সমকালীন প্রসঙ্গে-উচ্ছৃঙ্খল হরতাল বন্ধ করতে হবে by বদরুদ্দীন উমর
জনগণ এসবের বিরুদ্ধে। তারা যেমন সরকারি দমন নীতির বিরুদ্ধে, তেমনি তারা হরতালের নামে বিরোধী দল কর্তৃক জনগণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে তাদের সপক্ষে নিয়ে আসার কৌশলের বিরুদ্ধে। হরতালের সময়েই এসব প্রতিক্রিয়া জনগণের মধ্যে দেখা যায়। সরকার এখন ফ্যাসিষ্ট লাইনে শাসন কাজ পরিচালনা করছে।
তার বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রাম দরকার। কিন্তু সে আন্দোলন যেই করুক, জনগণকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, জনগণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে সে কাজ
করা চলবে না
হরতাল একটি গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু দায়িত্বহীন গণতন্ত্র চর্চা অনুমোদনযোগ্য নয়। বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্বহীন হরতাল গণতান্ত্রিক আন্দোলন হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
হরতাল কোনো নতুন জিনিস নয়। ব্রিটিশ আমল থেকেই গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক আন্দোলনের একটি পদ্ধতি হিসেবে হরতাল ব্যবহৃত হয়ে আসছে। সে সময় এবং পরবর্তীকালে পাকিস্তানেও হরতালের সময় হরতাল পালনকারীরা দোকানপাট ও যান চলাচল বন্ধ রাখার জন্য পিকেটিং করত। পিকেটারদের সঙ্গে পুলিশের ছোটখাটো সংঘর্ষ অথবা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ব্যাপার ঘটত। পূর্ব পাকিস্তানে মুসলিম লীগ শাসনামলে সরকারি দলের লোকেরা কখনও-সখনও পিকেটারদের বাধা দিত; কিন্তু বড় আকারে কোনো সংঘর্ষ হতো না।
বাংলাদেশে এ চিত্র একেবারে বদলে গেছে। আগে রাজনৈতিক আন্দোলনের ধরন এমন ছিল, যাতে হরতালের ভূমিকা ছিল গৌণ; শহরাঞ্চলে, ময়দানে ও পাড়ায় পাড়ায় সভা-সমাবেশ, মিছিল হতো। শিল্পাঞ্চলে মিটিং-মিছিল হতো। বিশেষ কারণে শ্রমিক ধর্মঘট হতো। গ্রামাঞ্চলে সভা-সমিতি-মিছিল হতো। সেখানে হরতাল বা ধর্মঘটের কোনো সুযোগ ছিল না, যা এখনও নেই। কিন্তু বর্তমানে হরতালই হয়ে দাঁড়িয়েছে সংসদীয় বিরোধী রাজনৈতিক দলের সরকারবিরোধী আন্দোলনের মুখ্য রূপ। বিএনপি অথবা আওয়ামী লীগ যে দলই বিরোধী পক্ষে থাকুক, এখন হরতালই হচ্ছে তাদের সরকারবিরোধী আন্দোলনের প্রধান অবলম্বন। একেই তারা আখ্যায়িত করে গণতান্ত্রিক আন্দোলন হিসেবে।
কিন্তু এখানেই শেষ নয়। হরতালের সময় হরতাল পালনকারী বিরোধী দল এবং হরতালবিরোধী সরকার ও সরকারি দলের যে ভূমিকা দেখা যায় সেটা আগে এভাবে কখনও দেখা যেত না। এ সময় কোনো পক্ষই যে প্রকৃত গণতান্ত্রিক আচরণ করে এমন বলা যাবে না।
এ প্রসঙ্গে প্রথমেই বলা দরকার, যে দেশে সাধারণভাবে সভা-সমাবেশ-মিছিল নিষিদ্ধ, সে দেশে এই অবস্থা স্বাভাবিক। দ্বিতীয়ত, বলা দরকার যে, এ দেশের বিশেষ পরিস্থিতিতে এটা স্বাভাবিক হলেও যে কোনো গণতান্ত্রিক সমাজে এটা কোনো স্বাভাবিক ব্যাপার নয়। এটা অবশ্যই অস্বাভাবিক। সমাজে যা কিছু ঘটে তাকে সামগ্রিক পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতেই বিচার-বিশ্লেষণ করা দরকার। বাংলাদেশে ঘটতে থাকা অনেক কিছুই খুব অস্বাভাবিক হলেও এখানকার পরিস্থিতিতে তা স্বাভাবিক!
