চালচিত্র-বছর শেষ হয়ে গেল, দুর্ভোগ গেল না by শুভ রহমান
বছর শেষ হয়। এ লেখা বেরোনোর ৪৮ ঘণ্টা পরেই ২০১২-এর নতুন সূর্যোদয়। মানুষ আশা নিয়েই বেঁচে থাকে। আশা ছিল, অন্তত বাজারের অবস্থা একটু সহনীয় হবে, নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতি, যখন-তখন একেকটা জিনিসের দাম লাফিয়ে বেড়ে যাওয়া; বিশেষ করে সীমিত আয়ের মধ্য ও নিম্নবিত্ত মানুষের শুধু সংসার চালাতে এই একেবারে গলদঘর্ম অবস্থা হয়তো একটু বদলাবে, নাহ, বছর শেষ হয়ে গেল, তবু বদলানোর কোনো আলামত নেই। বাড়ি ভাড়া থেকে
ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার খরচ_সব কিছু গুনতে গিয়ে আয়ের সিংহভাগই বেরিয়ে যাচ্ছে সীমিত আয়ের মানুষের। শুধু খাবার জিনিস কিনতেই তো চলে যাচ্ছে বেতনের অর্ধেক টাকা। এটা ভালো লক্ষণ নয়। ফরাসি বিপ্লবের সময় রুটি কিনতেই শ্রমিকদের অর্ধেকের বেশি মজুরি খরচ হয়ে যেত।
এই বছর শেষেও বিশেষ করে ভোজ্য তেলের দাম নতুন করে ঊর্ধ্বমুখী ও নিয়ন্ত্রণহীন হওয়ায় মানুষ খুবই আশাহত হয়ে মুষড়ে পড়ছে। সব সময় যে দোহাই দেওয়া হয় আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্য বৃদ্ধির, এবার সে দোহাইও টিকল না। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কম থাকা সত্ত্বেও সয়াবিন তেলের দাম অভ্যন্তরীণ বাজারে ব্যবসায়ীরা কোনো রকম চোখের চামড়া না রেখেই বাড়িয়ে চলেছে। দেখার কেউ নেই। এ অবস্থা অন্য কয়েকটি জরুরি নিত্যপণ্যের বেলায়ও নিত্যই দেখা দিচ্ছে। মানুষ যে কত কষ্টে আছে, সেটা সব ক্ষেত্রে বোঝারও উপায় নেই। তার পরও বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষকদের শহীদ মিনারে আমরণ অনশন পালন এবং এককালের ঔপনিবেশিক শোষণ-শাসনে জর্জরিত ভিয়েতনামের বৌদ্ধ ভিক্ষুদের মতো গায়ে আগুন ধরিয়ে আত্মাহুতি দেওয়ার মতো মরিয়া হয়ে ওঠার জায়গায় পেঁৗছে গেছেন এই শিক্ষকরা। টেলিভিশনে দেখা গেল, দীর্ঘকাল চাকরিরত এক বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষয়িত্রী যন্ত্রণাকাতর স্বরে বলছেন, চার হাজার ৯৫০ টাকা বেতন পেয়ে ছয়-সাতজনের সংসার চালানো কী করে সম্ভব বলুন! আজ এমন তো কেউ নেই, এ কথায় জবাব দেওয়ার। কথাটা কর্মজীবী, শ্রমজীবী, সীমিত ও স্বল্প আয়ের সব শ্রেণী-পেশার মানুষের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। শিক্ষকরাই যদি এমন মরিয়া হয়ে ওঠেন, তাহলে এ সমাজের মানমর্যাদা আর থাকে কোথায়? আগের বছরগুলোর ধারা অক্ষুণ্ন রেখে গেল বছরও গ্যাস-বিদ্যুতের দাম দফায় দফায় বেড়ে গেছে, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সাশ্রয়, অপচয় রোধের সচেতনতাই শুধু সরকার দাবি করছে, মূল্যবৃদ্ধি ও জনদুর্ভোগ লাঘবের কথাটা ভাবছে না।
