গাদ্দাফি হত্যাকাণ্ড নিয়ে তুমুল বিতর্ক by গাজীউল হাসান খান
যদিও এই করুণ পরিণতি গাদ্দাফি তাঁর ৪২ বছরের স্বৈরশাসনের মধ্য দিয়েই অর্জন করেছিলেন, তবু তাঁর অপমৃত্যুকে কেন্দ্র করে পশ্চিমা মিডিয়াজগতে এক তুমুল বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। যুদ্ধরত দুই পক্ষের ক্রসফায়ারে গাদ্দাফি নিহত হয়েছেন বলে লিবিয়ার জাতীয় অন্তর্বর্তীকালীন কাউন্সিলের (এনটিসি) প্রধানমন্ত্রী মাহমুদ জিবরিল যে কথা বলেছেন, মিডিয়া তার বিরুদ্ধে অসংখ্য প্রশ্ন তুলেছে, যা মোটেও ভিত্তিহীন নয়।
২০ অক্টোবর গাদ্দাফি ধরা পড়েছিলেন তাঁর জন্মস্থান সার্তের উত্তরাঞ্চলের শহরতলির বড় একটি ড্রেনপাইপ থেকে। সে সময় তাঁর দুই পা বোমার আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হয়েছিল বলে জানা যায়। ন্যাটো বাহিনীর বিরামহীন গোলাবর্ষণ ও বিদ্রোহীদের চারদিক থেকে সাঁড়াশি আক্রমণের ফলে শেষ পর্যন্ত গাদ্দাফি তাঁর গাড়িবহর বা সামরিক কনভয় নিয়ে স্থানান্তরিত হওয়ার সময় একটি ফরাসি যুদ্ধবিমান ও মার্কিন ড্রোন বিমান থেকে গোলাবর্ষণ করা হয়েছিল। তাতে সব কিছু ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। উপায় না দেখে গাদ্দাফি আশ্রয় নিয়েছিলেন ড্রেনে এবং তখনো একটি সোনার রিভলবারসহ তাঁর কাছে তিনটি আধুনিক মারণাস্ত্র ছিল। বিদ্রোহীদের চলমান একটি ছোট দলের কাছে গাদ্দাফি যখন ধরা পড়েন, তখন কোনো প্রতিরোধ না করেই তিনি বেরিয়ে আসেন। যদিও এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল যে বোমার আঘাতে তিনি দুই পায়ে আঘাত পেয়েছেন, কিন্তু তার পরিবর্তে বলা হলো, তাঁর হাতে গুলি করা হয়েছিল। কে করেছিল সে গুলি? গাদ্দাফিকে যখন কিছু বিদ্রোহী ধাক্কা মেরে মেরে নিয়ে যাচ্ছিল, তখন বিধ্বস্ত হলেও সম্পূর্ণ সুস্থ দেখা যাচ্ছিল তাঁকে। ধাক্কাধাক্কিতে দুলে দুলে উঠছিল তাঁর কোঁকড়া বাবরি চুল। তিনি দু-একটি কথা বলার চেষ্টা করেছিলেন হয়তো। সে সময় প্রথমে তাঁর পেটে এবং পরে মাথার সম্মুখ দিয়ে একটি গুলি ঢুকে পেছন দিয়ে বেরিয়ে যায়। তাতেই তাঁর মৃত্যু ঘটেছে বলে জানা গেছে। সোনার রিভলবারসহ গাদ্দাফির সব অস্ত্রই তখন বিদ্রোহীদের হাতে। তা ছাড়া মোবাইল ফোনে যেসব ছবি তোলা হয়েছে, তাতে কাছাকাছি গাদ্দাফির অনুগত বাহিনীর তেমন উপস্থিতিও দেখা যায়নি। তাহলে কে হত্যা করেছে গাদ্দাফিকে? তাঁর দিকে গুলির আদেশই বা দিয়েছিল কে? তবে কি, যেমন শোনা যায়, ন্যাটো বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের তেমন কোনো যোগাযোগ ছিল না? বিদ্রোহীদের হাতে 'ওয়াকিটকি' থাকা সত্ত্বেও তারা কি গাদ্দাফির ধরা পড়ার ব্যাপারে জাতীয় কাউন্সিল কিংবা তাদের ঊর্ধ্বতন কারো সঙ্গে যোগাযোগ করেনি? গাদ্দাফি ধরা পড়ার ব্যাপারে কী নির্দেশ ছিল তাদের কাছে, সে সম্পর্কে কেউ এখন কিছু বলছে না।