অস্বাভাবিকের এভাবে স্বাভাবিকে পরিণত হওয়া কোনো গণতান্ত্রিক সমাজেই গ্রহণযোগ্য নয়। এর পরিবর্তন দরকার। এই পরিবর্তনের সংগ্রামই প্রকৃত গণতান্ত্রিক সংগ্রাম। যেহেতু বাংলাদেশে এখন সভা-সমাবেশ-মিছিলের কোনো স্বাভাবিক অধিকার জনগণের ও সরকারি দল ছাড়া অন্য দলের নেই, যে কারণে হরতাল সরকারের চোখে একটা 'বেআইনি' কাজ এবং অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়ে থাকে। কেউ হরতাল ডাকলেই তারা হরতাল কর্মসূচি বন্ধ ও পণ্ড করার জন্য নিজেদের শক্তি প্রয়োগ করে। শুধু পুলিশ নয় তাদের সঙ্গে মিলে সরকারদলীয় গুণ্ডারাও রাস্তায় নেমে এসব করে।
অন্যদিকে যারা হরতাল পালন করে তাদের আচরণকেও গণতান্ত্রিক বলা চলে না। তারাও এখন হরতালের দিনে শুধু নয়, হরতালের দু'একদিন আগেই মাঠে নামে। রাস্তায় বিশাল আকারে মিছিল নামিয়ে তারা হরতাল সফল করার জন্য পরিস্থিতি তৈরি করতে উদ্যোগ নেয়। হরতালপূর্ব এই তৎপরতা বিরোধী দল যেভাবে চালায় তার বিপজ্জনক দিক লক্ষ্য করার মতো। সরকার যেমন জোর করে হরতাল বন্ধ করতে চায়, তেমনি বিরোধী দলের রাস্তার কাণ্ড দেখে মনে হয় তারাও জোর করে মানুষকে দিয়ে হরতাল করাতে চায়। আসলে সারাদেশে গণতান্ত্রিক রাজনীতির পরিবেশ যেভাবে ক্ষমতাসীন শাসকশ্রেণীর দ্বারা বিনষ্ট হয়েছে এসব হলো তারই অনিবার্য পরিণতি।
বিএনপি নেতা সিলেটের ইলিয়াস আলীকে ঢাকার গুলশান থেকে অপহরণের প্রতিবাদে এবং তাকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে বিএনপি ২২ এপ্রিল হরতাল দেয়। ২২ তারিখের হরতাল সফল করার জন্য ২১ এপ্রিল বিএনপি রাস্তায় নামে। এভাবে নেমে তারা যে কর্মকাণ্ড করে তাকে ফ্যাসিস্ট ছাড়া অন্য কিছু বলা যায় না। সব থেকে অবাক হওয়ার মতো ব্যাপার এই যে, জনগণের মনে আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য তাদের লোকজন নির্বিচারে বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুর ওপর হামলা চালায়। এ রকম এক হামলায় এক গরিব বাস ড্রাইভারকে পুড়িয়ে কয়লা করা হয়েছে। বাসটির চালক আগের রাতে খুলনা থেকে বাস নিয়ে এসে ২২ তারিখেই আবার যাত্রী নিয়ে খুলনায় ফেরার কথা। তিনি দুপুরে খাওয়ার পর দরজা-জানালা বন্ধ করে বাসটিকে খিলগাঁওয়ে এক রাস্তার পাশে রেখে তার ভেতরে শুয়ে ছিলেন। সেই অবস্থায় বিএনপির হরতালপন্থি গুণ্ডারা বাসটিতে আগুন ধরিয়ে দিলে অগি্নদগ্ধ হয়ে গরিব ও নিরীহ বাসচালকের মৃত্যু হয়। তার দেহ কয়লা হয়ে যায়। হরতালের দিন এভাবে গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখলেও তাতে আগুন দেওয়ার প্রশ্ন ওঠে না। হরতালের আগের দিন তো এ আচরণের কোনো গ্রাহ্যতা কোনোদিন থেকেই নেই। কিন্তু তা সত্ত্বেও জনগণের অন্তরে ত্রাস ও আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য, তাদের হরতালে অংশগ্রহণ করতে বাধ্য করার জন্যই হরতালের আগের দিন দাঁড়িয়ে থাকা একটি বাসে আগুন দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা তারা বোধ করে! এর সঙ্গে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের, গণতান্ত্রিক রীতিনীতির কী সম্পর্ক? এটা যে ফ্যাসিস্ট মানসিকতার পরিচায়ক এতে আর সন্দেহ কি। এই মানসিকতা যে শুধু আগুন দেনেওয়ালা কর্মী নামধারী গুণ্ডাদেরই তাই নয়, এ মানসিকতা তাদের নেতত্বেরও। এ কথা বলার যথেষ্ট কারণ আছে এ জন্য যে, ২২ এপ্রিলের এই মর্মান্তিক ঘটনার পর, এই সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য কর্মকাণ্ডের পর, বিএনপির কোনো নেতা-নেত্রী এর জন্য ভুল স্বীকার করেননি, এর জন্য ক্ষমা চাননি, নিজেদের কর্মীদের এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকার কোনো নির্দেশও তারা দেননি। কাজেই এই ফ্যাসিস্ট কর্মকাণ্ড তাদের গুণ্ডা স্থানীয় সমর্থক ও লোকজন যে তাদের দ্বারা সাধারণভাবে নির্দেশিত হয়েই করছে এতে সন্দেহ নেই।
বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীকে যেভাবে গুম করা হয়েছে এটা নিঃসন্দেহে এক ফ্যাসিস্ট অপরাধ। তার পরিবারবর্গ ও সুহৃদবর্গ এই অপহরণের ফলে কীভাবে বিপর্যস্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এটা বুঝিয়ে বলার দরকার হয় না। এ নিয়ে অনেক সংবাদ বিবরণ ইতিমধ্যেই প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু যে গরিব বাসচালকটি ২১ এপ্রিল বিএনপির গুণ্ডাদের দ্বারা পুড়ে কয়লা হয়ে গেলেন, তার পরিবারের খবর কী? তাদের জন্য কি কেউ চোখের পানি ফেলেছে? আবার বলতে হয় যে, বিএনপির নেতা-নেত্রীরা কি তার জন্য সেই গরিবদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন, এর জন্য কোনো দুঃখ প্রকাশ করেছেন? তাদের ক্ষতিপূরণের কোন ব্যবস্থা করেছেন? জীবনের ক্ষতি পূরণ করা যায় না। কিন্তু পরিবারের যারা বেঁচে আছেন তাদের জীবিকার ক্ষতিপূরণ করার কী হবে? এর কোনো চিন্তা কি বিএনপি নেতৃত্বের আছে?
২২ তারিখের পর বিএনপি আবার ২৩ এপ্রিল হরতাল দিয়েছে। তাদের নেতৃবৃন্দ হুমকি দিচ্ছেন ইলিয়াস আলীকে ফিরিয়ে না দিলে তারা লাগাতার হরতাল দেবেন! লাগাতার হরতাল দেওয়ার ক্ষমতা তাদের নেই। ২২ তারিখের হরতাল ভালো হয়েছে কিন্তু আজকের হরতাল গতকালের হরতালের থেকে অনেক শিথিল। লাগাতার হরতাল দিলে রাস্তায় যানবাহন স্বাভাবিকভাবেই চলবে, দোকানপাটও লোকে খোলা রাখবে, যদিও রাস্তায় বিএনপি এবং পুলিশ ও আওয়ামী লীগের গুণ্ডাদের মধ্যে সংঘর্ষ বাড়বে এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে। লোকে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বেশ ক্ষুব্ধ, তাদের ভোটের বাক্স পরবর্তী নির্বাচনে আর আগের মতো ভর্তি হবে না। কিন্তু লাগাতার হরতাল দিলে মানুষ যে বিএনপিকে ভালোবাসবে এবং বেশি করে ভোট দেবে এমন নয়। তারা এমনিতেই জানেন যে, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি, শাসকশ্রেণীর এই দুই প্রধান দলের মধ্যে চরিত্র ও সাধারণ কর্মকাণ্ডের দিক দিয়ে কোনো উল্লেখযোগ্য পার্থক্য নেই। সরকার ও বিরোধী দলে থাকার সময় তাদের উভয়ের আচরণ অভিন্ন।
