স্মরণ-কাছে থেকে দেখা মওলানা ভাসানী by সৈয়দ জিয়াউর রহমান

মওলানা আবদুল হামিদ খানকে আমি প্রথম দেখি ১৯৪৬ সালে, দেশ ভাগের মাত্র এক বছর আগে। আমি তখন হাইস্কুলের সপ্তম শ্রেণীর পড়ুয়া। ময়মনসিংহ জেলার জামালপুর মহকুমা শহর থেকে ১৪ মাইল দূরে দুরমুট রেলস্টেশনের কাছে মামাবাড়ি থেকে বয়স্ক কয়েকজন উৎ সাহী আত্মীয়ের সঙ্গে মাত্র দুই স্টেশন দূরে দেওয়ানগঞ্জ


রেলস্টেশন-সংলগ্ন একটি মাঠে গিয়েছিলাম আসাম প্রাদেশিক মুসলিম লীগের সভাপতি মওলানা ভাসানীর ভাষণ শোনার জন্য। পরিণত বয়সে প্রথমে ময়মনসিংহ শহরে ও পরে ঢাকায় মওলানার এমন কোনো জনসভা ছিল না যেখানে আমি তাঁর বক্তৃতা শুনতে যাইনি। অনলবর্ষী বাগ্মী মওলানার জনসভার একটা বড় বৈশিষ্ট্য লক্ষ করেছি—লক্ষাধিক মানুষের বিশাল সমাবেশে যেকোনো গোলযোগ-হইচই মুহূর্তে শান্ত করতে পারতেন একটিমাত্র শব্দ উচ্চারণ করে—‘খামোশ’। নিশ্চুপ হতো বিশাল জনসমুদ্র।
১৯৫৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে কাগমারী সম্মেলনে তখনকার পশ্চিম পাকিস্তানকে ‘আচ্ছালামু আলায়কুম’ বলে তিনি যখন তাদের নাগপাশ থেকে পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলকে মুক্ত করার ডাক দেন, তখন থেকেই আমিও দেশের কোটি কোটি মানুষের সঙ্গে স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বের অনুরাগী।
মওলানার সামনে আমার যাওয়ার প্রথম সুযোগ হয় পঞ্চাশের দশকের শুরুতে। আমি তখন ময়মনসিংহ আনন্দমোহন কলেজের ছাত্র এবং পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের জেলা শাখার অন্যতম সম্পাদক। পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ ছিল নবগঠিত আওয়ামী মুসলিম লীগের সমর্থক। আর সরকারি দল মুসলিম লীগের সমর্থক ছিল নিখিল পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ এবং তারা ছিল সাংগঠনিক শক্তির দিক থেকে অনেক দুর্বল। ১৯৫২ সালের শেষ দিকে পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ময়মনসিংহে। সম্মেলনে বিশিষ্ট আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতি মওলানা ভাসানী, সহসভাপতি আতাউর রহমান খান অ্যাডভোকেট, যুগ্ম সম্পাদক শেখ মুজিবুর রহমান ও আরও অনেকে।
আমাদের দায়িত্ব ছিল সম্মানিত অতিথিদের ময়মনসিংহ রেলস্টেশনে বিদায় সংবর্ধনা জানানো এবং সম্মেলন উপলক্ষে সংগৃহীত চাঁদা থেকে তাঁদের জন্য ঢাকাগামী রেলের টিকিটের ব্যবস্থা করে দেওয়ার। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রফিক উদ্দীন ভূঁইয়া (কলেজে আমার সহপাঠী এবং পরবর্তীকালে সাংসদ ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য) আমাদের দায়িত্ব দেন অতিথিদের অভিপ্রায় জেনে নিয়ে তাঁদের জন্য নির্ধারিত শ্রেণীর টিকিট ক্রয়ের। সেই অনুযায়ী আমরা কয়েকজন প্রথমে মওলানার কাছে গেলাম জানতে—কোন শ্রেণীর টিকিট কাটব। মওলানা স্পষ্ট করে বললেন, ‘আমার দেশের গরিব জনসাধারণ রেলের যে শ্রেণীতে যাতায়াত করে। পরে আতাউর রহমান সাহেব ও শেখ সাহেব—দুজনই আমাদের বললেন, ইন্টার ক্লাসের টিকিট আনতে।’
