চারুশিল্প-বর্ণিল অন্তর্বুনন by সিলভিয়া নাজনীন
সাদাকালো সময়ের সঙ্গে বর্ণময় অনুষঙ্গ হিসেবেই বোধ হয় শিল্পীদের বিচরণ। সৃষ্টিশীল মানুষের বৈচিত্র্যময় রূপ ও গড়ন ভাবনাই ক্রমশ বদলে দিচ্ছে পৃথিবীর আলাভোলা অবয়ব। নিজের পথ তৈরির সঙ্গে সঙ্গে শিল্পী গড়ে তোলেন সভ্যতার নতুন অভিমুখ। বহুবর্ণে কিংবা বর্ণহীনতায় শিল্পীর প্রকাশভঙ্গিগুলো তাই নানামাত্রিক গুরুত্ব রাখে।
এই ধারাবাহিকতার অংশই শিল্পী মাকসুদা ইকবাল নিপার ‘বর্ণিল অন্তর্বুনন’। গুলশানের বেঙ্গল আর্ট লাউঞ্জে সম্প্রতি শুরু হয়েছে তাঁর শিল্পকর্মের প্রদর্শনী। ‘আমি ভীষণ রিয়েলিস্টিক ছবি আঁকি।’ এভাবেই নিজের শিল্পকর্মকে চিহ্নিত করেন শিল্পী নিপা। শিল্পপ্রেমীরা যখন তাঁর শিল্পকর্মের সামনে দাঁড়ায়, অবধারিতভাবেই ভিন্ন এক বর্ণিল জগতের সিঁড়ির অবভাস তৈরি হয়। উজ্জ্বল স্বতন্ত্র রঙের বিন্যাস, নিরীক্ষাপ্রবণ চিত্রতল বিমূর্ততার পথেই এগিয়ে নিয়ে যায়। যদিও শিল্পীর কাছে বিষয়টি বিমূর্ত নয়, কারণ শিল্পীর বোঝাপড়ার সঙ্গে দর্শকের ফারাক থেকেই যায়।
প্রকৃতির রংকেই তিনি ক্যানভাসে ফুটিয়ে তোলেন নিজস্ব পদ্ধতিতে। কোনো একটি পতঙ্গ, ফুল, পাতা—এমন কিছু থেকে হয়তো একটি রং নিয়ে পুরো ক্যানভাসে ছুটে বেড়ান। ক্রিমসন বিউটি, ফিল্ড অব ইয়েলো, সানশাইন—এমন শিরোনামের মধ্য দিয়ে খুব সহজেই তিনি প্রকাশ করেন চলমান ভাবনাগুলোকে। তিনি নিজের শিল্পকর্মকে বিমূর্ত শিল্প বলতে নারাজ। শিল্পের অনুষঙ্গ আহরণ করেন তাঁর চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বাস্তবতার বর্ণিল জীবনযাপন থেকে। রং নিয়ে তাঁর ভাবনা সম্পর্কে বলেন, ‘অনেক সময় একটি রংকে ভাবতে থাকি—সেই রঙের ভিন্ন স্তর অর্থাৎ হলুদ রং যদি আঁকি, তবে এর বিভিন্ন গ্রেড নিয়ে ভাবতে হয়। এর ব্রাইটনেস, টোনাল গ্রেড নিয়ে কাজ করছি, এটা তো রিয়েলিস্টিক কাজেরই অংশ।’ এভাবেই বাস্তব আর বিমূর্ত সময়কে শিল্পকর্মে একাকার করে তোলেন শিল্পী নিপা। তাঁর ‘ফ্লোটিং লিভস’ ইমপ্রেশনিস্ট ওয়াটার লিলির কথা মনে করিয়ে দেয়। সৌন্দর্য সৃষ্টির বাইরে দীপ্তিময় রঙের দ্যোতনা তাঁর শিল্পকর্মকে অর্থময় করে তোলে।
