কুম্ভিরাশ্রু by জামান সরদার
উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং ইলের মৃত্যু চূড়ান্ত অর্থে পশ্চিমা বিশ্বের জন্য শোক না স্বস্তির এখনও স্পষ্ট নয়। অন্তত সংবাদমাধ্যমের বরাতে। এত বড় খবর টানা দু'দিন, পিয়ংইয়ং নিজ থেকে প্রকাশ না করার আগ পর্যন্ত, বেমালুম থাকার 'শক' এখনও পশ্চিমা মিডিয়া কাটিয়ে উঠতে পারেনি। তবে উত্তর কোরিয়া যে 'শোকাচ্ছন্ন' বলাই বাহুল্য। তাও অবশ্য জানা যাচ্ছে, সেখানকার রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যমের কল্যাণে। উত্তর কোরীয় সরকার বলছে, মৃত্যুর ১১ দিন পরও কিম জং
ইলের জন্য কাঁদছে তার দেশের মানুষ। কেবল মানুষ নয় প্রাণী ও প্রকৃতিও অধিক শোকে পাথর হয়ে গেছে। এই মহান নেতার জন্য নাকি পাখিরাও কাঁদছে। রেডিও পিয়ংইয়ং বলেছে, প্রিয় নেতার মৃত্যুতে পাখিরা যেমন আচরণ করছে, তাতে মানুষেরও হৃদয় ভেঙে যাচ্ছে। একজন প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে রেডিও পিয়ংইয়ং বলেছে, একটি শোকাহত পাখি নেতার আকাশছোঁয়া মূর্তির ওপর এসে বিহ্বল হয়ে বসে থেকে পরে মূর্তির কাঁধ থেকে তুষার সরাতে থাকে! ক্ষমতাসীন দলের পত্রিকা রডং সিনমুন একদিন লিখেছে, কিমের মৃত্যুর পর থেকে পেঁচার বিলাপ শোনা যাচ্ছে। এ ছাড়া একটি সারসকেও শোকে মাথা নত করে রাখতে দেখা গেছে। শোকে কাতর কিমের জন্মস্থানের পর্বতও। মাউন্ট পায়েকডুতে বিকট শব্দ করে বরফখণ্ড ধসে পড়েছে।
কিম জং ইলের পিতা সিনিয়র কিমের মৃত্যুর সময়ও এমন মাতম দেখা গেছে। পরে কেউ কেউ লিখেছেন, শোকে অংশ নেওয়া নাগরিকদের মধ্যে অলিখিত প্রতিযোগিতা পর্যন্ত হয়েছিল। কে কত বেশি চোখের পানি ফেলতে পারে, কত জোরে ডুকরে কাঁদতে পারে। রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমসহ কর্তাব্যক্তিরা তাতে উৎসাহও দিয়েছেন। বস্তুত বস্তুবাদী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের পর বেশিরভাগ কমিউনিস্ট রাষ্ট্রেই নানা ভাববাদী কর্মকাণ্ড দেখা যায়। নেতার ওপর যে ধরনের দেবত্ব আরোপ করা হয়, সেটা রাজতন্ত্রেও বিরল। অনেকের মনে আছে, ১৯৫৩ সালে সোভিয়েত নেতা স্তালিনের মৃত্যুর পর মস্কোতেও এমন শোকের সাগর নেমে এসেছিল। এখন আবার সেখানেই রীতিমতো ভিলেনে পরিণত হয়েছেন তিনি।
বিবিসি আবার এই গণক্রন্দনের বিশ্লেষণ করেছে। সেখানে মনোবিজ্ঞানী অ্যান্টনি ড্যানিয়েলসের মত নেওয়া হয়েছে। তিনি বলছেন, অন্তরে কান্না না থাকলে চোখে অশ্রু উৎপাদন সহজ নয়। তাহলে দেখা যাচ্ছে, উত্তর কোরীয়রা সেই অসাধ্যকেও সাধন করেছেন। বরফাচ্ছন্ন রাস্তায় পড়ে বুক চাপরে চাপরে কাঁদছেন।
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে উত্তর কোরীয় জনগোষ্ঠীর এই দলবদ্ধ মাতম ঘণ্টায় ঘণ্টায় প্রচার হচ্ছে। হাসির মতো কান্নাও সংক্রামক। হতে পারে সে কারণে গোটা দেশই কান্নায় সংক্রমিত হয়েছে। কিন্তু দেশের বাইরে বোধহয় উল্টো ফল বয়ে আনে। টেলিভিশনে সেই কান্নার দৃশ্য যারা দেখেছেন, তাদের হাসি আটকানো কঠিন হবে।
কিম জং ইলের পিতা সিনিয়র কিমের মৃত্যুর সময়ও এমন মাতম দেখা গেছে। পরে কেউ কেউ লিখেছেন, শোকে অংশ নেওয়া নাগরিকদের মধ্যে অলিখিত প্রতিযোগিতা পর্যন্ত হয়েছিল। কে কত বেশি চোখের পানি ফেলতে পারে, কত জোরে ডুকরে কাঁদতে পারে। রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমসহ কর্তাব্যক্তিরা তাতে উৎসাহও দিয়েছেন। বস্তুত বস্তুবাদী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের পর বেশিরভাগ কমিউনিস্ট রাষ্ট্রেই নানা ভাববাদী কর্মকাণ্ড দেখা যায়। নেতার ওপর যে ধরনের দেবত্ব আরোপ করা হয়, সেটা রাজতন্ত্রেও বিরল। অনেকের মনে আছে, ১৯৫৩ সালে সোভিয়েত নেতা স্তালিনের মৃত্যুর পর মস্কোতেও এমন শোকের সাগর নেমে এসেছিল। এখন আবার সেখানেই রীতিমতো ভিলেনে পরিণত হয়েছেন তিনি।
বিবিসি আবার এই গণক্রন্দনের বিশ্লেষণ করেছে। সেখানে মনোবিজ্ঞানী অ্যান্টনি ড্যানিয়েলসের মত নেওয়া হয়েছে। তিনি বলছেন, অন্তরে কান্না না থাকলে চোখে অশ্রু উৎপাদন সহজ নয়। তাহলে দেখা যাচ্ছে, উত্তর কোরীয়রা সেই অসাধ্যকেও সাধন করেছেন। বরফাচ্ছন্ন রাস্তায় পড়ে বুক চাপরে চাপরে কাঁদছেন।
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে উত্তর কোরীয় জনগোষ্ঠীর এই দলবদ্ধ মাতম ঘণ্টায় ঘণ্টায় প্রচার হচ্ছে। হাসির মতো কান্নাও সংক্রামক। হতে পারে সে কারণে গোটা দেশই কান্নায় সংক্রমিত হয়েছে। কিন্তু দেশের বাইরে বোধহয় উল্টো ফল বয়ে আনে। টেলিভিশনে সেই কান্নার দৃশ্য যারা দেখেছেন, তাদের হাসি আটকানো কঠিন হবে।
No comments