গাদ্দাফি কি ঘটনাস্থলেই মারা যান, নাকি মিসরাতায় নেওয়ার পথে প্রাণত্যাগ করেছিলেন, সে সম্পর্কেও তেমন কিছু জানা যাচ্ছে না। তবে এতটুকু বলা হয়েছে যে গাদ্দাফির আগেই তাঁর ছেলে মোতাসসিম, যিনি সার্তের প্রতিরক্ষার দায়িত্বে ছিলেন, তিনি ধরা পড়েছিলেন। তবে তাঁকেই বা কারা হত্যা করেছে, সে সম্পর্কেও কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। এসব ব্যাপারে কোথাও কোনো চেইন অব কমান্ড ছিল বলে মনে হচ্ছে না। একই ঘটনা ঘটেছে গাদ্দাফির দাফনের ব্যাপারেও। যদিও প্রথমে তাঁকে ইসলামী মতে যথাশীঘ্র দাফন করার কথা বলা হয়েছিল, কিন্তু পরে দেখা গেল সে ব্যাপারেও বিভিন্ন মহল থেকে বিভিন্ন বিতর্কিত প্রশ্ন ওঠার ফলে তাঁর মরদেহ মিসরাতার একটি মসজিদে ফেলে রাখা হয়েছিল অনির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত। অন্যদিকে গাদ্দাফির দ্বিতীয় ছেলে সাইফ আল ইসলাম বনিওয়াশিদের কাছে আহত অবস্থায় ধরা পড়েছেন এবং জিলটানের একটি হাসপাতালে তাঁকে রাখা হয়েছিল বলে শোনা গেলেও তাঁর সম্পর্কে নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যাচ্ছিল না।
আলজেরিয়ায় অবস্থানরত গাদ্দাফির স্ত্রী তাঁর স্বামী ও ছেলের হত্যার ব্যাপারে অবিলম্বে তদন্ত করার জন্য জাতিসংঘের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। মেয়ে আয়েশা গাদ্দাফি পিতার মরদেহ ফেরত চেয়েছেন। জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের কমিশনার নবি পিল্লাইও গাদ্দাফি হত্যার একটি পূর্ণ তদন্ত দাবি করেছেন। ২১ অক্টোবর অর্থাৎ গাদ্দাফি হত্যার পরই তিনি এ দাবি জানিয়ে বলেছেন, এ কথা ঠিক যে কোনো বিদ্রোহ, গৃহযুদ্ধ কিংবা সশস্ত্র সংগ্রামের সময় বহুভাবেই অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু ঘটে থাকে, তবে ধরা পড়া কিংবা আত্মসমর্পণের পরও কাউকে বিচারবহির্ভূত এবং অমানবিকভাবে হত্যা করা আন্তর্জাতিক আইনে একটি অবৈধ ব্যাপার এবং জঘন্য অপরাধ। জানা গেছে, গাদ্দাফির মৃতদেহ প্রথমে সার্ত ও পরে মিসরাতার রাস্তায় টানাহেঁচড়া করা হয়েছে এবং বিদ্রোহীরা তাঁর ক্ষতবিক্ষত ও রক্তাক্ত দেহ নিয়ে মিছিল করেছে। সে কারণেই এনটিসি সরকার বা কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে এখন বিভিন্ন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, গাদ্দাফি ধরা পড়ার পর কোথায় ছিলেন প্রধানমন্ত্রী মাহমুদ জিবরিল ও বিদ্রোহী বাহিনীর প্রধান আবদুল হাকিম বেলহাজ? ২০ অক্টোবর বিদ্রোহীদের হাতে নিহত হওয়ার ১০ দিন আগেও তাঁর ছেলে গাদ্দাফির আত্মসমর্পণের ব্যাপারে এনটিসির সঙ্গে দরকষাকষি বা আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। হেগে অবস্থিত আন্তর্জাতিক আদালত সে বিষয়ে অবগত ছিলেন। তাই তাঁরা এমন কথাও বলেছিলেন যে গাদ্দাফি আত্মসমর্পণ করলে তাঁর বিচার হবে এ যুগের একটি সর্বশ্রেষ্ঠ ঘটনা। তা ছাড়া ন্যাটো কর্তৃপক্ষ সব কিছু নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকলেও তারা সে ব্যাপারে খুব উৎসাহী ছিল বলে মনে হয় না। সে কারণেই ইরান সরকার তার প্রতিক্রিয়ায় বলেছিল, গাদ্দাফিকে জীবিত রাখা হলে পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে তাঁর কী কী গোপন চুক্তি ছিল এবং সেগুলো কেন ব্যর্থ হলো; জবানবন্দিতে তার সব কিছুই পরিষ্কারভাবে বেরিয়ে