জেএসসির ফল বিশ্লেষণ-ছাত্রীরা অংশগ্রহণে এগিয়ে, ফলাফলে ছাত্ররা by মোশতাক আহমেদ
জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষায় এবার ছাত্রদের চেয়ে ছাত্রীদের সংখ্যা সোয়া লাখ বেশি ছিল। এ জন্য মোট উত্তীর্ণ ছাত্রীর সংখ্যা বেশি। তবে পাসের হার এবং জিপিএ-৫ পাওয়ার দিক থেকে ছাত্ররা এগিয়ে আছে। শিক্ষাসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, আর্থসামাজিক সমস্যা, নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন কারণে ছাত্রীদের খারাপ করার কারণ হতে পারে। এ জন্য এ বিষয়গুলো গভীরভাবে ভাবতে হবে। তাঁদের ধারণা, উপবৃত্তি, বিনা বেতনে
পড়ার সুযোগসহ বিভিন্ন কারণে বিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রদের চেয়ে ছাত্রীদের অংশগ্রহণ বেড়েছে। এবার জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষায় মোট ১৭ লাখ ৯৯ হাজার ৯৪৭ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। এর মধ্যে ছাত্রী নয় লাখ ৬২ হাজার ৭৭৫ জন। আর ছাত্র আট লাখ ৩৭ হাজার ১৭২ জন।
প্রকাশিত ফলাফল অনুযায়ী, ছাত্রদের পাসের হার ৮৫ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। আর ছাত্রীদের পাসের হার ৮২ দশমিক ৫৩ শতাংশ।
এবার দুই পরীক্ষায় মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩০ হাজার ৮৫২ জন ছাত্রছাত্রী। এর মধ্যে ছাত্র ১৫ হাজার ৫৩৪ জন এবং ছাত্রী ১৫ হাজার ৩১৮ জন।
বোর্ডগুলোর আলাদা ফল বিশ্লেষণেও দেখা যায়, ছাত্ররা এগিয়ে আছে। শুধু বরিশাল বোর্ডে পাসের হার ও জিপিএ-৫ পাওয়ার দিক থেকে ছাত্রীরা এগিয়ে আছে। এই বোর্ডে ছাত্রীদের পাসের হার ৯৩ দশমিক ৪৯ এবং ছাত্রদের ৯২ দশমিক ৭৫ শতাংশ। ছাত্রীদের জিপিএ-৫ পাওয়ার সংখ্যা ৯৫০ এবং ছাত্রদের এই সংখ্যা ৯৩৬।
ঢাকা বোর্ডে ছাত্রদের পাসের হার ৮২ দশমিক ৯৭ শতাংশ। আর ছাত্রীদের পাসের হার ৮০ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। তবে এই বোর্ডে জিপিএ-৫ ছাত্রীরাই বেশি পেয়েছে। মোট ছয় হাজার ৪৪৮ ছাত্রী এবং পাঁচ হাজার ৫৭৩ ছাত্র জিপিএ-৫ পেয়েছে।
রাজশাহী বোর্ডে ছাত্রদের পাসের হার ৮০ দশমিক ৭০ শতাংশ, আর ছাত্রীদের পাসের হার ৭৯ দশমিক ১০ শতাংশ। দুই হাজার ২৯০ ছাত্র এবং এক হাজার ৯২২ জন ছাত্রী জিপিএ-৫ পেয়েছে।
কুমিল্লা, যশোর, চট্টগ্রাম, সিলেট ও দিনাজপুর বোর্ডে পাসের হারে ছাত্ররা এগিয়ে আছে।
মাদ্রাসাতেও এগিয়ে থাকা ছাত্রদের পাসের হার ৯০ দশমিক ৮৩ শতাংশ ও ছাত্রীদের ৮৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ। আর জিপিএ-৫ ছাত্ররা পেয়েছে ৬৩৯ ও ছাত্রীরা ৩৭৫ জন।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই স্তরে ছাত্রীরা কেন পিছিয়ে গেল, সেটা এখনো ভালো করে বুঝতে পারছি না। একটা হতে পারে আর্থসামাজিক অবস্থা। আরেকটা হতে পারে, এই বয়সে ইভ টিজিংসহ নানা কারণে ছাত্রীরা একধরনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে পারে। অভিভাবকেরা হয়তো বিদ্যালয় ও প্রাইভেট পড়াতে অতটা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না। তবে এটা গুরুত্ব দিয়ে ভাবতে হবে।’
