অশ্রুভেজা চোখে ‘প্রিয় নেতা’ কিম জং-ইলকে বিদায়

তীব্র তুষারপাত উপেক্ষা করে অশ্রুসিক্ত নয়নে তাদের দীর্ঘদিনের ‘প্রিয় নেতা’ কিম জং-ইলকে বিদায় জানিয়েছে উত্তর কোরিয়ার লাখ লাখ মানুষ। বাবার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া উপলক্ষে গতকাল বুধবার রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে তিন ঘণ্টাব্যাপী শবযাত্রায় নেতৃত্ব দেন নতুন নেতা ছেলে কিম জং-উন। পিয়ংইয়ংয়ের কুমসুসান মেমোরিয়াল প্যালেস থেকে শুরু হওয়া শবযাত্রা ২৫ মাইল পথ প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে শেষ হয়। ১৭ ডিসেম্বর কিম জং-ইলের মৃত্যুর পর


এই কুমসুসান মেমোরিয়াল প্যালেসেই একটি গ্লাস নির্মিত কফিনে তাঁর মরদেহ রাখা হয়েছিল। শবযাত্রায় একেবারে সামনের গাড়িতে শোভা পাচ্ছিল প্রয়াত নেতা কিম জং-ইলের হাস্যোজ্জ্বল বিশালকায় একটি প্রতিকৃতি। এর পেছনের সারিতে ছিল আরও কয়েকটি গাড়ি। তার পেছনের সারিতে একটি লিমোজিন গাড়িতে করে বহন করা হয় লাশ।
শবযাত্রায় তীব্র ঠান্ডা উপেক্ষা করে কালো পোশাক পরা কিম জং-উন কোনো ধরনের হাতমোজা ছাড়াই বাবার লাশবাহী গাড়ির পাশাপাশি চলতে থাকেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন প্রভাবশালী ফুপা কিম সং-থায়েক, ক্ষমতাসীন ওয়ার্কার্স পার্টির জ্যেষ্ঠ নেতা কিম কি-নাম ও চোয়ে থায়ে-বোক, সামরিক প্রধান রি ইয়ং-হো সশস্ত্রবাহিনীবিষয়ক মন্ত্রী কিম ইয়ং-চুনসহ অন্যান্য কর্মকর্তা।
শবযাত্রা শেষে কুমসুসান মেমোরিয়াল প্যালেসে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠানে সামরিক গার্ড বাহিনীর প্রধান কান্নাবিজড়িত কণ্ঠে ঘোষণা দেন, ‘আমাদের শ্রদ্ধেয় নেতাকে বিদায় জানাতে আমরা এখানে সমবেত হয়েছি। এরপর ২১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে অনুষ্ঠান সমাপ্ত হয়। কুচকাওয়াজে অংশগ্রহণকারীরা এ সময় ক্ষমতাসীন দল ও সেনাবাহিনীর অসংখ্য পতাকা হাতে নতুন নেতা কিম জং-উন এবং অন্য জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের অভিবাদন জানাতে জানাতে সামনে অগ্রসর হয়।’
১৯৯৪ সালে বাবা কিম ইল-সংয়ের মৃত্যুর পর দায়িত্ব নেওয়া কিম জং-ইলের ১৭ বছরের শাসনামলে অন্তত দুটি বড় ধরনের ধাক্কা খায় উত্তর কোরিয়া।
১৯৯০ সালের দুর্ভিক্ষে দেশটির লাখ লাখ লোক মারা যায়। আর ক্ষেপণাস্ত্র ও পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কারণে দেশটি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিষেধাজ্ঞার শিকার হয়।
এর পরও দেশটির সেনাবাহিনীসহ জনসাধারণের কাছে মহান নেতার স্থান পেয়েছেন কিম জং-ইল। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের ভিডিও ফুটেজে তীব্র শীতে কম্পমান লাখ লাখ সেনাসদস্য ও সাধারণ জনতাকে রাস্তায় নেমে উচ্চস্বরে কাঁদতে দেখা গেছে। কিম জং-ইলের মৃত্যুতে ১৩ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক আজ শেষ হবে। এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.