ইভিএম নিয়ে নয়া আলোচনা
আহমেদ জামাল: সদ্য সমাপ্ত কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পর আবার আলোচনায় উঠে এসেছে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)। প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত এই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে শতভাগ ব্যবহার করা হয় বহুল আলোচিত এই পদ্ধতি। যদিও ইভিএমের প্রতিবাদে এই নির্বাচন বর্জন করে প্রধান বিরোধী দল বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট। তবে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর ভরাডুবি এবং বিএনপি বিদ্রোহী প্রার্থীর বিশাল জয়ে এই পদ্ধতিকে পৃষ্ঠা ১৭ কলাম ৪
নতুন করে আলোচনায় তুলে আনে। শুরু হয় এই ভোটিং পদ্ধতির ভোট দানের সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে নানা রকম ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ। সরব হয়ে ওঠে সংবাদ মাধ্যম সমাজের বিশিষ্টজনরাও। যদিও এর আগে চট্টগ্রাম ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বচানে পরীক্ষামূলকভাবে ইভিএম চালু করা হয়েছিল। তবে ওই দুটি নির্বাচনে কয়েকটি কেন্দ্রে ইভিএম চালু ছিল। কিন্তু কুমিল্লার নির্বাচনে সবক’টি কেন্দ্রেই ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ করা হয়। সংবাদ মাধ্যমসহ সবক্ষেত্রে অধিক আলোচনার কারণ এখানেই। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, কুমিল্লার নির্বাচনের পর এই মুহূর্তে ইভিএমের সাফল্য এবং সুবিধার বিষয়টি বড় করে দেখা হলেও এর পিছনের অনেকগুলো অসুবিধার কথা বলা হচ্ছে না। যেমন নির্বাচন কমিশনের শতচেষ্টার পরও কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইভিএম নিয়ে জটিলতা কাটেনি। যান্ত্রিক ত্রুটি, ভোটগ্রহণে ধীরগতি, নিরক্ষর ও বয়স্ক ভোটারদের বিভ্রান্তিসহ নানা জটিলতায় শান্তিপূর্ণ ভোটের পরিবেশকে খানিকটা ম্লান করে দিয়েছে। প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৬৫টি কেন্দ্রেই ইভিএম পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে। নির্বাচান কমিশন এ বিষয়ে ভোটারদের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বেশ কিছু প্রশিক্ষণ ও সভা-সেমিনার করেছে বটে। কিন্তু তাতে তেমন ফলোদয় হয়নি। তাই ইভিএম ব্যবহারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি বেকায়দায় পড়েছেন মহিলা ভোটাররা। ৫ই জানুয়ারি সরজমিন কুমিল্লা নগরীর বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে ঘুরে এমন চিত্রই পাওয়া গেছে। ওই দিন সকাল ১০টায় শহরের ঠাকুরপাড়া থেকে অশীতিপর মহিলা রহিমা খাতুনকে মডার্ন প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নিয়ে যান তার বোনের মেয়ে শাহীন আখতার। কিন্তু ভোট দেয়ার জন্য কেন্দ্রে ৩ নম্বর বুথে ঢুকে বেকায়দায় পড়েন এই বৃদ্ধ মহিলা। কিছুতেই ভোট দিতে পারছিলেন না তিনি। শেষে শাহীন আখতার নিজে হাত ধরে ইভিএম মেশিনের বাটন টিপে রহিমা খাতুনের ভোট দান সম্পন্ন করেন। বয়সের ভারে নুয়ে পড়া রহিমা খাতুন বলেন, ভোট দিতে এসে আগে কখনও এ ধরনের মেশিনপত্র দেখিনি। এজন্য সমস্যা হচ্ছিল। তবে নিজের হাতে ভোট দিতে না পারলেও কেন্দ্রে আসতে পেরে খুশি এই বৃদ্ধ। এখানে ভোট দিতে গিয়ে একই রকম পরিস্থিতির মুখে পড়েছেন লিলি হায়দার। প্রায় কেন্দ্রেই রহিমা ও লিলি হায়দারদের মতো বয়স্ক মহিলাদের ভোট কেন্দ্রে