চার ঘণ্টা বিমান চলাচল বন্ধ-শাহ আমানত বিমানবন্দরের টার্মিনাল ভবনে আগুন
চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টার্মিনাল ভবনের একটি কক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে আগুন লাগে। এতে পুরো টার্মিনাল ভবন ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। এ সময় বিমানযাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আগুনের ঘটনায় প্রায় চার ঘণ্টা বিমান চলাচল বন্ধ ছিল।
ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, টার্মিনাল ভবনের দ্বিতীয় তলায় লিফটের পাশের একটি কক্ষে বিকেল চারটার দিকে আগুনের সূত্রপাত হয়। এ সময় ধোঁয়ার কারণে যাত্রীদের শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল। এই পরিস্থিতিতে যাত্রীদের বিমানবন্দর ভবন থেকে বের করে নেওয়া হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে বিমানবন্দর ভবনকে নিরাপদ ঘোষণা করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আগুন লাগার পর ধোঁয়ায় গোটা টার্মিনাল ভবন অন্ধকার হয়ে যায়। এ সময় ১০-১৫ জন শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হন। তাঁদের দ্রুত বাইরে সরিয়ে নেওয়া হয়।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের কর্মচারী মহিউদ্দিন বলেন, আগুন থেকে সৃষ্ট ধোঁয়ায় নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল।
চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী বিমানের যাত্রী নুরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিকেলে বোর্ডিং পাস হওয়ার পর দেখি টার্মিনাল ভবনে ধোঁয়ার কুণ্ডলী। এ সময় আমাদের মধ্যে আতঙ্ক কাজ করছিল। কারণ, ধোঁয়া বের হওয়ার পথ ছিল না।’
ফায়ার সার্ভিসের চট্টগ্রামের উপসহকারী পরিচালক মো. জসিম উদ্দিন বলেন, নয়টি ইউনিট আধা ঘণ্টার মধ্যেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুন নেভাতে ও ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণে আনতে বিমান, নৌ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা কাজ করেন। তিনি বলেন, ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণে আনতে সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত সময় লেগে যায়। এরপর টার্মিনাল ভবনের প্রতিটি কক্ষ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নিরাপদ ঘোষণা করা হয়।
টার্মিনাল ভবনের বাইরে দাঁড়িয়ে জেদ্দাগামী মো. মহিউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর ভিসার মেয়াদ আছে শুক্রবার পর্যন্ত। এর মধ্যে জেদ্দায় পৌঁছাতে না পারলে ভিসা বাতিল হয়ে যাবে। অথচ সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় টার্মিনাল নিরাপদ ঘোষণা করা হলেও সাড়ে সাতটা পর্যন্ত তাঁর ফ্লাইটের সূচি ঘোষণা করা হয়নি।
শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক স্কোয়াড্রন লিডার রবিউল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, বিভিন্ন বিমানের উড্ডয়নের সূচি পরিবর্তন করা হয়েছে।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের জনসংযোগ কর্মকর্তা এ কে এম রেজাউল করিম প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনা খতিয়ে দেখতে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবদুল মালেককে প্রধান করে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বিমানবন্দর সূত্র জানায়, গতকাল আন্তর্জাতিক রুটের ১৮টি ফ্লাইটের মধ্যে ১৪টির অবতরণ ও উড্ডয়ন নির্দিষ্ট সময়ে হয়েছে। আগুনের কারণে বাকি চারটি ফ্লাইটের সময়সূচিতে পরিবর্তন ঘটে। রাত নয়টা পর্যন্ত ওই চারটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের উড্ডয়নের অনুমতি দেওয়া হয়নি। এ ছাড়া অভ্যন্তরীণ রুটের ৩৪টি ফ্লাইটের মধ্যে ২৬টির অবতরণ ও উড্ডয়ন হয়েছে। বাকি আটটি কিছুটা বিলম্বে ওঠানামা করে।
No comments