ইমরুলের সেঞ্চুরিতে সিরিজ জয়

সিরিজ জেতার জন্য শেষ দুই ম্যাচে খুব ভালো খেলার শর্ত দিয়েছিলেন কোচ স্টুয়ার্ট বার্নস। গতকাল সিলেটে চতুর্থ ম্যাচেই সেই শর্ত পূরণ করে এক ম্যাচ বাকি থাকতে ইংল্যান্ড লায়ন্সের বিপক্ষে সিরিজ জিতে গেল বাংলাদেশ ‘এ’ দল। ইংল্যান্ড লায়ন্সকে ২০৮ রানে অলআউট করে দিয়ে অলক কাপালির দল ম্যাচ জিতেছে ৬ উইকেটে।


ইংল্যান্ড লায়ন্সকে ২০৮ রানে শেষ করে দিয়ে জয়ের ভিত্তিটা গড়ে দিয়েছিলেন বোলাররাই। বাকি কাজটা ব্যাটসম্যানরা করেছেন না বলে বলা ভালো, সিংহ ভাগই করেছেন ইমরুল কায়েস। প্রিমিয়ার লিগের শুরুতে রান না পেলেও সূর্যতরুণের বিপক্ষে ৯১ রানের ইনিংসটি খেলার পর থেকেই দারুণ ফর্মে এই বাঁহাতি ওপেনার। এর আগে সিরিজের একটি ম্যাচই খেলেছিলেন। চট্টগ্রামে সিরিজের প্রথম ম্যাচে করেছিলেন ৫৩ রান। মাঝখানে মোহামেডানের হয়ে প্রিমিয়ার লিগে ফিফটি পেয়েছেন ভিক্টোরিয়ার বিপক্ষে। ফর্মের এই ধারাবাহিকতা ধরে রেখে কাল সেঞ্চুরিই করে ফেললেন। ১৩১ বলে ইমরুলের অপরাজিত ১১০ রানের ইনিংসই সহজ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের জয়। ৯টি বাউন্ডারির সঙ্গে ৩টি ছক্কাও এসেছে ইমরুলের ব্যাট থেকে।
নাসিরউদ্দিন ফারুকের (২১) সঙ্গে ৭২ রানের উদ্বোধনী জুটির পর তৃতীয় উইকেটে নাঈম ইসলামের (৪০) সঙ্গে ৬৭ রানের জুটি হয়েছে ইমরুলের। ম্যাচ জেতানো এই ইনিংসটা তাঁর কাছে পরিশ্রমের ফসল, ‘কষ্ট করছিলাম। জানতাম, কষ্ট করলে কখনো না কখনো তার ফল পাবই। খারাপ সময়টা কীভাবে পার করেছি, সেটা মনে রেখেই খেলছি আমি। সে জন্যই হয়তো রানের ক্ষুধা বেশি।’ ৪.৪ ওভার বাকি থাকতে জিতে গেলেও ইমরুল প্রশংসা করেছেন ইংল্যান্ড লায়ন্স বোলারদের, ‘এমন না যে ওরা খুব খারাপ বল করেছে। মিকার তো ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে বল করে। অন্য পেসারদের বল খেলাও কঠিন। তবে সিলেটের উইকেট খুবই ভালো।’
‘এ’ দলের ব্যাটসম্যানদের সমস্যায় ফেলেছেন ইংলিশ পেসাররা। অন্যদিকে ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা বাংলাদেশি পেস-স্পিন দুটির সামনেই দিশেহারা। পেসারদের মধ্যে আল-আমিন তো এক ম্যাচে ম্যান অব দ্য ম্যাচই হলেন। কাল অপরাজিত সেঞ্চুরির সুবাদে ম্যাচ-সেরার পুরস্কারটা ইমরুলের হাতে উঠলেও বল হাতে অতিথিদের যথেষ্ট ভুগিয়েছেন ফরহাদ রেজা। একদিকে পেসাররা উইকেট নিয়েছেন, অন্যদিকে রান আটকে রেখেছেন স্পিনাররা।
২৯ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন ফরহাদ। দলের ২৭ রানের মধ্যে ওপেনার অ্যালেক্স হেলস ও ৩ নম্বর ব্যাটসম্যান অধিনায়ক জেমস টেলরের উইকেট দুটি নিয়ে ইংল্যান্ড লায়ন্সকে প্রথমে চাপে ফেলেন তিনিই। ৬৭ রানে ৩ উইকেট পড়ার পর চতুর্থ উইকেটে জোসেফ রুট-জনাথন বেয়ারস্টোর ৮৪ রানের জুটি ভালো অবস্থায় নিয়ে যাচ্ছিল ইংল্যান্ড লায়ন্সকে। ইমরুল তখন ২৭০-৮০ রানের ভয়ও পাচ্ছিলেন।
বাংলাদেশের দুর্দান্ত বোলিং-ফিল্ডিংয়ে উল্টো ২০৮ রানেই অলআউট হয়ে যায় ইংল্যান্ড লায়ন্স। অফ স্পিনার সোহাগ গাজী বেয়ারস্টোকে ফিরতি ক্যাচ নিয়ে ফিরিয়ে দেওয়ার পর একের পর এক উইকেট পড়তে থাকে। ৫৭ রানে পড়েছে শেষ ৭ উইকেট। এর দুটি আবার রান আউট।
সিরিজের মীমাংসা হয়ে যাওয়ায় সিলেট স্টেডিয়ামে আগামীকালের শেষ ওয়ানডেটি কেবলই আনুষ্ঠানিকতার।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
ইংল্যান্ড লায়ন্স: ৪৯.৪ ওভারে ২০৮ (রুট ৮১, বাটলার ৪১, বেয়ারস্টো ৩৫; ফরহাদ ৭-১-২৯-৩, আল-আমিন ৮.৪-২-৩৭-১, মোশাররফ ৯-০-৩০-১, সোহাগ গাজী ১০-০-৩৪-১, নাজমুল অপু ৫-০-২২-০, নূর হোসেন ৭-০-৩৮-০, অলক ৩-০-১৬-১)।
বাংলাদেশ ‘এ’: ৪৫.২ ওভারে ২১১/৪ (ইমরুল ১১০*, নাসিরউদ্দিন ২১, জহুরুল ১০, নাঈম ৪০, অলক ৮, ফরহাদ ৪*; বাক ২/৩৮, ব্রিগস ১/৩০, মিকার ১/৫২)।
ফল: বাংলাদেশ ‘এ’ ৬ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: ইমরুল কায়েস।

No comments

Powered by Blogger.