উপকূলীয় কৃষি : জলবায়ু পরিবর্তনে অভিযোজনকৌশল by ড. আবদুল হামিদ
নদীবিধৌত পললভূমি গঠিত বৃহত্তর বরিশাল-পটুয়াখালী একসময় ধান উৎপাদনের জন্য প্রসিদ্ধ ছিল। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়েও উদ্বৃত্ত শস্য দেশের অন্যান্য অঞ্চলের চাহিদা মেটাত। এ জন্য বরিশাল অঞ্চলকে একসময় বাংলার শস্যভাণ্ডার বলা হতো। কিন্তু সেই গৌরব এখন কেবলই স্মৃতি।
ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা, উপর্যুপরি বন্যা আর জলোচ্ছ্বাস, ক্রমাগত চাষাবাদের ফলে জমির উর্বরতা হ্রাস ইত্যাদি কারণে গত ৫০ বছরে এ অঞ্চলের কৃষিজ উৎপাদনে তেমন উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। বরং একসময়ের উদ্বৃত্ত উৎপাদনের বরিশাল অঞ্চলে এখন সাংবৎসরিক খাদ্যঘাটতি। প্রয়োজনীয় খাদ্যচাহিদা মেটানোর জন্য প্রায় স্থায়ীভাবে অন্য জেলার ওপর নির্ভরশীল। সত্তরের দশকের পর থেকে দেশের অন্যান্য জেলার কৃষকরা উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান ও গমের চাষ করে উৎপাদন ও আয় বৃদ্ধি করেছে কয়েক গুণ। উত্তরবঙ্গের জেলাগুলোয় এবং বৃহত্তর যশোর-কুষ্টিয়া অঞ্চলে ধান, গম ছাড়াও নতুন ফসল হিসেবে ভুট্টার চাষ কৃষকের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে যথেষ্ট সহায়ক ভূমিকা রেখেছে। এসব অঞ্চলের বন্যামুক্ত মাঝারি উঁচু ও উঁচু জমিতে শাকসবজির চাষ করেও কৃষকরা তাদের আর্থিক উন্নতি ঘটিয়েছে। কিন্তু বৈরী পরিবেশের কারণে কৃষিবিজ্ঞানের নতুন নতুন উদ্ভাবন দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলবর্তী জেলাগুলোয়, বিশেষ করে জোয়ার-ভাটা অঞ্চলের কৃষির উন্নয়নে কাজে লাগানো যায়নি।
উপকূলীয় অঞ্চলের কৃষিজমি বছরের বেশির ভাগ সময়, বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে জোয়ারের প্রভাবে জলমগ্ন হয়ে থাকে। আষাঢ় থেকে আশ্বিন মাস পর্যন্ত জমিতে ৫০ সেন্টিমিটারের বেশি পানি থাকে। ভাটার সময় কখনো কখনো জমিতে পানি না থাকলেও জোয়ারের সময় প্লাবিত হয়। অমাবস্যা-পূর্ণিমার সময় জোয়ারের উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় জলমগ্নতার মাত্রাও বৃদ্ধি পায়। সাধারণত জ্যৈষ্ঠ থেকে কার্তিক মাস পর্যন্ত সময়ে নদী-খালে প্রবাহিত জোয়ারের ফলে তীরবর্তী জমি প্লাবিত হয়ে থাকে। জোয়ার-প্লাবিত অঞ্চলের বেশির ভাগ জমিই একফসলি। বর্ষাকালে আমন ধানের চাষ হয়ে থাকে। জোয়ার-প্লাবিত জলমগ্ন এলাকার জন্য উপযুক্ত উচ্চ ফলনশীল আমন ধানের জাত উদ্ভাবিত না হওয়ায় কৃষকরা স্থানীয় জাতের ধানের চাষ করে থাকে। আমন মৌসুমে লাল মোটা, সাদা মোটা, মৌলতা দুধকলম জাতের ধানের দক্ষিণাঞ্চলে ব্যাপকভাবে চাষ হচ্ছে। স্থানীয় জাতের চারা দ্রুত বর্ধনশীল। ৩০-৪০ দিন বয়সের চারা সাধারণত ৫০ থেকে ৭০ সেন্টিমিটার লম্বা হয়। ফলে প্লাবনভূমিতে রোপণ করলে জোয়ারের পানিতে ডুবে যায় না বিধায় সহজেই টিকে যায়।