অর্থনীতি তবু নাকি ভালোই চলছে! খোদ অর্থমন্ত্রী এবং তার পর প্রধানমন্ত্রীরও এমন উদ্বেগহীন কথা দেশবাসীর কষ্টকে আরেকটু বাড়িয়েই দেবে মাত্র। সাধারণ মানুষ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, সামষ্টিক অর্থনীতি, মূল্যস্ফীতি, তারল্য সংকট এসব বোঝে না। সরকার ২০ হাজার কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ নিয়েছে। ব্যাংক ঋণ সরকার নিয়ে যে ঘি খাচ্ছে না, দেশের উন্নয়নেই ব্যয় করছে প্রধানমন্ত্রীর এ ডিফেন্সিভ পজিশনের কোনো দরকার নেই। এসব সত্ত্বেও প্রবাসীদের রেমিট্যান্স কমে গেছে, বিদেশে শ্রমিক নেওয়া হ্রাস পেয়েছে, ডলারের দাম বেড়েই চলেছে, শেয়ারবাজারে দরপতন রোধ করা যাচ্ছে না, গত তিন বছরে সরকারের সব ব্যর্থতা সত্ত্বেও তার কাছেই এখনো ভালো কিছু প্রত্যাশা করছে। এটুকু মহাজোট সরকারের একটা বড় প্লাস পয়েন্ট। এ দেশে আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে, সমস্যা যে চতুর্গুণ লাফিয়ে বেড়ে গেছে, এটা মানুষের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতাই, কিন্তু তবু মানুষ এ সরকারের কাছেই সব সমস্যার সন্তোষজনক সুরাহা কামনা করে। এর পেছনে বাস্তব কারণ আছে। সব কিছুর পরও এ দেশে আওয়ামী লীগেরই গণভিত্তি সবচেয়ে বেশি, ক্ষমতায় যত বড় ম্যান্ডেট নিয়েই যাক, ক্ষমতায় বসার পরমুহূর্ত থেকেই তাকে ধিকৃত ও ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য গণশত্রুরা তৎপর হয়ে ওঠে। এটাও এ দেশের, এ সমাজের এক সুকঠিন বাস্তবতা। দুর্ভাগ্যজনক যে, আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতায় বসার পর সে কথা, সে কঠিন-কঠোর বাস্তবতা এক রকম বিস্মৃতই হয়। গত তিন বছরেও মহাজোট সরকারের সে ব্যাপারে তেমন একটা বোধোদয় ঘটেনি।
আমরা আজ এক বছরের যে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করব, তা বস্তুত মহাজোট সরকারের এযাবৎ অতিক্রান্ত তিন বছরেরই সাধারণ পরিস্থিতি মাত্র। বস্তুত আরো পিছিয়ে যদি ধরা হয়, মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের অতিক্রান্ত ৪০ বছর, মহাজোট সরকারের তিন বছর, আর গত এক বছর_এই তিন ধারার জনপ্রত্যাশাই একই মোহনায় মিলেছে। অনেক প্রাপ্তি সত্ত্বেও মানুষ প্রধানত আশাহতই হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধে মানুষের প্রত্যাশা আকাশ ছুঁয়েছিল। একটি সোনার দেশ, একটি শোষণ-বঞ্চনা-নিপীড়ন-নির্যাতন-অপমান-লাঞ্ছনামুক্ত স্বাধীন স্বদেশভূমিই ছিল সর্বোচ্চ ত্যাগস্বীকারকারী গণমানুষের ঐকান্তিক প্রত্যাশা। সে প্রত্যাশা ৪০ বছরে বহুলাংশেই পূরণ হয়নি। মানুষ হাল ছাড়েনি। বিপুল রক্তক্ষয় ও ত্যাগ-তিতিক্ষার পরও নতুন করে স্বাধীন স্বদেশ ভূমিতেই স্বৈরাচার ও সামরিক শাসকদের সুদীর্ঘ ও নিষ্ঠুরতম শাসন-শোষণের বীর বিক্রমেই মোকাবিলা করেছে। পঁচাত্তরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে প্রায় স্বাধীনতার সূচনালগ্নেই পরিবার-পরিজনসহ হারিয়েও মানুষ একবারে হতোদ্যম হয়ে হাল ছেড়ে দেয়নি। বারেবারেই নতুন করে মাথা উঁচু করে স্বাধীন-সার্বভৌম দেশ ও জাতির অস্তিত্ব ও মর্যাদা সমুন্নত রাখার প্রাণান্তকর প্রয়াস চালিয়ে এসেছে। বহু উত্থান-পতনের পর মানুষ তার আরাধ্য স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র এবং