার ‘পাগলামির’ মাত্রা বেড়ে যায়। কী আর করা। পায়ে দড়ি পড়লো তার। তাতেও লাভ হলো না। দড়ি ছিঁড়ে অন্যের বাড়ির জিনিসপত্র নষ্ট করে কামরুল। উপায়ন্তর না দেখে মা বাবা ওর গলায় শেকল পেচিয়ে তালা মেরে বেঁধে রাখেন গাছের সঙ্গে। এভাবেই চলছে ১২ বছর।
দিনমজুর কামাল হোসেনের অভাবের সংসার। ছোট্ট একটি দোচালা ঘরে একটি খাট ছাড়া আর কোনো আসবাবপত্র নেই। বাড়িতে ঢুকতেই দেখা যাবে মেহগনি গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়েছে কামরুলকে। মানুষ দেখলেই শেকল দেখিয়ে খুলে দেওয়ার ইশারা করে সে।
কামরুলের বাবা কামাল হোসেন এবং মা সামছুন নাহার বাংলানিউজকে জানান, ছেলেটি নিজ ঘরের মালপত্র, খাবার ও অন্যের বাড়ির মালামাল নষ্ট করা ছাড়াও মাঝেমধ্যে হারিয়ে যেত। তাই বাধ্য হয়ে শেকল দিয়ে গাছের সঙ্গে তাকে বেঁধে রাখা হয়। নগ্ন শরীরে খোলা আকাশের নিচে শেকলে বাঁধা অবস্থায় কেটেছে তার ১২ বছর।
তারা আরও জানান, শিকলে বাঁধা অবস্থায় মা সামছুন নাহার কামরুলকে খাইয়ে দেন। সন্ধ্যার পর ঘরে নিয়ে খাটের সঙ্গে বেঁধে রাখেন সন্তানকে। অসুস্থ হওয়ার পর থেকেই সে কথা বলতে পারে না বলে জানান তারা।
কামরুলের বাবা কামাল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ‘অভাবের সংসারে ছেলেডার চিকিৎসা করাইতে পারি নাই। জ্বরে ছেলেডা পাগল হইয়া গেছে। হারাইয়া যাইতে পারে এই ভয়ে ছিকল দিয়া বাইন্দা রাখছি।’
প্রতিবেশী ছালেহা খাতুন (৬০) ও শামীম আহমেদ (৩৫) বাংলানিউজকে বলেন, সেই ছোটকাল থেকে ছেলেটাকে শেকলে বেঁধে রাখা হয়েছে। তার চিৎকার আমাদের অনেক কষ্ট দেয়। কিন্তু আমাদের তো কিছু করার নেই।
এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি সদস্য সাব মিয়া বলেন, বিষয়টি আমি জানি। মাঝে-মধ্যে সহযোগিতাও করি। কিন্তু আমার মনে হয় ওর ভালো চিকিৎসা প্রয়োজন।
এ ব্যাপারে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ১২ বছর ধরে ছেলেটি শেকলে বাঁধা অবস্থায় রয়েছে, এটা খুবই দুঃখজনক। আমি খোঁজ নিয়ে অবশ্যই তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করবো।
টাকার অভাবে মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলেটির চিকিৎসা করাতে পারেননি দিনমজুর কামাল হোসেন। সন্তানটি যাতে হারিয়ে না যায়, সেই কারণে শেকল দিয়ে তাকে বেঁধে রাখার চেষ্টা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বাঞ্ছারামপুর উপজেলার মধ্যপাড়া এলাকার দিনমজুর কামাল হোসেনের দুই ছেলে এক মেয়ের মধ্যে সবার বড় ১৫ বছরের কিশোর কামরুল। জন্মের পর তিন বছরের মাথায় টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার পর মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে ছেলেটি।
দরিদ্র বাবার পক্ষে চিকিৎসা করানো সম্ভব হয়নি। এক সময় তার ‘পাগলামির’ মাত্রা বেড়ে যায়। কী আর করা। পায়ে দড়ি পড়লো তার। তাতেও লাভ হলো না। দড়ি ছিঁড়ে অন্যের বাড়ির জিনিসপত্র নষ্ট করে কামরুল। উপায়ন্তর না দেখে মা বাবা ওর গলায় শেকল পেচিয়ে তালা মেরে বেঁধে রাখেন গাছের সঙ্গে। এভাবেই চলছে ১২ বছর।
দিনমজুর কামাল হোসেনের অভাবের সংসার। ছোট্ট একটি দোচালা ঘরে একটি খাট ছাড়া আর কোনো আসবাবপত্র নেই। বাড়িতে ঢুকতেই দেখা যাবে মেহগনি গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়েছে কামরুলকে। মানুষ দেখলেই শেকল দেখিয়ে খুলে দেওয়ার ইশারা করে সে।
কামরুলের বাবা কামাল হোসেন এবং মা সামছুন নাহার বাংলানিউজকে জানান, ছেলেটি নিজ ঘরের মালপত্র, খাবার ও অন্যের বাড়ির মালামাল নষ্ট করা ছাড়াও মাঝেমধ্যে হারিয়ে যেত। তাই বাধ্য হয়ে শেকল দিয়ে গাছের সঙ্গে তাকে বেঁধে রাখা হয়। নগ্ন শরীরে খোলা আকাশের নিচে শেকলে বাঁধা অবস্থায় কেটেছে তার ১২ বছর।
তারা আরও জানান, শিকলে বাঁধা অবস্থায় মা সামছুন নাহার কামরুলকে খাইয়ে দেন। সন্ধ্যার পর ঘরে নিয়ে খাটের সঙ্গে বেঁধে রাখেন সন্তানকে। অসুস্থ হওয়ার পর থেকেই সে কথা বলতে পারে না বলে জানান তারা।
কামরুলের বাবা কামাল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ‘অভাবের সংসারে ছেলেডার চিকিৎসা করাইতে পারি নাই। জ্বরে ছেলেডা পাগল হইয়া গেছে। হারাইয়া যাইতে পারে এই ভয়ে ছিকল দিয়া বাইন্দা রাখছি।’
প্রতিবেশী ছালেহা খাতুন (৬০) ও শামীম আহমেদ (৩৫) বাংলানিউজকে বলেন, সেই ছোটকাল থেকে ছেলেটাকে শেকলে বেঁধে রাখা হয়েছে। তার চিৎকার আমাদের অনেক কষ্ট দেয়। কিন্তু আমাদের তো কিছু করার নেই।
এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি সদস্য সাব মিয়া বলেন, বিষয়টি আমি জানি। মাঝে-মধ্যে সহযোগিতাও করি। কিন্তু আমার মনে হয় ওর ভালো চিকিৎসা প্রয়োজন।
এ ব্যাপারে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ১২ বছর ধরে ছেলেটি শেকলে বাঁধা অবস্থায় রয়েছে, এটা খুবই দুঃখজনক। আমি খোঁজ নিয়ে অবশ্যই তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করবো।
No comments