কিডনি প্রতিস্থাপন বন্ধ-দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ প্রয়োজন
বাংলায় একটি শ্লোকে বলে, 'চুন খেয়ে গাল পুড়েছে, দই দেখলে ভয় করে।' এই অবস্থাই দাঁড়িয়েছে কিডনি প্রতিস্থাপন নিয়ে। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় মানবদেহের কিডনি নিয়ে অবৈধ বাণিজ্য এবং সে বাণিজ্যের সঙ্গে হাতে গোনা কিছু চিকিৎসকের জড়িত থাকার অভিযোগের সংবাদ সারা দেশে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করে। দেশের মানুষ এবং গণমাধ্যম এর প্রতিকার চেয়েছে জোরালো কণ্ঠে। কিন্তু এই সংবাদই এখন অনেক রোগীর জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কিডনির অবৈধ ব্যবসা ঠেকাতে এখন পর্যন্ত বিশেষ কোনো উদ্যোগ নেওয়া যায়নি। অথচ বিপরীত ফলটা পাওয়া যাচ্ছে হাতেনাতে। এখন অনেক রোগীকে বৈধভাবে কিডনি দান করতে গিয়ে আত্মীয়স্বজন বিপাকে পড়ছেন এবং রোগীদের জীবন পড়েছে হুমকির মুখে। কারণ চিকিৎসকরা এখন বৈধ পথে কিডনি প্রতিস্থাপন করতেও ভয় পাচ্ছেন, তাই প্রতিস্থাপনের কাজ বন্ধ রেখেছেন। সে খবরই প্রকাশ পেয়েছে কালের কণ্ঠে। অনুসন্ধানী রিপোর্ট থেকে জানা গেছে, বেশ কয়েকজন রোগীকে খোদ কিডনি ফাউন্ডেশনেই ডায়ালিসিস করে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে, যাঁরা হয়তো দ্রুত জীবনাবসানের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। অথচ অনেক অর্থ ব্যয় করে তাঁদের নিকটাত্মীয়রা কিডনি দানের সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেও চিকিৎসকরা ঝুঁকি নিতে চাচ্ছেন না বলে প্রতিস্থাপন সম্ভব হচ্ছে না। 'কিডনি নিয়ে অবৈধ বাণিজ্যে নামিদামি হাসপাতালের চিকিৎসকরাও জড়িত' এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কেন বৈধ কিডনি প্রতিস্থাপনও বন্ধ রেখেছেন চিকিৎসকরা, সেটা পরিষ্কার নয়।
এমন একচেটিয়া সিদ্ধান্ত গ্রহণ চিকিৎসকদের অনুচিত হচ্ছে বলেই আমরা মনে করি। প্রকাশ্যে বৈধভাবে কিডনি প্রতিস্থাপন এবং কিডনি পাচার বা কিডনি চুরির বিষয়টি এক রকম হতে পারে না। দেশে 'মানবদেহে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন আইন ১৯৯৯'তে যে সুস্পষ্ট বক্তব্য রয়েছে, সেটাও চিকিৎসকরা অনুসরণ করতে চাইছেন না। এ অবস্থার দ্রুত সুরাহা হওয়া দরকার। মানবদেহে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন আইন ১৯৯৯ আরো বাস্তবমুখী করতে একটি কমিটি কাজ করে যাচ্ছে। জানা গেছে, আইনটি যুগোপযোগী করে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নতুন করে প্রবিধান সংযোজনের প্রক্রিয়া চলছে। আইনবিশেষজ্ঞ এবং চিকিৎসকদের পরামর্শক্রমে দ্রুত এ বিষয়টি বাস্তবায়ন করা হবে বলে আমরা আশা রাখি। এ কমিটিকে অবশ্যই লক্ষ রাখতে হবে এবং এমন কিছু পন্থার আশ্রয় নিতে হবে, যেন কোনোক্রমেই অবৈধ প্রতিস্থাপন সম্ভব না হয় এবং বৈধ প্রতিস্থাপন বাধাগ্রস্ত
