সিলেটের ব্লাড ব্যাংক-সফল অভিযানে শঙ্কা
সিলেট শহরে তিনটি ব্লাড ব্যাংক সিলগালা করে দিয়েছে_ বুধবারের সমকালে প্রকাশিত এ খবর নিদারুণ উদ্বেগের। ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করে ইউনিক, ট্রাস্ট ও গ্রিন লাইফ নামের তিনটি প্রতিষ্ঠানের নোংরা পরিবেশ দেখে ক্ষুব্ধ হন। তাদের কাছে অনুমোদন ও কার্যক্রম পরিচালনা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্রও পাওয়া যায়নি। আরেকটি ব্লাড ব্যাংককেও অনিয়মের জন্য ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত এ ধরনের
অভিযানের কারণে প্রশংসিত হবে। কিন্তু এ সফল অভিযানের খবর এ প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে রক্ত ক্রয় করে যাদের দেহে প্রবেশ করানো হয়েছে তাদের ফেলবে শঙ্কায়। ধরে নেওয়া যায় যে, সিলগালা করা প্রতিষ্ঠানগুলো বেশ কিছু সময় ধরে সিলেট শহরে কার্যক্রম পরিচালনা করছিল। এখানে একদল লোক রক্ত দান করেছে কিংবা বিক্রি করেছে। আরেক দল লোক গুরুতর ব্যাধিতে আক্রান্ত রোগীর জন্য তা কিনেছে। প্রশ্ন হচ্ছে, ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনার আগে সংশ্লিষ্ট কারোর নজরেই কি বিষয়টি আসেনি? সরকারি হাসপাতাল বা বেসরকারি ক্লিনিক ছাড়া রোগীর দেহে রক্ত সঞ্চালনের সুবিধা তেমন থাকে না। এসব প্রতিষ্ঠানের কোনো চিকিৎসকেরই কোত্থেকে কী মানের রক্ত আনা হয়েছে সে প্রশ্ন জাগেনি? সিলেট শহরে অনেক ধনবান লোকের বসবাস। লন্ডন তাদের কাছে রীতিমতো পাশের বাড়ি। এমন একটি শহরে মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলার এ ব্যবসা কীভাবে চলতে পারল? আশা করব, সিলগালা করা প্রতিষ্ঠান তিনটির বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণে কোনো ত্রুটি থাকবে না। প্রকাশ্যে এ ধরনের ব্যবসার সঙ্গে যুক্তরা অবশ্যই প্রভাবশালী ও ধনবান। রাজনৈতিক কানেকশন থাকাও অসম্ভব নয়। এসব কারণে তারা রেহাই পেলে তার চেয়ে দুর্ভাগ্যজনক আর কিছু হবে না। শুধু সিলেট নয়, দেশের সর্বত্রই এ ধরনের অবৈধ ব্যবসা করে চলা প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব রয়েছে বলেই ধারণা করা যায়। সিলেটের তিনটি প্রতিষ্ঠানে সফল অভিযান তাদের আপনাআপনি সুপথে নিয়ে আসবে, এমন মনে করার কারণ নেই। সেখানেও ভ্রাম্যমাণ আদালত সক্রিয় হবে, এটাই প্রত্যাশা। তবে সিলেটসহ সর্বত্রই প্রত্যাশা তদারককারী প্রতিষ্ঠানগুলো যেন সদাসর্বদা সতর্ক থাকে। তাহলে আর ভ্রাম্যমাণ আদালতের প্রয়োজন পড়বে না। রোগীরাও পাবেন ভালো রক্ত।
No comments