অগ্রহায়ণ-পৌষ মাসে আমন ধান কাটা হয়। আমন ধান কাটার পরও বেশির ভাগ জমি ভেজা থাকে। এই অঞ্চলে তাই রবি মৌসুমে ফসলের নিবিড়তা কম। খরিপ-১ মৌসুমে অনাবাদি পড়ে থাকা জমির পরিমাণ বছরের অন্য সময়ের তুলনায় আরো বেশি। জমির প্রকৃতি এবং জোয়ার-ভাটার প্রভাবের কারণে উপকূলীয় অঞ্চলে কৃষিজমির ব্যবহার অপেক্ষাকৃত কম। বিএআরসির এক সমীক্ষায় দেখানো হয়েছে, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা ও পটুয়াখালী জেলায় কৃষিজমিতে ফসলের নিবিড়তা দেশের অন্য জেলার তুলনায় অনেক কম। জলবায়ু পরিবর্তন তথা বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে ভবিষ্যতে জোয়ারের প্রভাব বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ইতিমধ্যেই দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোর কৃষির ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। গত কয়েক বছরে এপ্রিল মাসে জোয়ারের মাত্রা লক্ষণীয়ভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় ঝালকাঠি, পিরোজপুর ও পটুয়াখালী অঞ্চলে রবি ফসলের ক্ষয়ক্ষতি বৃদ্ধি পেয়েছে। বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধিই এ অঞ্চলের অকালপ্লাবনের কারণ।
ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক তাপমাত্রা তথা সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা কমানো সম্ভব নয়। জলমগ্নতা সহিষ্ণু ফসলের জাত উদ্ভাবিত না হওয়া পর্যন্ত জোয়ার-প্লাবনজনিত শস্যহানির সমস্যাও সমাধান করা যাবে না। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ক্রমশ বৃদ্ধি পাওয়ায় একসময় উপকূলের অভ্যন্তরের কৃষিজমিতে নোনা পানি প্রবেশ করে ফসলের চাষ অধিকতর ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এ রকম অবস্থায় দক্ষিণাঞ্চলে কৃষকের আয় বৃদ্ধি ও জীবনমান উন্নয়নের বিকল্প পথের সন্ধান করা অপরিহার্য। বংশপরম্পরায় কৃষিকাজের সঙ্গে জড়িত এমন লাখ লাখ কৃষককে বিকল্প আয়ের পথে নিয়োজিত করা অদূর-ভবিষ্যতে সম্ভব নাও হতে পারে। তাই বাস্তবতার নিরিখে কৃষি উৎপাদন কর্মকাণ্ডের পরিবর্তন ঘটিয়ে সামগ্রিক কৃষিব্যবস্থাকে পরিবর্তিত জলবায়ুর সঙ্গে অভিযোজন ঘটাতে হবে। কেবল ফলন বৃদ্ধি নয়, কৃষিজ উৎপাদনের মূল লক্ষ্য হতে হবে কৃষকের আয় বৃদ্ধি এবং জীবনমান উন্নয়ন।
ঝালকাঠি, নলছিটি ও ভাণ্ডারিয়া উপজেলার কোনো কোনো এলাকার জমি অধিকতর নিচু, যেখানে বর্ষাকালে মঠে এক মিটার বা তার বেশি পানি দীর্ঘ সময় ধরে আটকে থাকে। এসব জমিতে চাষাবাদ হয় না। শাকসবজি চাষাবাদের জন্য এমন জমি রূপান্তর করা অত্যধিক ব্যয়সাধ্য হবে। তবে ৫০ থেকে ৬০ সেন্টিমিটার উঁচু করা হলে সেখানে সহজেই লাভজনকভাবে উচ্চফলনশীল জাতের ধানের চাষ করা যাবে। ঝালকাঠি জেলার জলাভূমির মানুষ বহু যুগ থেকে নিচু জমিতে ট্রেঞ্চ বা খন্দ কেটে আহৃত মাটি দিয়ে জমির একাংশ উঁচু করে উঁচু ভূমিতে বাড়িঘর কিংবা গাছপালা লাগিয়ে বন সৃজন করে আসছে। নিচু সমভূমিকে উঁচু করার এই প্রথাই স্থানীয়ভাবে পাইকা পদ্ধতি নামে পরিচিত। জমির একাংশ উঁচু করার জন্য যে অংশে পাইকা বা খন্দ করা হয়, সেখানে বছরের বেশির ভাগ সময় পানি ধরে রেখে মাছের চাষ করা যায়। দলবদ্ধভাবে কিংবা সামাজিকভাবে অনেকে একত্রে এ রকম চাষে জড়িত হলে উৎপাদিত সবজি, ফলমূল কিংবা মাছের বাজার সৃষ্টি সহজতর হবে। এমন ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক পরিষেবা, যেমন_ব্যাংকঋণ, পরিবহনব্যবস্থা ইত্যাদি গড়ে উঠবে।
