আফগানদের আমেরিকা বিদ্বেষ বাড়ছে

শ বছর আগে হাজি শাহজাদাকে আফগানিস্তানে তার নিজবাড়ি থেকে ভোরে আটক করেছিল মার্কিন সেনারা। এরপরই তাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় কিউবার গুয়ানতানামো বের কারাগারে। ১০ বছর পর তিনি ফিরে আসেন নিজ দেশে। সঙ্গে নিয়ে আসেন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এক রাশ ঘৃণা। প্রতিজ্ঞা করলেন, এর প্রতিশোধ তিনি নেবেন। আমেরিকানদের মনেপ্রাণে ঘৃণা করেন শাহজাদা। সুযোগ পেলেই কোনো না কোনো আমেরিকানকে হত্যা করবেন তিনি। ২০০১ সালে আফগানিস্তানে


আগ্রাসনের পর একইভাবে আখতার মাহমুদকে আটক করে মার্কিন সেনারা। পাঠানো হয় গুয়ানতানামো কারাগারে। শাহজাদার মতো তিনিও একই তিক্ত অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছিলেন।
এ দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তারা তালেবান সদস্য ছিলেন। এই অপরাধেই তারা গুয়ানতানামোতে বন্দি। এ বিষয়ে শাহজাদা বলেন, 'হঠাৎ একদিন আমাকে একটি পত্র দিয়ে জানানো হলো আমি নিরপরাধ। ইতিমধ্যে গুয়ানতানামোতে ৪ বছর কাটিয়ে দিয়েছি। আমি যদি কখনও সুযোগ পাই তবে অবশ্যই প্রতিশোধ নেব, আমেরিকানরা ভালো মানুষ নয়, তারা কখনোই আমাদের বন্ধু হতে পারে না'। তাকে আটক করা হয়েছিল তালেবান নেতা মোল্লা কারিমুল্লাহ সন্দেহে। উল্লেখ্য, মোল্লা কারিমুল্লাহ সন্দেহে আরও ৪ জনকে আটক করে মার্কিন বাহিনী। 'গুয়ানতানামোর কারণেই আফগানিস্তানে মার্কিনিদের বিরুদ্ধে হামলা বৃদ্ধি পাচ্ছে_ বললেন বিশিষ্ট আফগান লেখক মানবাধিকার কর্মী ওয়াহিদ মুজদা। তিনি বলেন, আফগানিস্তান এবং পাকিস্তানি মার্কিনিদের বিরুদ্ধে হামলার অন্যতম কারণ গুয়ানতানামো। সেখানে অনেকেই থেকেছে যারা তালেবান কিংবা আল কায়দার সদস্য ছিল না। তারা ফিরে এসে মার্কিনবিরোধী প্রচার চালিয়েছে। তালেবানে যোগ দিয়েছে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য। তালেবানদের সঙ্গে শান্তি আলোচনা দ্রুততর করতে এবং তাদের বিশ্বাস অর্জন করতে গুয়ানতানামো তালেবান সদস্যদের ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। তবে তাদের তৃতীয় কোনো রাষ্ট্রে পাঠানোর পরিকল্পনা করেছে। যদিও প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই দাবি করেছেন, তৃতীয় কোনো দেশে নয়, 'আফগানিস্তানের গুয়ানতানামো খ্যাত' বাগরাম কারাগারে তাদের ফেরত পাঠানো হোক।

No comments

Powered by Blogger.