ধর্ষকের সঙ্গে বিয়ে-ধর্ষণ প্রশমনের সামাজিক মলম? by জোবাইদা নাসরীন
ছোট্ট মেয়েটি। বয়স এখনো ১১ পেরোয়নি। পৃথিবীর অনেক কিছুই বোঝার বাকি তার। তেমনি বোঝার বাকি ছিল নারী-পুরুষের সামাজিক ক্ষমতার বিষয়টি। সে নারী, তার শরীরই তার শত্রু—বিষয়টি তাকে জানিয়ে দিয়েছেন ধর্ষক শিক্ষক আবদুল জলিল।
এ ঘটনা তার ছোট্ট প্রজাপতির মতো ঘুরে বেড়ানোর জীবনকে কতটুকু পাল্টে দেবে, বুঝতে পারেনি সে। শুধু আগের মতো মাদ্রাসায় যেতে পারত না। ভয় পেত। কিন্তু সেই ভয়ই শেষ ছিল না। ভয়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে যোগ হলো শারীরিক পরিবর্তন। এই পরিবর্তনই আমাদের জানিয়ে দিয়েছে, পৃথিবীর অন্যতম এক ভয়াবহ নির্যাতনের কথা। শিশুটির শৈশব আর নেই, নেই চাঞ্চল্যময় হুড়োহুড়ি। গত বছরের আগস্ট মাসে সে ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এখন সেই শিশুটি ঘরের বাইরে যেতে পারে না, খেলতে পারে না, পারে না উচ্ছলতার রং ছড়াতে। মাদ্রাসার শিক্ষক আবদুল জলিল শিশুটিকে ধর্ষণ করেছেন এবং সেই ছোট্ট শিশুটি এখন মা হতে চলেছে।
এই জঘন্যতম ঘটনাটি ঘটেছে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার কালচোঁ (উত্তর) কাপাইকাপ গ্রামে (প্রথম আলো ৮ ফেব্রুয়ারি)। প্রতিবেদনটি পড়ার সময় কানে বাজছিল সেই শিশুটির চিৎকার। এ বিষয় নিয়ে তিনবার সালিস হয়েছে। তাতে বিচারের নামে আশ্বাস আর বিয়ের নামে প্রহসন হয়েছে। প্রশ্ন হলো, ধর্ষকের সঙ্গে ধর্ষণের শিকার নারীর বিয়ে দেওয়ার মধ্য দিয়ে ধর্ষণের মতো অপরাধের সামাজিক ‘মীমাংসা’ আর কতকাল জিইয়ে রাখবে পুরুষতান্ত্রিক সহিংসতাকে? ধর্ষকের সঙ্গে ধর্ষণের শিকার নারীর বিয়ে আসলে ধর্ষণের মতো পীড়নের সামাজিক বৈধতা দানের প্রক্রিয়া ছাড়া কিছুই নয়।
শরীয়তপুরের কিশোরী হেনা হত্যার কষ্ট, বেদনা আর বিচারের দাবি নিয়ে মানুষ যখন প্রতিবাদমুখর, দেশজুড়ে চলছে শোক ও বিক্ষুব্ধতা, তখন চাঁদপুরের এ ঘটনা মানুষকে আরও বিচলিত করেছে, শঙ্কিত করছে। এমনিতেই এ দেশে নারীর শৈশব ও কৈশোর ছিনতাই হয় পারিবারিক লিঙ্গীয় রাজনীতির পরিসরে। আর ঘরে-বাইরে প্রায়ই কন্যাশিশুকে ধর্ষণ কিংবা নানা ধরনের যৌন হয়রানির শিকার হতে হয় ‘পুরুষত্ব’র প্রতি সামাজিক সমর্থনের জোশে। এই জোশ পূর্ণ জোর হয়ে আরও বেশি দাপুটে হয়ে ওঠে এ বিষয়ে সমাজ ও রাষ্ট্রের অঙ্গাঙ্গিকতায়, যার কারণে ধর্ষণের পর রাষ্ট্রীয়ভাবে ধর্ষককে খুঁজে পেতে সময় লাগে। আর পাতানো সালিস অপরাধের শিকার নারীকে দ্বিতীয় দফা ‘সামাজিক ধর্ষণ’ করে, আর অনেক ক্ষেত্রে যার পরিণতি নারীর আত্মহত্যা কিংবা সালিসের রায় হিসেবে দোররা।
