মায়েশা মিলল পাইকপাড়ায়
'সারা রাত এক ফোঁটা ঘুমাতে পারিনি। আমার সোনামণি কোথায় আছে? কিভাবে আছে? ভাবতেই নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছিল।' দীর্ঘশ্বাস ফেলে এ কথাগুলো বলছিলেন মা খালেদা বেগম। এখন তাঁর মুখে হাসি। কোলে হাসছে-খেলছে আট মাসের মেয়ে মোবাশ্বিরা আলম মায়েশা।
গত শনিবার সন্ধ্যায় খিলগাঁওয়ের সি ব্লকের ভাড়া বাসা থেকে ডাকাতদল অপহরণ করে মায়েশাকে। এর প্রায় ১৭ ঘণ্টার মাথায় গতকাল মিরপুরের পাইকপাড়ায় একটি ভবনের নিচ থেকে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে ফিরিয়ে দিয়েছে মা-বাবার কোলে। একমাত্র সন্তানকে ফিরে পেয়ে তাঁরা আনন্দে আত্মহারা। পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গতকাল দুপুরে মিরপুরের পাইকপাড়ার একটি বাড়ির সামনে থেকে মায়েশাকে উদ্ধার করা হয়। অপহরণকারী ডাকাতরা মায়েশার বুকে একটি কাগজ লাগিয়ে সেখানে তার বাবার মোবাইল ফোন নম্বর লিখে রাখে। মুক্তিপণ আদায়ের জন্যই এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে ধারণা পুলিশের। তবে ডাকাতি, শিশু অপহরণ ও উদ্ধারের ঘটনা রহস্যজনক বলে মন্তব্য করেছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। এ রহস্য উদ্ঘাটন ও ডাকাতদলকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান তাঁরা।
খিলগাঁও থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আজিজুর রহমান জানান, গত শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সি ব্লকের ২২৭/সি নম্বর বাড়ির চতুর্থ তলায় ডাকাতির ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। পাঁচজন ডাকাত ধারালো অস্ত্র নিয়ে ঘরে ঢুকে গৃহকর্তা ও গৃহকর্ত্রীর হাত-পা বেঁধে ফেলে। পরে বাসায় লুটপাট চালায় তারা। যাওয়ার সময় ডাকাতদল এই দম্পতির আট মাসের শিশুকন্যা মায়েশাকেও নিয়ে যায়। ওই রাতেই পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করে। তবে গতকাল পর্যন্ত কোনো মামলা দায়ের হয়নি।
জানা গেছে, শিশুটির বাবার নাম শাহ আলম। তিনি অগ্রণী ব্যাংকের শ্যামলী শাখার কর্মকর্তা। একই বাসায় তাঁর বড় বোনের পরিবারও থাকে। ঘটনার সময় শাহ আলম বাসার বাইরে ছিলেন। পরিবারের সদস্যরা কালের কণ্ঠকে জানান, ডাকাতরা ধারালো অস্ত্রের মুখে বাসার সবার হাত, মুখ ও চোখ বেঁধে ফেলে। এরপর বাসার আলমারি ও ওয়ার্ডরোব খুলে ২০ ভরি স্বর্ণালংকার, নগদ প্রায় দেড় লাখ টাকা ও দুটি মোবাইল ফোনসেট লুটে নেয়। যাওয়ার সময় তারা মায়েশাকে তুলে নিয়ে যায়।
শাহ আলমের স্ত্রী খালেদা বেগম জানান, মায়েশাকে নিয়ে যাওয়ার সময় ডাকাতরা দুটি ফোন নম্বরে যোগাযোগ করে মুক্তিপণ বাবদ ২৫ লাখ টাকা দিয়ে মায়েশাকে ফিরিয়ে আনার কথা বলে যায়। তবে পরে নম্বর দুটি বন্ধ পান তাঁরা।
শাহ আলমের বড় বোন প্রত্যক্ষদর্শী শামসুন্নাহার বলেন, দরজায় নক করার পর তাঁর স্বামী হুমায়ুন কবীর দরজা খুলে দিলে কয়েকজন যুবক বাসায় ঢুকে পড়ে। তারা বলে, পুলিশ তাদের ধাওয়া করেছে, একটু সময় থেকেই তারা চলে যাবে। এ ছাড়া যুবকরা জানতে চায়, বাসার ভাড়া কত? ব্যাংকে কত টাকা আছে?