বৃত্তেই ঘুরছে পরীক্ষার ফল: জেএসসি এবং জেডিসি পরীক্ষার ফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, শীর্ষে অবস্থান করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে প্রায় সবগুলোই রাজধানীসহ দেশের বড় শহরে অবস্থিত। পরিচিত বিদ্যালয়গুলোর নামই সেরাদের তালিকায় উঠে আসছে বারবার।
ঢাকা বোর্ডে শীর্ষস্থানে এসেছে রাজউক উত্তরা মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ। দ্বিতীয়টিও মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ। বোর্ডের সেরা ২০টি প্রতিষ্ঠানের ১২টিই ঢাকায় অবস্থিত। অন্যগুলোর অবস্থানও শহরাঞ্চলে। এর মধ্যে অবশ্য বরাবরের মতো ভালো করা ক্যাডেট কলেজগুলোর নামও রয়েছে।
রাশেদা কে চৌধূরী বলেন, যাঁরা শিক্ষার্থীদের পেছনে বেশি বিনিয়োগ করতে পারছেন, তারাই ভালো করছে। শহরের অভিভাবকেরা তাঁদের সন্তানদের প্রাইভেট পড়ানোসহ যেভাবে খরচ করতে পারছেন, গ্রামের অভিভাবকেরা সেটা পারছেন না।
এই ফলাফলে আরেকটি বিষয় স্পষ্ট হয়েছে যে ইংরেজি ও গণিতে ভালো করলে সামগ্রিক পাসের হার বেড়ে যায়। তিনটি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানরা একই ধরনের মত দেন। তবে তাঁরা বলছেন, এর পাশাপাশি শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সচেতনতা ও শিক্ষা প্রশাসনের নানামুখী উদ্যোগের কারণে ফল ভালো হচ্ছে।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ফাহিমা খাতুন বলেন, এবার ইংরেজি ও গণিতে পাসের হার ভালো হওয়ায় পাসের হারে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এবার ঢাকা বোর্ডে ইংরেজিতে গড় পাসের হার প্রায় ৮৫ শতাংশ ও গণিতে পাসের হার প্রায় ৮৭ শতাংশ। উল্লেখ্য, এই বোর্ডে গড় পাসের হার ৮১ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
কুমিল্লা বোর্ডের চেয়ারম্যান কুণ্ডু গোপী দাস বলেন, নানামুখী চেষ্টার পাশাপাশি ইংরেজি ও গণিতে পাসের হার বৃদ্ধি পাওয়ায় তা পাসের হারে প্রভাব ফেলেছে।
প্রকাশিত ফলাফল অনুযায়ী, ছাত্রদের পাসের হার ৮৫ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। আর ছাত্রীদের পাসের হার ৮২ দশমিক ৫৩ শতাংশ।
এবার দুই পরীক্ষায় মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩০ হাজার ৮৫২ জন ছাত্রছাত্রী। এর মধ্যে ছাত্র ১৫ হাজার ৫৩৪ জন এবং ছাত্রী ১৫ হাজার ৩১৮ জন।
বোর্ডগুলোর আলাদা ফল বিশ্লেষণেও দেখা যায়, ছাত্ররা এগিয়ে আছে। শুধু বরিশাল বোর্ডে পাসের হার ও জিপিএ-৫ পাওয়ার দিক থেকে ছাত্রীরা এগিয়ে আছে। এই বোর্ডে ছাত্রীদের পাসের হার ৯৩ দশমিক ৪৯ এবং ছাত্রদের ৯২ দশমিক ৭৫ শতাংশ। ছাত্রীদের জিপিএ-৫ পাওয়ার সংখ্যা ৯৫০ এবং ছাত্রদের এই সংখ্যা ৯৩৬।
ঢাকা বোর্ডে ছাত্রদের পাসের হার ৮২ দশমিক ৯৭ শতাংশ। আর ছাত্রীদের পাসের হার ৮০ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। তবে এই বোর্ডে জিপিএ-৫ ছাত্রীরাই বেশি পেয়েছে। মোট ছয় হাজার ৪৪৮ ছাত্রী এবং পাঁচ হাজার ৫৭৩ ছাত্র জিপিএ-৫ পেয়েছে।
