বগুড়া পৌর উচ্চ বিদ্যালয় বয়স হলো ১৬৭ by আমির খসরু সেলিম
পৌষের সকাল। কুয়াশার চাদর ছিঁড়ে উঁকি দেওয়ার প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছে সূর্যমামা। কিন্তু উত্তরের শীত তাতে কাটছে না মোটেও। এরই মধ্যে সরগরম হয়ে উঠছে বাংলা স্কুলের মাঠ। অ্যাসেম্বলিতে যোগ দেওয়ার জন্য সারি বেঁধে দাঁড়িয়ে পড়ছেন নানা বয়সী মানুষ। তাদের বয়স নয় থেকে ছাড়িয়ে গেছে নব্বইয়ের কোঠা। স্কুলের চলতি সময়ের ছাত্ররা নিয়ম মানতে অভ্যস্ত। কিন্তু পঞ্চাশ বছর আগের পড়ূয়ারাও এ সুযোগে ঝালিয়ে নিচ্ছেন স্কুলজীবনের মধুর স্মৃতি! বাধ্য ছাত্রের
মতোই তারা শীতের প্রকোপ উপেক্ষা করে যোগ দিয়েছেন এ বিশেষ আয়োজনে। ১৬৭ বছর পূর্ণ করল বগুড়া পৌর উচ্চ বিদ্যালয়। এটি 'বাংলা স্কুল' নামে বিখ্যাত। ১ জানুয়ারি ১৮৪৪ সালের সরকারি তথ্যানুযায়ী স্কুলটির প্রথম নাম ছিল 'মডেল বাঙ্গালা স্কুল'। বগুড়া শহরে প্রতিষ্ঠত প্রথম স্কুল হিসেবে এটি এখনও মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। ২৩ ডিসেম্বর রাত ১২টা ১ মিনিটে শব্দ উৎসবের মাধ্যমে শুরু হয় গৌরবের ১৬৭ বছর পূর্ণ করার উৎসব। সকালে প্রাক্তন ছাত্ররা শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা অর্পণ করেন। তারপর সবাই মিলে যোগ দেন অ্যাসেম্বলিতে। জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন ১৯৫১ ব্যাচের ছাত্র বাহাউদ্দিন। শপথবাক্য পাঠ করান ১৯৭২ ব্যাচের জাকিউল্লাহ আপেল। তারপর বয়সের সীমানা পেরিয়ে সবাই মিলে শরীরচর্চা সেরে গেয়ে ওঠেন জাতীয় সঙ্গীত। এরপর শুরু হয় শোভাযাত্রা। স্কুলের পুরনো-নতুন মিলিয়ে ২ হাজার ছাত্র আনন্দ আর উচ্ছ্বাস নিয়ে প্রদক্ষিণ করেন পুরো বগুড়া শহর। শোভাযাত্রার শোভা বাড়ায় অতিকায় জাতীয় পতাকা, ঘোড়ার গাড়ি। নানা রঙে বিচিত্র সাজেরও অভাব ছিল না। নতুনদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বয়সীরাও যোগ দেন পটকা আর আতশবাজি ফোটানোয়। দিনব্যাপী নানা আয়োজনের পর শুরু হয় স্মৃতিচারণ পর্ব। এর মধ্যে পৌর উচ্চ বিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট সূচনা করেন বগুড়া পৌরসভার মেয়র অ্যাডভোকেট একেএম মাহবুবর রহমান। বিকেল থেকে ধারাবাহিকভাবে হতে থাকে গুণীজন সম্মাননা প্রদান, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পর্ব। ১৬৭ বছরের কথা মাথায় রেখে র্যাফেল ড্রতেও রাখা হয় ১৬৭টি পুরস্কার।
উৎসব শেষে কথা হয় স্কুলের বর্তমান প্রধান শিক্ষক মোঃ দেলোয়ার হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, বহুল প্রতীক্ষিত বাংলা স্কুলের ১৬৭ বছর পূর্তি ও পুনর্মিলনী সুসম্পন্ন হওয়ায় আমি আনন্দিত। এই পুরো আয়োজনকে যারা সময় ও শ্রম দিয়ে সার্থক করেছেন তাদের আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
উৎসব শেষে কথা হয় স্কুলের বর্তমান প্রধান শিক্ষক মোঃ দেলোয়ার হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, বহুল প্রতীক্ষিত বাংলা স্কুলের ১৬৭ বছর পূর্তি ও পুনর্মিলনী সুসম্পন্ন হওয়ায় আমি আনন্দিত। এই পুরো আয়োজনকে যারা সময় ও শ্রম দিয়ে সার্থক করেছেন তাদের আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
No comments