ধর্ষণের স্পষ্ট আলামত নিয়ে ধর্ষণের শিকার শিশুটি হাজির হয়েছে রাষ্ট্র ও সমাজের বিবেকের কাছে। কিন্তু সালিসই নয়, শিশুটির বিপক্ষে সেই মাদ্রাসার গভর্নিং বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য শিক্ষক। এরই মধ্যে সেই শিশুটির বিনা অনুমতিতে এবং অনুপস্থিতিতে সারা হয়েছে বিয়ে। শিশুটিকে ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত জলিলের বয়ান, ‘ঘটনাটি যেভাবেই ঘটুক না কেন, বিয়ের মাধ্যমে এর সমাধান হয়ে গেছে।’ ধর্ষণের কী ভয়ংকর সামাধান! ধর্ষক নারীকে ধর্ষণ করবেন, অন্যদিকে এর প্রশমনের দাওয়া বা সমাধান তিনিই দেবেন! শুধু তা-ই নয়, মাদ্রাসার শিক্ষকের ক্ষতি নিয়েও বিচলিত তাঁর সহকর্মীরা। গভর্নিং বোর্ডের একজন সদস্য বলেছেন, ‘আমরা মাদ্রাসা কমিটি ও এলাকাবাসী বসে মেয়েটির বিয়ে পড়িয়েছি। কিন্তু তার বাবা আমাদের সিদ্ধান্ত না মেনে আদালতে মামলা করেছেন। এতে ওই শিক্ষকের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে যাবে।’ আর নারীর ক্ষতি বা ক্ষত? ধর্ষকের সঙ্গে বিয়েই কি এই ক্ষতির ন্যায্য সামাজিক সমাধান?
বাংলাদেশে কন্যাশিশু ধর্ষণের ঘটনা এই প্রথম নয়। বছর দশেক আগে ঢাকার আদালতপাড়ায় পুলিশ কন্ট্রোল রুমে ধর্ষণের শিকার হয় ছয় বছর বয়সী শিশু তানিয়া। দুই বছর আগে টঙ্গীতে ধর্ষণের পর নিজ গৃহেই মেরে ফেলা হয় সাত বছরের শিশু ফাতেমাকে। ধর্ষণ মামলাসংক্রান্ত প্রচলিত আইনের ‘অতি প্রয়োজনীয়’ মেডিকেল কাগজপত্রের অভাব দেখিয়ে এই মামলাটির বিচার-প্রক্রিয়াকে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল অনেক দিন।
ধর্ষণের মতো অপরাধ দেখার ক্ষেত্রে সমাজ ও রাষ্ট্রে চর্চিত তিনটি দৃষ্টিভঙ্গি দেখা যায়। প্রথমত, ধর্ষণ সংঘটিত হলে এবং এর বিচারের আশায় মামলা হলে প্রায়ই যা ঘটে তা হলো, এ বিষয়ে নারীর অভিজ্ঞতাকে বাদ দিয়ে, নানামুখী ক্ষমতার দেনদরবার ঠেলে আলোর মুুখ না দেখা ডাক্তারি রিপোর্টের অপর্যাপ্ততা, পরিশেষে ধর্ষণ মামলাটিকে অনানুষ্ঠানিকভাবে মৃত সার্টিফিকেট