শিক্ষা-নৈতিক অবক্ষয় ও কোড অব কন্ডাক্ট by কাজী ফারুক আহমেদ
শিক্ষকরা যাতে শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক শাস্তিদান সর্বতোভাবে পরিহার করে শিক্ষা দর্শন ও বিজ্ঞানের আলোকে পাঠদানে নিয়োজিত থাকেন সে লক্ষ্যে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ প্রদান ও উদ্বুদ্ধকরণে শিক্ষক সংগঠনগুলোর কর্মসূচি গ্রহণ।
শিক্ষার্থীরা যাতে পরিবারেও লেখাপড়ার জন্য, সমকক্ষতা ও সক্ষমতা থাক আর না থাক অন্য অভিভাবকের সন্তানের অনুরূপ ভালো ফলের জন্য শারীরিক ও মানসিক চাপের শিকার না হয় সেজন্য অভিভাবকদেরও উদ্বুদ্ধকরণ
সারা দেশে এখন আলোচনার বিষয়বস্তু 'শিক্ষক' নামধারী কতিপয় ব্যক্তির ক্ষমার অযোগ্য নৈতিক অবক্ষয় প্রসঙ্গ। সংখ্যার বিচারে ভিকারুননিসার পরিমল জয়ধরদের মতো 'শিক্ষক' দেশের পাঁচ লাখ শিক্ষকের এক শতাংশের কম হলেও তারা যে দেশের গোটা শিক্ষক সমাজের ভাবমূর্তি বিনষ্টের জন্য আদৌ কম নয়_ তা মানতে হবে। শিক্ষকদের একটি উলেল্গখযোগ্য অংশের পাঠদানে অযোগ্যতা ও অদক্ষতা এবং প্রাইভেট টিউশনি ও কোচিংয়ে লিপ্ত থাকার জন্য অভিভাবকসহ সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ আগে থেকেই ক্ষুব্ধ হয়ে আছেন। যদিও সমস্যাটি দীর্ঘদিনের, তবে পুরনো এসব সামাজিক ব্যাধি এখন পুরো শিক্ষা ব্যবস্থাকেই গ্রাস করতে উদ্যত হয়েছে। এ কথা সত্য, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কোনো সমাজবিচ্ছিন্ন দ্বীপ নয়। সে জন্য সমাজের অসঙ্গতি ও ক্লেদ তাকেও স্পর্শ করে। সেজন্য শিক্ষকদের পেশাগত বিভিন্ন দাবি যেমন নিয়মিত বেতন-ভাতা, পদোন্নতি, টাইম স্কেল, চিকিৎসা ও উৎসব ভাতা, আবাসন সুবিধা, অবসর-পরবর্তী পেনশন ইত্যাদির যৌক্তিকতা মেনে নেওয়ার পরও প্রশ্ন ওঠে, পরিমল জয়ধরের মতো স্বভাবজাত অপরাধীরা শিক্ষকতায় আসে কী ভাবে? পাবলিক সার্ভিস কমিশনের অনুরূপ ব্যবস্থায় শিক্ষক নিয়োগ আর কবে হবে?
