৫০ হাজার মেট্রিক টন রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা-রপ্তানিযোগ্য আলু উৎপাদনে বগুড়ায়কৃষকদের প্রশিক্ষণ
চলতি মৌসুমে বগুড়া থেকে ৫০ হাজার মেট্রিক টন আলু রপ্তানি করা হবে। একই সঙ্গে বগুড়ায় উৎপাদিত আলু রপ্তানিযোগ্য করে তোলার লক্ষ্যে চার হাজার চাষিকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। ‘প্রাইস’ ও ‘ইউএসএইড’ নামের দুটি বেসরকারি সংস্থা এ উদ্যোগ নিয়েছে। জানা গেছে, বগুড়ায় দিন দিন আলুর চাষ ও ফলন বাড়লেও চাষিরা স্থানীয় বাজারে আলু বিক্রি করে ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় এবং তাঁদের পক্ষে রপ্তানি করাও সম্ভব নয় বলে সংস্থা দুটি এগিয়ে এসেছে।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, প্রাইস ও ইউএসএইড এবার প্রথমবারের মতো বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায় চার হাজার কৃষককে রপ্তানিযোগ্য আলু চাষ, পরিচর্যা ও সংরক্ষণের ওপর হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। এ লক্ষ্যে দুই হাজার হেক্টর জমিতে বিশেষ পদ্ধতিতে আলু লাগানো হয়েছে। এতে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫০ হাজার মেট্রিক টন। জমি থেকে আলু তোলা ও রপ্তানি করা পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে এ প্রশিক্ষণ চলবে।
শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষক সমবায় সমিতি এ প্রশিক্ষণ আয়োজনে সহায়তা করছে। সমিতির সভাপতি আমজাদ হোসেন প্রথম আলোকে জানান, ওই দুটি সংস্থা আলু রপ্তানির লক্ষ্যে চাষিদের কাছ থেকে জমি লিজ নিয়ে তাঁদেরই প্রশিক্ষণ দেওয়ার মাধ্যমে আলুর চাষাবাদ করাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, দাম পড়ে যাওয়ার কারণে কৃষকেরা যখন আলু চাষে আগ্রহ হারাচ্ছিলেন, তখনই সংস্থা দুটি উপযুক্ত দামে আলু কিনে নেওয়ার আশ্বাস দেওয়ায় তাঁদের দুশ্চিন্তা কমছে।
উপজেলার কৃষক সমবায় সমিতির ১২টি ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ নেতারাও এ ব্যাপারে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছেন।
উপজেলার রায়নগর এলাকার চাষি তালেব আলী বলেন, ‘আলুর দাম না থাকায় আলু চাষ বন্ধ করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে প্রশিক্ষণ নিয়ে এবার আলু চাষ করেছি।’
প্রাইসের টিম লিডার কৃষিবিদ বেলাল সিদ্দিকী বলেন, আলুর দাম নিয়ে কৃষকেরা দুই বছর ধরে বেকায়দায় রয়েছেন। অথচ বিদেশে বাংলাদেশি আলুর ব্যাপক চাহিদা আছে। কিন্তু বর্তমানে কৃষকেরা যে আলু উৎপাদন করছেন, তা রপ্তানিযোগ্য নয়। এ জন্যই কৃষকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে রপ্তানিযোগ্য আলুর চাষাবাদ করানো হচ্ছে। এবার ভালো ফলাফল পেলে আগামী বছর থেকে অধিক জমিতে আলু চাষ ও রপ্তানির পরিমাণ বাড়ানোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক একরামুল হক বলেন, বিশেষ পদ্ধতিতে উৎপাদিত আলু রপ্তানি শুরু হলে চাষিরা ন্যায্যমূল্য পাবেন।
No comments