দেওয়া হয়। দ্বিতীয়ত, যদি ধর্ষণের কারণে কেউ গর্ভবতী হয়, তখন এই অপরাধের প্রশ্নাতীত, গ্রহণযোগ্য ও পৌরুষদীপ্ত অনিবার্য সমাধান হয়ে ওঠে ধর্ষকের সঙ্গে সেই ধর্ষণের শিকার নারীর বিয়ে। সমাজপতিরা এভাবেই ধর্ষককে প্রশ্রয় দিয়ে, তার সঙ্গে আদর্শিক আপস করে সমাজের ‘শান্তি’ বজায় রাখেন; আর তার মধ্যেই ঢেকে দেওয়া হয় নারীর সবচেয়ে যন্ত্রণা, কষ্ট ও নিপীড়নের অভিজ্ঞতাকে। তখন ধর্ষণ আর অপরাধ থাকে না, সমাজের সঙ্গে একীভূত হয়ে পড়ে। এর মধ্য দিয়ে এটিকে নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা হিসেবে পাঠ স্তব্ধ করার চেষ্টা চলে। তৃতীয় ভঙ্গিটি হলো, ওপরের দুটি উপায়ের মাধ্যমে ধর্ষণের পৌরুষদীপ্ত মোকাবিলা না করা গেলে শেষ সমাধান থাকে ধর্ষণের শিকার নারীকে ‘বেশ্যা’ বানানো।
তবে ধর্ষণকে ঘিরে এই ত্রিমুখী রাজনীতির বাকি অংশে যোগ দেয় রাষ্ট্র। চলতে থাকে নানা প্রশাসনিক প্রহসন। জানা গেছে, শিশুটির বাবা গত ১৯ জানুয়ারি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ আদালতে এজাহার দায়ের করেছেন এ ঘটনার বিচার চেয়ে। কিন্তু কী কারণে এটিকে মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয় ২ ফেব্রুয়ারি—এজাহার দায়ের করার ১৩ দিন পর? আসামি ধরা পড়েছে ৮ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু এর আগেই আসামির বিবৃতি আমরা পত্রিকার বরাতে জানতে পেরেছি। প্রশ্ন হলো, সংবাদপত্রের প্রতিবেদক যদি অপরাধীর সঙ্গে ফোনে আলাপ করতে পারেন, তাহলে তাঁকে খুঁজে পেতে পুলিশের এত দেরি হলো কেন?
সালিস, সমাজ ও রাষ্ট্রের এত প্রহসন কাটিয়ে ছোট্ট সেই শিশুটি আদৌ কি ন্যায়বিচার পাবে? ধর্ষকের সঙ্গে তার বিয়ের ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে ধর্ষণের মতো অপরাধ আড়াল করার মহড়ায় আর কত দিন বৈধ থাকবে নারীর প্রতি সহিংসতার সর্বোচ্চ এই ধরনটি?
জোবাইদা নাসরীন: শিক্ষক নৃবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
zobaidanasreen@gmail.com