না হয়।
দেশে কিডনি স্থাপন প্রক্রিয়া স্বচ্ছ হলে জনগণের মধ্যে বিদেশে গিয়ে কিডনি প্রতিস্থাপনের প্রবণতা কমে আসবে। সাশ্রয় হবে অর্থ, কমবে মানুষের ভোগান্তি। ইতিমধ্যে দেশের চিকিৎসার মান কিছুটা উন্নত হওয়ায় ভারত, সিঙ্গাপুর বা থাইল্যান্ডে চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করতে যাওয়ার প্রবণতা কিছুটা কমেছে বলে জানা গেছে। এ প্রবণতা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে পারলে দেশের স্বাস্থ্যসেবা এবং প্রাইভেট ক্লিনিকসেবা সফল হবে। তবে চিকিৎসা এমন একটি স্পর্শকাতর বিষয়, যেখানে সব কিছু লিপিবদ্ধ আইন দ্বারা অর্জন সম্ভব নয়। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের সেবার মানসিকতার আরো বিকাশ ঘটানোর প্রয়োজন আছে বলে আমরা
মনে করি।
এমন একচেটিয়া সিদ্ধান্ত গ্রহণ চিকিৎসকদের অনুচিত হচ্ছে বলেই আমরা মনে করি। প্রকাশ্যে বৈধভাবে কিডনি প্রতিস্থাপন এবং কিডনি পাচার বা কিডনি চুরির বিষয়টি এক রকম হতে পারে না। দেশে 'মানবদেহে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন আইন ১৯৯৯'তে যে সুস্পষ্ট বক্তব্য রয়েছে, সেটাও চিকিৎসকরা অনুসরণ করতে চাইছেন না। এ অবস্থার দ্রুত সুরাহা হওয়া দরকার। মানবদেহে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন আইন ১৯৯৯ আরো বাস্তবমুখী করতে একটি কমিটি কাজ করে যাচ্ছে। জানা গেছে, আইনটি যুগোপযোগী করে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নতুন করে প্রবিধান সংযোজনের প্রক্রিয়া চলছে। আইনবিশেষজ্ঞ এবং চিকিৎসকদের পরামর্শক্রমে দ্রুত এ বিষয়টি বাস্তবায়ন করা হবে বলে আমরা আশা রাখি। এ কমিটিকে অবশ্যই লক্ষ রাখতে হবে এবং এমন কিছু পন্থার আশ্রয় নিতে হবে, যেন কোনোক্রমেই অবৈধ প্রতিস্থাপন সম্ভব না হয় এবং বৈধ প্রতিস্থাপন বাধাগ্রস্ত
না হয়।
দেশে কিডনি স্থাপন প্রক্রিয়া স্বচ্ছ হলে জনগণের মধ্যে বিদেশে গিয়ে কিডনি প্রতিস্থাপনের প্রবণতা কমে আসবে। সাশ্রয় হবে অর্থ, কমবে মানুষের ভোগান্তি। ইতিমধ্যে দেশের চিকিৎসার মান কিছুটা উন্নত হওয়ায় ভারত, সিঙ্গাপুর বা থাইল্যান্ডে চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করতে যাওয়ার প্রবণতা কিছুটা কমেছে বলে জানা গেছে। এ প্রবণতা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে পারলে দেশের স্বাস্থ্যসেবা এবং প্রাইভেট ক্লিনিকসেবা সফল হবে। তবে চিকিৎসা এমন একটি স্পর্শকাতর বিষয়, যেখানে সব কিছু লিপিবদ্ধ আইন দ্বারা অর্জন সম্ভব নয়। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের সেবার মানসিকতার আরো বিকাশ ঘটানোর প্রয়োজন আছে বলে আমরা
মনে করি।
No comments