উদ্ধার হলো যেভাবে : মিরপুর মডেল থানার ওসি কাজী ওয়াজেদ আলী কালের কণ্ঠকে জানান, গতকাল দুপুরে কে বা কারা দক্ষিণ পাইকপাড়ার ৪৭৬/ক নম্বরের পাঁচতলা ভবনের নিচে শিশুটিকে ফেলে পালিয়ে যায়। ওই বাড়ির নিচতলার বাসার গৃহকর্মী দুপুর পৌনে ১২টার দিকে প্রথমে শিশুটির কান্না শুনতে পায়। বাসা থেকে বের হয়ে গেটের পাশে শিশুটিকে দেখতে পায় সে। শিশুটির পরনে ছিল একটি জামা। আর তার পাশে গেঞ্জিতে মোড়ানো অবস্থায় একটি ফিডার ছিল। একপর্যায়ে সেখানে এলাকার লোকজন এসে জড়ো হয়। তারা গেঞ্জিটি খুলে দেখে তাতে মার্কার কলমে লেখা রয়েছে, 'দয়া করে খিলগাঁও থানায় পৌঁছে দিন।' চিরকুটের নিচে একটি মোবাইল ফোন নম্বরও দেওয়া ছিল। ওই নম্বরটি মায়েশার বাবার।
পাইকপাড়ার ওই বাড়ির মালিক আজহারুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, 'গেঞ্জিতে লেখা ফোন নম্বর ও মিরপুর থানায় আমরা যোগাযোগ করি। পরে পুলিশ এসে শিশুটিকে নিয়ে যায়।'
জানা গেছে, দুপুর ১২টার দিকে মিরপুর থানার পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধার করার পরই গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও খিলগাঁও থানার পুলিশের একটি দল সেখানে যায়। পরে দুপুর ১টার দিকে মা-বাবাসহ শিশুটিকে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ডিবির উপপুলিশ কমিশনার মনিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, 'আমরা শিশুটিকে উদ্ধারের বিষয়কে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। অভিযানের কারণে বাঁচার জন্যই শিশুটিকে রেখে গেছে ওরা। ডাকাতদের গ্রেপ্তারেও অভিযান চলানো হবে।' মনিরুল আরো বলেন, ডাকাতির ঘটনায় 'কুশীলব' কারা, তা জানা গেছে। শুধু ডাকাতি নয়, মুক্তিপণের বিনিময়ে টাকা নেওয়াই তাদের উদ্দেশ্য ছিল।
গতকাল দুপুর আড়াইটার দিকে খিলগাঁও থানায় আনুষ্ঠানিকতা শেষে মায়েশাকে তার মা-বাবার কোলে তুলে দেওয়া হয়। মায়েশাকে উদ্ধারের ঘটনায় সি ব্লকের প্রতিবেশীরাও আনন্দিত। গতকাল বিকেলে মায়েশাকে একবার দেখতে বাসায় ভিড় করেন তাঁরা।
মায়েশাকে ফেরত পাওয়ার পর বাবা শাহ আলম বলেন, 'অনেক ভালো লাগছে। আমি গণমাধ্যম, পুলিশ ও র্যাবের ভূমিকায় অনেক খুশি। সবাইকে ধন্যবাদ।' মায়েশার মা খালেদা বলেন, 'মনে হচ্ছে, আবার জীবন ফিরে পেলাম। সবার সহযোগিতায় আমার বাচ্চাকে খুঁজে পেয়েছি। আমি সবার কাছে কৃতজ্ঞ।' তবে পরিচিত কেউ বা বিরোধের কারণে কোনো পক্ষ এ ঘটনা ঘটিয়েছে কি না জানতে চাইলে তাঁরা বলেন, 'আমাদের কোনো শত্রু নেই। বুঝতে পারছি না, ডাকাতরা কেন ওকে নিল? টাকার জন্যই হয়তো নিয়েছিল।'
এদিকে গত রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা হয়নি। কোনো সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা যায়নি বলেও জানায় খিলগাঁও থানার পুলিশ।
খিলগাঁও থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আজিজুর রহমান জানান, গত শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সি ব্লকের ২২৭/সি নম্বর বাড়ির চতুর্থ তলায় ডাকাতির ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। পাঁচজন ডাকাত ধারালো অস্ত্র নিয়ে ঘরে ঢুকে গৃহকর্তা ও গৃহকর্ত্রীর হাত-পা বেঁধে ফেলে। পরে বাসায় লুটপাট চালায় তারা। যাওয়ার সময় ডাকাতদল এই দম্পতির আট মাসের শিশুকন্যা মায়েশাকেও নিয়ে যায়। ওই রাতেই পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করে। তবে গতকাল পর্যন্ত কোনো মামলা দায়ের হয়নি।
জানা গেছে, শিশুটির বাবার নাম শাহ আলম। তিনি অগ্রণী ব্যাংকের শ্যামলী শাখার কর্মকর্তা। একই বাসায় তাঁর বড় বোনের পরিবারও থাকে। ঘটনার সময় শাহ আলম বাসার বাইরে ছিলেন। পরিবারের সদস্যরা কালের কণ্ঠকে জানান, ডাকাতরা ধারালো অস্ত্রের মুখে বাসার সবার হাত, মুখ ও চোখ বেঁধে ফেলে। এরপর বাসার আলমারি ও ওয়ার্ডরোব খুলে ২০ ভরি স্বর্ণালংকার, নগদ প্রায় দেড় লাখ টাকা ও দুটি মোবাইল ফোনসেট লুটে নেয়। যাওয়ার সময় তারা মায়েশাকে তুলে নিয়ে যায়।
শাহ আলমের স্ত্রী খালেদা বেগম জানান, মায়েশাকে নিয়ে যাওয়ার সময় ডাকাতরা দুটি ফোন নম্বরে যোগাযোগ করে মুক্তিপণ বাবদ ২৫ লাখ টাকা দিয়ে মায়েশাকে ফিরিয়ে আনার কথা বলে যায়। তবে পরে নম্বর দুটি বন্ধ পান তাঁরা।
শাহ আলমের বড় বোন প্রত্যক্ষদর্শী শামসুন্নাহার বলেন, দরজায় নক করার পর তাঁর স্বামী হুমায়ুন কবীর দরজা খুলে দিলে কয়েকজন যুবক বাসায় ঢুকে পড়ে। তারা বলে, পুলিশ তাদের ধাওয়া করেছে, একটু সময় থেকেই তারা চলে যাবে। এ ছাড়া যুবকরা জানতে চায়, বাসার ভাড়া কত? ব্যাংকে কত টাকা আছে?