গিয়ে এ ধরেনের বিড়ম্বনার মুখে পড়তে হয়েছে। এছাড়া বুথের মধ্যে আলোর স্বল্পতা, ইভিএম মেশিনে প্রার্থীদের নাম ও প্রতীকের আকার ছোট হওয়ায় অনেক ভোটার বিভ্রান্তিতে পড়েছে। সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয়েছে অক্ষরজ্ঞানহীন ভোটারদের বেলায়। ৪-৫ বার চেষ্টা করেও অনেক ভোটার ঠিকমতো বাটন টিপতে ব্যর্থ হয়ে ফিরে গেছেন। নগরীর ছোটরা প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার ফারুক হোসাইন এই ধরনের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ইভিএমর মাধ্যমে ভোটদানের পদ্ধতি এই অঞ্চলে এটাই প্রথম। এজন্য কিছু সমস্যা হওয়াটা স্বাভাবিক। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ কেন্দ্রে ভাগ্নে আবুল খায়েরের সঙ্গে ভোট দিতে যান পানি উন্নয়ন বোর্ডের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নুরুজ্জামান। কিন্তু নিজ হাতে ভোট দিতে পারেননি। তার হয়ে আবুল খায়ের ইভিএম বাটন টিপে ভোটটি দিয়েছেন। বৃদ্ধ নুরুজ্জামান বলেন, অনেক কষ্ট করে কেন্দ্রে এসেছি। কিন্তু মেশিনের মাধ্যমে আসলে আমার ভোটটা দেয়া হলো কিনা বুঝতে পারিনি। এ কেন্দ্রে পোলিং এজেন্ট তাসলিমা চৌধুরী বলেন, আসলে এবারের ভোটের ফলাফল প্রার্থীর ভাগ্যের ওপর নির্ভর করছে। ইভিএম মেশিনের লাল নীল বাতির ঘোরে পড়ে অনেক ভোটার যেনতেনভাবে বাটন টিপে চলে গেছে। কুমিল্লা কমার্স কলেজ কেন্দ্রে কথা হয় ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ক্যালকুলেটরের হিসাব আমি বুঝি না। তাই আমার কাছে এটা কঠিন কাজ। আমি কাগজে কলমের হিসাব বুঝি সেটাই আমার জন্য ভাল। ভোটের ক্ষেত্রেও এমনটি হওয়া উচিত। ইভিএম জটিলতায় একটি ভোট নিতে ৮-১০ মিনিট সময় লেগেছে বলে জানান কাটাবিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সহকারী রিটার্নিং অফিসার মো. আবুল হাসেম। তিনি জানান, এই কেন্দ্রের ১ নম্বর বুথে ভোট ছিল ৩৭৬টি। সকাল সাড়ে নয়টায় এখানে ভোট পড়ে ৪৯টি। প্রতিটি ভোটারকে বিষয়টি বোঝাতে গিয়েই সময় নষ্ট হচ্ছে বলে তার অভিমত। এখানে দায়িত্ব পালনরত পুলিশ সদস্য জাবেদ বলেন, অনেকেই সিস্টেমটি বুঝতে না পেরে আমাদেরকেও বিরক্ত করছে। সহকারী রিটার্নিং অফিসার মনিরা বেগম বলেন, মহিলা ভোটাররা কিছুই বুঝে না। বুঝিয়ে বলার পরও উল্টাপাল্টা বাটন টিপে। চৌয়ারা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের পোলিং এজেন্ট শাহআলম, কাউসার হাসান জানান, মেশিনে ভোট দিতে গিয়ে ব্যর্থ হয়ে অনেক ভোটার ফিরে গেছেন। শাকতলা কেন্দ্রে সহকারী রিটার্নিং অফিসার ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, সকাল ৮টা থেতে বলতে শুরু করেছি ৩টি বাটন টিপার জন্য। কিন্তু অনেক ভোটার বিষয়টি কোনভাবে যেন বুঝতে পারছে না। কুমিল্লা হাইস্কুলের ৫ নম্বর মহিলা বুথে সকাল ১১টার দিকে ১৩৫ ভোট পড়ার পর ইভিএম নষ্ট হয়ে যায়। এ সময় ওই বুথে ২০ মিনিট ভোটগ্রহণ বন্ধ থাকে।
তবে ইভিএম নিয়ে রাজনৈতিক ভীতির সবচেয়ে বড় কারণ এটাই নয়- বলে জানান অনেকেই। তাদের মত এই মেশিনের অপারেটিং কাজে নিয়োজিত কর্মী ছাড়া অন্য কেউ এর কার্যক্রম সম্পর্কে তেমন কিছু জানে না। নির্বাচনী কর্মকর্তা কর্মচারীদের শেখানো মতে ভোটাররা নির্দিষ্ট বাটন টিপে ভোট দিলো ঠিকই, কিন্তু সেই ভোটটি দাতার কাঙ্ক্ষিত প্রার্থীর পক্ষে পড়লো কিনা- তা দেখার বা প্রমাণ পাওয়ার সুযোগ নেই। ভোটের ফলাফল গণনার ক্ষেত্রেও স্বচ্ছ ধারণা নেই কারও। দায়িত্বপ্রাপ্ত টেকনিশিয়ান যেই হিসাব দিবেন সেটাই চূড়ান্ত বলে ধরে নিতে হবে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের। এক কথায় একজন টেকনিশিয়ানের ইচ্ছার ওপর নির্ভর করতে পারে ভোট গণনায় যে কোন ধরনের হেরফের। যা বিরোধী রাজনৈতিকদের প্রার্থীর ক্ষেত্রে অধিকতর ঝুঁকি বলে ধারণা করা হচ্ছে।