হরতাল বিশেষ অবস্থায় জরুরি হতে পারে। সেভাবে হরতাল করায় দোষ নেই। কিন্তু কারণে-অকারণে ও তুচ্ছ কারণে হরতাল এবং ঘন ঘন হরতালের কোনো গণতান্ত্রিক চরিত্র নেই। এর মধ্যে কোনো জনস্বার্থ নিহিত নেই। উপরন্তু এর জন্য জনগণকে অনেক কষ্ট ও ক্ষতি স্বীকার করতে হয়। যে গরিব শ্রমজীবীদের অবস্থা দিন আনা দিন খাওয়ার মতো, তাদের কাজ হয় না হরতালের সময়। হরতালের সময় তাদের অবস্থা দাঁড়ায় সপরিবারে উপোস থাকার মতো। পরপর হরতাল হলে তাদের অবস্থা কী হয় এটা অনুমানের ব্যাপার নয়। এ ছাড়া সাধারণ লোকদের কাজ-কারবার ও যাতায়াত কষ্টসাধ্য, বিঘি্নত ও বিপর্যস্ত হয়। শুধু তাই নয়, কাজের জন্য যাদের পথে বের হতে হয় তাদের অনেক ঝুঁকি নিতে হয়। বাস, রিকশা ইত্যাদির ওপরে, এমনকি সাইকেলের ওপরও যে কোনো ধরনের আক্রমণ হতে পারে এবং হয়ে থাকে। হরতালের আগের দিন যেখানে রাস্তায় নিরুপদ্রবে দাঁড়িয়ে থাকা বাসে আগুন দিয়ে নিরীহ গরিব হত্যা করা হয়, সেখানে হরতালের দিনে যে কোনো লোকের ওপর আক্রমণ হওয়ারই সম্ভাবনা।
হরতালের সময় যানবাহন বন্ধ থাকায় বাইরে থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী, শাকসবজি থেকে নিয়ে সব রকম খাদ্য আমদানি ব্যাহত হওয়ায় ক্রমবর্ধমান মূল্যবৃদ্ধি পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়। বাজারের অবস্থা খারাপ দাঁড়ায়। এতে গরিব ও মধ্যবিত্ত লোকদের কষ্ট বাড়ে। কাজেই হরতাল কোনো ভালো জিনিস নয়। খুব বাধ্য না হলে, জরুরি না হলে, কথায় কথায় হরতাল ডাকা জনস্বার্থের সম্পূর্ণ বিরোধী এবং পরিহারযোগ্য।
যা পরিহারযোগ্য তাকে পরিহার বা বর্জন করতে হবে। গণতান্ত্রিক আন্দোলনের আরও উপায় এবং পথ আছে। সেই উপায় ও পথ ধরে আন্দোলন করতে হবে। যে কোনো বাধা এলে তার মোকাবেলা করতে হবে। সভা-সমিতি, সমাবেশ-মিছিল ইত্যাদি আন্দোলনের সব থেকে গণতান্ত্রিক এবং ফলপ্রসূ পদ্ধতি। যে শাসকশ্রেণী ১৯৭২ সাল থেকে এ দেশ শাসন করছে তাদের প্রত্যেকটি দলের নীতি ও কার্যকলাপ তাদের শ্রেণীর ফ্যাসিস্ট চরিত্রের সঙ্গেই সঙ্গতিপূর্ণ। এ কারণে তাদের শাসনে সভা-সমাবেশ-মিছিলের জন্য অনুমতি লাগে, এর প্রয়োজন ব্রিটিশ বা পাকিস্তানি আমলেও হতো না। এদিক দিয়ে বাংলাদেশের শাসকশ্রেণীর চরিত্র পূর্ববর্তী শাসকশ্রেণীর থেকে নিকৃষ্ট। এ কারণে বিএনপি বিরোধী দলে থাকলেও সভা-সমাবেশের, মিছিলের গণতান্ত্রিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য তারা চেষ্টা ও সংগ্রাম করে না। তারা জানে যে তারা ক্ষমতায় এলে তাদেরও এই একটি দমন নীতির ওপরই দাঁড়াতে হবে। কাজেই গণতান্ত্রিক পদ্ধতির কাছে না গিয়ে দায়িত্বহীন হরতালই তাদের আন্দোলনের আহ্বান, তাদের তথাকথিত গণতান্ত্রিক আন্দোলনের পদ্ধতি!