শাসন কাঠামো পেয়ে ২০০৮ সাল থেকে হাজার দুর্ভোগ ও দুঃখকষ্ট সয়ে মর্যাদার সঙ্গে বাঁচার জন্য অকুতোভয়ে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের মানসনেত্রে ধ্রুবতারার মতোই দুঃসময়ে এ দেশের হাল-ধরা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা জাতির সামনে চলার আলোর দিশারী হয়ে রয়েছেন। সে জন্যই মানুষ এখনো হাজার দুর্ভোগ ও দুঃখকষ্ট সয়েও রয়ে গেছে আপসহীন; কোনোক্রমেই বৈরী, স্বাধীনতাবিরোধী গণশত্রুদের সঙ্গে তারা আপস করবে না।
আজ বর্ষশেষে বিগত দিনগুলোকে মানুষ সেই দৃষ্টিকোণ থেকেই বিচার, বিবেচনা ও পর্যালোচনা করবে। অন্যদিকে শাসকগোষ্ঠীকেও মনে রাখতে হবে, গণমানুষের আপসহীন ভূমিকা ও সমর্থনের কারণেই শাসকদের সহযোগী ছাত্রসংগঠনগুলোর অবক্ষয়, অনাচার, লোভ-লালসা, লুণ্ঠন ও দখলবাজি একশ্রেণীর জনপ্রতিনিধির উন্মত্ত, বেপরোয়া ও জননিপীড়িনমূলক আচার-আচরণ, দায়িত্বহীন ও অদেশপ্রেমিকসুলভ শুল্কমুক্ত গাড়িসহ নানা সুযোগ-সুবিধা চোখ বুজে আত্মসাৎ, সড়ক ও যোগাযোগব্যবস্থা, বাণিজ্যসহ কয়েকটি সেক্টরে দুর্নীতি, লুটপাটের লোমহর্ষক কার্যক্রম চালানো গত তিন বছরে কিংবা বিগত বছরে সরকারের পতন অনিবার্য করে তুলতে পারেনি।
মানুষ হতাশ হয়েছে, ক্ষুব্ধ হয়েছে, তার পরও রাজনৈতিক বৈরী শক্তির কাছে, দায়িত্বজ্ঞানহীন ও ক্ষমতালিপ্সু, স্বাধীনতাবিরোধীদের মদদপুষ্ট শক্তির কাছে আত্মসমর্পণ করেনি। দধীচির মতোই এ দেশের নিপীড়িত-নির্যাতিত, এক হিসেবে প্রতারিত মানুষও নিজের হাড়-পাঁজরের হাড়কেই বজ্র করে আপন অর্জন এ গৌরবকে রক্ষা করে এসেছে।
আজ তাই অনেক বস্তুনিষ্ঠভাবেই শাসকগোষ্ঠীকে জনমানুষের স্বাধীনতাপূর্ব ও স্বাধীনতা-উত্তরকালের সুদীর্ঘ দুর্ভোগ, ত্যাগ-তিতিক্ষা আর অনিঃশেষ প্রত্যাশার বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা করতে হবে। আজ বর্ষপরিক্রমা শুধু জনমানুষের নয়, শাসকদের জন্যও এক অত্যাবশ্যকীয় দায়। শাসকদের হুঁশে আসতেই হবে।
এক বছর কেটে গেছে, তিন বছর কেটে গেছে, ৪০টি বছরই কেটে গেছে, সঠিক অর্থে সম্বিৎ ফেরেনি শাসকদের। এই সুদীর্ঘকাল যতটা না তারা নিজেদের শাসনক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য মনোযোগী থেকেছে, যতটা না নিজেদের সংকীর্ণ ও ক্ষুদ্রস্বার্থ উদ্ধারে মগ্ন থেকেছে, যতটা না জনগণের অর্জিত সাফল্যকে আত্মসাৎ করে নিজেদের গৌরব ও মহিমাবৃদ্ধিতে ব্যাপৃত থেকেছে, তার সিকিভাগও এ দেশের দধীচিসদৃশ জনগণের জন্য, তাদের কল্যাণের জন্য করার স্বতঃপ্রবৃত্ত স্বাক্ষর রাখেনি। বস্তুত জনগণের সব অর্জন একান্তভাবেই তার নিজস্ব সংগ্রামের ফসলমাত্র, কারো দয়ার দান নয়, কারো সহানুভূতি ও অনুকম্পার নিদর্শনও নয়। জনগণ নিষ্ক্রিয় ও নিশ্চেষ্ট থাকলে, জনগণ লড়াকু না থাকলে শাসকচক্রের আত্মস্বার্থ হাসিলের নির্মম রথচক্রের নিচে পড়ে তাকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে হতো। এ দেশের জনগণ নিজেরা জেগে আছে, জাগিয়ে রেখেছে, নিজেরা বেঁচে আছে, বাঁচিয়ে রেখেছে দেশ ও জাতিকে, অত্যন্ত সচেতনভাবেই, আপসহীনভাবেই তারা স্বাধীনতার পতাকাকে, মুক্তিযুদ্ধের বিজয় বৈজয়ন্তীকে সর্বশক্তি দিয়ে ঊধর্ে্ব তুলে ধরে রেখেছে। ইতিহাসের কোনো উদ্ধত শক্তিই তাকে এ পর্যন্ত ভূলুণ্ঠিত ও মলিন করতে পারেনি।