নতুন করে আলোচনায় তুলে আনে। শুরু হয় এই ভোটিং পদ্ধতির ভোট দানের সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে নানা রকম ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ। সরব হয়ে ওঠে সংবাদ মাধ্যম সমাজের বিশিষ্টজনরাও। যদিও এর আগে চট্টগ্রাম ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বচানে পরীক্ষামূলকভাবে ইভিএম চালু করা হয়েছিল। তবে ওই দুটি নির্বাচনে কয়েকটি কেন্দ্রে ইভিএম চালু ছিল। কিন্তু কুমিল্লার নির্বাচনে সবক’টি কেন্দ্রেই ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ করা হয়। সংবাদ মাধ্যমসহ সবক্ষেত্রে অধিক আলোচনার কারণ এখানেই। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, কুমিল্লার নির্বাচনের পর এই মুহূর্তে ইভিএমের সাফল্য এবং সুবিধার বিষয়টি বড় করে দেখা হলেও এর পিছনের অনেকগুলো অসুবিধার কথা বলা হচ্ছে না। যেমন নির্বাচন কমিশনের শতচেষ্টার পরও কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইভিএম নিয়ে জটিলতা কাটেনি। যান্ত্রিক ত্রুটি, ভোটগ্রহণে ধীরগতি, নিরক্ষর ও বয়স্ক ভোটারদের বিভ্রান্তিসহ নানা জটিলতায় শান্তিপূর্ণ ভোটের পরিবেশকে খানিকটা ম্লান করে দিয়েছে। প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৬৫টি কেন্দ্রেই ইভিএম পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে। নির্বাচান কমিশন এ বিষয়ে ভোটারদের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বেশ কিছু প্রশিক্ষণ ও সভা-সেমিনার করেছে বটে। কিন্তু তাতে তেমন ফলোদয় হয়নি। তাই ইভিএম ব্যবহারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি বেকায়দায় পড়েছেন মহিলা ভোটাররা। ৫ই জানুয়ারি সরজমিন কুমিল্লা নগরীর বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে ঘুরে এমন চিত্রই পাওয়া গেছে। ওই দিন সকাল ১০টায় শহরের ঠাকুরপাড়া থেকে অশীতিপর মহিলা রহিমা খাতুনকে মডার্ন প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নিয়ে যান তার বোনের মেয়ে শাহীন আখতার। কিন্তু ভোট দেয়ার জন্য কেন্দ্রে ৩ নম্বর বুথে ঢুকে বেকায়দায় পড়েন এই বৃদ্ধ মহিলা। কিছুতেই ভোট দিতে পারছিলেন না তিনি। শেষে শাহীন আখতার নিজে হাত ধরে ইভিএম মেশিনের বাটন টিপে রহিমা খাতুনের ভোট দান সম্পন্ন করেন। বয়সের ভারে নুয়ে পড়া রহিমা খাতুন বলেন, ভোট দিতে এসে আগে কখনও এ ধরনের মেশিনপত্র দেখিনি। এজন্য সমস্যা হচ্ছিল। তবে নিজের হাতে ভোট দিতে না পারলেও কেন্দ্রে আসতে পেরে খুশি এই বৃদ্ধ। এখানে ভোট দিতে গিয়ে একই রকম পরিস্থিতির মুখে পড়েছেন লিলি হায়দার। প্রায় কেন্দ্রেই রহিমা ও লিলি হায়দারদের মতো বয়স্ক মহিলাদের ভোট কেন্দ্রে গিয়ে এ ধরেনের বিড়ম্বনার মুখে পড়তে হয়েছে। এছাড়া বুথের মধ্যে আলোর স্বল্পতা, ইভিএম মেশিনে প্রার্থীদের নাম ও প্রতীকের আকার ছোট হওয়ায় অনেক ভোটার বিভ্রান্তিতে পড়েছে। সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয়েছে অক্ষরজ্ঞানহীন ভোটারদের বেলায়। ৪-৫ বার চেষ্টা করেও অনেক ভোটার ঠিকমতো বাটন টিপতে ব্যর্থ হয়ে ফিরে গেছেন। নগরীর ছোটরা প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার ফারুক হোসাইন এই ধরনের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ইভিএমর মাধ্যমে ভোটদানের পদ্ধতি এই অঞ্চলে এটাই প্রথম। এজন্য কিছু সমস্যা হওয়াটা স্বাভাবিক। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ কেন্দ্রে ভাগ্নে আবুল খায়েরের সঙ্গে ভোট দিতে যান পানি উন্নয়ন বোর্ডের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নুরুজ্জামান। কিন্তু নিজ হাতে ভোট দিতে পারেননি। তার হয়ে আবুল খায়ের ইভিএম বাটন টিপে ভোটটি দিয়েছেন। বৃদ্ধ নুরুজ্জামান বলেন, অনেক কষ্ট করে কেন্দ্রে এসেছি। কিন্তু মেশিনের মাধ্যমে আসলে আমার ভোটটা দেয়া হলো কিনা বুঝতে পারিনি। এ কেন্দ্রে পোলিং এজেন্ট তাসলিমা চৌধুরী বলেন, আসলে এবারের ভোটের ফলাফল প্রার্থীর ভাগ্যের ওপর নির্ভর করছে। ইভিএম মেশিনের লাল নীল বাতির ঘোরে পড়ে অনেক ভোটার যেনতেনভাবে বাটন টিপে চলে গেছে। কুমিল্লা কমার্স কলেজ কেন্দ্রে কথা হয় ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ক্যালকুলেটরের হিসাব আমি বুঝি না। তাই আমার কাছে এটা কঠিন কাজ। আমি কাগজে কলমের হিসাব বুঝি সেটাই আমার জন্য ভাল। ভোটের ক্ষেত্রেও এমনটি হওয়া উচিত। ইভিএম জটিলতায় একটি ভোট নিতে ৮-১০ মিনিট সময় লেগেছে বলে জানান কাটাবিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সহকারী রিটার্নিং অফিসার মো. আবুল হাসেম। তিনি জানান, এই কেন্দ্রের ১ নম্বর বুথে ভোট ছিল ৩৭৬টি। সকাল সাড়ে নয়টায় এখানে ভোট পড়ে ৪৯টি। প্রতিটি ভোটারকে বিষয়টি বোঝাতে গিয়েই সময় নষ্ট হচ্ছে বলে তার অভিমত। এখানে দায়িত্ব পালনরত পুলিশ সদস্য জাবেদ বলেন, অনেকেই সিস্টেমটি বুঝতে না পেরে আমাদেরকেও বিরক্ত করছে। সহকারী রিটার্নিং অফিসার মনিরা বেগম বলেন, মহিলা ভোটাররা কিছুই বুঝে না। বুঝিয়ে বলার পরও উল্টাপাল্টা বাটন টিপে। চৌয়ারা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের পোলিং এজেন্ট শাহআলম, কাউসার হাসান জানান, মেশিনে ভোট দিতে গিয়ে ব্যর্থ হয়ে অনেক ভোটার ফিরে গেছেন। শাকতলা কেন্দ্রে সহকারী রিটার্নিং অফিসার ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, সকাল ৮টা থেতে বলতে শুরু করেছি ৩টি বাটন টিপার জন্য। কিন্তু অনেক ভোটার বিষয়টি কোনভাবে যেন বুঝতে পারছে না। কুমিল্লা হাইস্কুলের ৫ নম্বর মহিলা বুথে সকাল ১১টার দিকে ১৩৫ ভোট পড়ার পর ইভিএম নষ্ট হয়ে যায়। এ সময় ওই বুথে ২০ মিনিট ভোটগ্রহণ বন্ধ থাকে।
তবে ইভিএম নিয়ে রাজনৈতিক ভীতির সবচেয়ে বড় কারণ এটাই নয়- বলে জানান অনেকেই। তাদের মত এই মেশিনের অপারেটিং কাজে নিয়োজিত কর্মী ছাড়া অন্য কেউ এর কার্যক্রম সম্পর্কে তেমন কিছু জানে না। নির্বাচনী কর্মকর্তা কর্মচারীদের শেখানো মতে ভোটাররা নির্দিষ্ট বাটন টিপে ভোট দিলো ঠিকই, কিন্তু সেই ভোটটি দাতার কাঙ্ক্ষিত প্রার্থীর পক্ষে পড়লো কিনা- তা দেখার বা প্রমাণ পাওয়ার সুযোগ নেই। ভোটের ফলাফল গণনার ক্ষেত্রেও স্বচ্ছ ধারণা নেই কারও। দায়িত্বপ্রাপ্ত টেকনিশিয়ান যেই হিসাব দিবেন সেটাই চূড়ান্ত বলে ধরে নিতে হবে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের। এক কথায় একজন টেকনিশিয়ানের ইচ্ছার ওপর নির্ভর করতে পারে ভোট গণনায় যে কোন ধরনের হেরফের। যা বিরোধী রাজনৈতিকদের প্রার্থীর ক্ষেত্রে অধিকতর ঝুঁকি বলে ধারণা করা হচ্ছে।
No comments