ক্রমাগত প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে এ অঞ্চলের কৃষকরা ক্রমশ নিঃস্ব হয়েছে। দুর্যোগ মোকাবিলা কিংবা বৈরী প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কৃষি উন্নয়নের কোনো প্রকল্প বা কর্মসূচি এ অঞ্চলে গ্রহণ করা হয়নি। জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা হিসেবে এলাকার লাখ লাখ কৃষকের আর্থিক উন্নয়নে সরকারিভাবে প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান প্রয়োজন হবে। সরকারের জলবায়ু পরিবর্তন ফান্ড থেকেও এ-জাতীয় কর্মসূচি গ্রহণ করা যেতে পারে।
লেখক : অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান
কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুর
উপকূলীয় অঞ্চলের কৃষিজমি বছরের বেশির ভাগ সময়, বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে জোয়ারের প্রভাবে জলমগ্ন হয়ে থাকে। আষাঢ় থেকে আশ্বিন মাস পর্যন্ত জমিতে ৫০ সেন্টিমিটারের বেশি পানি থাকে। ভাটার সময় কখনো কখনো জমিতে পানি না থাকলেও জোয়ারের সময় প্লাবিত হয়। অমাবস্যা-পূর্ণিমার সময় জোয়ারের উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় জলমগ্নতার মাত্রাও বৃদ্ধি পায়। সাধারণত জ্যৈষ্ঠ থেকে কার্তিক মাস পর্যন্ত সময়ে নদী-খালে প্রবাহিত জোয়ারের ফলে তীরবর্তী জমি প্লাবিত হয়ে থাকে। জোয়ার-প্লাবিত অঞ্চলের বেশির ভাগ জমিই একফসলি। বর্ষাকালে আমন ধানের চাষ হয়ে থাকে। জোয়ার-প্লাবিত জলমগ্ন এলাকার জন্য উপযুক্ত উচ্চ ফলনশীল আমন ধানের জাত উদ্ভাবিত না হওয়ায় কৃষকরা স্থানীয় জাতের ধানের চাষ করে থাকে। আমন মৌসুমে লাল মোটা, সাদা মোটা, মৌলতা দুধকলম জাতের ধানের দক্ষিণাঞ্চলে ব্যাপকভাবে চাষ হচ্ছে। স্থানীয় জাতের চারা দ্রুত বর্ধনশীল। ৩০-৪০ দিন বয়সের চারা সাধারণত ৫০ থেকে ৭০ সেন্টিমিটার লম্বা হয়। ফলে প্লাবনভূমিতে রোপণ করলে জোয়ারের পানিতে ডুবে যায় না বিধায় সহজেই টিকে যায়।
অগ্রহায়ণ-পৌষ মাসে আমন ধান কাটা হয়। আমন ধান কাটার পরও বেশির ভাগ জমি ভেজা থাকে। এই অঞ্চলে তাই রবি মৌসুমে ফসলের নিবিড়তা কম। খরিপ-১ মৌসুমে অনাবাদি পড়ে থাকা জমির পরিমাণ বছরের অন্য সময়ের তুলনায় আরো বেশি। জমির প্রকৃতি এবং জোয়ার-ভাটার প্রভাবের কারণে উপকূলীয় অঞ্চলে কৃষিজমির ব্যবহার অপেক্ষাকৃত কম। বিএআরসির এক সমীক্ষায় দেখানো হয়েছে, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা ও পটুয়াখালী জেলায় কৃষিজমিতে ফসলের নিবিড়তা দেশের অন্য জেলার তুলনায় অনেক কম। জলবায়ু পরিবর্তন তথা বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে ভবিষ্যতে জোয়ারের প্রভাব বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ইতিমধ্যেই দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোর কৃষির ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। গত কয়েক বছরে এপ্রিল মাসে জোয়ারের মাত্রা লক্ষণীয়ভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় ঝালকাঠি, পিরোজপুর ও পটুয়াখালী অঞ্চলে রবি ফসলের ক্ষয়ক্ষতি বৃদ্ধি পেয়েছে। বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধিই এ অঞ্চলের অকালপ্লাবনের কারণ।
ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক তাপমাত্রা তথা সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা কমানো সম্ভব নয়। জলমগ্নতা সহিষ্ণু ফসলের জাত উদ্ভাবিত না হওয়া পর্যন্ত জোয়ার-প্লাবনজনিত শস্যহানির সমস্যাও সমাধান করা যাবে না। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ক্রমশ বৃদ্ধি পাওয়ায় একসময় উপকূলের অভ্যন্তরের কৃষিজমিতে নোনা পানি প্রবেশ করে ফসলের চাষ অধিকতর ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এ রকম অবস্থায় দক্ষিণাঞ্চলে কৃষকের আয় বৃদ্ধি ও জীবনমান উন্নয়নের বিকল্প পথের সন্ধান করা অপরিহার্য। বংশপরম্পরায় কৃষিকাজের সঙ্গে জড়িত এমন লাখ লাখ কৃষককে বিকল্প আয়ের পথে নিয়োজিত করা অদূর-ভবিষ্যতে সম্ভব নাও হতে পারে। তাই বাস্তবতার নিরিখে কৃষি উৎপাদন কর্মকাণ্ডের পরিবর্তন ঘটিয়ে সামগ্রিক কৃষিব্যবস্থাকে পরিবর্তিত জলবায়ুর সঙ্গে অভিযোজন ঘটাতে হবে। কেবল ফলন বৃদ্ধি নয়, কৃষিজ উৎপাদনের মূল লক্ষ্য হতে হবে কৃষকের আয় বৃদ্ধি এবং জীবনমান উন্নয়ন।
ঝালকাঠি, নলছিটি ও ভাণ্ডারিয়া উপজেলার কোনো কোনো এলাকার জমি অধিকতর নিচু, যেখানে বর্ষাকালে মঠে এক মিটার বা তার বেশি পানি দীর্ঘ সময় ধরে আটকে থাকে। এসব জমিতে চাষাবাদ হয় না। শাকসবজি চাষাবাদের জন্য এমন জমি রূপান্তর করা অত্যধিক ব্যয়সাধ্য হবে। তবে ৫০ থেকে ৬০ সেন্টিমিটার উঁচু করা হলে সেখানে সহজেই লাভজনকভাবে উচ্চফলনশীল জাতের ধানের চাষ করা যাবে। ঝালকাঠি জেলার জলাভূমির মানুষ বহু যুগ থেকে নিচু জমিতে ট্রেঞ্চ বা খন্দ কেটে আহৃত মাটি দিয়ে জমির একাংশ উঁচু করে উঁচু ভূমিতে বাড়িঘর কিংবা গাছপালা লাগিয়ে বন সৃজন করে আসছে। নিচু সমভূমিকে উঁচু করার এই প্রথাই স্থানীয়ভাবে পাইকা পদ্ধতি নামে পরিচিত। জমির একাংশ উঁচু করার জন্য যে অংশে পাইকা বা খন্দ করা হয়, সেখানে বছরের বেশির ভাগ সময় পানি ধরে রেখে মাছের চাষ করা যায়। দলবদ্ধভাবে কিংবা সামাজিকভাবে অনেকে একত্রে এ রকম চাষে জড়িত হলে উৎপাদিত সবজি, ফলমূল কিংবা মাছের বাজার সৃষ্টি সহজতর হবে। এমন ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক পরিষেবা, যেমন_ব্যাংকঋণ, পরিবহনব্যবস্থা ইত্যাদি গড়ে উঠবে।
ক্রমাগত প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে এ অঞ্চলের কৃষকরা ক্রমশ নিঃস্ব হয়েছে। দুর্যোগ মোকাবিলা কিংবা বৈরী প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কৃষি উন্নয়নের কোনো প্রকল্প বা কর্মসূচি এ অঞ্চলে গ্রহণ করা হয়নি। জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা হিসেবে এলাকার লাখ লাখ কৃষকের আর্থিক উন্নয়নে সরকারিভাবে প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান প্রয়োজন হবে। সরকারের জলবায়ু পরিবর্তন ফান্ড থেকেও এ-জাতীয় কর্মসূচি গ্রহণ করা যেতে পারে।
লেখক : অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান
কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুর
No comments