আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় অংশ নিচ্ছে ৫ শতাধিক প্রতিষ্ঠান

গামী ১ জানুয়ারি রোববার থেকে শুরু হচ্ছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা (ডিআইটিএফ)-২০১২। মাসব্যাপী অনুষ্ঠিতব্য ১৭তম এ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় দেশি-বিদেশি ৫৩৭টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে। এর মধ্যে ৩৯টি বিদেশি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। মেলায় অংশগ্রহণে ইচ্ছুক প্রতিষ্ঠানগুলো ইতিমধ্যে আয়োজক সংস্থা রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) থেকে স্টল বা প্যাভিলিয়নের বরাদ্দ নিয়েছে। মেলা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করবেন। তবে মেলা মাঠের প্রস্তুতি


এখনও শেষ হয়নি। অনেক প্রতিষ্ঠানই তাদের স্টল বা প্যাভিলিয়নের কাজ শেষ করতে পারেনি। এমনকি ইপিবিও সময়মতো তাদের কাজ গুছিয়ে নিতে পারেনি। এ নিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী জিএম কাদের অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বলে জানা গেছে। গত সোমবার সন্ধ্যায় আকস্মিক মেলা মাঠ পরিদর্শনে গিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী অসন্তোষ প্রকাশ করেন। ২৫ ডিসেম্বরের মধ্যে মেলা মাঠ সম্পূর্ণ প্রস্তুত করার কথা ছিল।
ইপিবি সূত্রে জানা গেছে_ পাকিস্তান, ভারত, চীন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরান, তুরস্ক, যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, মরোক্ক ও দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আসবে এসব প্রতিষ্ঠান। মরোক্ক এই প্রথমবার ডিআইটিএফে অংশ নিচ্ছে। এবার মেলায় ১২টি অংশ নিলেও গতবছর ১৪টি দেশ অংশ নিয়েছিল। এবার আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় যেসব প্যাভিলিয়ন থাকছে তার মধ্যে ব্যতিক্রম হচ্ছে 'বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়ন'। গত বছরও মেলায় এ নামে একটি প্যাভিলিয়ন ছিল। কিন্তু এবার এ প্যাভিলিয়ন তথ্যপ্রযুক্তির দিক থেকে আরও সমৃদ্ধ করা হচ্ছে। এ প্যাভিলিয়নে বঙ্গবন্ধুর ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস থেকে শুরু করে অনেক প্রামাণ্যচিত্র থাকছে, যা দর্শক ইচ্ছে করলে প্রযুক্তির মাধ্যমে অনায়াসে দেখতে পারবে। এ ছাড়াও বঙ্গবন্ধুর একটি ভাস্কর্য থাকছে এই প্যাভিলিয়নে। এবারের মেলায় আরও একটি নতুন বৈশিষ্ট্য হচ্ছে সেমিনার। অর্থাৎ যে যার পণ্য নিয়ে সংশ্লিষ্ট প্যান্ডেলে বিস্তারিত উপস্থাপন করতে পারবেন দর্শকের সামনে। এ ছাড়াও লেজার শো দেখানো হবে। মেলায় প্রবেশমূল্য ১০ থেকে ২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। বড়দের জন্য ২০ টাকা আর ছোটদের জন্য ১০ টাকা। টিকিট বিক্রির জন্য পর্যাপ্ত কাউন্টার থাকছে। কাউন্টারের বাইরে থেকেও মোবাইলের মাধ্যমে টিকিট কেনার ব্যবস্থা রাখার চেষ্টা চলছে। মেলায় পর্যাপ্ত গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। পার্কিংয়ের জন্য নির্দিষ্ট হারে ফি দিতে হবে। পাঁচ টনের বেশি হলে ৫০ টাকা, তিন টনের বেশি হলে ৩০, চার চাকা ১৫ ও মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য যানবাহনের জন্য ১০ টাকা পার্কিং ফি। মেলার পার্কিং এলাকায় এক হাজারেরও বেশি গাড়ি রাখা যাবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। ভিআইপিদের প্রবেশ ও বের হওয়ার জন্য দুটি গেট থাকছে, যাতে কোনো ধরনের যানজট সৃষ্টি না হয়।
অন্যবারের তুলনায় এবার মেলায় নিরাপত্তা বেষ্টনী অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে গড়ে তোলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মেলা সচিবালয়ের সদস্য সচিব সৈয়দ বেলাল হোসেন। তিনি বলেন, প্রবেশের মুখে থাকছে আর্চওয়ে। এ ছাড়া বিভিন্ন স্পটে থাকবে সিসিটিভি ক্যামেরা। নিরাপত্তায় এবার আনসার ব্যাটালিয়নের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে স্কাউট, যারা বিভিন্ন স্পটে থেকে নিরাপত্তাসহ দর্শকের সুযোগ-সুবিধা দেখভাল করবে।
মেলা মাঠে টয়লেট, মা ও শিশু পরিচর্চা কেন্দ্র থাকবে। থাকছে শিশুদের জন্য বিনোদন কেন্দ্র। একই সঙ্গে মেলায় অনুসন্ধান কেন্দ্র থাকবে, সেখানে যে কোনো দর্শকের সমস্যা সমাধানের প্রচেষ্টা নেওয়া হবে। মেলায় মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক সার্বক্ষণিক করার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। থাকবে রেস্তোরাঁ। তবে পানীয় জাতীয় কোনো পণ্য বিক্রি হবে না মেলা মাঠে। সব মিলে মাসব্যাপী মেলা শুরু থেকেই জমে উঠবে এ প্রত্যাশা সবার।
এদিকে মেলাকে সামনে রেখে শেরেবাংলা নগর নতুন সাজে সেজেছে। বিশেষ করে মেলাপ্রাঙ্গণ থেকে শুরু করে এর আশপাশে যেন সাজসাজ রব। আর মেলাপ্রাঙ্গণে কর্মমুখর হয়ে উঠেছে সব শ্রেণীর মানুষ। দিনরাত স্টল ও প্যাভিলিয়ন সাজাতে ব্যস্ত সবাই। কারণ প্যাভিলিয়নের সাজসজ্জার জন্য পুরস্কার পাওয়ার আগ্রহ অনেকেরই। তবে মেলা মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, এখনও অনেক স্টল ও প্যাভিলিয়ন নিজেদের আয়োজন শেষ করতে পারেনি। যে কারণে ইপিবি থেকে স্পষ্ট বলে দেওয়া হয়েছে, সময়মতো প্যাভিলিয়ন সাজসজ্জা শেষ করতে না পারলে স্টল বরাদ্দ বাতিল হয়ে যেতে পারে।

No comments

Powered by Blogger.