মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার-আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আবারও ফেরত
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আবারও রাষ্ট্রপক্ষকে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ ফেরত দিয়েছেন। এবার জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মো. কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে দাখিল করা অভিযোগ ফেরত দেওয়া হয়েছে। মাত্র দুই দিন আগে ট্রাইব্যুনাল জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযমের বিরুদ্ধে দাখিল করা আনুষ্ঠানিক অভিযোগ রাষ্ট্রপক্ষকে ফেরত দিয়ে পুনর্দাখিলের
আদেশ দিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে গঠিত ট্রাইব্যুনাল গতকাল বুধবার মুজাহিদ ও কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে দাখিল করা আনুষ্ঠানিক অভিযোগ রাষ্ট্রপক্ষকে ফেরত দিয়ে পুনর্দাখিলের আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনাল আদেশে বলেন, গোলাম আযমের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেওয়ার বিষয়ে ট্রাইব্যুনালের আদেশ মুজাহিদ ও কামারুজ্জামানের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। এ দুজনের বিরুদ্ধে এর আগে দাখিল করা আনুষ্ঠানিক অভিযোগ রাষ্ট্রপক্ষের কাছে ফেরত পাঠানো হলো। কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে অভিযোগ ১২ জানুয়ারি এবং মুজাহিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ১৬ জানুয়ারির মধ্যে পুনর্দাখিল করতে হবে।
২৬ ডিসেম্বর গোলাম আযমের বিরুদ্ধে দাখিল করা আনুষ্ঠানিক অভিযোগ ফেরতের আদেশে বলা হয়েছিল, অভিযোগ অগোছালোভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে। অভিযোগগুলো সুবিন্যস্ত ও শ্রেণীভুক্ত নয়। সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করে অভিযোগ প্রস্তুত করে ট্রাইব্যুনাল তা ৫ জানুয়ারির মধ্যে পুনর্দাখিলের আদেশ দেন।
সঠিকভাবে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ প্রস্তুত করতে না পারাকে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিদের ব্যর্থতা বলে মনে করেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নির্বাহী সভাপতি শাহরিয়ার কবির। জানতে চাইলে তিনি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, অভিযোগ প্রস্তুতির ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিদের গাফিলতি ক্ষমার অযোগ্য। কৌঁসুলিরা তাঁদের দক্ষতা দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন, এ জন্য গোটা জাতির কাছে তাঁদের জবাবদিহি করতে হবে। এ ঘটনায় মানুষের মধ্যে ক্ষোভ জন্মাচ্ছে, হতাশা তৈরি হচ্ছে। মামলা পরিচালনার জন্য রাষ্ট্রপক্ষে আরও দক্ষ ও যোগ্য কৌঁসুলি নিয়োগ দিতে হবে।
তবে এ কথা মানতে রাজি নন রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিরা। গতকাল ট্রাইব্যুনালের আদেশের পর রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি সৈয়দ হায়দার আলী সাংবাদিকদের বলেন, আনুষ্ঠানিক অভিযোগ ফেরত দেওয়ায় হতাশার কিছু নেই। ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ সঠিকভাবে লিপিবদ্ধ করতে বলেছেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩-এর উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটি নতুন একটি আইন, যা অনুসরণ করে অভিযোগ প্রস্তুত করতে হয়। অন্যান্য আইনের সঙ্গে এর পার্থক্য রয়েছে।
গবেষণা ও আনুষঙ্গিক কার্যক্রমে সীমাবদ্ধতার কারণে অভিযোগ ফেরতের ঘটনা ঘটেছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি গোলাম আরিফ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের কোনো সমস্যা নেই। যাঁরা আমাদের সমালোচনা করছেন, তাঁরা এ বিষয়ে উপলব্ধি ও চেতনার বাইরে থেকে কথা বলছেন।’
