সরকারি কর্মচারীদের জন্য নতুন পে-স্কেলঃ বেতন বৈষম্য কমেনি
প্রায় দু’বছর ধরে হচ্ছে-হবে করতে করতে অবশেষে গত বুধবার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নতুন বেতন কাঠামো ঘোষণা করা হয়েছে। সপ্তম বেতন কমিশনের সুপারিশ এবং জুডিশিয়াল সার্ভিস পে-কমিশনের সুপারিশ পর্যালোচনা শেষে ওইদিন মন্ত্রিসভার বৈঠকে পে-স্কেল চূড়ান্ত করা হয়। সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত নতুন বেতন স্কেল ঘোষণা করেন।
নতুন স্কেলে ২০টি গ্রেডের মধ্যে সর্বোচ্চ ৪০ হাজার টাকা এবং সর্বনিম্ন ৪ হাজার ১০০ টাকা মূল বেতন নির্ধারণ করা হয়েছে। বেসামরিক, সামরিক ও বিচার বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নতুন কাঠামো অনুযায়ী বেতনভাতা পাবেন। নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রের বিধান ও সুপারিশ অনুসারে বিচার বিভাগ ও সামরিক বাহিনীতে কর্মরতরা পাবেন বাড়তি ভাতা। এমপিওভুক্ত শিক্ষকরাও আসবেন নতুন বেতন স্কেলের আওতায়। নতুন স্কেল অনুযায়ী বেতন বৃদ্ধির হার ৫০ থেকে ৭৪ শতাংশ। নতুন পে-স্কেল বাস্তবায়িত হবে দুই ধাপে। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা চলতি মাস থেকে নতুন হারে মূল বেতন তো পাবেনই, সেই সঙ্গে গত জুলাই মাস থেকে এ পর্যন্ত বকেয়াও পাবেন। অর্থাত্ নতুন পে-স্কেলের মূল বেতন কার্যকর হচ্ছে গত জুলাই থেকে। তবে অন্যান্য ভাতা নতুন পে-স্কেল অনুযায়ী পাওয়া শুরু হবে আগামী জুলাই থেকে। এতে সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য চিকিত্সা ভাতা মাসিক ৫০০ থেকে বাড়িয়ে ৭০০ টাকা করা হয়েছে। অবসরপ্রাপ্তদের মাসিক পেনশন ৪০ শতাংশ হারে বেড়েছে। আগে স্বামী মারা গেলে স্ত্রী পেনশন পেতেন। এখন থেকে স্ত্রী মারা গেলে স্বামীও পেনশন পাবেন। সব মিলিয়ে নতুন পে-স্কেল কার্যকর হওয়ায় সরকারের বাড়তি খরচ হবে ৬ হাজার ২২২ কোটি টাকা।
নতুন বেতন স্কেল বাস্তবায়নের ফলে দেরিতে হলেও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মাচরীদের জীবনযাত্রার ব্যয় মেটানোর ক্ষেত্রে কিছুটা সুরাহা হয়েছে। তবে বাস্তবে এতে বিপর্যয় খানিকটা লাঘব হলেও ‘সুখী পরিবার’ গড়ে তোলা অসম্ভব। বিগত পে-স্কেল চালু হওয়ার পর থেকে নতুন পে-স্কেল কার্যকর হওয়া পর্যন্ত সময়ের ব্যবধানে জীবনযাত্রার অপরিহার্য ব্যয় এতটাই বেড়ে গেছে যে, তাতে সুখ এবং শান্তিকে একসঙ্গে করায়ত্ত করা অসম্ভব। ১ এর তুলনায় ২ অবশ্যই দ্বিগুণ বেশি। কিন্তু ২ দিয়ে কিছুতেই ৪-এর খাই মেটানো যায় না। তারপরও অন্তত কিছু সময়ের জন্য নুন আর পান্তা দুটোই ঘরে থাকে বলে নতুন বেতন স্কেল এক ধরনের আনন্দের আবহ সৃষ্টি করে। তবে আহ্লাদে আটখানা হওয়ার আগেই সুখের এ আবেশ ভেঙে খানখান হয়ে যায়। বর্তমান ক্ষেত্রেও তা হতে বাধ্য। মুহিত সাহেব বলেছেন বটে, নতুন বেতন স্কেলের প্রভাব বাজারদরের ওপর পড়বে না। কিন্তু মন্ত্রীরা যা বলেন বাস্তবে এর উল্টোটাই ঘটতে দেখে আসছি আমরা গত প্রায় তিন বছর ধরে।