আসত। তা ছাড়া গাদ্দাফি তাঁর দেশের অর্থ দিয়ে ৭০ বিলিয়ন ডলারের একটি 'সর্ভেইন অয়েল ফান্ড' গঠন করেছিলেন বিভিন্ন পশ্চিমা কম্পানি ও অর্থ লগি্নকারী প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করার জন্য। প্রতিবছর এক মিলিয়ন পাউন্ড স্টার্লিং ফির বিনিময়ে সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারকে নিয়োগ করা হয়েছিল তার ব্যবস্থাপনা করার জন্য। তা ছাড়া ছেলে সাইফ আল ইসলামের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফরাসি সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গেও গাদ্দাফি বিভিন্ন ব্যাপারে কথা বলছিলেন বছর দুয়েক যাবৎ। কিন্তু ফেব্রুয়ারি মাস থেকে লিবিয়ায় সব কিছু উল্টে যায় এক অদৃশ্য হাতের ছোঁয়ায়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ওবামার সিদ্ধান্তে লিবিয়ায় গণবিরোধী সরকারের ওপর আক্রমণ চালানোর কর্তৃত্ব প্রথমে দেওয়া হয় ফ্রান্স ও ব্রিটেনের ওপর এবং পরে তা চূড়ান্তভাবে দেওয়া হয় ন্যাটোর ওপর। ২১ অক্টোবর অর্থাৎ গাদ্দাফি হত্যার পরদিন ন্যাটো তার আট মাসের মিশনের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা করে।
পশ্চিমা শক্তির সঙ্গে গাদ্দাফির দরকষাকষি নিয়ে যথেষ্ট বিভ্রান্তির অবকাশ রয়েছে। সে জন্য অনেকেই তাঁর ক্ষমতার উত্তরসূরি ছেলে সাইফ আল ইসলামকে দায়ী করেন। সাইফ আল ইসলাম মনে করেছিলেন, লিবিয়ার 'ফায়ার-পাওয়ারহীন' পূর্বাঞ্চলের অর্থাৎ বেনগাজিভিত্তিক বিদ্রোহীদের বেশিদিন সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা নেই। তারা পশ্চিমাঞ্চলে অর্থাৎ মিসরাতা, বনিওয়ালিদ ও রাজধানী ত্রিপোলিসহ সুরক্ষিত এলাকায় ঢুকতে পারবে না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেখা গেছে, শক্তিশালী যুদ্ধবিমান থেকে ন্যাটোর সীমাহীন গোলাবর্ষণের কারণে বিদ্রোহীরা প্রথমে খুব অসংগঠিত হলেও ক্রমশ একে একে দখল করে নেয় পুরো পশ্চিমাঞ্চল এবং শেষ পর্যন্ত রাজধানী ত্রিপোলি। মোট আট মাসের মধ্যে প্রথম ছয় মাসে ক্রমশ পুরো রাজ্য হারিয়ে শেষ পর্যন্ত রাজধানী ত্রিপোলি রক্ষা করতে গিয়ে মুয়াম্মার গাদ্দাফি ও তাঁর ছেলেরা লিবিয়ায় স্বেচ্ছাচারী শাসন ও হঠকারিতার যে পরকাষ্ঠা দেখিয়েছেন, তাতে বিশ্বব্যাপী বিদ্রোহীরা তাদের পক্ষে সহজেই জনমত গঠন ও সমর্থন জোগাতে সক্ষম হয়েছিল। ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র এবং সর্বোপরি ন্যাটোর বিরুদ্ধে গাদ্দাফির কোনো অভিযোগই তাঁর ৪২ বছরের শাসনের ধারাবাহিকতার পক্ষে তেমন কোনো সাড়া জাগাতে পারেনি। তাই দরকষাকষিতে ব্যর্থ হয়ে শেষ পর্যন্ত ত্রিপোলি ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন তাঁর জন্মস্থান মরুশহর সার্তে এবং শেষ পর্যন্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন সার্ত ও বনিওয়ালিদ থেকে। শেষ দুই মাসে একটি রাজনৈতিক মীমাংসার লক্ষ্যেও তিনি আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছিলেন পশ্চিমা শক্তির সঙ্গে। কিন্তু তাতে শেষরক্ষা হয়নি গাদ্দাফির। পশ্চিমা গণমাধ্যমের ভাষায় 