শিক্ষা সংশ্লিষ্টদের অভিমত, আলোচিত সমস্যার বিস্তারের জন্য দায়ী : ১) শিক্ষকতায় পুরনো মূল্যবোধের মানুষদের নির্গমন ও নতুন মূল্যবোধ, অথবা মূল্যবোধহীন ব্যক্তিদের শিক্ষকতায় অনুপ্রবেশ। ২) ত্রুটিপূর্ণ ও দুর্নীতিপরায়ণ নিয়োগ পদ্ধতি। ৩) শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনায় ক্রমবর্ধমান দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও দলীয় রাজনীতির অনুপ্রবেশ। ৪) শিক্ষকদের পেশাগত অসদাচরণ : প্রাইভেট টিউশন ও কোচিংয়ের বাণিজ্যিক বিস্তার। ৫) মুখে প্রতিনিয়ত প্রাইভেট টিউশনি ও কোচিংয়ের বিরোধীদের একটি বড় অংশের বাসায় প্রাইভেট টিউটর রাখা ও সন্তানদের কোচিংয়ে পাঠানোর মতো বিপরীতমুখী 'নৈতিকতার' আশ্রয় গ্রহণ। ৬) শ্রেণীকক্ষে শিক্ষকের পাঠদানে ব্যর্থতা, ভুল পাঠদান এবং শিক্ষার্থীর জ্ঞানের স্তর নিরূপণে অক্ষমতা। ৭) শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার প্রতিকূল পারিপাশর্ি্বক অবস্থা। ৮) প্রতিষ্ঠানে আকস্মিক পরিদর্শন ও নিয়মিত মনিটরিংয়ের অনুপস্থিতি। ৯) প্রযুক্তির অপব্যবহার। ১০) প্রজন্ম ব্যবধান। ১১) পরিবারে শিক্ষার্থী কী করছে, কার সঙ্গে কথা বলছে, প্রতিষ্ঠানে কী শিখছে_ এক শ্রেণীর অভিভাবকের সেদিকে নিস্পৃৃহতা। ১২) শিক্ষার্থীর শিক্ষা নিয়ে শিক্ষক-অভিভাবক সংযোগ ও সমন্বয়হীনতা।
আমার মতে, দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত এসব সমস্যার প্রতিকারে আশু পদক্ষেপ হিসেবে যা বিবেচ্য :১) অনৈতিক কার্যকলাপে লিপ্ত 'শিক্ষক' নামধারী ব্যক্তিদের আইন অনুসারে অপসারণসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিদানের লক্ষ্যে অবিলম্বে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ। ২) শিক্ষক নামধারীদের বিরুদ্ধে, শিক্ষাক্ষেত্রে অব্যবস্থাপনার বিপক্ষে, অনুকূল শিক্ষা পরিবেশের পক্ষে ব্যাপক জনমত সৃষ্টি। ৩) শ্রেণীকক্ষে পাঠদানসহ শিক্ষকদের পেশাগত জবাবদিহিতা নিয়মিত মনিটরিংয়ের জন্য স্থায়ী কর্মপন্থা গ্রহণ। ৪) শিক্ষার্থীদের নিবন্ধন কার্ড ও সনদপত্রে বাবার নামের সঙ্গে মায়ের নাম যুক্ত করার ধারাবাহিকতায় সন্তানের শিক্ষা কার্যক্রমে বাবা-মা উভয়ের পরিচর্যা ও সহায়ক ভূমিকা অধিকতর নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রচলিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনা কমিটি পুনর্বিন্যাস করে প্রতিটি কমিটিতে অভিভাবকদের মধ্য থেকে আবশ্যিকভাবে বাবা ও মা দু'জনেরই অন্তর্ভুক্তি। ৫) শিক্ষক, অভিভাবক, জনপ্রতিনিধি, সমাজ প্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রশাসনের সমন্বয়। ৬) শ্রেণীকক্ষেই যাতে পাঠক্রম অনুযায়ী শিক্ষার্থীর পাঠ গ্রহণ সম্পন্ন হয় তা নিশ্চিত করতে জরুরি ভিত্তিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মসূচি গ্রহণ। ৭) পাঠদানের সময় শিক্ষকরা যাতে শিক্ষার্থীর সৃজনশীলতা বিকাশে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারেন সে লক্ষ্যে শিক্ষকতায় যোগদানের আগে ও পরে অব্যাহতভাবে প্রশিক্ষণ প্রদান। ৮) শিক্ষকরা যাতে শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক শাস্তিদান সর্বতোভাবে পরিহার করে শিক্ষা দর্শন ও বিজ্ঞানের আলোকে পাঠদানে নিয়োজিত থাকেন সে লক্ষ্যে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ প্রদান ও উদ্বুদ্ধকরণে শিক্ষক সংগঠনগুলোর কর্মসূচি গ্রহণ। ৯) শিক্ষার্থীরা যাতে পরিবারেও লেখাপড়ার জন্য ও সক্ষমতা থাক আর না থাক অন্য অভিভাবকের সন্তানের অনুরূপ ভালো ফলের জন্য শারীরিক ও মানসিক চাপের শিকার না হয় সেজন্য অভিভাবকদেরও উদ্বুদ্ধকরণ।
অবস্থার উত্তরণে আমি তিনটি স্বতন্ত্র কোড অব কন্ডাক্ট প্রণয়ন করা জরুরি মনে করি। এর একটি ইউনেস্কো-আইএলও অনুমোদিত শিক্ষকদের অধিকার, মর্যাদা, করণীয় এবং দায়িত্ব পালন ও জবাবদিহিতা সংক্রান্ত ১৯৬৬ ও ১৯৯৭ সালের সনদের আলোকে, শিক্ষানীতি ২০১০-এর বিধান অনুসারে 'শিক্ষকদের জন্য একটি জাতীয় কোড অব কন্ডাক্ট'। যেখানে শিক্ষকদের নৈতিক মূল্যবোধ সম্বন্ধীয় বিষয়গুলো কঠোরভাবে মেনে চলার বিধান থাকবে। শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক শাস্তিদান সর্বতোভাবে পরিহার, যুগোপযোগী, উন্নত পাঠদান পদ্ধতি অনুসরণ এবং অভিভাবকদের সঙ্গে দৃঢ় সংযোগ ও সমন্বয়ের বিষয়ও প্রাধান্য পাবে। দ্বিতীয়টি, প্রচলিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির ব্যাপক সংস্কার ও পুনর্বিন্যাস সংবলিত 'শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কোড অব কন্ডাক্ট'। তৃতীয়টি, 'অভিভাবকের ক্ষমতা, দায়িত্ব ও করণীয় কোড'। এ ক্ষেত্রে শিক্ষা তথা দেশ ও জাতির স্বার্থে সরকারের দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ কাঙ্ক্ষিত অনুকূল পরিবর্তনে বিশেষভাবে সহায়ক হবে বলে অনেকের মতো আমারও বিশ্বাস।
অধ্যক্ষ কাজী ফারুক আহমেদ : প্রধান সমন্বয়কারী, জাতীয় শিক্ষক-কর্মচারী ফ্রন্ট principalqfahmed@yahoo.com
সারা দেশে এখন আলোচনার বিষয়বস্তু 'শিক্ষক' নামধারী কতিপয় ব্যক্তির ক্ষমার অযোগ্য নৈতিক অবক্ষয় প্রসঙ্গ। সংখ্যার বিচারে ভিকারুননিসার পরিমল জয়ধরদের মতো 'শিক্ষক' দেশের পাঁচ লাখ শিক্ষকের এক শতাংশের কম হলেও তারা যে দেশের গোটা শিক্ষক সমাজের ভাবমূর্তি বিনষ্টের জন্য আদৌ কম নয়_ তা মানতে হবে। শিক্ষকদের একটি উলেল্গখযোগ্য অংশের পাঠদানে অযোগ্যতা ও অদক্ষতা এবং প্রাইভেট টিউশনি ও কোচিংয়ে লিপ্ত থাকার জন্য অভিভাবকসহ সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ আগে থেকেই ক্ষুব্ধ হয়ে আছেন। যদিও সমস্যাটি দীর্ঘদিনের, তবে পুরনো এসব সামাজিক ব্যাধি এখন পুরো শিক্ষা ব্যবস্থাকেই গ্রাস করতে উদ্যত হয়েছে। এ কথা সত্য, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কোনো সমাজবিচ্ছিন্ন দ্বীপ নয়। সে জন্য সমাজের অসঙ্গতি ও ক্লেদ তাকেও স্পর্শ করে। সেজন্য শিক্ষকদের পেশাগত বিভিন্ন দাবি যেমন নিয়মিত বেতন-ভাতা, পদোন্নতি, টাইম স্কেল, চিকিৎসা ও উৎসব ভাতা, আবাসন সুবিধা, অবসর-পরবর্তী পেনশন ইত্যাদির যৌক্তিকতা মেনে নেওয়ার পরও প্রশ্ন ওঠে, পরিমল জয়ধরের মতো স্বভাবজাত অপরাধীরা শিক্ষকতায় আসে কী ভাবে? পাবলিক সার্ভিস কমিশনের অনুরূপ ব্যবস্থায় শিক্ষক নিয়োগ আর কবে হবে?