শিল্পী নিপা মূলত তেলরঙে ছবি আঁকতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। তেলরং এ সময়ের শিল্পীরা ব্যবহার করেন না বললেই চলে। এখানকার আবহাওয়া খুব দ্রুতই তেলরঙের দীর্ঘস্থায়িত্ব নষ্ট করতে সক্ষম। কিন্তু তিনি এই মাধ্যমকে ধরে রাখতে চান সমস্যার সমাধান করে। তাই ছবি আঁকার আগে ক্যানভাস তৈরির ওপর বেশ গুরুত্ব দিয়ে থাকেন তিনি। নিপা বলেন, ‘আমার ছবির বিষয়বস্তু অপেক্ষা ম্যাটেরিয়াল প্রধান সব সময়। এ সময়ে বিভিন্ন ধরনের কাজ হচ্ছে, তাই সাবজেক্টকে তেমন প্রাধান্য দিতে চাই না আমি।’ নতুন নিরীক্ষা, ভিন্ন সারফেস তৈরি, নতুনত্ব সৃষ্টির প্রয়াস থাকে শিল্পী নিপার প্রতিটি চিত্রপটে। রং, মাধ্যম আর ছবি আঁকার পদ্ধতি ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ তাঁর কাছে। মৌলিক রঙের ঔজ্জ্বল্য সরলভাবে তিনি উপস্থাপন করেন। ‘প্রকৃতি দিয়ে বরারবই আমি প্রভাবিত—রঙের বৈচিত্র্য, টেক্সচার নিয়ে আমি আচ্ছন্ন থাকি। আমার কাজে পূর্বপরিকল্পনা তেমন থাকে না। করতে করতে বের হয়ে আসে।’ বললেন নিপা।
দীর্ঘ সময় জাপানে লেখাপড়া এবং বসবাস করে এ দেশের শিল্পভুবনে বিচরণের খুব বেশি সময় হয়নি শিল্পী নিপার। তাই তিনি প্রথিতযশা শিল্পীদের কাজের বাইরে এ সময়ের শিল্পকর্ম এবং শিল্পীদের সঙ্গে পরিচত নন। তবে যতটুকু দেখেছেন, তাতে তেমন কোনো নতুনত্ব খুঁজে পাননি। একজন শিল্পী যখন দীর্ঘদিন কাজ করেন, তাঁর কিছু নিজস্বতা তৈরি হবেই, যা অন্য কারও সঙ্গেই মিলবে না। এটাকে তিনি স্টাইল হিসেবে চিহ্নিত করতে চান না। শিল্পভুবনে একমাত্র অভিজ্ঞতাই শিল্পীকে পরিপূর্ণ করে।
শিল্পী মাকসুদা ইকবাল: ১৯৭৫ সালে ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৯৬ সালে বর্তমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড্রয়িং অ্যান্ড পেইন্টিং বিভাগ থেকে বিএফএ এবং জাপানের আইচি ইউনিভার্সিটি অব এডুকেশন থেকে এমএড শেষ করেন। এ পর্যন্ত তাঁর আটটি একক এবং বহু দলবদ্ধ প্রদর্শনী হয়েছে। তিনি শিল্পকলা একাডেমী আয়োজিত নবীন চারুকলা প্রদর্শনীতে সম্মানসূচক পুরস্কারসহ আরও কিছু পুরস্কার লাভ করেন।
প্রকৃতির রংকেই তিনি ক্যানভাসে ফুটিয়ে তোলেন নিজস্ব পদ্ধতিতে। কোনো একটি পতঙ্গ, ফুল, পাতা—এমন কিছু থেকে হয়তো একটি রং নিয়ে পুরো ক্যানভাসে ছুটে বেড়ান। ক্রিমসন বিউটি, ফিল্ড অব ইয়েলো, সানশাইন—এমন শিরোনামের মধ্য দিয়ে খুব সহজেই তিনি প্রকাশ করেন চলমান ভাবনাগুলোকে। তিনি নিজের শিল্পকর্মকে বিমূর্ত শিল্প বলতে নারাজ। শিল্পের অনুষঙ্গ আহরণ করেন তাঁর চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বাস্তবতার বর্ণিল জীবনযাপন থেকে। রং নিয়ে তাঁর ভাবনা সম্পর্কে বলেন, ‘অনেক সময় একটি রংকে ভাবতে থাকি—সেই রঙের ভিন্ন স্তর অর্থাৎ হলুদ রং যদি আঁকি, তবে এর বিভিন্ন গ্রেড নিয়ে ভাবতে হয়। এর ব্রাইটনেস, টোনাল গ্রেড নিয়ে কাজ করছি, এটা তো রিয়েলিস্টিক কাজেরই অংশ।’ এভাবেই বাস্তব আর বিমূর্ত সময়কে শিল্পকর্মে একাকার করে তোলেন শিল্পী নিপা। তাঁর ‘ফ্লোটিং লিভস’ ইমপ্রেশনিস্ট ওয়াটার লিলির কথা মনে করিয়ে দেয়। সৌন্দর্য সৃষ্টির বাইরে দীপ্তিময় রঙের দ্যোতনা তাঁর শিল্পকর্মকে অর্থময় করে তোলে।