আমরা আজ এই ক্রান্তিলগ্নে এ ব্যাপারে সচেতন যে এ দেশের অতন্ত্র জাগারী জনশক্তি ২০১২ই শুধু নয়, অনাগত সব দিনেরই অজানা, অনুদ্ঘাটিত সব সম্ভাবনাকে অতীতের মতোই আত্মশক্তিতে বলীয়ান হয়ে বিশ্বসভায় এ দেশের আসনকে চিরস্থায়ী ও চিরউজ্জ্বল করে রাখবে।
বিদায়ী বছর ২০১১ সালে জনগণের সুদৃঢ় ও সচেতন ভূমিকার কারণেই আমরা কখনো কখনো বৈরী ও বিরোধী শক্তিগুলোকে বিভিন্ন জাতীয় প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা পালনে আগ্রহী হতে দেখেছি। টিপাইমুখ বাঁধের মতো আমাদের সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকির আশঙ্কা সৃষ্টিকারী কার্যক্রমে বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি বিদায়ী বছরে জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে মোকাবিলায় হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। জাতি জেনেছে, যতই রোডমার্চ করুক, সংবিধানবহির্ভূত তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহালের দাবিতে হরতাল-ভাঙচুর-সন্ত্রাস চালাক, এমনকি জাতিকে হতবাক করে দিয়ে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তি ও বিচার বন্ধের অবিশ্বাস্য দাবি পর্যন্ত জানানোর স্পর্ধা দেখাক, তার পরও বছরের শেষে এসে রাষ্ট্রপতির সংলাপ_উদ্যোগে সাড়া দিয়ে প্রধান বিরোধী দল প্রমাণ করে দিল, তারা ইতিবাচক রাজনীতিকে আদৌ বিসর্জন দেয়নি। সদ্য প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেতা আবদুর রাজ্জাকের প্রতি অকুণ্ঠ শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেও প্রধান বিরোধী দল প্রমাণ করেছে, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ তারা বিসর্জন দেয়নি আদৌ। তবে তাদের ক্ষমতালিপ্সা যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা আর অন্ধ ও বধির সেজে সংসদ বর্জন করে চলার ক্ষমাহীন অন্ধকার খাতে প্রবাহিত হওয়ায় এ জাতির সংসদীয় গণতন্ত্রের ইতিহাস মসীলিপ্ত হয়ে চলেছে। এ কলঙ্কের দায়ভাগ নতুন বছরে তারা ঝেড়ে ফেলবে_এটাই জাতির ঐকান্তিক কামনা। তাদের অন্ধ ভারতবিদ্বেষের রাজনীতিও যে ক্ষমতালিপ্সার যূপকাষ্ঠেই বাঁধা, অতীতের বছরগুলোর মতোই দুয়েকটি ক্ষেত্র ছাড়া অধিকাংশ ক্ষেত্রে গেল বছরও তার নগ্ন প্রকাশই ঘটেছে। ট্রানজিট, তিস্তার পানিবণ্টন, পার্বত্য শান্তিচুক্তি_এ রকম অনেক প্রশ্নেই তাদের ক্ষমতাগন্ধী ভারতবিদ্বেষী নীতিই বহাল রয়েছে। বন্ধ্যা ও দেউলিয়া রাজনীতির জন্য এসবই তাদের পুঁজি হয়ে রয়েছে। নতুন বছরে এসবের আমূল পরিবর্তন ঘটিয়ে প্রতিবেশী গণতান্ত্রিক দেশগুলোর মতো এ দেশেও বিরোধী রাজনীতি নতুন ও সচেতন গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে উজ্জীবিত হয়ে আমাদের সংসদীয় রাজনীতির ধারাকে কলুষমুক্ত, আরো অর্থবহ ও জনকল্যাণকর করে তুলুক_জাতির এটাই আজকের নিরন্তর কামনা।