রাজশাহী বোর্ডে ছাত্রদের পাসের হার ৮০ দশমিক ৭০ শতাংশ, আর ছাত্রীদের পাসের হার ৭৯ দশমিক ১০ শতাংশ। দুই হাজার ২৯০ ছাত্র এবং এক হাজার ৯২২ জন ছাত্রী জিপিএ-৫ পেয়েছে।
কুমিল্লা, যশোর, চট্টগ্রাম, সিলেট ও দিনাজপুর বোর্ডে পাসের হারে ছাত্ররা এগিয়ে আছে।
মাদ্রাসাতেও এগিয়ে থাকা ছাত্রদের পাসের হার ৯০ দশমিক ৮৩ শতাংশ ও ছাত্রীদের ৮৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ। আর জিপিএ-৫ ছাত্ররা পেয়েছে ৬৩৯ ও ছাত্রীরা ৩৭৫ জন।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই স্তরে ছাত্রীরা কেন পিছিয়ে গেল, সেটা এখনো ভালো করে বুঝতে পারছি না। একটা হতে পারে আর্থসামাজিক অবস্থা। আরেকটা হতে পারে, এই বয়সে ইভ টিজিংসহ নানা কারণে ছাত্রীরা একধরনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে পারে। অভিভাবকেরা হয়তো বিদ্যালয় ও প্রাইভেট পড়াতে অতটা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না। তবে এটা গুরুত্ব দিয়ে ভাবতে হবে।’
বৃত্তেই ঘুরছে পরীক্ষার ফল: জেএসসি এবং জেডিসি পরীক্ষার ফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, শীর্ষে অবস্থান করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে প্রায় সবগুলোই রাজধানীসহ দেশের বড় শহরে অবস্থিত। পরিচিত বিদ্যালয়গুলোর নামই সেরাদের তালিকায় উঠে আসছে বারবার।
ঢাকা বোর্ডে শীর্ষস্থানে এসেছে রাজউক উত্তরা মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ। দ্বিতীয়টিও মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ। বোর্ডের সেরা ২০টি প্রতিষ্ঠানের ১২টিই ঢাকায় অবস্থিত। অন্যগুলোর অবস্থানও শহরাঞ্চলে। এর মধ্যে অবশ্য বরাবরের মতো ভালো করা ক্যাডেট কলেজগুলোর নামও রয়েছে।
রাশেদা কে চৌধূরী বলেন, যাঁরা শিক্ষার্থীদের পেছনে বেশি বিনিয়োগ করতে পারছেন, তারাই ভালো করছে। শহরের অভিভাবকেরা তাঁদের সন্তানদের প্রাইভেট পড়ানোসহ যেভাবে খরচ করতে পারছেন, গ্রামের অভিভাবকেরা সেটা পারছেন না।
এই ফলাফলে আরেকটি বিষয় স্পষ্ট হয়েছে যে ইংরেজি ও গণিতে ভালো করলে সামগ্রিক পাসের হার বেড়ে যায়। তিনটি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানরা একই ধরনের মত দেন। তবে তাঁরা বলছেন, এর পাশাপাশি শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সচেতনতা ও শিক্ষা প্রশাসনের নানামুখী উদ্যোগের কারণে ফল ভালো হচ্ছে।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ফাহিমা খাতুন বলেন, এবার ইংরেজি ও গণিতে পাসের হার ভালো হওয়ায় পাসের হারে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এবার ঢাকা বোর্ডে ইংরেজিতে গড় পাসের হার প্রায় ৮৫ শতাংশ ও গণিতে পাসের হার প্রায় ৮৭ শতাংশ। উল্লেখ্য, এই বোর্ডে গড় পাসের হার ৮১ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
কুমিল্লা বোর্ডের চেয়ারম্যান কুণ্ডু গোপী দাস বলেন, নানামুখী চেষ্টার পাশাপাশি ইংরেজি ও গণিতে পাসের হার বৃদ্ধি পাওয়ায় তা পাসের হারে প্রভাব ফেলেছে।
No comments