গোলাম আযমকে কাল হাজির করতে হবে-গোলাম আযম ও নিজামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে
জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির গোলাম আযম ও বর্তমান আমির মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় অভিযোগ আমলে নিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। কাল ১১ জানুয়ারি গোলাম আযমকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করতে তাঁর আইনজীবীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওই দিন হাজির না হলে ট্রাইব্যুনাল গোলাম আযমের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করবেন। এদিকে, মানবতাবিরোধী অপরাধের অপর মামলায়
জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের ১১তম সাক্ষী আবদুল জলিল শেখ (৬০) গতকাল ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দি দেন। পরে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তাঁকে জেরা করেন। গতকাল বেলা পৌনে ১১টার দিকে বিচারপতি নিজামুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম শুরু হয়। এর আগেই নিজামী ও সাঈদীকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
শুরুতে নিজামীকে এজলাসে আনা হলে ট্রাইব্যুনাল আদেশ দিয়ে বলেন, নিজামীর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ, তদন্ত প্রতিবেদন ও আনুষঙ্গিক নথিপত্র পর্যালোচনা করে প্রাথমিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ জন্য ট্রাইব্যুনাল তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেন। ট্রাইব্যুনাল ১২ ফেব্রুয়ারি তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য করেন।
এরপর গোলাম আযমের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা খারিজ চেয়ে করা আবেদনের শুনানি হয়। ট্রাইব্যুনাল আবেদন খারিজ করে আদেশ দিয়ে বলেন, আনুষ্ঠানিক অভিযোগ অগোছালোভাবে প্রস্তুত করায় এটি সুবিন্যস্তভাবে উপস্থাপনের জন্য রাষ্ট্রপক্ষকে ফেরত দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গোলাম আযমের বিরুদ্ধে প্রাথমিক অভিযোগ পাওয়া যায়নি—এমন কথা ট্রাইব্যুনাল বলেননি। অভিযোগ পুনর্দাখিলের জন্য ট্রাইব্যুনাল তাঁর অন্তর্নিহিত ক্ষমতা প্রয়োগ করেছেন।
একই আদেশে বলা হয়, পুনর্দাখিল করা আনুষ্ঠানিক অভিযোগ, তদন্ত প্রতিবেদন ও আনুষঙ্গিক নথি পর্যালোচনা করে গোলাম আযমের বিরুদ্ধে প্রাথমিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় ট্রাইব্যুনাল গোলাম আযমের আইনজীবী আবদুর রাজ্জাকের কাছে জানতে চান, তিনি গোলাম আযমকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করতে পারবেন কি না। আইনজীবী এতে সম্মতি জানালে ট্রাইব্যুনাল আদেশে বলেন, ১১ জানুয়ারি গোলাম আযমকে তাঁর আইনজীবী ট্রাইব্যুনালে হাজির করবেন। তবে ওই দিন হাজির না হলে ট্রাইব্যুনাল গোলাম আযমের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করবেন।
সাঈদীর বিরুদ্ধে সাক্ষীর জবানবন্দি ও জেরা: দুপুর পৌনে ১২টার দিকে সাঈদীর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দি দেন আবদুল জলিল শেখ। তিনি বলেন, একাত্তরের ৮ মে সাঈদী, দানেশ মোল্লা, সেকান্দার শিকদারসহ আরও কয়েকজন রাজাকার ও ১০-১৫ জন পাকিস্তানি সেনা পিরোজপুরের চিথোলিয়া গ্রামে মনিক পসারির বাড়িতে যায়। মানিকের বাড়ির কাজের লোক মফিজ ও কুট্টিকে রাজাকাররা বেঁধে ফেলে। বাড়ি লুট করার পর সাঈদী, দানেশ মোল্লা ও সেকান্দার শিকদার—এ তিনজন কেরোসিন ঢেলে মানিকের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন। পরে মফিজ ও কুট্টিকে নিয়ে রাজাকাররা পারেরহাটে তাদের ক্যাম্পে যেতে থাকে। পথে সাঈদীর ইশারায় পাকিস্তানি সেনারা কুট্টিকে গুলি করে হত্যা করে।
সাঈদীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের চতুর্থ সাক্ষী সুলতান আহমেদ হাওলাদার, ষষ্ঠ সাক্ষী মানিক পসারি, সপ্তম সাক্ষী মফিজউদ্দিন পসারি ও দশম সাক্ষী বাসুদেব মিস্ত্রী তাঁদের জবানবন্দিতে প্রায় একই কথা বলেছিলেন।