'আরব বসন্তে' ঝরে পড়েছে গাদ্দাফির স্বৈরশাসনের দুর্গ। লিবিয়ার মরুতেও ঘটেছে এক মুক্তি লাল সূর্যোদয়। তিউনিসিয়া ও মিসরের পর পতন ঘটেছে লিবিয়ার স্বৈরশাসকের। সেখানে অবসান ঘটেছে সামরিক ও বেসামরিক কায়েমি স্বার্থ এবং পরিবারতন্ত্রের মাধ্যমে সাদ্দামের মতো রাজনৈতিক ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করে রাখার অগণতান্ত্রিক প্রয়াস। গত ১৫ সেপ্টেম্বর লিবিয়া সফরে গিয়েছিলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সারকোজি এবং ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। তাঁরা মোস্তফা আবদুল জলিলের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বৈধতা নিশ্চিত করে গিয়েছিলেন। তা ছাড়া এর পরদিন লিবিয়া সফরে গিয়েছিলেন তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী তাইয়িপ এরদোগান। তিনি বর্তমান লিবিয়ার পুনর্গঠনে যাবতীয় সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ শুরু করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। শুধু তা-ই নয়, এরদোগানের বক্তব্যের জবাবে এনটিসি-প্রধান জলিল বলেছেন, তিনি ভবিষ্যৎ লিবিয়াকে তুরস্কের মতো গণতান্ত্রিক অথচ একটি ইসলামী রাষ্ট্র হিসেবে গঠন করতে চান। তা ছাড়া জনগণের ব্যাপক বেকারত্বের অবসান ঘটিয়ে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, সামাজিক নিরাপত্তাসহ লিবিয়াবাসীর জীবনের মান উন্নত করতে তিনি বদ্ধপরিকর। জনগণের ব্যাপক তেল, গ্যাস ও প্রাকৃতিক সম্পদ তাদের স্বার্থেই ব্যয় করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছিলেন। সর্বোপরি তিনি তাদের হাতে গণতান্ত্রিক অধিকার তুলে দেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছিলেন। এই একটি জায়গায়ই বিশেষভাবে ব্যর্থ হয়েছিলেন ইরাকের সাদ্দাম হোসেন, মিসরের হোসনি মুবারক, তিউনিসিয়ার জাইন এল আবিদিন বেন আলী, ইয়েমেনের আলী আবদুল্লাহ সালেহ এবং লিবিয়ার মুয়াম্মার গাদ্দাফি। তাই জনস্রোতের প্রবল জোয়ারে ভেসে গেছেন তাঁরা। সেটা থেকে সিরিয়ার বাশার আল আসাদ এবং ইয়েমেনের আলী আবদুল্লাহ সালেহসহ মধ্যপ্রাচ্যের অন্য স্বৈরশাসকদের যদি শিক্ষা না হয়, তাহলে বলতে হবে, তাঁরা প্রকৃত অর্থেই অন্ধ। তাঁদের পতন অবশ্যম্ভাবী এবং তা খুবই কাছে।
এখন গাদ্দাফি-পরবর্তী লিবিয়ার সংস্কার ও পরিবর্তন জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে তাল মিলিয়ে করতে ব্যর্থ হলে সমূহ বিপদ আবার চারদিক থেকেই ঘনিয়ে আসবে। লিবিয়ার প্রচুর অর্থ-সম্পদ রয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্র থেকে তা অবমুক্ত করে পরিকল্পিতভাবে দেশের উন্নয়ন সাধন করতে হবে, যার প্রথমেই রয়েছে কর্মসংস্থান। তা ছাড়া বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রথম কাজ হচ্ছে দেশের সর্বত্র আইনশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করা। বিশৃঙ্খল বিদ্রোহীদের হাত থেকে অবিলম্বে সব অস্ত্র উদ্ধার করা এবং তাদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে পুনর্বাসিত করা। এর পাশাপাশি শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, পরিকল্পিতভাবে বিনিয়োগ, উৎপাদন ও উন্নয়নের ধারাকে সব ধরনের দুর্নীতির ঊধর্ে্ব রেখে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। পাশাপাশি বিদেশি শক্তিকে যথাযথভাবে করতে হবে নিয়ন্ত্রণ। লিবিয়ার সরকার যাতে বিদেশিদের নির্দেশে না চলে এবং তাদের স্বার্থের কাছে জিম্মি হয়ে না পড়ে, লিবিয়ার সরকার থেকে প্রশাসন এবং উৎপাদন থেকে উন্নয়ন সব কিছুই চলতে হবে জনগণের ইচ্ছা-অনিচ্ছা অনুযায়ী, গণতান্ত্রিকভাবে। ইতিমধ্যে লিবিয়ায় এসে গেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন। পশ্চিমা জগতের মন্দাক্রান্ত যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের দৃষ্টি এখন লিবিয়া, মিসর, তিউনিসিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্যের দিকে। পশ্চিমা ব্যবসায়ীরা ইতিমধ্যে ভিড় জমাতে শুরু করেছেন লিবিয়ায়। সেদিক থেকে তেল, গ্যাস ও অন্যান্য প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ লিবিয়ার জনগণ ও সরকারকে হুঁশিয়ার থাকতে হবে। তা না হলে আরেক বিদ্রোহের সূত্রপাত হতে মোটেও সময় লাগবে না।
(লন্ডন থেকে প্রেরিত)
লেখক : বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) সাবেক প্রধান সম্পাদক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক
গাদ্দাফি কি ঘটনাস্থলেই মারা যান, নাকি মিসরাতায় নেওয়ার পথে প্রাণত্যাগ করেছিলেন, সে সম্পর্কেও তেমন কিছু জানা যাচ্ছে না। তবে এতটুকু বলা হয়েছে যে গাদ্দাফির আগেই তাঁর ছেলে মোতাসসিম, যিনি সার্তের প্রতিরক্ষার দায়িত্বে ছিলেন, তিনি ধরা পড়েছিলেন। তবে তাঁকেই বা কারা হত্যা করেছে, সে সম্পর্কেও কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। এসব ব্যাপারে কোথাও কোনো চেইন অব কমান্ড ছিল বলে মনে হচ্ছে না। একই ঘটনা ঘটেছে গাদ্দাফির দাফনের ব্যাপারেও। যদিও প্রথমে তাঁকে ইসলামী মতে যথাশীঘ্র দাফন করার কথা বলা হয়েছিল, কিন্তু পরে দেখা গেল সে ব্যাপারেও বিভিন্ন মহল থেকে বিভিন্ন বিতর্কিত প্রশ্ন ওঠার ফলে তাঁর মরদেহ মিসরাতার একটি মসজিদে ফেলে রাখা হয়েছিল অনির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত। অন্যদিকে গাদ্দাফির দ্বিতীয় ছেলে সাইফ আল ইসলাম বনিওয়াশিদের কাছে আহত অবস্থায় ধরা পড়েছেন এবং জিলটানের একটি হাসপাতালে তাঁকে রাখা হয়েছিল বলে শোনা গেলেও তাঁর সম্পর্কে নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যাচ্ছিল না।
আলজেরিয়ায় অবস্থানরত গাদ্দাফির স্ত্রী তাঁর স্বামী ও ছেলের হত্যার ব্যাপারে অবিলম্বে তদন্ত করার জন্য জাতিসংঘের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। মেয়ে আয়েশা গাদ্দাফি পিতার মরদেহ ফেরত চেয়েছেন। জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের কমিশনার নবি পিল্লাইও গাদ্দাফি হত্যার একটি পূর্ণ তদন্ত দাবি করেছেন। ২১ অক্টোবর অর্থাৎ গাদ্দাফি হত্যার পরই তিনি এ দাবি জানিয়ে বলেছেন, এ কথা ঠিক যে কোনো বিদ্রোহ, গৃহযুদ্ধ কিংবা সশস্ত্র সংগ্রামের সময় বহুভাবেই অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু ঘটে থাকে, তবে ধরা পড়া কিংবা আত্মসমর্পণের পরও কাউকে বিচারবহির্ভূত এবং অমানবিকভাবে হত্যা করা আন্তর্জাতিক আইনে একটি অবৈধ ব্যাপার এবং জঘন্য অপরাধ। জানা গেছে, গাদ্দাফির মৃতদেহ প্রথমে সার্ত ও পরে মিসরাতার রাস্তায় টানাহেঁচড়া করা হয়েছে এবং বিদ্রোহীরা তাঁর ক্ষতবিক্ষত ও রক্তাক্ত দেহ নিয়ে মিছিল করেছে। সে কারণেই এনটিসি সরকার বা কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে এখন বিভিন্ন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, গাদ্দাফি ধরা পড়ার পর কোথায় ছিলেন প্রধানমন্ত্রী মাহমুদ জিবরিল ও বিদ্রোহী বাহিনীর প্রধান আবদুল হাকিম বেলহাজ? ২০ অক্টোবর বিদ্রোহীদের হাতে নিহত হওয়ার ১০ দিন আগেও তাঁর ছেলে গাদ্দাফির আত্মসমর্পণের ব্যাপারে এনটিসির সঙ্গে দরকষাকষি বা আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। হেগে অবস্থিত আন্তর্জাতিক আদালত সে বিষয়ে অবগত ছিলেন। তাই তাঁরা এমন কথাও বলেছিলেন যে গাদ্দাফি আত্মসমর্পণ করলে তাঁর বিচার হবে এ যুগের একটি সর্বশ্রেষ্ঠ ঘটনা। তা ছাড়া ন্যাটো কর্তৃপক্ষ সব কিছু নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকলেও তারা সে ব্যাপারে খুব উৎসাহী ছিল বলে মনে হয় না। সে কারণেই ইরান সরকার তার প্রতিক্রিয়ায় বলেছিল, গাদ্দাফিকে জীবিত রাখা হলে পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে তাঁর কী কী গোপন চুক্তি ছিল এবং সেগুলো কেন ব্যর্থ হলো; জবানবন্দিতে তার সব কিছুই পরিষ্কারভাবে বেরিয়ে আসত। তা ছাড়া গাদ্দাফি তাঁর দেশের অর্থ দিয়ে ৭০ বিলিয়ন ডলারের একটি 'সর্ভেইন অয়েল ফান্ড' গঠন করেছিলেন বিভিন্ন পশ্চিমা কম্পানি ও অর্থ লগি্নকারী প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করার জন্য। প্রতিবছর এক মিলিয়ন পাউন্ড স্টার্লিং ফির বিনিময়ে সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারকে নিয়োগ করা হয়েছিল তার ব্যবস্থাপনা করার জন্য। তা ছাড়া ছেলে সাইফ আল ইসলামের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফরাসি সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গেও গাদ্দাফি বিভিন্ন ব্যাপারে কথা বলছিলেন বছর দুয়েক যাবৎ। কিন্তু ফেব্রুয়ারি মাস থেকে লিবিয়ায় সব কিছু উল্টে যায় এক অদৃশ্য হাতের ছোঁয়ায়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ওবামার সিদ্ধান্তে লিবিয়ায় গণবিরোধী সরকারের ওপর আক্রমণ চালানোর কর্তৃত্ব প্রথমে দেওয়া হয় ফ্রান্স ও ব্রিটেনের ওপর এবং পরে তা চূড়ান্তভাবে দেওয়া হয় ন্যাটোর ওপর। ২১ অক্টোবর অর্থাৎ গাদ্দাফি হত্যার পরদিন ন্যাটো তার আট মাসের মিশনের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা করে।