বছর যাবে, বছর আসবে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের এই দেশ, গণতন্ত্রের এই দেশ, লাখো শহীদের রক্তদানের পুণ্যে ধন্য এই দেশ, অগণিত মা-বোনের অশ্রু-বেদনা-মমতায় সিক্ত আমাদের এই প্রিয় মাতৃভূমি নতুন বছর ২০১২ ও অনাগত বছরগুলোয় এ গ্রহের সভ্যতা ও মানববসতির সমৃদ্ধ, শান্তিময় আদর্শ পীঠস্থান হিসেবে গড়ে উঠুক।
২৭.১২.২০১১
এই বছর শেষেও বিশেষ করে ভোজ্য তেলের দাম নতুন করে ঊর্ধ্বমুখী ও নিয়ন্ত্রণহীন হওয়ায় মানুষ খুবই আশাহত হয়ে মুষড়ে পড়ছে। সব সময় যে দোহাই দেওয়া হয় আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্য বৃদ্ধির, এবার সে দোহাইও টিকল না। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কম থাকা সত্ত্বেও সয়াবিন তেলের দাম অভ্যন্তরীণ বাজারে ব্যবসায়ীরা কোনো রকম চোখের চামড়া না রেখেই বাড়িয়ে চলেছে। দেখার কেউ নেই। এ অবস্থা অন্য কয়েকটি জরুরি নিত্যপণ্যের বেলায়ও নিত্যই দেখা দিচ্ছে। মানুষ যে কত কষ্টে আছে, সেটা সব ক্ষেত্রে বোঝারও উপায় নেই। তার পরও বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষকদের শহীদ মিনারে আমরণ অনশন পালন এবং এককালের ঔপনিবেশিক শোষণ-শাসনে জর্জরিত ভিয়েতনামের বৌদ্ধ ভিক্ষুদের মতো গায়ে আগুন ধরিয়ে আত্মাহুতি দেওয়ার মতো মরিয়া হয়ে ওঠার জায়গায় পেঁৗছে গেছেন এই শিক্ষকরা। টেলিভিশনে দেখা গেল, দীর্ঘকাল চাকরিরত এক বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষয়িত্রী যন্ত্রণাকাতর স্বরে বলছেন, চার হাজার ৯৫০ টাকা বেতন পেয়ে ছয়-সাতজনের সংসার চালানো কী করে সম্ভব বলুন! আজ এমন তো কেউ নেই, এ কথায় জবাব দেওয়ার। কথাটা কর্মজীবী, শ্রমজীবী, সীমিত ও স্বল্প আয়ের সব শ্রেণী-পেশার মানুষের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। শিক্ষকরাই যদি এমন মরিয়া হয়ে ওঠেন, তাহলে এ সমাজের মানমর্যাদা আর থাকে কোথায়? আগের বছরগুলোর ধারা অক্ষুণ্ন রেখে গেল বছরও গ্যাস-বিদ্যুতের দাম দফায় দফায় বেড়ে গেছে, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সাশ্রয়, অপচয় রোধের সচেতনতাই শুধু সরকার দাবি করছে, মূল্যবৃদ্ধি ও জনদুর্ভোগ লাঘবের কথাটা ভাবছে না।
অর্থনীতি তবু নাকি ভালোই চলছে! খোদ অর্থমন্ত্রী এবং তার পর প্রধানমন্ত্রীরও এমন উদ্বেগহীন কথা দেশবাসীর কষ্টকে আরেকটু বাড়িয়েই দেবে মাত্র। সাধারণ মানুষ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, সামষ্টিক অর্থনীতি, মূল্যস্ফীতি, তারল্য সংকট এসব বোঝে না। সরকার ২০ হাজার কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ নিয়েছে। ব্যাংক ঋণ সরকার নিয়ে যে ঘি খাচ্ছে না, দেশের উন্নয়নেই ব্যয় করছে প্রধানমন্ত্রীর এ ডিফেন্সিভ পজিশনের কোনো দরকার নেই। এসব সত্ত্বেও প্রবাসীদের রেমিট্যান্স কমে গেছে, বিদেশে শ্রমিক নেওয়া হ্রাস পেয়েছে, ডলারের দাম বেড়েই চলেছে, শেয়ারবাজারে দরপতন রোধ করা যাচ্ছে না, গত তিন বছরে সরকারের সব ব্যর্থতা সত্ত্বেও তার কাছেই এখনো ভালো কিছু প্রত্যাশা করছে। এটুকু মহাজোট সরকারের একটা বড় প্লাস পয়েন্ট। এ দেশে আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে, সমস্যা যে চতুর্গুণ লাফিয়ে বেড়ে গেছে, এটা মানুষের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতাই, কিন্তু তবু মানুষ এ সরকারের কাছেই সব সমস্যার সন্তোষজনক সুরাহা কামনা করে। এর পেছনে বাস্তব কারণ আছে। সব কিছুর পরও এ দেশে আওয়ামী লীগেরই গণভিত্তি সবচেয়ে বেশি, ক্ষমতায় যত বড় ম্যান্ডেট নিয়েই যাক, ক্ষমতায় বসার পরমুহূর্ত থেকেই তাকে ধিকৃত ও ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য গণশত্রুরা তৎপর হয়ে ওঠে। এটাও এ দেশের, এ সমাজের এক সুকঠিন বাস্তবতা। দুর্ভাগ্যজনক যে, আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতায় বসার পর সে কথা, সে কঠিন-কঠোর বাস্তবতা এক রকম বিস্মৃতই হয়। গত তিন বছরেও মহাজোট সরকারের সে ব্যাপারে তেমন একটা বোধোদয় ঘটেনি।
আমরা আজ এক বছরের যে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করব, তা বস্তুত মহাজোট সরকারের এযাবৎ অতিক্রান্ত তিন বছরেরই সাধারণ পরিস্থিতি মাত্র। বস্তুত আরো পিছিয়ে যদি ধরা হয়, মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের অতিক্রান্ত ৪০ বছর, মহাজোট সরকারের তিন বছর, আর গত এক বছর_এই তিন ধারার জনপ্রত্যাশাই একই মোহনায় মিলেছে। অনেক প্রাপ্তি সত্ত্বেও মানুষ প্রধানত আশাহতই হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধে মানুষের প্রত্যাশা আকাশ ছুঁয়েছিল। একটি সোনার দেশ, একটি শোষণ-বঞ্চনা-নিপীড়ন-নির্যাতন-অপমান-লাঞ্ছনামুক্ত স্বাধীন স্বদেশভূমিই ছিল সর্বোচ্চ ত্যাগস্বীকারকারী গণমানুষের ঐকান্তিক প্রত্যাশা। সে প্রত্যাশা ৪০ বছরে বহুলাংশেই পূরণ হয়নি। মানুষ হাল ছাড়েনি। বিপুল রক্তক্ষয় ও ত্যাগ-তিতিক্ষার পরও নতুন করে স্বাধীন স্বদেশ ভূমিতেই স্বৈরাচার ও সামরিক শাসকদের সুদীর্ঘ ও নিষ্ঠুরতম শাসন-শোষণের বীর বিক্রমেই মোকাবিলা করেছে। পঁচাত্তরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে প্রায় স্বাধীনতার সূচনালগ্নেই পরিবার-পরিজনসহ হারিয়েও মানুষ একবারে হতোদ্যম হয়ে হাল ছেড়ে দেয়নি। বারেবারেই নতুন করে মাথা উঁচু করে স্বাধীন-সার্বভৌম দেশ ও জাতির অস্তিত্ব ও মর্যাদা সমুন্নত রাখার প্রাণান্তকর প্রয়াস চালিয়ে এসেছে। বহু উত্থান-পতনের পর মানুষ তার আরাধ্য স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র এবং শাসন কাঠামো পেয়ে ২০০৮ সাল থেকে হাজার দুর্ভোগ ও দুঃখকষ্ট সয়ে মর্যাদার সঙ্গে বাঁচার জন্য অকুতোভয়ে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের মানসনেত্রে ধ্রুবতারার মতোই দুঃসময়ে এ দেশের হাল-ধরা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা জাতির সামনে চলার আলোর দিশারী হয়ে রয়েছেন। সে জন্যই মানুষ এখনো হাজার দুর্ভোগ ও দুঃখকষ্ট সয়েও রয়ে গেছে আপসহীন; কোনোক্রমেই বৈরী, স্বাধীনতাবিরোধী গণশত্রুদের সঙ্গে তারা আপস করবে না।