উদ্ধার হলো যেভাবে : মিরপুর মডেল থানার ওসি কাজী ওয়াজেদ আলী কালের কণ্ঠকে জানান, গতকাল দুপুরে কে বা কারা দক্ষিণ পাইকপাড়ার ৪৭৬/ক নম্বরের পাঁচতলা ভবনের নিচে শিশুটিকে ফেলে পালিয়ে যায়। ওই বাড়ির নিচতলার বাসার গৃহকর্মী দুপুর পৌনে ১২টার দিকে প্রথমে শিশুটির কান্না শুনতে পায়। বাসা থেকে বের হয়ে গেটের পাশে শিশুটিকে দেখতে পায় সে। শিশুটির পরনে ছিল একটি জামা। আর তার পাশে গেঞ্জিতে মোড়ানো অবস্থায় একটি ফিডার ছিল। একপর্যায়ে সেখানে এলাকার লোকজন এসে জড়ো হয়। তারা গেঞ্জিটি খুলে দেখে তাতে মার্কার কলমে লেখা রয়েছে, 'দয়া করে খিলগাঁও থানায় পৌঁছে দিন।' চিরকুটের নিচে একটি মোবাইল ফোন নম্বরও দেওয়া ছিল। ওই নম্বরটি মায়েশার বাবার।
পাইকপাড়ার ওই বাড়ির মালিক আজহারুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, 'গেঞ্জিতে লেখা ফোন নম্বর ও মিরপুর থানায় আমরা যোগাযোগ করি। পরে পুলিশ এসে শিশুটিকে নিয়ে যায়।'
জানা গেছে, দুপুর ১২টার দিকে মিরপুর থানার পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধার করার পরই গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও খিলগাঁও থানার পুলিশের একটি দল সেখানে যায়। পরে দুপুর ১টার দিকে মা-বাবাসহ শিশুটিকে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ডিবির উপপুলিশ কমিশনার মনিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, 'আমরা শিশুটিকে উদ্ধারের বিষয়কে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। অভিযানের কারণে বাঁচার জন্যই শিশুটিকে রেখে গেছে ওরা। ডাকাতদের গ্রেপ্তারেও অভিযান চলানো হবে।' মনিরুল আরো বলেন, ডাকাতির ঘটনায় 'কুশীলব' কারা, তা জানা গেছে। শুধু ডাকাতি নয়, মুক্তিপণের বিনিময়ে টাকা নেওয়াই তাদের উদ্দেশ্য ছিল।
গতকাল দুপুর আড়াইটার দিকে খিলগাঁও থানায় আনুষ্ঠানিকতা শেষে মায়েশাকে তার মা-বাবার কোলে তুলে দেওয়া হয়। মায়েশাকে উদ্ধারের ঘটনায় সি ব্লকের প্রতিবেশীরাও আনন্দিত। গতকাল বিকেলে মায়েশাকে একবার দেখতে বাসায় ভিড় করেন তাঁরা।
মায়েশাকে ফেরত পাওয়ার পর বাবা শাহ আলম বলেন, 'অনেক ভালো লাগছে। আমি গণমাধ্যম, পুলিশ ও র্যাবের ভূমিকায় অনেক খুশি। সবাইকে ধন্যবাদ।' মায়েশার মা খালেদা বলেন, 'মনে হচ্ছে, আবার জীবন ফিরে পেলাম। সবার সহযোগিতায় আমার বাচ্চাকে খুঁজে পেয়েছি। আমি সবার কাছে কৃতজ্ঞ।' তবে পরিচিত কেউ বা বিরোধের কারণে কোনো পক্ষ এ ঘটনা ঘটিয়েছে কি না জানতে চাইলে তাঁরা বলেন, 'আমাদের কোনো শত্রু নেই। বুঝতে পারছি না, ডাকাতরা কেন ওকে নিল? টাকার জন্যই হয়তো নিয়েছিল।'
এদিকে গত রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা হয়নি। কোনো সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা যায়নি বলেও জানায় খিলগাঁও থানার পুলিশ।
No comments