আজ বিচিত্র মানুষের দিন

কটু ভিন্ন, অসাধারণ বা ব্যতিক্রম কিছুর প্রতি মানুষের দুর্নিবার আকর্ষণ সহজাত। আর সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে মানুষ একটু আলাদা বা নতুন এমন কিছু করতে চায়, যা অন্যদের আকৃষ্ট করে। তবে সমাজের এমন জ্ঞানী, সৃষ্টিশীল এবং দেশপ্রেমিক মানুষের সংখ্যা খুবই কম। তাদের কৃতকর্ম আমাদের আকর্ষণ করে। ভালো কাজের প্রতি উৎসাহ জোগায়। যে মানুষটি অনেকের চেয়ে ভিন্ন, অসাধারণ; জীবনের স্বাভাবিক গতিধারার চেয়ে একটু আলাদা, কিছু অদ্ভুত বা বিশেষ


বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন, ব্যতিক্রম কিছু অভ্যাস প্রভৃতি স্বভাব বা আচরণবিশিষ্ট, তাকেই বিচিত্র মানুষ বলা যায়। এমন মানুষদের জন্য একটি বিশেষ দিন থাকবে না, তা কি হয়? আছে এবং তা আজই। অর্থাৎ ১০ জানুয়ারি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিচিত্র বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ব্যক্তিদের সম্মানার্থে দিনটি পালন করা হয় ঘটা করেই। মানুষের এই বিচিত্রতা অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভালো অথবা মন্দ হতে পারে। তবে আজকের দিনটি পালিত হচ্ছে কেবল ভালো অর্থাৎ কল্যাণার্থে নিয়োজিত অভিজ্ঞতালব্ধ ও প্রকৃত জ্ঞানীদের জন্য। কাজেই বিচিত্র সব মানুষকে আজ বেশি করে এবং বিশেষভাবে সম্মান জানানোর দিন। সে অর্থে এটাকে সাধু-সন্ন্যাসীদের দিনও বলা যায়।
দিনটি উদযাপনের সঙ্গে জড়িত উদ্যোক্তারা অবশ্য মনে করেন, অসাধারণ এসব মানুষদের সম্মানিত করা বা বিশেষ এ দিনে স্মরণ করা হলে সমাজের জন্য ক্ষতিকর বা মন্দ অর্থে বিচিত্র ব্যক্তিরা নিজেদের সংশোধন করতে বা ভালো হতে অনুপ্রাণিত হবে। সমাজের জন্য কল্যাণকর মানুষের সংখ্যাও বাড়বে এবং এভাবে রাষ্ট্রীয় বা জাতীয় পর্যায়ে সুফল বয়ে আনবে। যদিও 'বিচিত্র মানুষের দিন' কীভাবে এলো বা ঠিক কবে থেকে বা কারা প্রথম দিবসটি পালনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছিল, এ নিয়ে সঠিক কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। তবে অতীতের কিছু বিষয় থেকে দিবসটি উদযাপনের প্রমাণ মেলে। ইউরোপের কয়েকটি দেশে বেশ কয়েক বছর আগের বর্ষপঞ্জি ও শুভেচ্ছা কার্ডে এ দিবসটির উল্লেখ পাওয়া যায়। এ থেকে অনুমান করা যায়, মানুষের জন্য অর্থাৎ অন্যের জন্য নিবেদিত কিছু নিঃস্বার্থবান, জ্ঞানী ও উৎসাহী ব্যক্তির উদ্যোগেই এমন একটি বিশেষ দিবস পালনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছিল। ভালো কাজের অবদান বা বিশেষ খ্যাতির জন্য বরেণ্য ব্যক্তিদের সম্মান জানানোর রীতি বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই আছে। কিন্তু আমাদের আশপাশেই কিছু অসাধারণ মানুষ আছেন, যাদের কথা অনেকেই জানে না। না জানার ফলে তাদের স্মরণও করা হয় না। তারা থাকেন অবহেলিত। এই দিনটি বলা যায়, তাদের জন্যই। দিনটি পালিত হয় নানা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। কীর্তিমান ব্যক্তিদের ভালো গুণগুলো স্মরণ এবং তা প্রচারের ব্যবস্থা করা হয়। এ ছাড়া মহান ও জ্ঞানী ব্যক্তিদের উপদেশবাণী সংবলিত কার্ডও বিতরণ করা যায়। দিনটি উপলক্ষে যে কেউ তার পছন্দের বিচিত্র ব্যক্তিকে শুভেচ্ছা জানিয়ে থাকে। এভাবে প্রত্যেকে যদি তার পছন্দের মানুষের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে, তাহলে অনেক ভালো মানুষকেই শ্রদ্ধা ও সম্মান জানানো সম্ভব। আর এ বিশেষ দিনের মাধ্যমে সে সুযোগটা ঘটাতে পারে।
দিনটি উপলক্ষে শিশুদের মাঝেও একটা উদ্দীপনা সৃষ্টি করা যায়। কারণ, তারাই আগামী নাগরিক। এ উপলক্ষে অনেক দেশে সুন্দর বাণী সংবলিত ফেস্টুন ও র‌্যালির আয়োজন করা হয়। বিচিত্র মানুষের জীবনধর্মী চলচ্চিত্র প্রদর্শনের ব্যবস্থাও থাকে। উদ্যোক্তারা এই দিনে পছন্দের বিচিত্র মানুষকে নিয়ে কবিতা, গান, গল্প, বা প্রবন্ধ রচনার জন্যও লেখকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে থাকেন।
এম.এ.ওহাব

No comments

Powered by Blogger.