ডিএনডির জলবদ্ধতা-কিছুই কি করা যায় না?
দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা (ডিএনডি) বাঁধ এলাকায় জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবি জানিয়ে আসছেন এলাকাবাসী। কিন্তু অবস্থার উন্নতি হয়নি, বরং অনেক ক্ষেত্রেই অবনতি হয়েছে। জলাবদ্ধতা এখন ডিএনডি বাঁধ এলাকায় বসবাসরত লাখ লাখ মানুষের নিত্যদিনের সঙ্গী।
প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে এলাকাবাসী নানা ধরনের উদ্যোগ নেয়, মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল, স্মারকলিপি দেয়। কিন্তু অবস্থার উন্নতি দেখা যায় না। এখন অবস্থা এমন পর্যায়ে গেছে যে, আকাশে মেঘ দেখলেই ভয়ে ভয়ে থাকেন ডিএনডির বাসিন্দারা। কারণ কয়েক ঘণ্টার টানা বৃষ্টিতে ডিএনডির অধিকাংশ এলাকার প্রধান সড়ক প্ল্নাবিত হয়। তখন ড্রেনের ময়লা পানি উপচেপড়ে দুর্গন্ধময় পরিবেশের সৃষ্টি করে। ইরিগেশনের মাধ্যমে অধিক ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যে ১৯৬৪ সালে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা এলাকা নিয়ে ডিএনডি প্রকল্প করা হয়েছিল। জায়গার দাম কম হওয়ায় খুব অল্প সময়ের মধ্যেই সেখানে ঘনবসতি গড়ে ওঠে। বর্তমানে প্রায় ২০ লাখ লোকের বাস এ এলাকায়। মানুষের বসবাস বাড়লেও সেখানে নাগরিক সুযোগ-সুবিধা বাড়েনি। তা ছাড়া পরিকল্পনাবিহীন যত্রতত্র বাসাবাড়ি হওয়ায় ড্রেনেজ ব্যবস্থাও ভালো নয়। ফলে বৃষ্টি হলে কিংবা বর্ষা মৌসুমে ডিএনডি এলাকার মানুষকে অসহনীয় দুর্যোগের মধ্যে পড়তে হয়। জলাবদ্ধতার সংকটের কারণে এলাকাবাসীর খাদ্য নিরাপত্তাও হুমকির মুখে। কারণ কৃষিজমিতে আগের মতো চাষবাস করা সম্ভব হচ্ছে না। অনেকেরই মনে থাকার কথা, ২০০৪ সালে ডিএনডি এলাকায় ভয়াবহ বন্যার পর পেছনের কারণ খুঁজতে গিয়ে দেখা যায়, সরকারি জায়গা ও পানিনিষ্কাশনের খাল-নালা ভূমিদস্যুদের কবলে। সেসব জায়গায় গড়ে উঠেছে মার্কেট ও অন্যান্য ভবন। পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়নে যথেষ্ট পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ফলে ডিএনডি এলাকার সংকট বেড়েই চলছে। আমরা মনে করি, ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন, খালের দখলদারদের উচ্ছেদ না করে ডিএনডি এলাকার জলাবদ্ধতার সমাধান সম্ভব নয়। জলাবদ্ধতার কবলে পড়ে লাখ লাখ মানুষের জীবন ব্যবস্থা বিপন্ন। ডিএনডি এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে কার্যকর ভূমিকা নেওয়া হোক।
No comments