এরপর ঢাকায় বিভিন্ন জনসমাবেশে, মিছিলে মওলানাকে কাছে থেকে দেখেছি, প্রত্যক্ষ করেছি তাঁর আকর্ষণীয় নেতৃত্ব, অসামান্য সাহসিকতা। মনে আছে, একবার ঢাকার প্রধান মসজিদ বায়তুল মোকাররমের চত্বরে পুলিশি নির্যাতনের প্রতিবাদে এবং রাজবন্দীদের মুক্তির দাবিতে এক সমাবেশে ভাষণ দিচ্ছিলেন মওলানা ভাসানী সরকারি কর্তৃপক্ষের জারি করা ১৪৪ ধারা অমান্য করে। ট্রাকবোঝাই সশস্ত্র পুলিশ আর আধাসামরিক বাহিনী ইপিআরের সেনারা ছত্রভঙ্গ করে দেয় সমবেত জনতাকে অস্ত্রের মুখে। মুহূর্তে ফাঁকা হয়ে যায় বায়তুল মোকাররমের চত্বর। কিন্তু মওলানা এক পা-ও নড়লেন না তাঁর অবস্থান থেকে। পুলিশের বড় কর্তা মওলানাকে অনুরোধ জানালেন সরে যাওয়ার। মওলানা দৃপ্তকণ্ঠে তাঁদের বললেন, তিনি শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ জানাচ্ছেন সরকারি কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে এবং দেশের নাগরিক হিসেবে সে অধিকার তাঁর আছে। শেষ পর্যন্ত ১৪৪ ধারা কার্যকর করতে সক্ষম হয়নি পুলিশ।
মওলানা ভাসানী তাঁর প্রিয় দেশবাসীর কাছে সুপরিচিত ছিলেন মজলুম জননেতা হিসেবে, নির্যাতিত-বিপন্ন মানুষের দাবি জোরালোভাবে তুলে ধরার নেতা হিসেবে। ১৯৫৬ সালের সম্ভবত মে মাসে মওলানা ভাসানী বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে এবং প্রদেশের অন্যান্য কয়েকটি এলাকায় দুর্ভিক্ষকবলিত মানুষের জন্য খাদ্যের দাবিতে অনশন ধর্মঘট শুরু করেন। তখনকার ঢাকার পুরোনো কারে এলাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের ‘কটেজ’ নামে পরিচিত লাল ইটের একতলা একটা ঘরে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় অনশনের দরুন দুর্বলতার কারণে জীবনের আশঙ্কা দেখা দেওয়ায়। কিন্তু মওলানা সেখানেও দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ—দুর্ভিক্ষকবলিত মানুষের খাদ্যের ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত অনশন ভঙ্গ করবেন না। সে সময় ঢাকায় মুসলিম লীগের মুখপত্র একটি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে বলা হয়, মওলানা অনশন করছেন মাঝেমধ্যে ফলের রস খেয়ে। আমরা তোপখানা রোডের জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে কয়েকজন সাংবাদিক গেলাম মওলানার প্রকৃত অবস্থা পর্যবেক্ষণের উদ্দেশ্যে। মিটফোর্ড হাসপাতালের কটেজে পৌঁছে আমরা দেখলাম, মওলানা চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছেন হাসপাতালের একটি বিছানায়। সেখানে তাঁর মাথার কাছে বসে তালপাতার পাখায় বাতাস করছেন মওলানার সবচেয়ে প্রিয় স্নেহভাজন রাজনৈতিক নেতা শেখ মুজিবুর রহমান এবং তাঁর পায়ের কাছে বসে আছেন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রী সংসদের সভানেত্রী শাফিয়া খাতুন (পরে নারায়ণগঞ্জ মর্গ্যান গভর্নমেন্ট গার্লস হাইস্কুলের হেড মিস্ট্রেস ও স্বাধীন বাংলাদেশে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সরকারের মন্ত্রী) ও আরও কয়েকজন ছাত্রনেত্রী।
তাঁরা কিছুক্ষণ পর পরই অনুনয় করছেন মওলানাকে, ‘হুজুর, ভাঙ্গেন, অনশন ভাঙ্গেন।’ ঘণ্টা খানেক পর মওলানা ক্ষীণ কণ্ঠে বললেন, ‘মা, গ্রামে যাও, সেখানে ক্ষুধার্ত অনাহারক্লিষ্ট মানুষকে দেখে আসো।’ বলেই আবার চোখ বন্ধ করলেন। আমরা হাসপাতালের কটেজে অপেক্ষা করলাম দীর্ঘ সময় ধরে—কোথাও দেখলাম না ফলের রসের কোনো আয়োজন কিংবা ফলমূলের কোনো চিহ্ন। সংবাদপত্রে রটানো মিথ্যা খবরের কোনো সত্যতার লেশমাত্র খুঁজে পাওয়া যায়নি সেদিন। শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষের খাদ্যের ব্যবস্থা করার প্রতিশ্রুতি ঘোষণার পর মওলানা ভঙ্গ করেন তাঁর অনশন ধর্মঘট।