অভিযোগ পুনর্দাখিলের বিষয়ে জামায়াতের আটক নেতাদের আইনজীবী তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, রাষ্ট্রপক্ষের অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই। এগুলো মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। তাঁরা তাড়াহুড়ো করে গুছিয়ে অভিযোগ তৈরি করতে না পারায় ট্রাইব্যুনাল এগুলো সুবিন্যস্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
গত ৩১ অক্টোবর মানবতাবিরোধী অপরাধ তদন্ত সংস্থা গোলাম আযমের বিরুদ্ধে ৩৬০ পৃষ্ঠার, মুজাহিদের বিরুদ্ধে ৩৬৬ পৃষ্ঠার ও কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে ৩২৭ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিদের কাছে জমা দেন। এক মাসের বেশি সময় পর রাষ্ট্রপক্ষ ১১ ডিসেম্বর মুজাহিদ ও কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে এবং ১২ ডিসেম্বর গোলাম আযমের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ ট্রাইব্যুনালে দাখিল করেছিলেন।
অভিযোগ আমলে নেওয়ার বিষয়ে আদেশের দিন ধার্য থাকায় গতকাল সকালে নিজামী, কামারুজ্জামান ও কাদের মোল্লাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার এবং মুজাহিদকে নারায়ণগঞ্জ কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিচারপতি নিজামুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম শুরু হয়।
নিজামীর বিষয়ে আদেশের দিন পুনর্নির্ধারণ: ট্রাইব্যুনাল গতকাল জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেওয়ার বিষয়ে আদেশের দিনও পুনর্নির্ধারণ করেছেন। এ প্রসঙ্গে ট্রাইব্যুনাল বলেন, নিজামীর বিরুদ্ধে দাখিল করা বিপুল পরিমাণ নথিপত্র পড়া এখনো শেষ হয়নি। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেওয়া হবে কি না—এ বিষয়ে ৯ জানুয়ারি আদেশ দেওয়া হবে।
কাদের মোল্লার অভিযোগ আমলে: জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। গতকাল এ-সংক্রান্ত আদেশে ট্রাইব্যুনাল বলেন, কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে দাখিল করা আনুষ্ঠানিক অভিযোগ, তদন্ত প্রতিবেদন, সাক্ষীদের জবানবন্দি ও আনুষঙ্গিক নথিপত্র পড়ার পর প্রাথমিক অভিযোগ (প্রাইমা ফেসি) পাওয়া গেছে। এ জন্য তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেওয়া হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে শুনানির জন্য ট্রাইব্যুনাল আগামী ২৯ জানুয়ারি দিন ধার্য করেন। আসামিপক্ষকে সরবরাহের জন্য মামলার আনুষঙ্গিক নথিপত্র ১ জানুয়ারির মধ্যে ট্রাইব্যুনালে জমা দিতে রাষ্ট্রপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়।
২৬ ডিসেম্বর গোলাম আযমের বিরুদ্ধে দাখিল করা আনুষ্ঠানিক অভিযোগ ফেরতের আদেশে বলা হয়েছিল, অভিযোগ অগোছালোভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে। অভিযোগগুলো সুবিন্যস্ত ও শ্রেণীভুক্ত নয়। সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করে অভিযোগ প্রস্তুত করে ট্রাইব্যুনাল তা ৫ জানুয়ারির মধ্যে পুনর্দাখিলের আদেশ দেন।
সঠিকভাবে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ প্রস্তুত করতে না পারাকে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিদের ব্যর্থতা বলে মনে করেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নির্বাহী সভাপতি শাহরিয়ার কবির। জানতে চাইলে তিনি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, অভিযোগ প্রস্তুতির ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিদের গাফিলতি ক্ষমার অযোগ্য। কৌঁসুলিরা তাঁদের দক্ষতা দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন, এ জন্য গোটা জাতির কাছে তাঁদের জবাবদিহি করতে হবে। এ ঘটনায় মানুষের মধ্যে ক্ষোভ জন্মাচ্ছে, হতাশা তৈরি হচ্ছে। মামলা পরিচালনার জন্য রাষ্ট্রপক্ষে আরও দক্ষ ও যোগ্য কৌঁসুলি নিয়োগ দিতে হবে।
