অসময়ের স্বপ্ন-বস্ত্র মানুষের মৌলিক অধিকার_রাষ্ট্র নির্বিকার! by শামা মাহজাবীন
বাংলাদেশে ইউরোপ-আমেরিকার মতো বরফ পড়ে না। ইউরোপ-আমেরিকায় তাপমাত্রা মাইনাস ডিগ্রির নিচে চলে যায়। যত দূর মিডিয়ার সুবাদে খবর পাওয়া যায়, সেখানে তুষার ঝড়ে কিছু মানুষ মারা যায়, তবে সে ঝড় যদি গতানুগতিক না হয়ে দুর্যোগের মতো কিছু হয়। কিন্তু বাংলাদেশে যে তাপমাত্রায় শীত পড়ে তা যদি সর্বনিম্নও হয়, তাহলে চার-পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামে না।
কিন্তু এই তাপমাত্রায় বাংলাদেশে প্রতিবছর শত শত মানুষ মারা যায়। কিন্তু কেন? প্রশ্নটা সোজা, উত্তরও জানা। তা হলো, সাধারণ মাত্রার শীত থেকে বাঁচার জন্য যে পোশাক দরকার তার সংস্থান করার মতোও ক্ষমতা আমাদের দেশের দরিদ্র মানুষের নেই। আমাদের দেশের মানুষ এতই দরিদ্র যে তুষার ঝড় হওয়া লাগে না এখানে, সামান্য যে শীত নামে এতেই লোকজন মারা যায়। অথচ শীত এলে এ দেশেরই ধনিকশ্রেণী কত রকম আয়োজন করে শীতকে উপভোগ করে। পিঠা উৎসব, নতুন ডিজাইনের কাপড় পরা, পছন্দের জায়গা ঘুরতে যাওয়া ইত্যাদি। শীত মানে ধনিকশ্রেণীর কাছে আনন্দ-উৎসবের ভিন্ন আয়োজন। আর দরিদ্র মানুষের কাছে শীত মানে আদিম গুহাবাসী মানুষের মতো কোনোমতে টিকে থাকার সংগ্রাম।
আমাদের দেশের শ্রমজীবী শ্রেণীর একটি উল্লেখযোগ্য অংশের মানুষ তিন বেলা পেট ভরে খাওয়া তো দূরের কথা, কোনোমতে খাবার জোটে মাত্র। রাষ্ট্র ৪০ বছর ধরে সেই নিরন্ন মানুষের মধ্যে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা তো দূরের কথা, বস্ত্রের মতো মৌলিক অধিকারই দিতে পারেনি। বরং একগাদা সমস্যা চাপিয়ে দিতে জুড়ি নেই। অথচ শূন্য থেকে গড়ে ওঠা রাষ্ট্রের ধনিকশ্রেণীর অর্থ-বিত্ত কম হয়নি। রাষ্ট্রের মনে রাখা দরকার, জনগণ প্রতিনিয়ত রাষ্ট্রকে নিজের মনে করে তার আইন, আদালত, পুলিশ ব্যবস্থাসহ নামকাওয়াস্তের পাঁচ বছরান্তের গণতন্ত্র মান্যগণ্য করে। ভোট দেয়। যদি রাষ্ট্র জনগণের কাছ থেকে তার ন্যায্য আরো দীর্ঘ সময় পেতে চায়, তাহলে পুলিশ আর আইন দিয়েই তা কেবল সম্ভব নয়। রাষ্ট্রের একটি নৈতিক জায়গাও থাকতে হবে। অর্থাৎ রাষ্ট্রকে প্রমাণ করতে হবে আসলেই সে তার জনগণের মৌলিক অধিকারের প্রতি নূ্যনতম দায়বোধ অনুভব করে।
শীতের মৌসুমে অনেক স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান আছে যারা দরিদ্র মানুষের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ করে। উদ্যোগটি মহৎ, এতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু এ রকম দান-খয়রাত বা শীতের মৌসুমে হঠাৎ জেগে ওঠা মানবিকতা বোধে অল্প কিছু মানুষকে একটি শীত থেকে হয়তো বাঁচানো যায়, কিন্তু জীবনের বাকি শীতগুলো থেকে নামহীন অগণন মানুষকে বাঁচানো সম্ভব নয়। এভাবে অসংখ্য সংকট, অনিশ্চয়তার হাত থেকে শীতার্ত, নিরন্ন মানুষকে বাঁচানোর উপায় কী? অনেকে বলবেন, এটা তো রাজনৈতিক বিষয়। মনে রাখা দরকার, যা রাজনৈতিক তাকে রাজনীতি দিয়েই মোকাবিলা করা দরকার। সমাজের প্রকট ধনী-গরিবের শ্রেণী-বৈষ্যমের কারণেই কিছু মানুষ শীতে মারা যায় আর কিছু মানুষ শীতকে উদ্যাপন করে। সেই শ্রেণী-বৈষম্যের দিকেই রাজনীতির চোখটি আরো নিখুঁত করতে হবে। প্রশ্ন তুলতে হবে, শীতে কেন মানুষ মারা যাবে? কারণ বস্ত্র তো মানুষের মৌলিক অধিকার। যারা এসব প্রশ্নকে সামনে রেখে শীতবস্ত্র বিতরণ করছে, সেসব সংগঠনের একটি 'সংস্কৃতির নয়া সেতু'। সংগঠনটি এবার সিরাজগঞ্জের যমুনা নদীর বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে শীতবস্ত্র বিতরণ করেছে। গত ১৩ জানুয়ারি সিরাজগঞ্জের দুই থানার চার গ্রামের প্রত্যন্ত চরাঞ্চলের ২৫০ দরিদ্র পরিবারকে শীতবস্ত্র প্রদান করে সংগঠনটি। সিরাজগঞ্জের স্থানীয় ব্যক্তিদের সহায়তায় ঢাকা থেকে সংস্কৃতির নয়া সেতুর একটি দল শীতবস্ত্র বিতরণ করে।
সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার বেতালি ও এনায়েতপুর গ্রামে এবং বেলকুচি উপজেলার গ্রামের ২৫০টি দরিদ্র পরিবারের প্রায় এক হাজার ৩০০ জনকে শীতবস্ত্র প্রদান করা হয়। শৈত্যপ্রবাহ আবারও শুরু হতে যাচ্ছে। ঢাকায় ইতিমধ্যে ৭ ডিগ্রিতে নেমে এসেছে তাপমাত্রা। সামনে আরো খারাপ দিন আসছে। দেশের এসব দারিদ্র্যপীড়িত জনগণের জন্য ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন সংগঠনের আজ এই মানবতার সেবায় পাশে দাঁড়ানো জরুরি হয়ে পড়েছে। আর রাষ্ট্রকে বিরাজমান মৌলিক অধিকারবঞ্চিত জনগণের সমস্যা মোকাবিলার পাশাপাশি দেশের আপামর জনগণের নূ্যনতম মৌলিক চাহিদা পূরণের জন্য সুদূরপ্রসারী কার্যকর উন্নয়নমূলক কর্মসূচি বাস্তবায়নে এগিয়ে আসতে হবে।
আমাদের দেশের শ্রমজীবী শ্রেণীর একটি উল্লেখযোগ্য অংশের মানুষ তিন বেলা পেট ভরে খাওয়া তো দূরের কথা, কোনোমতে খাবার জোটে মাত্র। রাষ্ট্র ৪০ বছর ধরে সেই নিরন্ন মানুষের মধ্যে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা তো দূরের কথা, বস্ত্রের মতো মৌলিক অধিকারই দিতে পারেনি। বরং একগাদা সমস্যা চাপিয়ে দিতে জুড়ি নেই। অথচ শূন্য থেকে গড়ে ওঠা রাষ্ট্রের ধনিকশ্রেণীর অর্থ-বিত্ত কম হয়নি। রাষ্ট্রের মনে রাখা দরকার, জনগণ প্রতিনিয়ত রাষ্ট্রকে নিজের মনে করে তার আইন, আদালত, পুলিশ ব্যবস্থাসহ নামকাওয়াস্তের পাঁচ বছরান্তের গণতন্ত্র মান্যগণ্য করে। ভোট দেয়। যদি রাষ্ট্র জনগণের কাছ থেকে তার ন্যায্য আরো দীর্ঘ সময় পেতে চায়, তাহলে পুলিশ আর আইন দিয়েই তা কেবল সম্ভব নয়। রাষ্ট্রের একটি নৈতিক জায়গাও থাকতে হবে। অর্থাৎ রাষ্ট্রকে প্রমাণ করতে হবে আসলেই সে তার জনগণের মৌলিক অধিকারের প্রতি নূ্যনতম দায়বোধ অনুভব করে।