জবানবন্দি শেষ হলে সাক্ষী জলিলকে জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী মিজানুল ইসলাম। তিনি জানতে চান, মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় জলিলের নাম আছে কি না। জবাবে জলিল ‘না’ বললে মিজানুল বলেন, পিরোজপুরের সাংসদ এ কে এম এ আউয়াল মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় তাঁর নাম অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব করেছেন কি না। জবাবে জলিল বলেন, তিনি নিজেই এই আবেদন করেছেন।
বেলা দুইটার দিকে এক ঘণ্টার বিরতির পর ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম আবার শুরু হয়। এ সময় মিজানুলের এক প্রশ্নের জবাবে সাক্ষী বলেন, ইউনুস মুন্সীর মেয়েকে বিয়ে করার পর থেকে তিনি সাঈদীকে চেনেন। পারেরহাট বাজারের দক্ষিণ মাথায় বটগাছের সামনে সাঈদী ফুটপাতের ওপর দোকানদারি করতেন। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এক বছর ধরে তিনি সরকারের ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্পের সদস্য হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছেন।
এরপর মিজানুল বলেন, সাক্ষীর প্রথম স্ত্রীর নাম সখিনা, দ্বিতীয় স্ত্রী গোলেনূর ও তৃতীয় স্ত্রী ফিরোজা। সাক্ষী এতে ‘হ্যাঁ’ সূচক উত্তর দিলে মিজানুল বলেন, দ্বিতীয় স্ত্রী গোলেনূরকে নির্যাতন করায় এবং তাঁর কাছে যৌতুক দাবি করায় গোলেনূর যৌতুক নিরোধ আইনের ৪ ধারায় জলিলের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় জলিল আপসনামায় স্বাক্ষর করে মামলা থেকে অব্যাহতি পান। এ সময় সাক্ষী বলেন, গোলেনূর তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে মামলা করেছিলেন। পরে মিজানুল বলেন, ১৯৯০ সালের ১৪ নভেম্বর স্ত্রী গোলেনূরের গলায় ছুরি দিয়ে পোঁচ দেওয়ার অভিযোগে জলিলের শাশুড়ি ফৌজদারি কার্যবিধির ৩০৭ ধারায় একটি মামলা করেছিলেন। ওই মামলায় জলিল সাত মাস হাজত খেটেছেন। এ সময় জলিল বলেন, এ মামলাও মিথ্যা অভিযোগে করা হয়েছিল। পরে মিজানুল আরও বলেন, ১৯৯১ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি জলিল তাঁর স্ত্রী, শ্যালক, শ্বশুর-শাশুড়ি ও ভায়রাকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেছিলেন। ওই মামলায় জলিল পিরোজপুর আদালতে শপথ নিয়ে জবানবন্দিও দিয়েছেন। আদালত পিরোজপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে বিষয়টি তদন্তের জন্য পাঠান। তবে পুলিশ পরে ওই মামলার অভিযোগ মিথ্যা বলে প্রতিবেদন দেয়।
এরপর জলিলকে জেরা করেন আইনজীবী কফিলউদ্দিন চৌধুরী ও মনজুর আহমেদ আনসারী।
শুরুতে নিজামীকে এজলাসে আনা হলে ট্রাইব্যুনাল আদেশ দিয়ে বলেন, নিজামীর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ, তদন্ত প্রতিবেদন ও আনুষঙ্গিক নথিপত্র পর্যালোচনা করে প্রাথমিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ জন্য ট্রাইব্যুনাল তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেন। ট্রাইব্যুনাল ১২ ফেব্রুয়ারি তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য করেন।
এরপর গোলাম আযমের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা খারিজ চেয়ে করা আবেদনের শুনানি হয়। ট্রাইব্যুনাল আবেদন খারিজ করে আদেশ দিয়ে বলেন, আনুষ্ঠানিক অভিযোগ অগোছালোভাবে প্রস্তুত করায় এটি সুবিন্যস্তভাবে উপস্থাপনের জন্য রাষ্ট্রপক্ষকে ফেরত দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গোলাম আযমের বিরুদ্ধে প্রাথমিক অভিযোগ পাওয়া যায়নি—এমন কথা ট্রাইব্যুনাল বলেননি। অভিযোগ পুনর্দাখিলের জন্য ট্রাইব্যুনাল তাঁর অন্তর্নিহিত ক্ষমতা প্রয়োগ করেছেন।
একই আদেশে বলা হয়, পুনর্দাখিল করা আনুষ্ঠানিক অভিযোগ, তদন্ত প্রতিবেদন ও আনুষঙ্গিক নথি পর্যালোচনা করে গোলাম আযমের বিরুদ্ধে প্রাথমিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় ট্রাইব্যুনাল গোলাম আযমের আইনজীবী আবদুর রাজ্জাকের কাছে জানতে চান, তিনি গোলাম আযমকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করতে পারবেন কি না। আইনজীবী এতে সম্মতি জানালে ট্রাইব্যুনাল আদেশে বলেন, ১১ জানুয়ারি গোলাম আযমকে তাঁর আইনজীবী ট্রাইব্যুনালে হাজির করবেন। তবে ওই দিন হাজির না হলে ট্রাইব্যুনাল গোলাম আযমের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করবেন।