জনগণ এসবের বিরুদ্ধে। তারা যেমন সরকারি দমন নীতির বিরুদ্ধে, তেমনি তারা হরতালের নামে বিরোধী দল কর্তৃক জনগণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে তাদের সপক্ষে নিয়ে আসার কৌশলের বিরুদ্ধে। হরতালের সময়েই এসব প্রতিক্রিয়া জনগণের মধ্যে দেখা যায়।
সরকার এখন ফ্যাসিষ্ট লাইনে শাসন কাজ পরিচালনা করছে। তার বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রাম দরকার। কিন্তু সে আন্দোলন যেই করুক, জনগণকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, জনগণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে সে কাজ করা চলবে না। কাজেই যেভাবে হরতাল হচ্ছে তা বন্ধ করতে হবে। হরতালের পরিবর্তে সভা-সমাবেশ-মিছিল ইত্যাদিই হতে হবে আন্দোলনের পথ। গণতান্ত্রিক আন্দোলনের পদ্ধতিও হতে হবে গণতান্ত্রিক।
২৩.৪.২০১২
করা চলবে না
হরতাল একটি গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু দায়িত্বহীন গণতন্ত্র চর্চা অনুমোদনযোগ্য নয়। বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্বহীন হরতাল গণতান্ত্রিক আন্দোলন হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
হরতাল কোনো নতুন জিনিস নয়। ব্রিটিশ আমল থেকেই গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক আন্দোলনের একটি পদ্ধতি হিসেবে হরতাল ব্যবহৃত হয়ে আসছে। সে সময় এবং পরবর্তীকালে পাকিস্তানেও হরতালের সময় হরতাল পালনকারীরা দোকানপাট ও যান চলাচল বন্ধ রাখার জন্য পিকেটিং করত। পিকেটারদের সঙ্গে পুলিশের ছোটখাটো সংঘর্ষ অথবা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ব্যাপার ঘটত। পূর্ব পাকিস্তানে মুসলিম লীগ শাসনামলে সরকারি দলের লোকেরা কখনও-সখনও পিকেটারদের বাধা দিত; কিন্তু বড় আকারে কোনো সংঘর্ষ হতো না।
বাংলাদেশে এ চিত্র একেবারে বদলে গেছে। আগে রাজনৈতিক আন্দোলনের ধরন এমন ছিল, যাতে হরতালের ভূমিকা ছিল গৌণ; শহরাঞ্চলে, ময়দানে ও পাড়ায় পাড়ায় সভা-সমাবেশ, মিছিল হতো। শিল্পাঞ্চলে মিটিং-মিছিল হতো। বিশেষ কারণে শ্রমিক ধর্মঘট হতো। গ্রামাঞ্চলে সভা-সমিতি-মিছিল হতো। সেখানে হরতাল বা ধর্মঘটের কোনো সুযোগ ছিল না, যা এখনও নেই। কিন্তু বর্তমানে হরতালই হয়ে দাঁড়িয়েছে সংসদীয় বিরোধী রাজনৈতিক দলের সরকারবিরোধী আন্দোলনের মুখ্য রূপ। বিএনপি অথবা আওয়ামী লীগ যে দলই বিরোধী পক্ষে থাকুক, এখন হরতালই হচ্ছে তাদের সরকারবিরোধী আন্দোলনের প্রধান অবলম্বন। একেই তারা আখ্যায়িত করে গণতান্ত্রিক আন্দোলন হিসেবে।
কিন্তু এখানেই শেষ নয়। হরতালের সময় হরতাল পালনকারী বিরোধী দল এবং হরতালবিরোধী সরকার ও সরকারি দলের যে ভূমিকা দেখা যায় সেটা আগে এভাবে কখনও দেখা যেত না। এ সময় কোনো পক্ষই যে প্রকৃত গণতান্ত্রিক আচরণ করে এমন বলা যাবে না।
এ প্রসঙ্গে প্রথমেই বলা দরকার, যে দেশে সাধারণভাবে সভা-সমাবেশ-মিছিল নিষিদ্ধ, সে দেশে এই অবস্থা স্বাভাবিক। দ্বিতীয়ত, বলা দরকার যে, এ দেশের বিশেষ পরিস্থিতিতে এটা স্বাভাবিক হলেও যে কোনো গণতান্ত্রিক সমাজে এটা কোনো স্বাভাবিক ব্যাপার নয়। এটা অবশ্যই অস্বাভাবিক। সমাজে যা কিছু ঘটে তাকে সামগ্রিক পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতেই বিচার-বিশ্লেষণ করা দরকার। বাংলাদেশে ঘটতে থাকা অনেক কিছুই খুব অস্বাভাবিক হলেও এখানকার পরিস্থিতিতে তা স্বাভাবিক!