মওলানা ভাসানী আজীবন তাঁর রাজনৈতিক মতাদর্শ ও নীতিতে ছিলেন অটল। কোনো পরিস্থিতি কিংবা কোনো অবস্থাতেই তিনি তাঁর মতাদর্শ ও নীতির সঙ্গে আপস করেননি। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ১৯৫৬ সালে পশ্চিম পাকিস্তানের নেতা ড. খান সাহেবের রিপাবলিকান দলের সঙ্গে কোয়ালিশন সরকার গঠন করেন। প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে অধিষ্ঠিত হওয়ার পর তিনি দলের লক্ষ্যাদর্শ থেকে সয়ে যান। পূর্ব পাকিস্তানের জনসংখ্যাধিক্যের শক্তি নিয়ে দেশের মোট সম্পদের অর্ধেকেরও বেশি দাবি ত্যাগ করে পশ্চিম পাকিস্তানের সঙ্গে ‘প্যারিটি’ বা সমান অংশীদারত্বের ফর্মুলা মেনে নেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাকিস্তানের সেন্টো ও সিয়াটোর অসম সামরিক চুক্তি সমর্থন করেন। এই প্রশ্নে মওলানার সঙ্গে সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বে পরিচালিত আওয়ামী লীগের বিরোধ শুরু হয়।
১৯৫৭ সালের সম্ভবত জুলাই মাসে মওলানা ভাসানী আওয়ামী লীগের লক্ষ্যাদর্শ-বিচ্যুত কার্যকলাপের বিরোধী ও দলের বামপন্থীদের নিয়ে এবং সেই সঙ্গে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের বেশ কিছু রাজনৈতিক সংগঠনকে নিয়ে ঢাকায় একটি সর্বদলীয় সম্মেলন আহ্বান করেন। তাতে দেশের উভয় অংশের অনেক বিশিষ্ট নেতা যোগ দেন, যাঁদের মধ্যে ছিলেন সীমান্ত প্রদেশের খোদাই খিদমতগারের নেতা সীমান্ত গান্ধী খান আবদুল গাফ্ফার খান, সিন্ধু প্রদেশের আওয়ামী মাহাজ দলের জি এম সৈয়দ, আজাদ পাকিস্তান দলের নেতা বামপন্থী রাজনীতিক ও লাহোরের প্রখ্যাত ইংরেজি দৈনিক পাকিস্তান টাইমস-এর মালিক মিয়া ইফতিখার উদ্দীন, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হক ওসমানী, পূর্ব পাকিস্তান যুবলীগের নেতা মোহাম্মদ তোয়াহা, গণতন্ত্রী দলের মাহমুদ আলী প্রমুখ। ঢাকা শহরের সদরঘাট এলাকায় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় রূপমহল সিনেমা হলে দুই দিন ধরে।
দ্বিতীয় দিন সম্মেলন সমাপ্তির পর মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে একটি বিশাল শোভাযাত্রা পরিচালিত হয় পল্টন ময়দান অভিমুখে এবং সেখানে লক্ষাধিক লোকের এক অনন্য সমাবেশে মওলানা ভাসানী ও পশ্চিম পাকিস্তানের নেতারা ভাষণ দেন। এই সম্মেলনেই গঠন করা হয় অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সংগঠন ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি। মওলানা ভাসানী নির্বাচিত হন নতুন দলের প্রেসিডেন্ট আর সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হক ওসমানী।
মওলানা ভাসানী তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের আগাগোড়াই ছিলেন লক্ষ্যাদর্শের প্রশ্নে সংকল্পবদ্ধ। তাঁর আন্দোলন-বিক্ষোভ ছিল সর্বাত্মকভাবেই অহিংস, শান্তিপূর্ণ।
রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগের নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে বিচ্ছেদ হওয়া সত্ত্বেও তাঁর সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক রেখেছেন আগের মতোই। তাঁকে স্নেহ করতেন মন-প্রাণ উজাড় করে। ১৯৭৫ সালের আগস্ট মাসে শেখ মুজিব সপরিবারে নৃশংসভাবে নিহত হয়েছেন—এই খবর শুনে অশ্রুপাত করেছেন মওলানা ভাসানী। স্নেহভাজন নেতার আত্মার শান্তির জন্য পরম করুণাময়ের কাছে দীর্ঘসময় ধরে তসবি হাতে প্রার্থনা করেছেন টাঙ্গাইলের সন্তোষে নিজের বাড়ির মসজিদে।