শীতের মৌসুমে অনেক স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান আছে যারা দরিদ্র মানুষের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ করে। উদ্যোগটি মহৎ, এতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু এ রকম দান-খয়রাত বা শীতের মৌসুমে হঠাৎ জেগে ওঠা মানবিকতা বোধে অল্প কিছু মানুষকে একটি শীত থেকে হয়তো বাঁচানো যায়, কিন্তু জীবনের বাকি শীতগুলো থেকে নামহীন অগণন মানুষকে বাঁচানো সম্ভব নয়। এভাবে অসংখ্য সংকট, অনিশ্চয়তার হাত থেকে শীতার্ত, নিরন্ন মানুষকে বাঁচানোর উপায় কী? অনেকে বলবেন, এটা তো রাজনৈতিক বিষয়। মনে রাখা দরকার, যা রাজনৈতিক তাকে রাজনীতি দিয়েই মোকাবিলা করা দরকার। সমাজের প্রকট ধনী-গরিবের শ্রেণী-বৈষ্যমের কারণেই কিছু মানুষ শীতে মারা যায় আর কিছু মানুষ শীতকে উদ্যাপন করে। সেই শ্রেণী-বৈষম্যের দিকেই রাজনীতির চোখটি আরো নিখুঁত করতে হবে। প্রশ্ন তুলতে হবে, শীতে কেন মানুষ মারা যাবে? কারণ বস্ত্র তো মানুষের মৌলিক অধিকার। যারা এসব প্রশ্নকে সামনে রেখে শীতবস্ত্র বিতরণ করছে, সেসব সংগঠনের একটি 'সংস্কৃতির নয়া সেতু'। সংগঠনটি এবার সিরাজগঞ্জের যমুনা নদীর বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে শীতবস্ত্র বিতরণ করেছে। গত ১৩ জানুয়ারি সিরাজগঞ্জের দুই থানার চার গ্রামের প্রত্যন্ত চরাঞ্চলের ২৫০ দরিদ্র পরিবারকে শীতবস্ত্র প্রদান করে সংগঠনটি। সিরাজগঞ্জের স্থানীয় ব্যক্তিদের সহায়তায় ঢাকা থেকে সংস্কৃতির নয়া সেতুর একটি দল শীতবস্ত্র বিতরণ করে।
সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার বেতালি ও এনায়েতপুর গ্রামে এবং বেলকুচি উপজেলার গ্রামের ২৫০টি দরিদ্র পরিবারের প্রায় এক হাজার ৩০০ জনকে শীতবস্ত্র প্রদান করা হয়। শৈত্যপ্রবাহ আবারও শুরু হতে যাচ্ছে। ঢাকায় ইতিমধ্যে ৭ ডিগ্রিতে নেমে এসেছে তাপমাত্রা। সামনে আরো খারাপ দিন আসছে। দেশের এসব দারিদ্র্যপীড়িত জনগণের জন্য ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন সংগঠনের আজ এই মানবতার সেবায় পাশে দাঁড়ানো জরুরি হয়ে পড়েছে। আর রাষ্ট্রকে বিরাজমান মৌলিক অধিকারবঞ্চিত জনগণের সমস্যা মোকাবিলার পাশাপাশি দেশের আপামর জনগণের নূ্যনতম মৌলিক চাহিদা পূরণের জন্য সুদূরপ্রসারী কার্যকর উন্নয়নমূলক কর্মসূচি বাস্তবায়নে এগিয়ে আসতে হবে।
No comments