আজ বর্ষশেষে বিগত দিনগুলোকে মানুষ সেই দৃষ্টিকোণ থেকেই বিচার, বিবেচনা ও পর্যালোচনা করবে। অন্যদিকে শাসকগোষ্ঠীকেও মনে রাখতে হবে, গণমানুষের আপসহীন ভূমিকা ও সমর্থনের কারণেই শাসকদের সহযোগী ছাত্রসংগঠনগুলোর অবক্ষয়, অনাচার, লোভ-লালসা, লুণ্ঠন ও দখলবাজি একশ্রেণীর জনপ্রতিনিধির উন্মত্ত, বেপরোয়া ও জননিপীড়িনমূলক আচার-আচরণ, দায়িত্বহীন ও অদেশপ্রেমিকসুলভ শুল্কমুক্ত গাড়িসহ নানা সুযোগ-সুবিধা চোখ বুজে আত্মসাৎ, সড়ক ও যোগাযোগব্যবস্থা, বাণিজ্যসহ কয়েকটি সেক্টরে দুর্নীতি, লুটপাটের লোমহর্ষক কার্যক্রম চালানো গত তিন বছরে কিংবা বিগত বছরে সরকারের পতন অনিবার্য করে তুলতে পারেনি।
মানুষ হতাশ হয়েছে, ক্ষুব্ধ হয়েছে, তার পরও রাজনৈতিক বৈরী শক্তির কাছে, দায়িত্বজ্ঞানহীন ও ক্ষমতালিপ্সু, স্বাধীনতাবিরোধীদের মদদপুষ্ট শক্তির কাছে আত্মসমর্পণ করেনি। দধীচির মতোই এ দেশের নিপীড়িত-নির্যাতিত, এক হিসেবে প্রতারিত মানুষও নিজের হাড়-পাঁজরের হাড়কেই বজ্র করে আপন অর্জন এ গৌরবকে রক্ষা করে এসেছে।
আজ তাই অনেক বস্তুনিষ্ঠভাবেই শাসকগোষ্ঠীকে জনমানুষের স্বাধীনতাপূর্ব ও স্বাধীনতা-উত্তরকালের সুদীর্ঘ দুর্ভোগ, ত্যাগ-তিতিক্ষা আর অনিঃশেষ প্রত্যাশার বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা করতে হবে। আজ বর্ষপরিক্রমা শুধু জনমানুষের নয়, শাসকদের জন্যও এক অত্যাবশ্যকীয় দায়। শাসকদের হুঁশে আসতেই হবে।
এক বছর কেটে গেছে, তিন বছর কেটে গেছে, ৪০টি বছরই কেটে গেছে, সঠিক অর্থে সম্বিৎ ফেরেনি শাসকদের। এই সুদীর্ঘকাল যতটা না তারা নিজেদের শাসনক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য মনোযোগী থেকেছে, যতটা না নিজেদের সংকীর্ণ ও ক্ষুদ্রস্বার্থ উদ্ধারে মগ্ন থেকেছে, যতটা না জনগণের অর্জিত সাফল্যকে আত্মসাৎ করে নিজেদের গৌরব ও মহিমাবৃদ্ধিতে ব্যাপৃত থেকেছে, তার সিকিভাগও এ দেশের দধীচিসদৃশ জনগণের জন্য, তাদের কল্যাণের জন্য করার স্বতঃপ্রবৃত্ত স্বাক্ষর রাখেনি। বস্তুত জনগণের সব অর্জন একান্তভাবেই তার নিজস্ব সংগ্রামের ফসলমাত্র, কারো দয়ার দান নয়, কারো সহানুভূতি ও অনুকম্পার নিদর্শনও নয়। জনগণ নিষ্ক্রিয় ও নিশ্চেষ্ট থাকলে, জনগণ লড়াকু না থাকলে শাসকচক্রের আত্মস্বার্থ হাসিলের নির্মম রথচক্রের নিচে পড়ে তাকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে হতো। এ দেশের জনগণ নিজেরা জেগে আছে, জাগিয়ে রেখেছে, নিজেরা বেঁচে আছে, বাঁচিয়ে রেখেছে দেশ ও জাতিকে, অত্যন্ত সচেতনভাবেই, আপসহীনভাবেই তারা স্বাধীনতার পতাকাকে, মুক্তিযুদ্ধের বিজয় বৈজয়ন্তীকে সর্বশক্তি দিয়ে ঊধর্ে্ব তুলে ধরে রেখেছে। ইতিহাসের কোনো উদ্ধত শক্তিই তাকে এ পর্যন্ত ভূলুণ্ঠিত ও মলিন করতে পারেনি।
আমরা আজ এই ক্রান্তিলগ্নে এ ব্যাপারে সচেতন যে এ দেশের অতন্ত্র জাগারী জনশক্তি ২০১২ই শুধু নয়, অনাগত সব দিনেরই অজানা, অনুদ্ঘাটিত সব সম্ভাবনাকে অতীতের মতোই আত্মশক্তিতে বলীয়ান হয়ে বিশ্বসভায় এ দেশের আসনকে চিরস্থায়ী ও চিরউজ্জ্বল করে রাখবে।