অস্বাভাবিকের এভাবে স্বাভাবিকে পরিণত হওয়া কোনো গণতান্ত্রিক সমাজেই গ্রহণযোগ্য নয়। এর পরিবর্তন দরকার। এই পরিবর্তনের সংগ্রামই প্রকৃত গণতান্ত্রিক সংগ্রাম। যেহেতু বাংলাদেশে এখন সভা-সমাবেশ-মিছিলের কোনো স্বাভাবিক অধিকার জনগণের ও সরকারি দল ছাড়া অন্য দলের নেই, যে কারণে হরতাল সরকারের চোখে একটা 'বেআইনি' কাজ এবং অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়ে থাকে। কেউ হরতাল ডাকলেই তারা হরতাল কর্মসূচি বন্ধ ও পণ্ড করার জন্য নিজেদের শক্তি প্রয়োগ করে। শুধু পুলিশ নয় তাদের সঙ্গে মিলে সরকারদলীয় গুণ্ডারাও রাস্তায় নেমে এসব করে।
অন্যদিকে যারা হরতাল পালন করে তাদের আচরণকেও গণতান্ত্রিক বলা চলে না। তারাও এখন হরতালের দিনে শুধু নয়, হরতালের দু'একদিন আগেই মাঠে নামে। রাস্তায় বিশাল আকারে মিছিল নামিয়ে তারা হরতাল সফল করার জন্য পরিস্থিতি তৈরি করতে উদ্যোগ নেয়। হরতালপূর্ব এই তৎপরতা বিরোধী দল যেভাবে চালায় তার বিপজ্জনক দিক লক্ষ্য করার মতো। সরকার যেমন জোর করে হরতাল বন্ধ করতে চায়, তেমনি বিরোধী দলের রাস্তার কাণ্ড দেখে মনে হয় তারাও জোর করে মানুষকে দিয়ে হরতাল করাতে চায়। আসলে সারাদেশে গণতান্ত্রিক রাজনীতির পরিবেশ যেভাবে ক্ষমতাসীন শাসকশ্রেণীর দ্বারা বিনষ্ট হয়েছে এসব হলো তারই অনিবার্য পরিণতি।
বিএনপি নেতা সিলেটের ইলিয়াস আলীকে ঢাকার গুলশান থেকে অপহরণের প্রতিবাদে এবং তাকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে বিএনপি ২২ এপ্রিল হরতাল দেয়। ২২ তারিখের হরতাল সফল করার জন্য ২১ এপ্রিল বিএনপি রাস্তায় নামে। এভাবে নেমে তারা যে কর্মকাণ্ড করে তাকে ফ্যাসিস্ট ছাড়া অন্য কিছু বলা যায় না। সব থেকে অবাক হওয়ার মতো ব্যাপার এই যে, জনগণের মনে আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য তাদের লোকজন নির্বিচারে বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুর ওপর হামলা চালায়। এ রকম এক হামলায় এক গরিব বাস ড্রাইভারকে পুড়িয়ে কয়লা করা হয়েছে। বাসটির চালক আগের রাতে খুলনা থেকে বাস নিয়ে এসে ২২ তারিখেই আবার যাত্রী নিয়ে খুলনায় ফেরার কথা। তিনি দুপুরে খাওয়ার পর দরজা-জানালা বন্ধ করে বাসটিকে খিলগাঁওয়ে এক রাস্তার পাশে রেখে তার ভেতরে শুয়ে ছিলেন। সেই অবস্থায় বিএনপির হরতালপন্থি গুণ্ডারা বাসটিতে আগুন ধরিয়ে দিলে অগি্নদগ্ধ হয়ে গরিব ও নিরীহ বাসচালকের মৃত্যু হয়। তার দেহ কয়লা হয়ে যায়। হরতালের দিন এভাবে গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখলেও তাতে আগুন দেওয়ার প্রশ্ন ওঠে না। হরতালের আগের দিন তো এ আচরণের কোনো গ্রাহ্যতা কোনোদিন থেকেই নেই। কিন্তু তা সত্ত্বেও জনগণের অন্তরে ত্রাস ও আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য, তাদের হরতালে অংশগ্রহণ করতে বাধ্য করার জন্যই হরতালের আগের দিন দাঁড়িয়ে থাকা একটি বাসে আগুন দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা তারা বোধ করে! এর সঙ্গে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের, গণতান্ত্রিক রীতিনীতির কী সম্পর্ক? এটা যে ফ্যাসিস্ট মানসিকতার পরিচায়ক এতে আর সন্দেহ কি। এই মানসিকতা যে শুধু