শিল্পী নিপা মূলত তেলরঙে ছবি আঁকতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। তেলরং এ সময়ের শিল্পীরা ব্যবহার করেন না বললেই চলে। এখানকার আবহাওয়া খুব দ্রুতই তেলরঙের দীর্ঘস্থায়িত্ব নষ্ট করতে সক্ষম। কিন্তু তিনি এই মাধ্যমকে ধরে রাখতে চান সমস্যার সমাধান করে। তাই ছবি আঁকার আগে ক্যানভাস তৈরির ওপর বেশ গুরুত্ব দিয়ে থাকেন তিনি। নিপা বলেন, ‘আমার ছবির বিষয়বস্তু অপেক্ষা ম্যাটেরিয়াল প্রধান সব সময়। এ সময়ে বিভিন্ন ধরনের কাজ হচ্ছে, তাই সাবজেক্টকে তেমন প্রাধান্য দিতে চাই না আমি।’ নতুন নিরীক্ষা, ভিন্ন সারফেস তৈরি, নতুনত্ব সৃষ্টির প্রয়াস থাকে শিল্পী নিপার প্রতিটি চিত্রপটে। রং, মাধ্যম আর ছবি আঁকার পদ্ধতি ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ তাঁর কাছে। মৌলিক রঙের ঔজ্জ্বল্য সরলভাবে তিনি উপস্থাপন করেন। ‘প্রকৃতি দিয়ে বরারবই আমি প্রভাবিত—রঙের বৈচিত্র্য, টেক্সচার নিয়ে আমি আচ্ছন্ন থাকি। আমার কাজে পূর্বপরিকল্পনা তেমন থাকে না। করতে করতে বের হয়ে আসে।’ বললেন নিপা।
দীর্ঘ সময় জাপানে লেখাপড়া এবং বসবাস করে এ দেশের শিল্পভুবনে বিচরণের খুব বেশি সময় হয়নি শিল্পী নিপার। তাই তিনি প্রথিতযশা শিল্পীদের কাজের বাইরে এ সময়ের শিল্পকর্ম এবং শিল্পীদের সঙ্গে পরিচত নন। তবে যতটুকু দেখেছেন, তাতে তেমন কোনো নতুনত্ব খুঁজে পাননি। একজন শিল্পী যখন দীর্ঘদিন কাজ করেন, তাঁর কিছু নিজস্বতা তৈরি হবেই, যা অন্য কারও সঙ্গেই মিলবে না। এটাকে তিনি স্টাইল হিসেবে চিহ্নিত করতে চান না। শিল্পভুবনে একমাত্র অভিজ্ঞতাই শিল্পীকে পরিপূর্ণ করে।
শিল্পী মাকসুদা ইকবাল: ১৯৭৫ সালে ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৯৬ সালে বর্তমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড্রয়িং অ্যান্ড পেইন্টিং বিভাগ থেকে বিএফএ এবং জাপানের আইচি ইউনিভার্সিটি অব এডুকেশন থেকে এমএড শেষ করেন। এ পর্যন্ত তাঁর আটটি একক এবং বহু দলবদ্ধ প্রদর্শনী হয়েছে। তিনি শিল্পকলা একাডেমী আয়োজিত নবীন চারুকলা প্রদর্শনীতে সম্মানসূচক পুরস্কারসহ আরও কিছু পুরস্কার লাভ করেন।
No comments