এই জঘন্যতম ঘটনাটি ঘটেছে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার কালচোঁ (উত্তর) কাপাইকাপ গ্রামে (প্রথম আলো ৮ ফেব্রুয়ারি)। প্রতিবেদনটি পড়ার সময় কানে বাজছিল সেই শিশুটির চিৎকার। এ বিষয় নিয়ে তিনবার সালিস হয়েছে। তাতে বিচারের নামে আশ্বাস আর বিয়ের নামে প্রহসন হয়েছে। প্রশ্ন হলো, ধর্ষকের সঙ্গে ধর্ষণের শিকার নারীর বিয়ে দেওয়ার মধ্য দিয়ে ধর্ষণের মতো অপরাধের সামাজিক ‘মীমাংসা’ আর কতকাল জিইয়ে রাখবে পুরুষতান্ত্রিক সহিংসতাকে? ধর্ষকের সঙ্গে ধর্ষণের শিকার নারীর বিয়ে আসলে ধর্ষণের মতো পীড়নের সামাজিক বৈধতা দানের প্রক্রিয়া ছাড়া কিছুই নয়।
শরীয়তপুরের কিশোরী হেনা হত্যার কষ্ট, বেদনা আর বিচারের দাবি নিয়ে মানুষ যখন প্রতিবাদমুখর, দেশজুড়ে চলছে শোক ও বিক্ষুব্ধতা, তখন চাঁদপুরের এ ঘটনা মানুষকে আরও বিচলিত করেছে, শঙ্কিত করছে। এমনিতেই এ দেশে নারীর শৈশব ও কৈশোর ছিনতাই হয় পারিবারিক লিঙ্গীয় রাজনীতির পরিসরে। আর ঘরে-বাইরে প্রায়ই কন্যাশিশুকে ধর্ষণ কিংবা নানা ধরনের যৌন হয়রানির শিকার হতে হয় ‘পুরুষত্ব’র প্রতি সামাজিক সমর্থনের জোশে। এই জোশ পূর্ণ জোর হয়ে আরও বেশি দাপুটে হয়ে ওঠে এ বিষয়ে সমাজ ও রাষ্ট্রের অঙ্গাঙ্গিকতায়, যার কারণে ধর্ষণের পর রাষ্ট্রীয়ভাবে ধর্ষককে খুঁজে পেতে সময় লাগে। আর পাতানো সালিস অপরাধের শিকার নারীকে দ্বিতীয় দফা ‘সামাজিক ধর্ষণ’ করে, আর অনেক ক্ষেত্রে যার পরিণতি নারীর আত্মহত্যা কিংবা সালিসের রায় হিসেবে দোররা।
ধর্ষণের স্পষ্ট আলামত নিয়ে ধর্ষণের শিকার শিশুটি হাজির হয়েছে রাষ্ট্র ও সমাজের বিবেকের কাছে। কিন্তু সালিসই নয়, শিশুটির বিপক্ষে সেই মাদ্রাসার গভর্নিং বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য শিক্ষক। এরই মধ্যে সেই শিশুটির বিনা অনুমতিতে এবং অনুপস্থিতিতে সারা হয়েছে বিয়ে। শিশুটিকে ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত জলিলের বয়ান, ‘ঘটনাটি যেভাবেই ঘটুক না কেন, বিয়ের মাধ্যমে এর সমাধান হয়ে গেছে।’ ধর্ষণের কী ভয়ংকর সামাধান! ধর্ষক নারীকে ধর্ষণ করবেন, অন্যদিকে এর প্রশমনের দাওয়া বা সমাধান তিনিই দেবেন! শুধু তা-ই নয়, মাদ্রাসার শিক্ষকের ক্ষতি নিয়েও বিচলিত তাঁর সহকর্মীরা। গভর্নিং বোর্ডের একজন সদস্য বলেছেন, ‘আমরা মাদ্রাসা কমিটি ও এলাকাবাসী বসে মেয়েটির বিয়ে পড়িয়েছি। কিন্তু তার বাবা আমাদের সিদ্ধান্ত না মেনে আদালতে মামলা করেছেন। এতে ওই শিক্ষকের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে যাবে।’ আর নারীর ক্ষতি বা ক্ষত? ধর্ষকের সঙ্গে বিয়েই কি এই ক্ষতির ন্যায্য সামাজিক সমাধান?
