আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি-নিরাপত্তার স্বার্থে জনবল বাড়ানো হোক
ঢাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে কিছুদিন সাধারণ মানুষ কিছুটা স্বস্তিতে ছিল। কিন্তু সেই স্বস্তি খুব অল্প সময়ই স্থায়ী ছিল। আবার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে শুরু করেছে। আবার ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্য অনেক বেড়ে গেছে। এই পরিস্থিতি উদ্বেগজনক পর্যায়ে না গেলেও এখনই থামিয়ে দিতে হবে। তা না হলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে না। রাজধানীতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির জন্য পুলিশবাহিনীর জনবলের স্বল্পতার কথা বলা হয়ে
থাকে। কারণ রাজধানীর প্রায় দেড় কোটি মানুষের নিরাপত্তাবিধানের জন্য নিয়োজিত আছেন মাত্র ২৫ হাজার পুলিশ সদস্য।এর মধ্যে প্রায় অর্ধেক পুলিশ সদস্যকে রাজনৈতিক কর্মসূচির নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকতে হয়। অন্যরা পুরো ঢাকার নিরাপত্তার দায়িত্বে। তাঁদের আবার বিভিন্ন মামলার তদন্তকাজও পরিচালনা করতে হয়। ফলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য টহল পুলিশের সংখ্যা আরো কমে যায়। এই স্বল্পসংখ্যক জনবল দিয়ে যে বিশাল জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়, এটা সহজেই অনুমান করা যায়। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে উন্নীত করতে ডিএমপির লোকবল বাড়ানো দরকার। পুলিশ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বারবার লোকবল সংকটের কথা সরকারকে জানিয়েছেন, কিন্তু কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না।
ঢাকা শহরে আগের তুলনায় ছিনতাই বেড়ে গেছে বলে ডিএমপি কমিশনার স্বীকারও করেছেন। এর প্রতিকারব্যবস্থা পুলিশ বিভাগকেই করতে হবে। পত্রিকায় এসেছে যে ছিনতাইকারীরা এখন অভিনব কায়দায় ছিনতাই করছে। প্রায়ই তারা পুলিশের গাড়ি ও পোশাক ব্যবহার করছে ছিনতাইকাজে। আবার অনেক ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও এ কাজে জড়িয়ে পড়ছেন। গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয় দিয়েও ছিনতাই হচ্ছে, যা আমাদের উদ্বেগের বিষয়। এ বিষয়টির ওপর পুলিশ প্রশাসনকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিতে হবে।
আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে, যে কেউ ইচ্ছা করলে পুলিশের পোশাক কিনতে পারেন। এটা কেন? এই সুযোগ তো অসাধু লোকরা নেবেই।
ছিনতাইয়ের যেসব ঘটনা পত্রিকায় আসছে, সেগুলোই আমরা জানতে পারি। কিন্তু অনেক ঘটনাই তো পত্রিকায় আসে না। অনেক সময় ছিনতাই মামলা করে অহেতুক হয়রানির মুখে পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে। এ কারণে ছিনতাই কিংবা চুরি হওয়ার ঘটনা নিয়ে মানুষ মামলা-মোকদ্দমায় যায় না। পুলিশের সূত্র অনুযায়ী, রাজধানীতে ২৫০টি স্থানে নিয়মিত ছিনতাই হয়। সেই সব স্থানে নিয়মিত পুলিশি টহল দেওয়ার মতো অবস্থা এখন তাদের নেই। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির আর যাতে অবনতি না হয়, সে জন্য পুলিশ বিভাগকে আরো সক্রিয় হতে হবে। এ জন্য পুলিশ বিভাগের লোকবল বাড়ানোর পাশাপাশি উন্নত প্রশিক্ষণ এবং পুলিশবাহিনীর আধুনিকায়ন জরুরি হয়ে পড়েছে।
No comments