পশ্চিমা শক্তির সঙ্গে গাদ্দাফির দরকষাকষি নিয়ে যথেষ্ট বিভ্রান্তির অবকাশ রয়েছে। সে জন্য অনেকেই তাঁর ক্ষমতার উত্তরসূরি ছেলে সাইফ আল ইসলামকে দায়ী করেন। সাইফ আল ইসলাম মনে করেছিলেন, লিবিয়ার 'ফায়ার-পাওয়ারহীন' পূর্বাঞ্চলের অর্থাৎ বেনগাজিভিত্তিক বিদ্রোহীদের বেশিদিন সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা নেই। তারা পশ্চিমাঞ্চলে অর্থাৎ মিসরাতা, বনিওয়ালিদ ও রাজধানী ত্রিপোলিসহ সুরক্ষিত এলাকায় ঢুকতে পারবে না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেখা গেছে, শক্তিশালী যুদ্ধবিমান থেকে ন্যাটোর সীমাহীন গোলাবর্ষণের কারণে বিদ্রোহীরা প্রথমে খুব অসংগঠিত হলেও ক্রমশ একে একে দখল করে নেয় পুরো পশ্চিমাঞ্চল এবং শেষ পর্যন্ত রাজধানী ত্রিপোলি। মোট আট মাসের মধ্যে প্রথম ছয় মাসে ক্রমশ পুরো রাজ্য হারিয়ে শেষ পর্যন্ত রাজধানী ত্রিপোলি রক্ষা করতে গিয়ে মুয়াম্মার গাদ্দাফি ও তাঁর ছেলেরা লিবিয়ায় স্বেচ্ছাচারী শাসন ও হঠকারিতার যে পরকাষ্ঠা দেখিয়েছেন, তাতে বিশ্বব্যাপী বিদ্রোহীরা তাদের পক্ষে সহজেই জনমত গঠন ও সমর্থন জোগাতে সক্ষম হয়েছিল। ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র এবং সর্বোপরি ন্যাটোর বিরুদ্ধে গাদ্দাফির কোনো অভিযোগই তাঁর ৪২ বছরের শাসনের ধারাবাহিকতার পক্ষে তেমন কোনো সাড়া জাগাতে পারেনি। তাই দরকষাকষিতে ব্যর্থ হয়ে শেষ পর্যন্ত ত্রিপোলি ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন তাঁর জন্মস্থান মরুশহর সার্তে এবং শেষ পর্যন্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন সার্ত ও বনিওয়ালিদ থেকে। শেষ দুই মাসে একটি রাজনৈতিক মীমাংসার লক্ষ্যেও তিনি আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছিলেন পশ্চিমা শক্তির সঙ্গে। কিন্তু তাতে শেষরক্ষা হয়নি গাদ্দাফির। পশ্চিমা গণমাধ্যমের ভাষায় 'আরব বসন্তে' ঝরে পড়েছে গাদ্দাফির স্বৈরশাসনের দুর্গ। লিবিয়ার মরুতেও ঘটেছে এক মুক্তি লাল সূর্যোদয়। তিউনিসিয়া ও মিসরের পর পতন ঘটেছে লিবিয়ার স্বৈরশাসকের। সেখানে অবসান ঘটেছে সামরিক ও বেসামরিক কায়েমি স্বার্থ এবং পরিবারতন্ত্রের মাধ্যমে সাদ্দামের মতো রাজনৈতিক ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করে রাখার অগণতান্ত্রিক প্রয়াস। গত ১৫ সেপ্টেম্বর লিবিয়া সফরে গিয়েছিলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সারকোজি এবং ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। তাঁরা মোস্তফা আবদুল জলিলের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বৈধতা নিশ্চিত করে গিয়েছিলেন। তা ছাড়া এর পরদিন লিবিয়া সফরে গিয়েছিলেন তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী তাইয়িপ এরদোগান। তিনি বর্তমান লিবিয়ার পুনর্গঠনে যাবতীয় সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ শুরু করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। শুধু তা-ই নয়, এরদোগানের বক্তব্যের জবাবে এনটিসি-প্রধান জলিল বলেছেন, তিনি ভবিষ্যৎ লিবিয়াকে তুরস্কের মতো গণতান্ত্রিক অথচ একটি ইসলামী রাষ্ট্র হিসেবে গঠন করতে চান। তা ছাড়া জনগণের ব্যাপক বেকারত্বের অবসান ঘটিয়ে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, সামাজিক নিরাপত্তাসহ লিবিয়াবাসীর জীবনের মান উন্নত করতে তিনি বদ্ধপরিকর। জনগণের ব্যাপক তেল, গ্যাস ও প্রাকৃতিক সম্পদ তাদের স্বার্থেই ব্যয় করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছিলেন। সর্বোপরি তিনি তাদের হাতে গণতান্ত্রিক অধিকার তুলে দেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছিলেন। এই একটি জায়গায়ই বিশেষভাবে ব্যর্থ হয়েছিলেন ইরাকের সাদ্দাম হোসেন, মিসরের হোসনি মুবারক, তিউনিসিয়ার জাইন এল আবিদিন বেন আলী, ইয়েমেনের আলী আবদুল্লাহ সালেহ এবং লিবিয়ার মুয়াম্মার গাদ্দাফি। তাই জনস্রোতের প্রবল জোয়ারে ভেসে গেছেন তাঁরা। সেটা থেকে সিরিয়ার বাশার আল আসাদ এবং ইয়েমেনের আলী আবদুল্লাহ সালেহসহ মধ্যপ্রাচ্যের অন্য স্বৈরশাসকদের যদি শিক্ষা না হয়, তাহলে বলতে হবে, তাঁরা প্রকৃত অর্থেই অন্ধ। তাঁদের পতন অবশ্যম্ভাবী এবং তা খুবই কাছে।
এখন গাদ্দাফি-পরবর্তী লিবিয়ার সংস্কার ও পরিবর্তন জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে তাল মিলিয়ে করতে ব্যর্থ হলে সমূহ বিপদ আবার চারদিক থেকেই ঘনিয়ে আসবে। লিবিয়ার প্রচুর অর্থ-সম্পদ রয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্র থেকে তা অবমুক্ত করে পরিকল্পিতভাবে দেশের উন্নয়ন সাধন করতে হবে, যার প্রথমেই রয়েছে কর্মসংস্থান। তা ছাড়া বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রথম কাজ হচ্ছে দেশের সর্বত্র আইনশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করা। বিশৃঙ্খল বিদ্রোহীদের হাত থেকে অবিলম্বে সব অস্ত্র উদ্ধার করা এবং তাদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে পুনর্বাসিত করা। এর পাশাপাশি শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, পরিকল্পিতভাবে বিনিয়োগ, উৎপাদন ও উন্নয়নের ধারাকে সব ধরনের দুর্নীতির ঊধর্ে্ব রেখে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। পাশাপাশি বিদেশি শক্তিকে যথাযথভাবে করতে হবে নিয়ন্ত্রণ। লিবিয়ার সরকার যাতে বিদেশিদের নির্দেশে না চলে এবং তাদের স্বার্থের কাছে জিম্মি হয়ে না পড়ে, লিবিয়ার সরকার থেকে প্রশাসন এবং উৎপাদন থেকে উন্নয়ন সব কিছুই চলতে হবে জনগণের ইচ্ছা-অনিচ্ছা অনুযায়ী, গণতান্ত্রিকভাবে। ইতিমধ্যে লিবিয়ায় এসে গেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন। পশ্চিমা জগতের মন্দাক্রান্ত যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের দৃষ্টি এখন লিবিয়া, মিসর, তিউনিসিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্যের দিকে। পশ্চিমা ব্যবসায়ীরা ইতিমধ্যে ভিড় জমাতে শুরু করেছেন লিবিয়ায়। সেদিক থেকে তেল, গ্যাস ও অন্যান্য প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ লিবিয়ার জনগণ ও সরকারকে হুঁশিয়ার থাকতে হবে। তা না হলে আরেক বিদ্রোহের সূত্রপাত হতে মোটেও সময় লাগবে না।
(লন্ডন থেকে প্রেরিত)
লেখক : বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) সাবেক প্রধান সম্পাদক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক
No comments