শেখ মুজিবও আজীবন শ্রদ্ধা করেছেন, ভালোবেসেছেন তাঁর রাজনৈতিক জীবনের বেশির ভাগ সময়ের নেতা মওলানাকে।
মওলানা ভাসানীর সুদীর্ঘকালের রাজনীতি ছিল নির্লোভ, নিঃস্বার্থ। সেখানে কর্তৃত্বের মোহ আর ক্ষমতার লোভ ছিল না লেশমাত্র। মওলানা তাঁর রাজনৈতিক দলের প্রধান ছিলেন, কিন্তু তাঁর দল সরকার গঠন করলেও নিজে কখনো বাসনা প্রকাশ করেননি ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার। অথচ ইচ্ছা করলেই তিনি হতে পারতেন। রাজনীতিতে তাঁর মুখ্য ভূমিকা ছিল একান্তই অভিভাবকের। এদিক থেকে দেশ-বিদেশে তাঁর অনেক জীবনীকারই তাঁকে তুলনা করেন ভারতের স্বাধীনতার জনক মহাত্মা গান্ধীর সঙ্গে।
১৯৭৬ সালের জুন মাসে আমি ওয়াশিংটনে ভয়েস অব আমেরিকার বাংলা বিভাগে যোগ দিই। ওই বছরের ১৭ নভেম্বর মওলানা ভাসানীর লোকান্তরিত হওয়ার খবর আসে ভয়েস অব আমেরিকার ঢাকা সংবাদদাতার কাছ থেকে। আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয় বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে মওলানার রাজনৈতিক জীবন সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য নিয়ে একটি রিপোর্ট তৈরির।
সেই অনুযায়ী তখনকার বাংলাদেশ দূতাবাসে টেলিফোন করে যে জবাব পেয়েছিলাম তা যেকোনো জাতির পক্ষে নিতান্তই দুঃখজনক ও লজ্জাকর। দূতাবাসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার অনুপস্থিতিতে অধস্তন একজন কর্মকর্তা আমাকে বলেন, যেহেতু মওলানা ভাসানী বাংলাদেশ সরকারের কোনো কর্মকর্তা ছিলেন না—এ কারণে তাঁর সম্পর্কে তাঁদের কাছে কোনো তথ্য নেই। জবাব শুনে স্তম্ভিত হয়েছিলাম। পরে নিজের স্মরণশক্তির ওপর নির্ভর করে যতটা সম্ভব একটি বস্তুনিষ্ঠ দীর্ঘ প্রতিবেদন তৈরি করেছিলাম ভয়েস অব আমেরিকার তখনকার ৫২টি ভাষার অনুষ্ঠানে সম্প্রচারের জন্য।
কেবল বাংলাদেশ দূতাবাস নয়, পরবর্তী সময়ে সন্ধান করে দেখেছি, সরকার পরিচালিত বাংলাদেশ বেতারে সমসাময়িক ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক নেতানেত্রী ছাড়া অতীতের নেতাদের বিশেষ করে শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক, মওলানা ভাসানী প্রমুখ জাতীয় নেতাদের কারোরই কোনো ভাষণের কিংবা কোনো মন্তব্যের রেকর্ড নেই তাদের কাছে।
বাংলাদেশ দূতাবাসে কিংবা বাংলাদেশের কোনো সরকারি আর্কাইভসে জাতীয় নেতাদের কণ্ঠের রেকর্ড থাক আর না-ই থাক, বাংলাদেশের ইতিহাসে এবং বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষের হূদয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার অন্যতম স্বপ্নদ্রষ্টা ও মজলুম জননেতা হিসেবে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী থাকবেন ভাস্বর চিরকাল।
[নিউইয়র্কে মওলানা ভাসানী ফাউন্ডেশন আয়োজিত আন্তর্জাতিক ভাসানী সম্মেলনে উপস্থাপিত নিবন্ধের সংক্ষিপ্তরূপ।]
সৈয়দ জিয়াউর রহমান: লেখক, সাংবাদিক ও ভয়েস অব আমেরিকার বাংলা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সম্পাদক।

No comments

Powered by Blogger.