শিক্ষা সংশ্লিষ্টদের অভিমত, আলোচিত সমস্যার বিস্তারের জন্য দায়ী : ১) শিক্ষকতায় পুরনো মূল্যবোধের মানুষদের নির্গমন ও নতুন মূল্যবোধ, অথবা মূল্যবোধহীন ব্যক্তিদের শিক্ষকতায় অনুপ্রবেশ। ২) ত্রুটিপূর্ণ ও দুর্নীতিপরায়ণ নিয়োগ পদ্ধতি। ৩) শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনায় ক্রমবর্ধমান দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও দলীয় রাজনীতির অনুপ্রবেশ। ৪) শিক্ষকদের পেশাগত অসদাচরণ : প্রাইভেট টিউশন ও কোচিংয়ের বাণিজ্যিক বিস্তার। ৫) মুখে প্রতিনিয়ত প্রাইভেট টিউশনি ও কোচিংয়ের বিরোধীদের একটি বড় অংশের বাসায় প্রাইভেট টিউটর রাখা ও সন্তানদের কোচিংয়ে পাঠানোর মতো বিপরীতমুখী 'নৈতিকতার' আশ্রয় গ্রহণ। ৬) শ্রেণীকক্ষে শিক্ষকের পাঠদানে ব্যর্থতা, ভুল পাঠদান এবং শিক্ষার্থীর জ্ঞানের স্তর নিরূপণে অক্ষমতা। ৭) শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার প্রতিকূল পারিপাশর্ি্বক অবস্থা। ৮) প্রতিষ্ঠানে আকস্মিক পরিদর্শন ও নিয়মিত মনিটরিংয়ের অনুপস্থিতি। ৯) প্রযুক্তির অপব্যবহার। ১০) প্রজন্ম ব্যবধান। ১১) পরিবারে শিক্ষার্থী কী করছে, কার সঙ্গে কথা বলছে, প্রতিষ্ঠানে কী শিখছে_ এক শ্রেণীর অভিভাবকের সেদিকে নিস্পৃৃহতা। ১২) শিক্ষার্থীর শিক্ষা নিয়ে শিক্ষক-অভিভাবক সংযোগ ও সমন্বয়হীনতা।
আমার মতে, দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত এসব সমস্যার প্রতিকারে আশু পদক্ষেপ হিসেবে যা বিবেচ্য :১) অনৈতিক কার্যকলাপে লিপ্ত 'শিক্ষক' নামধারী ব্যক্তিদের আইন অনুসারে অপসারণসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিদানের লক্ষ্যে অবিলম্বে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ। ২) শিক্ষক নামধারীদের বিরুদ্ধে, শিক্ষাক্ষেত্রে অব্যবস্থাপনার বিপক্ষে, অনুকূল শিক্ষা পরিবেশের পক্ষে ব্যাপক জনমত সৃষ্টি। ৩) শ্রেণীকক্ষে পাঠদানসহ শিক্ষকদের পেশাগত জবাবদিহিতা নিয়মিত মনিটরিংয়ের জন্য স্থায়ী কর্মপন্থা গ্রহণ। ৪) শিক্ষার্থীদের নিবন্ধন কার্ড ও সনদপত্রে বাবার নামের সঙ্গে মায়ের নাম যুক্ত করার ধারাবাহিকতায় সন্তানের শিক্ষা কার্যক্রমে বাবা-মা উভয়ের পরিচর্যা ও সহায়ক ভূমিকা অধিকতর নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রচলিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনা কমিটি পুনর্বিন্যাস করে প্রতিটি কমিটিতে অভিভাবকদের মধ্য থেকে আবশ্যিকভাবে বাবা ও মা দু'জনেরই