কে সেরা?

মুহূর্তে বিশ্বের সেরা স্পিনার কে? র‌্যাঙ্কিং বলবে, গ্রায়েম সোয়ান। টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ে তিন নম্বরে সোয়ান, ওয়ানডেতে চার নম্বরে। সাঈদ আজমল ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বর, কিন্তু টেস্টে পড়ে আছেন ১২ নম্বরে। কিন্তু বিদায়ী বছরের হিসাব যে আবার অন্য রকম। ২০১১ সালে টেস্ট উইকেটের ‘ফিফটি’ করা একমাত্র বোলার আজমল।


পাকিস্তানি স্পিনারের সমান ৮ টেস্ট খেলেও সোয়ান পেয়েছেন মাত্র ২৭ উইকেট। ২০ ওয়ানডেতে ৩৪ উইকেট পেয়েছেন আজমল, এক ম্যাচ বেশি খেলেও সোয়ান পেয়েছেন ৩১টি। তাহলে? সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স না র‌্যাঙ্কিং—বিবেচনায় নেবেন কোনটিকে? বিবেচনায় নেওয়া উচিত তো প্রতিপক্ষ, ভেন্যু, ম্যাচের পরিস্থিতি এসবও। তা ছাড়া স্পিনারদের তুলনায় কার তূণে কত অস্ত্র আছে বিবেচ্য এটিও। কী, গোলমেলে লাগছে তো? সমাধান তো দুই প্রতিদ্বন্দ্ব্বীর একজন চার মাস আগেই দিয়ে রেখেছেন! গত সেপ্টেম্বরেই আজমল বলেছিলেন, ইংল্যান্ড-পাকিস্তান সিরিজটাই নির্ধারণ করবে বিশ্বের সেরা স্পিনার কে।
প্রতি সিরিজের মতো পাকিস্তান-ইংল্যান্ড সিরিজেও লড়াইয়ের মধ্যেও থাকবে অনেক লড়াই। এর মধ্যে সবচেয়ে চিত্তাকর্ষক বোধ হয় ‘আজমল বনাম সোয়ান’-ই। র‌্যাঙ্কিং সোয়ানকে এগিয়ে রাখছে, এটা মেনে নিয়েই চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন আজমল, ‘সোয়ান দুর্দান্ত এক বোলার। আমি নিজেও ওর একজন গুণমুগ্ধ, ওর বোলিং দেখে শিখেছি অনেক। ও অনেকটা আমার মতোই, তিন ধরনের ক্রিকেটে খেলার মতোই বৈচিত্র্য ওর। ইংল্যান্ড সিরিজে ওকে ছাড়িয়ে যাওয়ার চ্যালেঞ্জটা নিতে আমি মুখিয়ে আছি। এই সিরিজটাকে আমি দেখছি “কে বিশ্বসেরা স্পিনার”-এর পরীক্ষা হিসেবে।’
দুজনই অফ স্পিনার, খুব বেশি টার্ন করান না কেউই। তবে বৈচিত্র্যে এগিয়ে রাখতে হবে আজমলকেই। অফ ব্রেকের চেয়ে দুসরা বেশি করেন বলে অনেকে তাঁকে ‘দুসরা’ বোলারও বলেন। বিশ্বসেরার লড়াইয়ে সোয়ানকে পেছনে ফেলতে নতুন এক অস্ত্র নিয়েও হাজির হয়েছেন বলে দাবি ৩৪ বছর বয়সী পাকিস্তানির। প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে ইংল্যান্ড সিরিজেই দেখাতে যাচ্ছেন নতুন এক ডেলিভারি ‘তিসরা!’
স্পিন আক্রমণে আজমলের সঙ্গী ও ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ের দুই নম্বর বোলার মোহাম্মদ হাফিজ বলছেন, তিসরা হবে দারুণ এক অস্ত্র, ‘ক্রিকেটে এটা হবে নতুন একটা কিছু। গত ছয়-আট মাসে এটা নিয়ে সে অনেক কাজ করেছে, কিন্তু আন্তর্জাতিক ম্যাচে একবারও বলটা করেনি। নিবিড়ভাবে এত কাজ করায় ডেলিভারিটির ওপর এখন ওর পুরোপরি নিয়ন্ত্রণ আছে। আমি বিস্তারিত আর বলতে চাই না, সবাই শিগগিরই দেখতে পাবে।’
সরাসরি এই লড়াইয়ে যোগ দেননি সোয়ান, কোনো চমক উপহার দেওয়ার কথাও বলেননি। তবে আজমলের মন্তব্য নিশ্চয়ই তাঁর কানে গেছে। ‘তিসরা’ নিয়ে আলোচনাটাও না শোনার কোনো কারণই নেই। তাঁর যা চরিত্র, এসব আরও উদ্দীপ্তই করবে তাঁকে।
দারুণ দুই স্পিনার একে অন্যকে ছাপিয়ে যেতে তাঁদের সব বৈচিত্র্য মেলে ধরছেন, এর চেয়ে রোমাঞ্চকর আর কী হতে পারে! ওয়েবসাইট।

No comments

Powered by Blogger.