সাঈদীর বিরুদ্ধে সাক্ষীর জবানবন্দি ও জেরা: দুপুর পৌনে ১২টার দিকে সাঈদীর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দি দেন আবদুল জলিল শেখ। তিনি বলেন, একাত্তরের ৮ মে সাঈদী, দানেশ মোল্লা, সেকান্দার শিকদারসহ আরও কয়েকজন রাজাকার ও ১০-১৫ জন পাকিস্তানি সেনা পিরোজপুরের চিথোলিয়া গ্রামে মনিক পসারির বাড়িতে যায়। মানিকের বাড়ির কাজের লোক মফিজ ও কুট্টিকে রাজাকাররা বেঁধে ফেলে। বাড়ি লুট করার পর সাঈদী, দানেশ মোল্লা ও সেকান্দার শিকদার—এ তিনজন কেরোসিন ঢেলে মানিকের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন। পরে মফিজ ও কুট্টিকে নিয়ে রাজাকাররা পারেরহাটে তাদের ক্যাম্পে যেতে থাকে। পথে সাঈদীর ইশারায় পাকিস্তানি সেনারা কুট্টিকে গুলি করে হত্যা করে।
সাঈদীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের চতুর্থ সাক্ষী সুলতান আহমেদ হাওলাদার, ষষ্ঠ সাক্ষী মানিক পসারি, সপ্তম সাক্ষী মফিজউদ্দিন পসারি ও দশম সাক্ষী বাসুদেব মিস্ত্রী তাঁদের জবানবন্দিতে প্রায় একই কথা বলেছিলেন।
জবানবন্দি শেষ হলে সাক্ষী জলিলকে জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী মিজানুল ইসলাম। তিনি জানতে চান, মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় জলিলের নাম আছে কি না। জবাবে জলিল ‘না’ বললে মিজানুল বলেন, পিরোজপুরের সাংসদ এ কে এম এ আউয়াল মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় তাঁর নাম অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব করেছেন কি না। জবাবে জলিল বলেন, তিনি নিজেই এই আবেদন করেছেন।
বেলা দুইটার দিকে এক ঘণ্টার বিরতির পর ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম আবার শুরু হয়। এ সময় মিজানুলের এক প্রশ্নের জবাবে সাক্ষী বলেন, ইউনুস মুন্সীর মেয়েকে বিয়ে করার পর থেকে তিনি সাঈদীকে চেনেন। পারেরহাট বাজারের দক্ষিণ মাথায় বটগাছের সামনে সাঈদী ফুটপাতের ওপর দোকানদারি করতেন। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এক বছর ধরে তিনি সরকারের ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্পের সদস্য হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছেন।
এরপর মিজানুল বলেন, সাক্ষীর প্রথম স্ত্রীর নাম সখিনা, দ্বিতীয় স্ত্রী গোলেনূর ও তৃতীয় স্ত্রী ফিরোজা। সাক্ষী এতে ‘হ্যাঁ’ সূচক উত্তর দিলে মিজানুল বলেন, দ্বিতীয় স্ত্রী গোলেনূরকে নির্যাতন করায় এবং তাঁর কাছে যৌতুক দাবি করায় গোলেনূর যৌতুক নিরোধ আইনের ৪ ধারায় জলিলের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় জলিল আপসনামায় স্বাক্ষর করে মামলা থেকে অব্যাহতি পান। এ সময় সাক্ষী বলেন, গোলেনূর তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে মামলা করেছিলেন। পরে মিজানুল বলেন, ১৯৯০ সালের ১৪ নভেম্বর স্ত্রী গোলেনূরের গলায় ছুরি দিয়ে পোঁচ দেওয়ার অভিযোগে জলিলের শাশুড়ি ফৌজদারি কার্যবিধির ৩০৭ ধারায় একটি মামলা করেছিলেন। ওই মামলায় জলিল সাত মাস হাজত খেটেছেন। এ সময় জলিল বলেন, এ মামলাও মিথ্যা অভিযোগে করা হয়েছিল। পরে মিজানুল আরও বলেন, ১৯৯১ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি জলিল তাঁর স্ত্রী, শ্যালক, শ্বশুর-শাশুড়ি ও ভায়রাকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেছিলেন। ওই মামলায় জলিল পিরোজপুর আদালতে শপথ নিয়ে জবানবন্দিও দিয়েছেন। আদালত পিরোজপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে বিষয়টি তদন্তের জন্য পাঠান। তবে পুলিশ পরে ওই মামলার অভিযোগ মিথ্যা বলে প্রতিবেদন দেয়।
এরপর জলিলকে জেরা করেন আইনজীবী কফিলউদ্দিন চৌধুরী ও মনজুর আহমেদ আনসারী।
No comments