তবে এ কথা মানতে রাজি নন রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিরা। গতকাল ট্রাইব্যুনালের আদেশের পর রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি সৈয়দ হায়দার আলী সাংবাদিকদের বলেন, আনুষ্ঠানিক অভিযোগ ফেরত দেওয়ায় হতাশার কিছু নেই। ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ সঠিকভাবে লিপিবদ্ধ করতে বলেছেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩-এর উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটি নতুন একটি আইন, যা অনুসরণ করে অভিযোগ প্রস্তুত করতে হয়। অন্যান্য আইনের সঙ্গে এর পার্থক্য রয়েছে।
গবেষণা ও আনুষঙ্গিক কার্যক্রমে সীমাবদ্ধতার কারণে অভিযোগ ফেরতের ঘটনা ঘটেছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি গোলাম আরিফ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের কোনো সমস্যা নেই। যাঁরা আমাদের সমালোচনা করছেন, তাঁরা এ বিষয়ে উপলব্ধি ও চেতনার বাইরে থেকে কথা বলছেন।’
অভিযোগ পুনর্দাখিলের বিষয়ে জামায়াতের আটক নেতাদের আইনজীবী তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, রাষ্ট্রপক্ষের অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই। এগুলো মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। তাঁরা তাড়াহুড়ো করে গুছিয়ে অভিযোগ তৈরি করতে না পারায় ট্রাইব্যুনাল এগুলো সুবিন্যস্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
গত ৩১ অক্টোবর মানবতাবিরোধী অপরাধ তদন্ত সংস্থা গোলাম আযমের বিরুদ্ধে ৩৬০ পৃষ্ঠার, মুজাহিদের বিরুদ্ধে ৩৬৬ পৃষ্ঠার ও কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে ৩২৭ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিদের কাছে জমা দেন। এক মাসের বেশি সময় পর রাষ্ট্রপক্ষ ১১ ডিসেম্বর মুজাহিদ ও কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে এবং ১২ ডিসেম্বর গোলাম আযমের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ ট্রাইব্যুনালে দাখিল করেছিলেন।
অভিযোগ আমলে নেওয়ার বিষয়ে আদেশের দিন ধার্য থাকায় গতকাল সকালে নিজামী, কামারুজ্জামান ও কাদের মোল্লাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার এবং মুজাহিদকে নারায়ণগঞ্জ কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিচারপতি নিজামুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম শুরু হয়।
নিজামীর বিষয়ে আদেশের দিন পুনর্নির্ধারণ: ট্রাইব্যুনাল গতকাল জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেওয়ার বিষয়ে আদেশের দিনও পুনর্নির্ধারণ করেছেন। এ প্রসঙ্গে ট্রাইব্যুনাল বলেন, নিজামীর বিরুদ্ধে দাখিল করা বিপুল পরিমাণ নথিপত্র পড়া এখনো শেষ হয়নি। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেওয়া হবে কি না—এ বিষয়ে ৯ জানুয়ারি আদেশ দেওয়া হবে।
কাদের মোল্লার অভিযোগ আমলে: জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। গতকাল এ-সংক্রান্ত আদেশে ট্রাইব্যুনাল বলেন, কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে দাখিল করা আনুষ্ঠানিক অভিযোগ, তদন্ত প্রতিবেদন, সাক্ষীদের জবানবন্দি ও আনুষঙ্গিক নথিপত্র পড়ার পর প্রাথমিক অভিযোগ (প্রাইমা ফেসি) পাওয়া গেছে। এ জন্য তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেওয়া হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে শুনানির জন্য ট্রাইব্যুনাল আগামী ২৯ জানুয়ারি দিন ধার্য করেন। আসামিপক্ষকে সরবরাহের জন্য মামলার আনুষঙ্গিক নথিপত্র ১ জানুয়ারির মধ্যে ট্রাইব্যুনালে জমা দিতে রাষ্ট্রপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়।
No comments