বিদায়ী বছর ২০১১ সালে জনগণের সুদৃঢ় ও সচেতন ভূমিকার কারণেই আমরা কখনো কখনো বৈরী ও বিরোধী শক্তিগুলোকে বিভিন্ন জাতীয় প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা পালনে আগ্রহী হতে দেখেছি। টিপাইমুখ বাঁধের মতো আমাদের সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকির আশঙ্কা সৃষ্টিকারী কার্যক্রমে বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি বিদায়ী বছরে জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে মোকাবিলায় হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। জাতি জেনেছে, যতই রোডমার্চ করুক, সংবিধানবহির্ভূত তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহালের দাবিতে হরতাল-ভাঙচুর-সন্ত্রাস চালাক, এমনকি জাতিকে হতবাক করে দিয়ে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তি ও বিচার বন্ধের অবিশ্বাস্য দাবি পর্যন্ত জানানোর স্পর্ধা দেখাক, তার পরও বছরের শেষে এসে রাষ্ট্রপতির সংলাপ_উদ্যোগে সাড়া দিয়ে প্রধান বিরোধী দল প্রমাণ করে দিল, তারা ইতিবাচক রাজনীতিকে আদৌ বিসর্জন দেয়নি। সদ্য প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেতা আবদুর রাজ্জাকের প্রতি অকুণ্ঠ শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেও প্রধান বিরোধী দল প্রমাণ করেছে, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ তারা বিসর্জন দেয়নি আদৌ। তবে তাদের ক্ষমতালিপ্সা যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা আর অন্ধ ও বধির সেজে সংসদ বর্জন করে চলার ক্ষমাহীন অন্ধকার খাতে প্রবাহিত হওয়ায় এ জাতির সংসদীয় গণতন্ত্রের ইতিহাস মসীলিপ্ত হয়ে চলেছে। এ কলঙ্কের দায়ভাগ নতুন বছরে তারা ঝেড়ে ফেলবে_এটাই জাতির ঐকান্তিক কামনা। তাদের অন্ধ ভারতবিদ্বেষের রাজনীতিও যে ক্ষমতালিপ্সার যূপকাষ্ঠেই বাঁধা, অতীতের বছরগুলোর মতোই দুয়েকটি ক্ষেত্র ছাড়া অধিকাংশ ক্ষেত্রে গেল বছরও তার নগ্ন প্রকাশই ঘটেছে। ট্রানজিট, তিস্তার পানিবণ্টন, পার্বত্য শান্তিচুক্তি_এ রকম অনেক প্রশ্নেই তাদের ক্ষমতাগন্ধী ভারতবিদ্বেষী নীতিই বহাল রয়েছে। বন্ধ্যা ও দেউলিয়া রাজনীতির জন্য এসবই তাদের পুঁজি হয়ে রয়েছে। নতুন বছরে এসবের আমূল পরিবর্তন ঘটিয়ে প্রতিবেশী গণতান্ত্রিক দেশগুলোর মতো এ দেশেও বিরোধী রাজনীতি নতুন ও সচেতন গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে উজ্জীবিত হয়ে আমাদের সংসদীয় রাজনীতির ধারাকে কলুষমুক্ত, আরো অর্থবহ ও জনকল্যাণকর করে তুলুক_জাতির এটাই আজকের নিরন্তর কামনা।
বছর যাবে, বছর আসবে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের এই দেশ, গণতন্ত্রের এই দেশ, লাখো শহীদের রক্তদানের পুণ্যে ধন্য এই দেশ, অগণিত মা-বোনের অশ্রু-বেদনা-মমতায় সিক্ত আমাদের এই প্রিয় মাতৃভূমি নতুন বছর ২০১২ ও অনাগত বছরগুলোয় এ গ্রহের সভ্যতা ও মানববসতির সমৃদ্ধ, শান্তিময় আদর্শ পীঠস্থান হিসেবে গড়ে উঠুক।
২৭.১২.২০১১
No comments