অন্তর্ভুক্তি। ৫) শিক্ষক, অভিভাবক, জনপ্রতিনিধি, সমাজ প্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রশাসনের সমন্বয়। ৬) শ্রেণীকক্ষেই যাতে পাঠক্রম অনুযায়ী শিক্ষার্থীর পাঠ গ্রহণ সম্পন্ন হয় তা নিশ্চিত করতে জরুরি ভিত্তিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মসূচি গ্রহণ। ৭) পাঠদানের সময় শিক্ষকরা যাতে শিক্ষার্থীর সৃজনশীলতা বিকাশে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারেন সে লক্ষ্যে শিক্ষকতায় যোগদানের আগে ও পরে অব্যাহতভাবে প্রশিক্ষণ প্রদান। ৮) শিক্ষকরা যাতে শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক শাস্তিদান সর্বতোভাবে পরিহার করে শিক্ষা দর্শন ও বিজ্ঞানের আলোকে পাঠদানে নিয়োজিত থাকেন সে লক্ষ্যে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ প্রদান ও উদ্বুদ্ধকরণে শিক্ষক সংগঠনগুলোর কর্মসূচি গ্রহণ। ৯) শিক্ষার্থীরা যাতে পরিবারেও লেখাপড়ার জন্য ও সক্ষমতা থাক আর না থাক অন্য অভিভাবকের সন্তানের অনুরূপ ভালো ফলের জন্য শারীরিক ও মানসিক চাপের শিকার না হয় সেজন্য অভিভাবকদেরও উদ্বুদ্ধকরণ।
অবস্থার উত্তরণে আমি তিনটি স্বতন্ত্র কোড অব কন্ডাক্ট প্রণয়ন করা জরুরি মনে করি। এর একটি ইউনেস্কো-আইএলও অনুমোদিত শিক্ষকদের অধিকার, মর্যাদা, করণীয় এবং দায়িত্ব পালন ও জবাবদিহিতা সংক্রান্ত ১৯৬৬ ও ১৯৯৭ সালের সনদের আলোকে, শিক্ষানীতি ২০১০-এর বিধান অনুসারে 'শিক্ষকদের জন্য একটি জাতীয় কোড অব কন্ডাক্ট'। যেখানে শিক্ষকদের নৈতিক মূল্যবোধ সম্বন্ধীয় বিষয়গুলো কঠোরভাবে মেনে চলার বিধান থাকবে। শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক শাস্তিদান সর্বতোভাবে পরিহার, যুগোপযোগী, উন্নত পাঠদান পদ্ধতি অনুসরণ এবং অভিভাবকদের সঙ্গে দৃঢ় সংযোগ ও সমন্বয়ের বিষয়ও প্রাধান্য পাবে। দ্বিতীয়টি, প্রচলিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির ব্যাপক সংস্কার ও পুনর্বিন্যাস সংবলিত 'শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কোড অব কন্ডাক্ট'। তৃতীয়টি, 'অভিভাবকের ক্ষমতা, দায়িত্ব ও করণীয় কোড'। এ ক্ষেত্রে শিক্ষা তথা দেশ ও জাতির স্বার্থে সরকারের দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ কাঙ্ক্ষিত অনুকূল পরিবর্তনে বিশেষভাবে সহায়ক হবে বলে অনেকের মতো আমারও বিশ্বাস।
অধ্যক্ষ কাজী ফারুক আহমেদ : প্রধান সমন্বয়কারী, জাতীয় শিক্ষক-কর্মচারী ফ্রন্ট principalqfahmed@yahoo.com
No comments