নতুন পে-স্কেল এবং আসন্ন ঈদুল আজহার চাপের মুখে বাজারের ভারসাম্য বজায় রাখা কঠিন হবে। এ কঠিন কাজটি সরকার যদি ঠিকমতো করতে পারে তবে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তের মানুষ কিছুটা হলেও হাঁফ ছেড়ে বাঁচবে। কিন্তু তা করা না গেলে পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে ভাবতেও ভয় লাগে। নতুন পে-স্কেল এবং ঈদুল আজহার যুগলবন্দিতে যদি এমনিতে আকাশছোঁয়া বাজারদর মহাশূন্যের যাত্রী হয়ে ওঠে, তবে সবচেয়ে বেশি বেকায়দায় পড়বে বেসরকারি ও অসংগঠিত খাতে কর্মরত সীমিত আয়ের মানুষেরা। যারা পে-স্কেলের সুবিধা পেয়েছেন তাদের মধ্যেও বৈষম্যজনিত বঞ্চনাবোধ সক্রিয় হতে বাধ্য। যার ২ হাজার টাকা বেতনভাতা বেড়েছে তিনি যখন দেখবেন তার ‘সাহেবের’ বেড়েছে প্রায় ২৫ হাজার টাকা, তখন কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা লাগতেই পারে। তরপরও সকালের নাশতা বিকালে পরিবেশনের মতো শেষ পর্যন্ত নতুন পে-স্কেল কার্যকর হওয়ায় আমরা বুঝলাম—সবুরে মেওয়া ফলে কথাটা একেবারে মিথ্যা নয়।
নতুন বেতন স্কেল বাস্তবায়নের ফলে দেরিতে হলেও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মাচরীদের জীবনযাত্রার ব্যয় মেটানোর ক্ষেত্রে কিছুটা সুরাহা হয়েছে। তবে বাস্তবে এতে বিপর্যয় খানিকটা লাঘব হলেও ‘সুখী পরিবার’ গড়ে তোলা অসম্ভব। বিগত পে-স্কেল চালু হওয়ার পর থেকে নতুন পে-স্কেল কার্যকর হওয়া পর্যন্ত সময়ের ব্যবধানে জীবনযাত্রার অপরিহার্য ব্যয় এতটাই বেড়ে গেছে যে, তাতে সুখ এবং শান্তিকে একসঙ্গে করায়ত্ত করা অসম্ভব। ১ এর তুলনায় ২ অবশ্যই দ্বিগুণ বেশি। কিন্তু ২ দিয়ে কিছুতেই ৪-এর খাই মেটানো যায় না। তারপরও অন্তত কিছু সময়ের জন্য নুন আর পান্তা দুটোই ঘরে থাকে বলে নতুন বেতন স্কেল এক ধরনের আনন্দের আবহ সৃষ্টি করে। তবে আহ্লাদে আটখানা হওয়ার আগেই সুখের এ আবেশ ভেঙে খানখান হয়ে যায়। বর্তমান ক্ষেত্রেও তা হতে বাধ্য। মুহিত সাহেব বলেছেন বটে, নতুন বেতন স্কেলের প্রভাব বাজারদরের ওপর পড়বে না। কিন্তু মন্ত্রীরা যা বলেন বাস্তবে এর উল্টোটাই ঘটতে দেখে আসছি আমরা গত প্রায় তিন বছর ধরে।
নতুন পে-স্কেল এবং আসন্ন ঈদুল আজহার চাপের মুখে বাজারের ভারসাম্য বজায় রাখা কঠিন হবে। এ কঠিন কাজটি সরকার যদি ঠিকমতো করতে পারে তবে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তের মানুষ কিছুটা হলেও হাঁফ ছেড়ে বাঁচবে। কিন্তু তা করা না গেলে পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে ভাবতেও ভয় লাগে। নতুন পে-স্কেল এবং ঈদুল আজহার যুগলবন্দিতে যদি এমনিতে আকাশছোঁয়া বাজারদর মহাশূন্যের যাত্রী হয়ে ওঠে, তবে সবচেয়ে বেশি বেকায়দায় পড়বে বেসরকারি ও অসংগঠিত খাতে কর্মরত সীমিত আয়ের মানুষেরা। যারা পে-স্কেলের সুবিধা পেয়েছেন তাদের মধ্যেও বৈষম্যজনিত বঞ্চনাবোধ সক্রিয় হতে বাধ্য। যার ২ হাজার টাকা বেতনভাতা বেড়েছে তিনি যখন দেখবেন তার ‘সাহেবের’ বেড়েছে প্রায় ২৫ হাজার টাকা, তখন কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা লাগতেই পারে। তরপরও সকালের নাশতা বিকালে পরিবেশনের মতো শেষ পর্যন্ত নতুন পে-স্কেল কার্যকর হওয়ায় আমরা বুঝলাম—সবুরে মেওয়া ফলে কথাটা একেবারে মিথ্যা নয়।
No comments