আগুন দেনেওয়ালা কর্মী নামধারী গুণ্ডাদেরই তাই নয়, এ মানসিকতা তাদের নেতত্বেরও। এ কথা বলার যথেষ্ট কারণ আছে এ জন্য যে, ২২ এপ্রিলের এই মর্মান্তিক ঘটনার পর, এই সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য কর্মকাণ্ডের পর, বিএনপির কোনো নেতা-নেত্রী এর জন্য ভুল স্বীকার করেননি, এর জন্য ক্ষমা চাননি, নিজেদের কর্মীদের এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকার কোনো নির্দেশও তারা দেননি। কাজেই এই ফ্যাসিস্ট কর্মকাণ্ড তাদের গুণ্ডা স্থানীয় সমর্থক ও লোকজন যে তাদের দ্বারা সাধারণভাবে নির্দেশিত হয়েই করছে এতে সন্দেহ নেই।
বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীকে যেভাবে গুম করা হয়েছে এটা নিঃসন্দেহে এক ফ্যাসিস্ট অপরাধ। তার পরিবারবর্গ ও সুহৃদবর্গ এই অপহরণের ফলে কীভাবে বিপর্যস্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এটা বুঝিয়ে বলার দরকার হয় না। এ নিয়ে অনেক সংবাদ বিবরণ ইতিমধ্যেই প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু যে গরিব বাসচালকটি ২১ এপ্রিল বিএনপির গুণ্ডাদের দ্বারা পুড়ে কয়লা হয়ে গেলেন, তার পরিবারের খবর কী? তাদের জন্য কি কেউ চোখের পানি ফেলেছে? আবার বলতে হয় যে, বিএনপির নেতা-নেত্রীরা কি তার জন্য সেই গরিবদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন, এর জন্য কোনো দুঃখ প্রকাশ করেছেন? তাদের ক্ষতিপূরণের কোন ব্যবস্থা করেছেন? জীবনের ক্ষতি পূরণ করা যায় না। কিন্তু পরিবারের যারা বেঁচে আছেন তাদের জীবিকার ক্ষতিপূরণ করার কী হবে? এর কোনো চিন্তা কি বিএনপি নেতৃত্বের আছে?
২২ তারিখের পর বিএনপি আবার ২৩ এপ্রিল হরতাল দিয়েছে। তাদের নেতৃবৃন্দ হুমকি দিচ্ছেন ইলিয়াস আলীকে ফিরিয়ে না দিলে তারা লাগাতার হরতাল দেবেন! লাগাতার হরতাল দেওয়ার ক্ষমতা তাদের নেই। ২২ তারিখের হরতাল ভালো হয়েছে কিন্তু আজকের হরতাল গতকালের হরতালের থেকে অনেক শিথিল। লাগাতার হরতাল দিলে রাস্তায় যানবাহন স্বাভাবিকভাবেই চলবে, দোকানপাটও লোকে খোলা রাখবে, যদিও রাস্তায় বিএনপি এবং পুলিশ ও আওয়ামী লীগের গুণ্ডাদের মধ্যে সংঘর্ষ বাড়বে এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে। লোকে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বেশ ক্ষুব্ধ, তাদের ভোটের বাক্স পরবর্তী নির্বাচনে আর আগের মতো ভর্তি হবে না। কিন্তু লাগাতার হরতাল দিলে মানুষ যে বিএনপিকে ভালোবাসবে এবং বেশি করে ভোট দেবে এমন নয়। তারা এমনিতেই জানেন যে, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি, শাসকশ্রেণীর এই দুই প্রধান দলের মধ্যে চরিত্র ও সাধারণ কর্মকাণ্ডের দিক দিয়ে কোনো উল্লেখযোগ্য পার্থক্য নেই। সরকার ও বিরোধী দলে থাকার সময় তাদের উভয়ের আচরণ অভিন্ন।