বাংলাদেশে কন্যাশিশু ধর্ষণের ঘটনা এই প্রথম নয়। বছর দশেক আগে ঢাকার আদালতপাড়ায় পুলিশ কন্ট্রোল রুমে ধর্ষণের শিকার হয় ছয় বছর বয়সী শিশু তানিয়া। দুই বছর আগে টঙ্গীতে ধর্ষণের পর নিজ গৃহেই মেরে ফেলা হয় সাত বছরের শিশু ফাতেমাকে। ধর্ষণ মামলাসংক্রান্ত প্রচলিত আইনের ‘অতি প্রয়োজনীয়’ মেডিকেল কাগজপত্রের অভাব দেখিয়ে এই মামলাটির বিচার-প্রক্রিয়াকে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল অনেক দিন।
ধর্ষণের মতো অপরাধ দেখার ক্ষেত্রে সমাজ ও রাষ্ট্রে চর্চিত তিনটি দৃষ্টিভঙ্গি দেখা যায়। প্রথমত, ধর্ষণ সংঘটিত হলে এবং এর বিচারের আশায় মামলা হলে প্রায়ই যা ঘটে তা হলো, এ বিষয়ে নারীর অভিজ্ঞতাকে বাদ দিয়ে, নানামুখী ক্ষমতার দেনদরবার ঠেলে আলোর মুুখ না দেখা ডাক্তারি রিপোর্টের অপর্যাপ্ততা, পরিশেষে ধর্ষণ মামলাটিকে অনানুষ্ঠানিকভাবে মৃত সার্টিফিকেট দেওয়া হয়। দ্বিতীয়ত, যদি ধর্ষণের কারণে কেউ গর্ভবতী হয়, তখন এই অপরাধের প্রশ্নাতীত, গ্রহণযোগ্য ও পৌরুষদীপ্ত অনিবার্য সমাধান হয়ে ওঠে ধর্ষকের সঙ্গে সেই ধর্ষণের শিকার নারীর বিয়ে। সমাজপতিরা এভাবেই ধর্ষককে প্রশ্রয় দিয়ে, তার সঙ্গে আদর্শিক আপস করে সমাজের ‘শান্তি’ বজায় রাখেন; আর তার মধ্যেই ঢেকে দেওয়া হয় নারীর সবচেয়ে যন্ত্রণা, কষ্ট ও নিপীড়নের অভিজ্ঞতাকে। তখন ধর্ষণ আর অপরাধ থাকে না, সমাজের সঙ্গে একীভূত হয়ে পড়ে। এর মধ্য দিয়ে এটিকে নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা হিসেবে পাঠ স্তব্ধ করার চেষ্টা চলে। তৃতীয় ভঙ্গিটি হলো, ওপরের দুটি উপায়ের মাধ্যমে ধর্ষণের পৌরুষদীপ্ত মোকাবিলা না করা গেলে শেষ সমাধান থাকে ধর্ষণের শিকার নারীকে ‘বেশ্যা’ বানানো।
তবে ধর্ষণকে ঘিরে এই ত্রিমুখী রাজনীতির বাকি অংশে যোগ দেয় রাষ্ট্র। চলতে থাকে নানা প্রশাসনিক প্রহসন। জানা গেছে, শিশুটির বাবা গত ১৯ জানুয়ারি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ আদালতে এজাহার দায়ের করেছেন এ ঘটনার বিচার চেয়ে। কিন্তু কী কারণে এটিকে মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয় ২ ফেব্রুয়ারি—এজাহার দায়ের করার ১৩ দিন পর? আসামি ধরা পড়েছে ৮ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু এর আগেই আসামির বিবৃতি আমরা পত্রিকার বরাতে জানতে পেরেছি। প্রশ্ন হলো, সংবাদপত্রের প্রতিবেদক যদি অপরাধীর সঙ্গে ফোনে আলাপ করতে পারেন, তাহলে তাঁকে খুঁজে পেতে পুলিশের এত দেরি হলো কেন?
সালিস, সমাজ ও রাষ্ট্রের এত প্রহসন কাটিয়ে ছোট্ট সেই শিশুটি আদৌ কি ন্যায়বিচার পাবে? ধর্ষকের সঙ্গে তার বিয়ের ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে ধর্ষণের মতো অপরাধ আড়াল করার মহড়ায় আর কত দিন বৈধ থাকবে নারীর প্রতি সহিংসতার সর্বোচ্চ এই ধরনটি?
জোবাইদা নাসরীন: শিক্ষক নৃবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
zobaidanasreen@gmail.com
No comments