হরতাল বিশেষ অবস্থায় জরুরি হতে পারে। সেভাবে হরতাল করায় দোষ নেই। কিন্তু কারণে-অকারণে ও তুচ্ছ কারণে হরতাল এবং ঘন ঘন হরতালের কোনো গণতান্ত্রিক চরিত্র নেই। এর মধ্যে কোনো জনস্বার্থ নিহিত নেই। উপরন্তু এর জন্য জনগণকে অনেক কষ্ট ও ক্ষতি স্বীকার করতে হয়। যে গরিব শ্রমজীবীদের অবস্থা দিন আনা দিন খাওয়ার মতো, তাদের কাজ হয় না হরতালের সময়। হরতালের সময় তাদের অবস্থা দাঁড়ায় সপরিবারে উপোস থাকার মতো। পরপর হরতাল হলে তাদের অবস্থা কী হয় এটা অনুমানের ব্যাপার নয়। এ ছাড়া সাধারণ লোকদের কাজ-কারবার ও যাতায়াত কষ্টসাধ্য, বিঘি্নত ও বিপর্যস্ত হয়। শুধু তাই নয়, কাজের জন্য যাদের পথে বের হতে হয় তাদের অনেক ঝুঁকি নিতে হয়। বাস, রিকশা ইত্যাদির ওপরে, এমনকি সাইকেলের ওপরও যে কোনো ধরনের আক্রমণ হতে পারে এবং হয়ে থাকে। হরতালের আগের দিন যেখানে রাস্তায় নিরুপদ্রবে দাঁড়িয়ে থাকা বাসে আগুন দিয়ে নিরীহ গরিব হত্যা করা হয়, সেখানে হরতালের দিনে যে কোনো লোকের ওপর আক্রমণ হওয়ারই সম্ভাবনা।
হরতালের সময় যানবাহন বন্ধ থাকায় বাইরে থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী, শাকসবজি থেকে নিয়ে সব রকম খাদ্য আমদানি ব্যাহত হওয়ায় ক্রমবর্ধমান মূল্যবৃদ্ধি পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়। বাজারের অবস্থা খারাপ দাঁড়ায়। এতে গরিব ও মধ্যবিত্ত লোকদের কষ্ট বাড়ে। কাজেই হরতাল কোনো ভালো জিনিস নয়। খুব বাধ্য না হলে, জরুরি না হলে, কথায় কথায় হরতাল ডাকা জনস্বার্থের সম্পূর্ণ বিরোধী এবং পরিহারযোগ্য।
যা পরিহারযোগ্য তাকে পরিহার বা বর্জন করতে হবে। গণতান্ত্রিক আন্দোলনের আরও উপায় এবং পথ আছে। সেই উপায় ও পথ ধরে আন্দোলন করতে হবে। যে কোনো বাধা এলে তার মোকাবেলা করতে হবে। সভা-সমিতি, সমাবেশ-মিছিল ইত্যাদি আন্দোলনের সব থেকে গণতান্ত্রিক এবং ফলপ্রসূ পদ্ধতি। যে শাসকশ্রেণী ১৯৭২ সাল থেকে এ দেশ শাসন করছে তাদের প্রত্যেকটি দলের নীতি ও কার্যকলাপ তাদের শ্রেণীর ফ্যাসিস্ট চরিত্রের সঙ্গেই সঙ্গতিপূর্ণ। এ কারণে তাদের শাসনে সভা-সমাবেশ-মিছিলের জন্য অনুমতি লাগে, এর প্রয়োজন ব্রিটিশ বা পাকিস্তানি আমলেও হতো না। এদিক দিয়ে বাংলাদেশের শাসকশ্রেণীর চরিত্র পূর্ববর্তী শাসকশ্রেণীর থেকে নিকৃষ্ট। এ কারণে বিএনপি বিরোধী দলে থাকলেও সভা-সমাবেশের, মিছিলের গণতান্ত্রিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য তারা চেষ্টা ও সংগ্রাম করে না। তারা জানে যে তারা ক্ষমতায় এলে তাদেরও এই একটি দমন নীতির ওপরই দাঁড়াতে হবে। কাজেই গণতান্ত্রিক পদ্ধতির কাছে না গিয়ে দায়িত্বহীন হরতালই তাদের আন্দোলনের আহ্বান, তাদের তথাকথিত গণতান্ত্রিক আন্দোলনের পদ্ধতি!
জনগণ এসবের বিরুদ্ধে। তারা যেমন সরকারি দমন নীতির বিরুদ্ধে, তেমনি তারা হরতালের নামে বিরোধী দল কর্তৃক জনগণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে তাদের সপক্ষে নিয়ে আসার কৌশলের বিরুদ্ধে। হরতালের সময়েই এসব প্রতিক্রিয়া জনগণের মধ্যে দেখা যায়।
সরকার এখন ফ্যাসিষ্ট লাইনে শাসন কাজ পরিচালনা করছে। তার বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রাম দরকার। কিন্তু সে আন্দোলন যেই করুক, জনগণকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, জনগণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে সে কাজ করা চলবে না। কাজেই যেভাবে হরতাল হচ্ছে তা বন্ধ করতে হবে। হরতালের পরিবর্তে সভা-সমাবেশ-মিছিল ইত্যাদিই হতে হবে আন্দোলনের পথ। গণতান্ত্রিক আন্দোলনের পদ্ধতিও হতে হবে গণতান্ত্রিক।
২৩.৪.২০১২
No comments